হাজীগঞ্জে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী খুন॥ আটক-১

  • আপডেট: ০৬:১৮:৪১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ মে ২০১৯
  • ৭৯

নিজস্ব প্রতিনিধি॥
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী যুবককে খুন করা হয়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১জনকে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে উপজেলার বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের বড়কুল-এন্নাতলী মাঠের একটি হালটের পাশ থেকে দৃষ্টি প্রতিবন্ধি নুরুল ইসলাম পাটওয়ারি (২২)’র মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মৃত নুরুল ইসলাম এন্নাতলী গ্রামের পাটওয়ারী বাড়ীর দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী আবুল বাসার পাটওয়ারীর ছোট ছেলে। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে প্রেরণ করেছে।

নিহত নুরুল ইসলাম পাটওয়ারীর পরিবারে ৫ সদস্যের মধ্যে চারজনই দৃষ্টি প্রতিবন্ধি। নিহতের ভাই খোরশেদ আলম, এক বোন ও বাবা আবুল বাসার জন্মগত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। এ বিষয়ে নিহতের বাবা আবুল বাসার বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

নিহতের বাবা আবুল বাসার মঙ্গলবার সকালে কান্নাজড়িত কন্ঠে সাংবাদিকদের বলেন, আমার ছেলেকে খুন করা হয়েছে। সোমবার রাতে কথিত তরুণলীগ নেতা কাউছার ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা বাড়ীতে গিয়ে হুমকী-ধমকী দেয়।

তিনি আরো জানান, আমার ছেলে প্রতিবন্ধী ভাতার জন্য টাকা দিয়েও ভাতা পাইনি। ওই ভাতার ঘটনা নিয়ে আমার ছেলে প্রতিবাদ করেছিল। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে কাউছার হোসেন আমার ছেলেকে খুন করেছে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাজীগঞ্জ সার্কেল) মো. আফজাল হোসেন, অফিসার ইনচার্জ মো. আলমগীর হোসেন রনি।

অভিযুক্ত ইউনিয়ন তরুণলীগের সভাপতি কাউছার হোসেন মুঠোফোনে জানান, সোমবার সন্ধ্যায় আমাদের মহল্লার দোকানে প্রায় শতাধিক জনতার জনসমুক্ষে নুরুল ইসলামের একটি ইভটিজিংয়ের ঘটনায় শালিসি বৈঠক হবার কথা ছিল। পরে নুরুল ইসলামের বাড়ীর লোকজন বিষয়টি সমাধান করার আশ্বাস দেয়। নুরুল ইসলাম এলাকার আলাউদ্দিন ফরাজীর মেয়েকে ইভটিজিং করেছিল। তারপর আমি হাজীগঞ্জ বাজারে চলে আসি। রাত দেড়টায় বাসায় গিয়েছি। আমি নুরুল ইসলামের হত্যার ঘটনায় জড়িত নই।

ভাতার কার্ড প্রসঙ্গে কাউছার হোসেন বলেন, তারা আমার কাছে কোন টাকা দেয়নি। আওয়ামীলীগের এক সাংগঠনিক নেতার কাছে ভাতার কার্ডের জন্য টাকা দিয়েছিল। তবে তারা এখনো ভাতার কার্ড পায়নি।

নিহত প্রতিবন্ধি নুরুল ইসলামের এক ভিডিও সাক্ষাতকারে দেখা গেছে, ওই তরুণ লীগ নেতা কাউছার হোসেনকে প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ডের জন্য ২৭’শ টাকা দিয়েছে। তারপরও কার্ড না পাওয়ায় ইউপি চেয়ারম্যান কবির হোসেন মিজির কাছে অভিযোগ দিয়েও সুরাহ পায়নি বলে ভিডিওতে দেখা যায়।

নিহতের মৃতদেহ সুরতহালকারী এসআই ফারুক জানান, নিহত নুরুল ইসলাম পাটওয়ারীর শরীরে কোন পোষাক ছিলনা। প্যান্টের ব্যাল্ট খোলা ছিল। তার চোখের চশমা কিছু দূরে পড়েছিল। তার শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন নেই। ধারনা করা হচ্ছে তাকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করা হতে পারে।

হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আলমগীর হোসেন রনি জানান, এ ঘটনায় কাউসার আলমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। নুরুল ইসলাম পাটওয়ারীর মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবার মামলার প্রস্তিুতি নিচ্ছে।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

যে কারণে পুরুষে ৪টি বিয়ের পক্ষে হীরা সুমরো

হাজীগঞ্জে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী খুন॥ আটক-১

আপডেট: ০৬:১৮:৪১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ মে ২০১৯

নিজস্ব প্রতিনিধি॥
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী যুবককে খুন করা হয়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১জনকে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে উপজেলার বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের বড়কুল-এন্নাতলী মাঠের একটি হালটের পাশ থেকে দৃষ্টি প্রতিবন্ধি নুরুল ইসলাম পাটওয়ারি (২২)’র মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মৃত নুরুল ইসলাম এন্নাতলী গ্রামের পাটওয়ারী বাড়ীর দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী আবুল বাসার পাটওয়ারীর ছোট ছেলে। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে প্রেরণ করেছে।

নিহত নুরুল ইসলাম পাটওয়ারীর পরিবারে ৫ সদস্যের মধ্যে চারজনই দৃষ্টি প্রতিবন্ধি। নিহতের ভাই খোরশেদ আলম, এক বোন ও বাবা আবুল বাসার জন্মগত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। এ বিষয়ে নিহতের বাবা আবুল বাসার বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

নিহতের বাবা আবুল বাসার মঙ্গলবার সকালে কান্নাজড়িত কন্ঠে সাংবাদিকদের বলেন, আমার ছেলেকে খুন করা হয়েছে। সোমবার রাতে কথিত তরুণলীগ নেতা কাউছার ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা বাড়ীতে গিয়ে হুমকী-ধমকী দেয়।

তিনি আরো জানান, আমার ছেলে প্রতিবন্ধী ভাতার জন্য টাকা দিয়েও ভাতা পাইনি। ওই ভাতার ঘটনা নিয়ে আমার ছেলে প্রতিবাদ করেছিল। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে কাউছার হোসেন আমার ছেলেকে খুন করেছে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাজীগঞ্জ সার্কেল) মো. আফজাল হোসেন, অফিসার ইনচার্জ মো. আলমগীর হোসেন রনি।

অভিযুক্ত ইউনিয়ন তরুণলীগের সভাপতি কাউছার হোসেন মুঠোফোনে জানান, সোমবার সন্ধ্যায় আমাদের মহল্লার দোকানে প্রায় শতাধিক জনতার জনসমুক্ষে নুরুল ইসলামের একটি ইভটিজিংয়ের ঘটনায় শালিসি বৈঠক হবার কথা ছিল। পরে নুরুল ইসলামের বাড়ীর লোকজন বিষয়টি সমাধান করার আশ্বাস দেয়। নুরুল ইসলাম এলাকার আলাউদ্দিন ফরাজীর মেয়েকে ইভটিজিং করেছিল। তারপর আমি হাজীগঞ্জ বাজারে চলে আসি। রাত দেড়টায় বাসায় গিয়েছি। আমি নুরুল ইসলামের হত্যার ঘটনায় জড়িত নই।

ভাতার কার্ড প্রসঙ্গে কাউছার হোসেন বলেন, তারা আমার কাছে কোন টাকা দেয়নি। আওয়ামীলীগের এক সাংগঠনিক নেতার কাছে ভাতার কার্ডের জন্য টাকা দিয়েছিল। তবে তারা এখনো ভাতার কার্ড পায়নি।

নিহত প্রতিবন্ধি নুরুল ইসলামের এক ভিডিও সাক্ষাতকারে দেখা গেছে, ওই তরুণ লীগ নেতা কাউছার হোসেনকে প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ডের জন্য ২৭’শ টাকা দিয়েছে। তারপরও কার্ড না পাওয়ায় ইউপি চেয়ারম্যান কবির হোসেন মিজির কাছে অভিযোগ দিয়েও সুরাহ পায়নি বলে ভিডিওতে দেখা যায়।

নিহতের মৃতদেহ সুরতহালকারী এসআই ফারুক জানান, নিহত নুরুল ইসলাম পাটওয়ারীর শরীরে কোন পোষাক ছিলনা। প্যান্টের ব্যাল্ট খোলা ছিল। তার চোখের চশমা কিছু দূরে পড়েছিল। তার শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন নেই। ধারনা করা হচ্ছে তাকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করা হতে পারে।

হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আলমগীর হোসেন রনি জানান, এ ঘটনায় কাউসার আলমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। নুরুল ইসলাম পাটওয়ারীর মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবার মামলার প্রস্তিুতি নিচ্ছে।