চাঁদপুর-রায়পুর সড়কের বাগড়া বাজার এলাকায় পকেটমার চক্রের তিন সদস্যকে হাতেনাতে ধরে সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছে জনতা।
বৃহস্পতিবার (২৫ অক্টোবর ) মধ্যরাতে এক যাত্রীর পকেট কেটে টাকা নেয়ার সময় হাতেনাতে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ তাদেরকে আটক করে ভুক্তভোগী ও স্থানীয় জনতা।
আটককৃতরা হলেন-চাঁদপুর শহরের কোড়ালিয়া রোডের বাসিন্দা মো. ইকবাল গাজী (৩০), বাবুরহাট এলাকার বাসিন্দা মোহম্মদ সাগর (২৮) ও ফরিদগঞ্জ উপজেলার চর কুমিরিয়া এলাকার বাসিন্দা সাদ্দাম মিজি (২৭)।
ভুুক্তভোগী চাঁদপুর শহরের আজিজ ব্রাদারস এর কর্মচারী নূর হোসেন জানান, তিনি রাতে কালীবাড়ি থেকে বাড়ীর পথে রওয়ানা দেন। বাগাদী লেবুতলা এলাকায় অটোরিকশা থেকে নামার সময় পকেটের টাকা কম বুঝতে পারেন। তিনি পকেটে দেখেন ১০ হাজার টাকার মধ্যে ৬৩০০ টাকা। পরে সিএনজিতে থাকা দুই যাত্রীকে সন্দেহ করে স্থানীয় জনতাকে নিয়ে তল্লাশী করলে বাকী টাকা পাওয়া যায়। সাথে একটি ব্যাগ ও বিভিন্ন জনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র মিলে।
আরেক ভুক্তভোগী মতলব জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তা শরীফের বাবা। তিনি ব্যাংকে ফেরার পথে তাকে গন্ধর্ব্যস্থলে না নিয়ে নিজ গাছতলা এলাকায় নামিয়ে দেয়। পরে তিনি দেখেন ৩৯০০ টাকাসহ তার এটিএম কার্ড ও আইডি কার্ডটি নেই। তিনিও খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে তিন পকেটমারকে চিনতে পারেন।
অপর ভুক্তভোগী বাগড়া বাজার এলাকার ব্যবসায়ী আকতার হোসেন। তিনি গত মাসের ৮ তারিখ ৮০ হাজার টাকা নিয়ে চাঁদপুর শহরের হাকিম প্লাজার ডাচ বাংলা ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে বেরিয়ে পড়েন। কোথায় যাবেন বলে- তাকে সিএনজির পেছনে সিটে নিয়ে রওয়ানা হয়। পরে তারা মিশন রোড বঙ্গবন্ধু সড়কের ভাঙা অংশে গাড়ি অতিরিক্ত গতিতে চালিয়ে তার পকেট থেকে টাকা বের করে রেল ক্রসিং এলাকায় নামিয়ে দেন। তিনিও খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে তাদেরকে চিনতে পারেন।
তিনি জানান, সিএনজিতে যাত্রী বেশে পাকেট কাটা ছিল তাদের পেশা। দীর্ঘদিন ধরে চাঁদপুর শহর এলাকায় যাত্রী বেশে পাশে বসে পকেট কেটে নিয়ে যায়। কয়েকমাস ধরে চাঁদপুর শহরের আশপাশে এমন অহরহ ঘটনা ঘটে আসছে। এই পকেটমার চক্রের সাথে আরো কয়েকজন জড়িত রয়েছে বলে দাবী তার।
খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার মধ্য রাতে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী একটি দল বাগড়া বাজারে গিয়ে পকেটমার চক্রের বিভিন্ন আলামতসহ তিন সদস্যকে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় নিয়ে যান। ওইসময় পকেটমার চক্রের ব্যবহৃত অটোরিকশা জব্দ করা হয়।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বাহার মিয়া বলেন, রাতে সেনাবাহিনীর একটি দল ও ভুক্তভোগীরা তিন পকেটমারকে নিয়ে থানায় আসেন। পরে ভুক্তভোগী নুর হোসেন বাদী হয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় বাকী ভুক্তভোগীরা স্বাক্ষী হিসেবে রয়েছেন। পকেটমার চক্রের তিন সদস্যকে আটক করা হয়েছে। আজ শুক্রবার তাদেরকে আদালতে পাঠানো হবে। তাদের সাথে থাকা অটোরিকশা থানা হেফাজতে আছে।