হাজীগঞ্জে ভাতিজা কতৃক চাচাকে হত্যার চেষ্টায় মামলা

  • আপডেট: ০২:২৪:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ অগাস্ট ২০১৯
  • ৪১

হাজীগঞ্জ প্রতিনিধি:
হাজীগঞ্জে ভাতিজা কতৃক চাচাকে হত্যার চেষ্টায় মামলা হয়েছে। হামলার শিকার ভোক্তভোগী মো. সাইফুল ইসলাম সেলিম (৪৫) মোহনপুর গ্রামের মিজি বাড়ির মৃত সোলেমান আমিনের ছেলে।

গত ১০ আগষ্ট শুক্রবার রাত আনুঃ ৯টায় উপজেলার বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের দক্ষিণ বড়কুল মোহনপুর মাদ্রাসা পাশের রাস্তায় রাতের অন্ধকারে ভাতিজা কতৃক চাচার উপর হামলার ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় সাইফুল ইসলাম দুইজনকে আসামী করে হাজীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করে। যার মামলা নং ১১, তারিখ ১০/০৮/২০১৯। আসামীরা হলেন সেলিমের বড় ভাই মো. শাহ আলমের ছেলে কুয়েত প্রবাসী মনির হোসেন ও একই গ্রামের কবিরাজ বাড়ির মৃত আশ্রাফ আলীর ছেলে মো. মোস্তফা মিয়া ।
মামলা সূত্র জানা যায়, গত ১০ আগষ্ট রাত ৯টার দিকে স্থানীয় রায়চোঁ বাজার থেকে স্ত্রীর জন্য ঔষধ নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে আগে থেকে ওঁত পেতে থাকা মনির হোসেন ও তার ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী মোস্তফা মোহনপুর মাদ্রাসার পাশে গাছের আড়ালে দাঁড়িয়ে থাকে। সেলিম যাওয়ার সময় পিছন থেকে হামলা করে মনির ও তার ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী মোস্তফা গলায় ও মুখে গামছা পেছিয়ে পরিত্যক্ত শৌচারের সেফটি টাংকির ভিতরে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করে। সেলিম চিৎকার দিতে চাইলে মনির তার হাত দিয়ে মুখে চাপা দেয়।
এসময় সেলিম তার ভাতিজা মনিরের হাতে কামড় দিয়ে জীবন রক্ষার চেষ্টা করে। সেলিম বাঁচার জন্য ডাক-চিৎকার দিলে মনির হোসেন ও মোস্তফা আবারো তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে শৌচাগারের পাশের নর্দমার পানিতে ডুবিয়ে হত্যার চেষ্টা করে।
এদিকে সেলিমের ডাক-চিৎকারে স্থানীয় জনতা ছুটে আসলে মনির- মোস্তফা পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা সেলিমকে অচেতন অবস্থায় দেখতে পেয়ে হাজীগঞ্জ থানায় খবর দিলে পুলিশ সেলিমকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ সেলিমের গলায় পেছানো ৩টি গাছমা উদ্ধার করে।
সাইফুল ইসলাম সেলিমের ভাষ্যমতে জানা যায়, ২০১৬ সালে ১৬ ফেব্রুয়ারী রাতে সম্পত্তিগত বিরোধের জের ধরে তার বসতঘর পুড়িয়ে দেয়া হয়। এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করে। ওই মামলাটি গত ৬ আগষ্ট চাঁদপুর চীফ ম্যাজিস্ট্রিট কোটে নিষ্পত্তি হয়। ওই মামলায় তার ভাই শাহ আলমের ছেলে মনির হোসেনসহ একাধিক আসামী ছিল।
মামলাটি নিষ্পত্তি হওয়ার ৪ দিনের মধ্যে সেলিমকে রাতের অন্ধকারে হত্যার পরিকল্পনা করে আপন ভাতিজা মনির হোসেন। মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে এলাকার দূর্ধষ মাদক ব্যবসায়ী, সন্ত্রাসী মোস্তফাকে ভাড়া করে। সাইফুল ইসলাম সেলিমকে হামলার ঘটনায় মনির হোসেনকে থানা পুলিশ আটক করে গত ১১আগষ্ট জেল হাজতে প্রেরণ করে। ওইদিনই জামিনে বের হয়ে আসে মনির। এরপর এলাকায় গিয়ে ঘটনার স্বাক্ষী এবং সেলিমকে মারধর করে ফেলে রাখার ছবি মোবাইলে ধারণকারী স্থানীয়দের হুমকি-ধমকি এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির করার হুমকি দিয়ে আসছে বলে জানান সেলিম। সেলিম ও তার পরিবার নিরাপত্তা এবং ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবীর করছেন প্রশাসনের কাছে।
হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আলমগীর হোসেন রনি বলেন, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ দ্রুত পৌঁছে সাইফুল ইসলাম সেলিমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পৌঁছে দেয়। এ বিষয়ে মামলা দায়ের করা হয়েছে। একজনকে আটক আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। এর সুষ্ঠু তদন্ত করে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, এলাকায় চুরি, মাদকসহ নানা অপকর্মের সাথে জড়িত রয়েছে মোস্তফা। তার বিরুদ্ধে নাশকতাসহ বিভিন্ন অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

ভারতে মসজিদের স্থানে মন্দির দাবি করে জরিপের চেস্টায় উত্তেজনা, পুলিশের গুলিতে ৩ মুসল্লি নিহত (ভিডিওসহ)

হাজীগঞ্জে ভাতিজা কতৃক চাচাকে হত্যার চেষ্টায় মামলা

আপডেট: ০২:২৪:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ অগাস্ট ২০১৯

হাজীগঞ্জ প্রতিনিধি:
হাজীগঞ্জে ভাতিজা কতৃক চাচাকে হত্যার চেষ্টায় মামলা হয়েছে। হামলার শিকার ভোক্তভোগী মো. সাইফুল ইসলাম সেলিম (৪৫) মোহনপুর গ্রামের মিজি বাড়ির মৃত সোলেমান আমিনের ছেলে।

গত ১০ আগষ্ট শুক্রবার রাত আনুঃ ৯টায় উপজেলার বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের দক্ষিণ বড়কুল মোহনপুর মাদ্রাসা পাশের রাস্তায় রাতের অন্ধকারে ভাতিজা কতৃক চাচার উপর হামলার ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় সাইফুল ইসলাম দুইজনকে আসামী করে হাজীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করে। যার মামলা নং ১১, তারিখ ১০/০৮/২০১৯। আসামীরা হলেন সেলিমের বড় ভাই মো. শাহ আলমের ছেলে কুয়েত প্রবাসী মনির হোসেন ও একই গ্রামের কবিরাজ বাড়ির মৃত আশ্রাফ আলীর ছেলে মো. মোস্তফা মিয়া ।
মামলা সূত্র জানা যায়, গত ১০ আগষ্ট রাত ৯টার দিকে স্থানীয় রায়চোঁ বাজার থেকে স্ত্রীর জন্য ঔষধ নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে আগে থেকে ওঁত পেতে থাকা মনির হোসেন ও তার ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী মোস্তফা মোহনপুর মাদ্রাসার পাশে গাছের আড়ালে দাঁড়িয়ে থাকে। সেলিম যাওয়ার সময় পিছন থেকে হামলা করে মনির ও তার ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী মোস্তফা গলায় ও মুখে গামছা পেছিয়ে পরিত্যক্ত শৌচারের সেফটি টাংকির ভিতরে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করে। সেলিম চিৎকার দিতে চাইলে মনির তার হাত দিয়ে মুখে চাপা দেয়।
এসময় সেলিম তার ভাতিজা মনিরের হাতে কামড় দিয়ে জীবন রক্ষার চেষ্টা করে। সেলিম বাঁচার জন্য ডাক-চিৎকার দিলে মনির হোসেন ও মোস্তফা আবারো তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে শৌচাগারের পাশের নর্দমার পানিতে ডুবিয়ে হত্যার চেষ্টা করে।
এদিকে সেলিমের ডাক-চিৎকারে স্থানীয় জনতা ছুটে আসলে মনির- মোস্তফা পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা সেলিমকে অচেতন অবস্থায় দেখতে পেয়ে হাজীগঞ্জ থানায় খবর দিলে পুলিশ সেলিমকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ সেলিমের গলায় পেছানো ৩টি গাছমা উদ্ধার করে।
সাইফুল ইসলাম সেলিমের ভাষ্যমতে জানা যায়, ২০১৬ সালে ১৬ ফেব্রুয়ারী রাতে সম্পত্তিগত বিরোধের জের ধরে তার বসতঘর পুড়িয়ে দেয়া হয়। এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করে। ওই মামলাটি গত ৬ আগষ্ট চাঁদপুর চীফ ম্যাজিস্ট্রিট কোটে নিষ্পত্তি হয়। ওই মামলায় তার ভাই শাহ আলমের ছেলে মনির হোসেনসহ একাধিক আসামী ছিল।
মামলাটি নিষ্পত্তি হওয়ার ৪ দিনের মধ্যে সেলিমকে রাতের অন্ধকারে হত্যার পরিকল্পনা করে আপন ভাতিজা মনির হোসেন। মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে এলাকার দূর্ধষ মাদক ব্যবসায়ী, সন্ত্রাসী মোস্তফাকে ভাড়া করে। সাইফুল ইসলাম সেলিমকে হামলার ঘটনায় মনির হোসেনকে থানা পুলিশ আটক করে গত ১১আগষ্ট জেল হাজতে প্রেরণ করে। ওইদিনই জামিনে বের হয়ে আসে মনির। এরপর এলাকায় গিয়ে ঘটনার স্বাক্ষী এবং সেলিমকে মারধর করে ফেলে রাখার ছবি মোবাইলে ধারণকারী স্থানীয়দের হুমকি-ধমকি এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির করার হুমকি দিয়ে আসছে বলে জানান সেলিম। সেলিম ও তার পরিবার নিরাপত্তা এবং ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবীর করছেন প্রশাসনের কাছে।
হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আলমগীর হোসেন রনি বলেন, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ দ্রুত পৌঁছে সাইফুল ইসলাম সেলিমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পৌঁছে দেয়। এ বিষয়ে মামলা দায়ের করা হয়েছে। একজনকে আটক আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। এর সুষ্ঠু তদন্ত করে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, এলাকায় চুরি, মাদকসহ নানা অপকর্মের সাথে জড়িত রয়েছে মোস্তফা। তার বিরুদ্ধে নাশকতাসহ বিভিন্ন অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে।