অফিস সহকারীর ভুলে প্রধান শিক্ষকে বলি দেয়ার অপচেষ্টা!

ভুল বিশ্লেষণে বিপাকে চির্কা চাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক

চির্কা চাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

ভুল বিশ্লেষণে বিপাকে পড়েছেন চির্কা চাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এম নুরুল আমিন। সহজ সরল মানুষটিকে বিপাকে ফেলতে চতুরতার আশ্রয় নিয়েছে উক্ত প্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারী ফারুক সরকার। উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ সরকার ও পুতুল সরকারের প্রভাব খাটিয়ে অফিস সহকারী প্রতিষ্ঠান প্রধানকে না জানিয়ে যে কাউকে স্কুল ব্যবহার করতে দিতো। সরকার বাড়ির ছেলে বলে তার ভাবসাব থাকতো অন্যরকম।

গত ২৮ আগস্ট সন্ধ্যায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন পালনকে কেন্দ্র করে নয়াহাটে এক অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। ঘটনায় প্রতিষ্ঠান প্রধানকে দায়ী করে অসত্য সংবাদও প্রকাশ করা হয়। ফরিদগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সাহেদ সরকার ও ইউনিয়ন যুবলীগের নেতা পুতুল সরকার, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী ফারুক সরকারের সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠানে জন্মদিন পালন করাহ হয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এম নুরুল আমিনের অনুমতি না নিয়ে কক্ষটি ব্যবহার করতে দেওয়ায় ইতোমধ্যে পিয়নকে শোকজ করা হয়েছে।

অতিতে এমনকী বর্তমানেও রাজনৈতিক দলের লোকেরা অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করে আসছে। বিষয়টি অনেকটা স্বাভাবিক ঘটনা। এটা নিয়ে তেমন আলোচনা বা সমালোচনা হয়নি। কিন্তু একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে যাওয়ায় চির্কা চাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি আলোচনায় আসে। প্রতিষ্ঠান ভ্যানু ব্যবহার করাটা আমাদের সমাজে স্বাভাবিক একটি ঘটনা। তবে কারো প্রতিষ্ঠান অন্য কোনো ব্যাক্তি বা সংগঠন ব্যবহার করতে হলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু কিছু কিছু রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তি ক্ষমতার অপব্যবহার করে, পেশি শক্তি দেখিয়ে জোর করে মিলনায়তন ব্যবহারের ভুরি ভুরি উদাহরণ রয়েছে।

চির্কা চাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এম নুরুল আমিন বলেন, আমাকে নিয়ে পত্রিকায় যে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে তা হিংসা প্রসূত, বিদ্বেষমূলক, অসত্য এবং আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করার নিমেত্তে করা হয়েছে। এ ঘটনার সাথে আমার নূন্যতম কোনো সম্পর্ক নেই। মূলত ওরা (আওয়ামীলীগ) রাতে অনুষ্ঠান করেছে। সে সময় আমি চাঁদপুরে ছিলাম। আমাদের স্কুলের অফিস সহকারী ও নৈশপ্রহরী ফারুক সরকারের সহযোগিতায় তারা প্রতিষ্ঠানে ঢুকে অনুষ্ঠান করে। আমি বিষয়টি জানতাম না। ফারুক আমার অনুমতি না নিয়ে স্কুল কক্ষ তাদেরকে ব্যবহার করতে দিয়েছি। আনঅফিসিয়াল গর্হিত কাজ করায় তাকে ইতোমধ্যে শোকজ করা হয়েছে।

বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী ও নৈশপ্রহরী ফারুক সরকার বাঁচার জন্য দায় প্রধান শিক্ষকের উপর চাপিয়ে বলেন স্যারের অনুমতি নিয়েছি।

স্থানীয়রা জানান, শুধু ঐদিনই নয়; পূর্বেও এই প্রাথমিক বিদ্যালয়টির কক্ষ ও মাঠ ব্যাবহার করে আসছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। ক্ষমতাশীনরা যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজনবোধ মনে করেনি। আর প্রধান শিক্ষক ওতো প্যাঁচের লোক না। তিনি কেন জানি বিষয়গুলো এগিয়ে যেতেন।

বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি ও উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মাহাবুবুর রহমান জানান, বিষয়টি আমি জেনেছি। কেউ যাতে অন্যায়ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না হয় আমরা সেদিকে সজাগ আছি। তবে যে অনাকাক্ষিত ঘটনা ঘটেছে তা দুঃখজনক।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ফাতেমা মেহের ইয়াছমিন বলেন, উনার কোনো দোষ নাই কিন্তু উনি বিষয়টি ডিপাটম্যান্টকে জানাননি। বিষয়টি আমরা জেনেছি। আমরা আমাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়াকে সম্মান জানানোয় গোটা জাতি আনন্দিত-মির্জা ফখরুল

অফিস সহকারীর ভুলে প্রধান শিক্ষকে বলি দেয়ার অপচেষ্টা!

ভুল বিশ্লেষণে বিপাকে চির্কা চাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক

আপডেট: ০৯:২৬:২৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪

ভুল বিশ্লেষণে বিপাকে পড়েছেন চির্কা চাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এম নুরুল আমিন। সহজ সরল মানুষটিকে বিপাকে ফেলতে চতুরতার আশ্রয় নিয়েছে উক্ত প্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারী ফারুক সরকার। উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ সরকার ও পুতুল সরকারের প্রভাব খাটিয়ে অফিস সহকারী প্রতিষ্ঠান প্রধানকে না জানিয়ে যে কাউকে স্কুল ব্যবহার করতে দিতো। সরকার বাড়ির ছেলে বলে তার ভাবসাব থাকতো অন্যরকম।

গত ২৮ আগস্ট সন্ধ্যায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন পালনকে কেন্দ্র করে নয়াহাটে এক অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। ঘটনায় প্রতিষ্ঠান প্রধানকে দায়ী করে অসত্য সংবাদও প্রকাশ করা হয়। ফরিদগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সাহেদ সরকার ও ইউনিয়ন যুবলীগের নেতা পুতুল সরকার, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী ফারুক সরকারের সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠানে জন্মদিন পালন করাহ হয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এম নুরুল আমিনের অনুমতি না নিয়ে কক্ষটি ব্যবহার করতে দেওয়ায় ইতোমধ্যে পিয়নকে শোকজ করা হয়েছে।

অতিতে এমনকী বর্তমানেও রাজনৈতিক দলের লোকেরা অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করে আসছে। বিষয়টি অনেকটা স্বাভাবিক ঘটনা। এটা নিয়ে তেমন আলোচনা বা সমালোচনা হয়নি। কিন্তু একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে যাওয়ায় চির্কা চাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি আলোচনায় আসে। প্রতিষ্ঠান ভ্যানু ব্যবহার করাটা আমাদের সমাজে স্বাভাবিক একটি ঘটনা। তবে কারো প্রতিষ্ঠান অন্য কোনো ব্যাক্তি বা সংগঠন ব্যবহার করতে হলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু কিছু কিছু রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তি ক্ষমতার অপব্যবহার করে, পেশি শক্তি দেখিয়ে জোর করে মিলনায়তন ব্যবহারের ভুরি ভুরি উদাহরণ রয়েছে।

চির্কা চাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এম নুরুল আমিন বলেন, আমাকে নিয়ে পত্রিকায় যে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে তা হিংসা প্রসূত, বিদ্বেষমূলক, অসত্য এবং আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করার নিমেত্তে করা হয়েছে। এ ঘটনার সাথে আমার নূন্যতম কোনো সম্পর্ক নেই। মূলত ওরা (আওয়ামীলীগ) রাতে অনুষ্ঠান করেছে। সে সময় আমি চাঁদপুরে ছিলাম। আমাদের স্কুলের অফিস সহকারী ও নৈশপ্রহরী ফারুক সরকারের সহযোগিতায় তারা প্রতিষ্ঠানে ঢুকে অনুষ্ঠান করে। আমি বিষয়টি জানতাম না। ফারুক আমার অনুমতি না নিয়ে স্কুল কক্ষ তাদেরকে ব্যবহার করতে দিয়েছি। আনঅফিসিয়াল গর্হিত কাজ করায় তাকে ইতোমধ্যে শোকজ করা হয়েছে।

বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী ও নৈশপ্রহরী ফারুক সরকার বাঁচার জন্য দায় প্রধান শিক্ষকের উপর চাপিয়ে বলেন স্যারের অনুমতি নিয়েছি।

স্থানীয়রা জানান, শুধু ঐদিনই নয়; পূর্বেও এই প্রাথমিক বিদ্যালয়টির কক্ষ ও মাঠ ব্যাবহার করে আসছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। ক্ষমতাশীনরা যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজনবোধ মনে করেনি। আর প্রধান শিক্ষক ওতো প্যাঁচের লোক না। তিনি কেন জানি বিষয়গুলো এগিয়ে যেতেন।

বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি ও উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মাহাবুবুর রহমান জানান, বিষয়টি আমি জেনেছি। কেউ যাতে অন্যায়ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না হয় আমরা সেদিকে সজাগ আছি। তবে যে অনাকাক্ষিত ঘটনা ঘটেছে তা দুঃখজনক।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ফাতেমা মেহের ইয়াছমিন বলেন, উনার কোনো দোষ নাই কিন্তু উনি বিষয়টি ডিপাটম্যান্টকে জানাননি। বিষয়টি আমরা জেনেছি। আমরা আমাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।