বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দেশব্যাপী ডাকা অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিন হাজীগঞ্জে আন্দোলনকারীদের সাথে আওয়ামী লীগের ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন টোরাগড় এলাকায় শিক্ষার্থীসহ অন্যরা সড়ক অবরোধ করলে সেখানে মিছিল নিয়ে অবস্থান নিয়ে যায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সাথে আন্দোলনকারীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
পরে আন্দোলনকারীদের সাথে পুলিশ ও সাংবাদিকরা কথা বললে তারা কিছুটা নিবৃত হয়। কিন্তু পেছন থেকে আবারো পুলিশ ও সাংবাদিকদের ঘিরে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও গুলি করা শুরু করলে পুলিশ বাধ্য হয়ে পিঁছু হটে। এক পর্যায়ে দূর্বৃত্তরা টোরাগড় আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আগুন দেয়।
পরে হাজীগঞ্জ পৌরসভার গেইট ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে পৌর মেয়রের গাড়ী, বিদ্যুত মেরামতের ডিজিটালাইজড পিকআপসহ ৩টি গাড়ীতে আগুন ধরি দেয়। এ ছাড়াও পৌরসভা ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। এ সময় পৌরসভার ভেতরে থাকা ৬টি মোটর সাইকেল ও আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে থাকা ২টি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয় দূর্বৃত্তরা।
পৌরসভায় আগুন দেয়ায় পৌরভবনে আটকা পড়েন পৌর মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আ স ম মাহবুব-উল আলম লিপন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হেলালউদ্দিন মিয়াজীসহ পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ। পরে পৌরসভার দ্বিতীয় তলার পেছন দিয়ে জানালা ভেঙ্গে তাদের উদ্ধার করে পুলিশ। খবর পেয়ে হাজীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস পুলিশের সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ততক্ষণে পৌরসভার সকল গাড়ী পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
পৌরসভার মেয়র আ স ম মাহবুব-উল আলম লিপনকে হাজীগঞ্জ বিসমিল্লাহ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
হাজীগঞ্জ পূর্ব বাজার থেকে সরকারি পাইলট হাইস্কুল এন্ড কলেজের গেইট পর্যন্ত এক ভয়াবহ দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। পুরো সড়ক জুড়ে আগুন আর আগুন। এ সময় দূর্বৃত্তরা টোরাগড় এলাকায় রাস্তার দু’ধারে অবস্থিত বিভিন্ন দোকাপাটে ভাংচুর আগুন লাগিয়ে দেয়।
এ দিকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় টোরাগড় এলাকায় বিভিন্ন মাইকে ঘোষণা দেয়া হয় টোরাগড় ৮নং ওয়ার্ড দক্ষিণপাড়ার সরকার বাড়ী আনু মিয়ার ছেলে আজাদ সরকার (৪৮) চিকিৎসাধীন অবস্থায় কুমিল্লা ট্রমা হসাপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। দুপরে সংঘর্ষের সময় দূর্বৃত্তদের চুরির আঘাতে গুরুতর আহত হয়েছিল আজাদ সরকার। এ ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্দরা টোরাগড় এলাকার আওয়ামী সমর্থিত কাজী বাড়ীর সামনে ব্যাপক ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করে । এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ভয়াবহ পরিস্থিতি চলছে।
আন্দোলনকারীদের সাথে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় পুলিশ, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশার অর্ধশতাধীক ব্যক্তি আহত হয়েছে।
এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ আবদুর রশিদ বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাপস শীল স্যার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পঙ্কজ কুমার দে স্যার সহ আমরা টোরাগড় এলাকায় অবস্থান নিয়েছে। আমাদের অনেক পুলিশ আহত হয়েছে।