কিস্তির আসায় হাজীগঞ্জ থেকে কয়েক শতাধিক নারী-পুরুষ গেলো ঢাকায়!

ঢাকায় সমাবেশে যোগ দিলেই মিলবে সর্বনিম্ন এক লাখ থেকে কোটি টাকা পর্যন্ত সুদমুক্ত ঋণ। এমন প্রলোভণে রোববার দিবাগত রাত থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত হাজীগঞ্জ থেকে ঢাকায় গিয়েছেন কয়েক শতাধিক সাধারণ নারী-পুরুষ ও কিশোর-কিশোরী। প্রধান উপদেষ্টার তহবিল থেকে বিনা সুদে ঋণ দেওয়া হবে ‘অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশ’ নামের একটি সংগঠনের এমন প্রলোভন দেখিয়ে তাদেরকে ঢাকায় নেওয়া হয়।

জানা গেছে, গত ৫ আগস্টের পর ‘অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশ’ নামের সংগঠনটি হাজীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ও বাসা-বাড়িতে নিরীহ নারী-পুরুষদের টার্গেট করে বিনা সুদে ঋণের প্রলোভন দেখায়। তাদের প্রলোভনে পা দিয়ে ওই সংগঠনের সদস্য হন কয়েক শতাধিক নারী-পুরুষ। এরপর সদস্যরা নিজ নিজ খরচে স্থানীয় পর্যায়ে সভা করেন এবং পরবর্তীতে গত ১৮ আগস্ট দুইটি যাত্রীবাহী বাস ভাড়া করে ঢাকায় সমাবেশে যোগ দেন।

ওই সমাবেশ থেকে ফিরে এসে সংগঠনটির কর্মীরা আরও বেশি সদস্য সংগ্রহ করেন। সদস্যদেরকে বলা হয়, দেশ থেকে পাচার হওয়া বিপুল অর্থ ফেরত নিয়ে আসবেন ড. ইউনূস। সেই টাকায় বিনা সুদে এক লাখ টাকা থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত লোন দেওয়া হবে। বিনা সুদের সেই লোন (ঋণ) পেতে আবেদন করতে হবে নির্ধারিত ফরমে। প্রাথমিকভাবে তাদেরকে নিজ খরচে ২৫ নভেম্বর, সোমবার রাজধানীর শাহবাগে আসতে হবে।

তাদেরকে আরও বলা হয়, যত বেশি টাকা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন, তত বেশি মিলবে ঋণ। এমন প্রলোভনে রোববার দিবাগত রাত থেকে সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত সারা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের নিরীহ মানুষ ঢাকায় আসতে শুরু করেন। তাদের উদ্দেশ্য, বিনা সুদের ঋণ পেতে শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ। এই সমাবেশে যোগ দিতে হাজীগঞ্জ থেকেও ৫টি যাত্রীবাহী বাস’সহ ব্যক্তিগত উদ্যোগে কয়েক শতাধিক নারী-পুরুষ ঢাকায় যান।

তবে সংগঠনটির একাধিক সদস্যরা জানান, ঢাকায় যারা রওনা দিয়েছেন। এর মধ্যে অনেকেই যেতে পারেন নি। তাদেরকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, শিক্ষার্থীরা ফিরিয়ে দিয়েছেন। এর আগে বিষয়টির টের পেয়ে ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট একজনকে আটক করে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ। পরে ৫৪ ধারায় আটক দেখিয়ে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুক।

এ বিষয়ে আমাদের অন্যান্য উপজেলা প্রতিনিধিদের সাথে কথা হলে তারা জানান, আনুষ্ঠানিকভাবে না হলেও অনেক মানুষ ঢাকায় যাওয়ার বিষয়টি শুনেছি। এবং যারা ঢাকায় গিয়েছেন, তারা সকলেই নিরিহ ও খেটে খাওয়া পরিবারের সদস্য। ঢাকায় যারা যাবে, তাদের সবাইকে ‘অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশ’ বিনা সুদে এক লাখ টাকা থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত লোন দেওয়া হবে। এমন প্রলোভনেই লোকজন ঢাকায় গিয়েছেন।

এ দিকে ঋণের প্রলোভন দেখিয়ে নিরীহ লোকজনকে ঢাকায় নেওয়া হলেও সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ সংবাদকর্মীদের জানিয়েছেন ভিন্নকথা। গত শুক্রবার (২২ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরম খাঁ হলে ‘অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশ’ এর ব্যানারে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ জানান, দুর্নীতিবিরোধী বিশেষ আইন প্রণয়ণের দাবিতে ২৫ নভেম্বর (সোমবার) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সংহতি সমাবেশ করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের সদস্য মো. মাহবুবুল আলম চৌধুরী বলেন, দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এক কোটি ৮০ লাখ মানুষের অনুসমর্থনের ভিত্তিতে একটি বিশেষ আইন প্রণয়নের জন্য গত চার বছর ধরে আমাদের এই সংগঠন কাজ করছে। গত ১৮ আগস্ট শাহবাগ চত্বরে এক সংহতি সমাবেশের মাধ্যমে আমরা প্রধান উপদেষ্টা বরাবর এই দুর্নীতিবিরোধী বিশেষ আইনের খসড়া জমা দিয়েছি। এরই ধারাবাহিকতায় একই দাবিতে ২৫ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সংহতি সমাবেশ করবো।

এই সমাবেশে অংশ নিতেই নিরীহ জনসাধারণকে সর্বনিম্ন এক লাখ থেকে কোটি টাকা পর্যন্ত সুদমুক্ত ঋণের প্রলোভন দেখিয়ে ঢাকায় নেওয়া হয়। গত রোববার দিবাগত রাত একটার পর থেকেই হাজীগঞ্জসহ চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও সারাদেশ থেকে বাস, পিক-আপ ও মাইক্রোবাসে করে ঢাকায় আসতে শুরু করে সাধারণ মানুষেরা। তবে ঢাকায় এবং দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পুলিশ ও শিক্ষার্থীরা তাদের বুঝিয়ে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছে।

এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন রান্ধুনীমূড়া গ্রামের মো. নিশান হোসেন নামের একজনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি সংগঠনের সদস্য। এই সংগঠনে আমার মা-বাবা, স্ত্রীসহ ৪’শ সদস্য রয়েছে। আমি কোনো অফিসার না, অটোরিক্সা চালাই। আমাকে বেতন দেওয়ার কথা বলে গতরাতে (রোববার) আমার নামে একটি সিল বানানো হয়। এরপর ওই সিল দিয়ে ৪’শ সদস্য ফরম পূরণ করে ঢাকায় পাঠিয়ে দেই। তবে আমি যাইনি।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আব্দুস সাত্তার নামের শাহারাস্তির একজন ভদ্র লোকের আন্ডারে আমরা সদস্য হয়েছি। এসব কিছু তিনিই তদারকি করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অপর এক সদস্য বলেন, আমি আর তাদের (‘অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশ) সাথে নেই। আমি কাউকে ঢাকায় পাঠাইনি, এমনকি আমি নিজেও ঢাকায় যাইনি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তখন আমরা মাহবুবুল আলম চৌধুরীর নেতৃত্বে কাজ করেছি। যতটুকু জানি, তাঁর বাড়ি চাঁদপুর। তিনিই সংগঠনের সবকিছু দেখা-শুনা করেন। এখন আর আমি এই সংগঠনের সাথে নেই।

তারা উভয় জানান, আব্দুস সাত্তার ও মাহবুবুল আলম চৌধুরী পৃথক ভাবে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করেন। ওনারা দুইজন, দুই গ্রুপের সমন্বয়ক। এবিষয়ে অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের হাজীগঞ্জের একাংশের সমন্বয়ক শাহরাস্তি উপজেলার আব্দুস সাত্তারের মুঠোফোন নম্বর (০১৮৫৯-৫৫২০২১) এবং অপর অংশের সমন্বয়ক চাঁদপুরের মাহবুবুল আলম চৌধুরীর নম্বরটি (০১৭১১-৭৩৪০৯৫) বন্ধ পাওয়ায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, লোকজনকে বেআইনিভাবে জড়ো করা হবে। এমন অভিযোগে একজনকে আটক করে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করেছি।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় উপ-অর্থ সম্পাদক হাজীগঞ্জের মাহবুব আলম ২ দিনের রিমান্ডে

কিস্তির আসায় হাজীগঞ্জ থেকে কয়েক শতাধিক নারী-পুরুষ গেলো ঢাকায়!

আপডেট: ০৯:৩৪:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪

ঢাকায় সমাবেশে যোগ দিলেই মিলবে সর্বনিম্ন এক লাখ থেকে কোটি টাকা পর্যন্ত সুদমুক্ত ঋণ। এমন প্রলোভণে রোববার দিবাগত রাত থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত হাজীগঞ্জ থেকে ঢাকায় গিয়েছেন কয়েক শতাধিক সাধারণ নারী-পুরুষ ও কিশোর-কিশোরী। প্রধান উপদেষ্টার তহবিল থেকে বিনা সুদে ঋণ দেওয়া হবে ‘অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশ’ নামের একটি সংগঠনের এমন প্রলোভন দেখিয়ে তাদেরকে ঢাকায় নেওয়া হয়।

জানা গেছে, গত ৫ আগস্টের পর ‘অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশ’ নামের সংগঠনটি হাজীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ও বাসা-বাড়িতে নিরীহ নারী-পুরুষদের টার্গেট করে বিনা সুদে ঋণের প্রলোভন দেখায়। তাদের প্রলোভনে পা দিয়ে ওই সংগঠনের সদস্য হন কয়েক শতাধিক নারী-পুরুষ। এরপর সদস্যরা নিজ নিজ খরচে স্থানীয় পর্যায়ে সভা করেন এবং পরবর্তীতে গত ১৮ আগস্ট দুইটি যাত্রীবাহী বাস ভাড়া করে ঢাকায় সমাবেশে যোগ দেন।

ওই সমাবেশ থেকে ফিরে এসে সংগঠনটির কর্মীরা আরও বেশি সদস্য সংগ্রহ করেন। সদস্যদেরকে বলা হয়, দেশ থেকে পাচার হওয়া বিপুল অর্থ ফেরত নিয়ে আসবেন ড. ইউনূস। সেই টাকায় বিনা সুদে এক লাখ টাকা থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত লোন দেওয়া হবে। বিনা সুদের সেই লোন (ঋণ) পেতে আবেদন করতে হবে নির্ধারিত ফরমে। প্রাথমিকভাবে তাদেরকে নিজ খরচে ২৫ নভেম্বর, সোমবার রাজধানীর শাহবাগে আসতে হবে।

তাদেরকে আরও বলা হয়, যত বেশি টাকা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন, তত বেশি মিলবে ঋণ। এমন প্রলোভনে রোববার দিবাগত রাত থেকে সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত সারা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের নিরীহ মানুষ ঢাকায় আসতে শুরু করেন। তাদের উদ্দেশ্য, বিনা সুদের ঋণ পেতে শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ। এই সমাবেশে যোগ দিতে হাজীগঞ্জ থেকেও ৫টি যাত্রীবাহী বাস’সহ ব্যক্তিগত উদ্যোগে কয়েক শতাধিক নারী-পুরুষ ঢাকায় যান।

তবে সংগঠনটির একাধিক সদস্যরা জানান, ঢাকায় যারা রওনা দিয়েছেন। এর মধ্যে অনেকেই যেতে পারেন নি। তাদেরকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, শিক্ষার্থীরা ফিরিয়ে দিয়েছেন। এর আগে বিষয়টির টের পেয়ে ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট একজনকে আটক করে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ। পরে ৫৪ ধারায় আটক দেখিয়ে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুক।

এ বিষয়ে আমাদের অন্যান্য উপজেলা প্রতিনিধিদের সাথে কথা হলে তারা জানান, আনুষ্ঠানিকভাবে না হলেও অনেক মানুষ ঢাকায় যাওয়ার বিষয়টি শুনেছি। এবং যারা ঢাকায় গিয়েছেন, তারা সকলেই নিরিহ ও খেটে খাওয়া পরিবারের সদস্য। ঢাকায় যারা যাবে, তাদের সবাইকে ‘অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশ’ বিনা সুদে এক লাখ টাকা থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত লোন দেওয়া হবে। এমন প্রলোভনেই লোকজন ঢাকায় গিয়েছেন।

এ দিকে ঋণের প্রলোভন দেখিয়ে নিরীহ লোকজনকে ঢাকায় নেওয়া হলেও সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ সংবাদকর্মীদের জানিয়েছেন ভিন্নকথা। গত শুক্রবার (২২ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরম খাঁ হলে ‘অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশ’ এর ব্যানারে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ জানান, দুর্নীতিবিরোধী বিশেষ আইন প্রণয়ণের দাবিতে ২৫ নভেম্বর (সোমবার) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সংহতি সমাবেশ করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের সদস্য মো. মাহবুবুল আলম চৌধুরী বলেন, দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এক কোটি ৮০ লাখ মানুষের অনুসমর্থনের ভিত্তিতে একটি বিশেষ আইন প্রণয়নের জন্য গত চার বছর ধরে আমাদের এই সংগঠন কাজ করছে। গত ১৮ আগস্ট শাহবাগ চত্বরে এক সংহতি সমাবেশের মাধ্যমে আমরা প্রধান উপদেষ্টা বরাবর এই দুর্নীতিবিরোধী বিশেষ আইনের খসড়া জমা দিয়েছি। এরই ধারাবাহিকতায় একই দাবিতে ২৫ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সংহতি সমাবেশ করবো।

এই সমাবেশে অংশ নিতেই নিরীহ জনসাধারণকে সর্বনিম্ন এক লাখ থেকে কোটি টাকা পর্যন্ত সুদমুক্ত ঋণের প্রলোভন দেখিয়ে ঢাকায় নেওয়া হয়। গত রোববার দিবাগত রাত একটার পর থেকেই হাজীগঞ্জসহ চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও সারাদেশ থেকে বাস, পিক-আপ ও মাইক্রোবাসে করে ঢাকায় আসতে শুরু করে সাধারণ মানুষেরা। তবে ঢাকায় এবং দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পুলিশ ও শিক্ষার্থীরা তাদের বুঝিয়ে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছে।

এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন রান্ধুনীমূড়া গ্রামের মো. নিশান হোসেন নামের একজনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি সংগঠনের সদস্য। এই সংগঠনে আমার মা-বাবা, স্ত্রীসহ ৪’শ সদস্য রয়েছে। আমি কোনো অফিসার না, অটোরিক্সা চালাই। আমাকে বেতন দেওয়ার কথা বলে গতরাতে (রোববার) আমার নামে একটি সিল বানানো হয়। এরপর ওই সিল দিয়ে ৪’শ সদস্য ফরম পূরণ করে ঢাকায় পাঠিয়ে দেই। তবে আমি যাইনি।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আব্দুস সাত্তার নামের শাহারাস্তির একজন ভদ্র লোকের আন্ডারে আমরা সদস্য হয়েছি। এসব কিছু তিনিই তদারকি করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অপর এক সদস্য বলেন, আমি আর তাদের (‘অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশ) সাথে নেই। আমি কাউকে ঢাকায় পাঠাইনি, এমনকি আমি নিজেও ঢাকায় যাইনি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তখন আমরা মাহবুবুল আলম চৌধুরীর নেতৃত্বে কাজ করেছি। যতটুকু জানি, তাঁর বাড়ি চাঁদপুর। তিনিই সংগঠনের সবকিছু দেখা-শুনা করেন। এখন আর আমি এই সংগঠনের সাথে নেই।

তারা উভয় জানান, আব্দুস সাত্তার ও মাহবুবুল আলম চৌধুরী পৃথক ভাবে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করেন। ওনারা দুইজন, দুই গ্রুপের সমন্বয়ক। এবিষয়ে অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের হাজীগঞ্জের একাংশের সমন্বয়ক শাহরাস্তি উপজেলার আব্দুস সাত্তারের মুঠোফোন নম্বর (০১৮৫৯-৫৫২০২১) এবং অপর অংশের সমন্বয়ক চাঁদপুরের মাহবুবুল আলম চৌধুরীর নম্বরটি (০১৭১১-৭৩৪০৯৫) বন্ধ পাওয়ায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, লোকজনকে বেআইনিভাবে জড়ো করা হবে। এমন অভিযোগে একজনকে আটক করে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করেছি।