হাজীগঞ্জের রাজারগাঁও ইউনিয়ের আহমেদাবাদ (রামরা) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বেঞ্চ (পড়ার টেবিল) সংকটের সমাধান করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার তদারকিতে রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে ৩৪ জোড়া বেঞ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, রাজারগাঁও ইউনিয়নের ক্লাস্টারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শাহজাহান ভুঁইয়া।
জানা গেছে, ওই ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে মেরামতযোগ্য ৩৪ জোড়া বেঞ্চ সংগ্রহ এবং দ্রুত সময়ে বেঞ্চগুলো মেরামতের মাধ্যমে ব্যবহার উপযোগী করে আহমেদাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে হস্তান্তর করা হয়। এর আগে ‘হাজীগঞ্জে বেঞ্চ সংকটে মেঝেতে ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা’ এমন শিরোনামে জাতীয় ও স্থানীয় প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হয়।
এমন সংবাদ উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টিগোচর হলে উপজেলা শিক্ষা অফিস দ্রুততম সময়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এদিকে বিদ্যালয়ে ৩৪ জোড়া বেঞ্চ পেয়ে শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা খুশি। আপাতত সমস্যার সমাধানে তারা উপজেলা প্রশাসন ও শিক্ষা অফিসের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং বিদ্যালয়ের সীমান প্রাচীর নির্মাণ ও শিক্ষক সংকট দূরীকরণে তড়িৎ ব্যবস্থাগ্রহণে সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানান।
এদিন দুপুরে সরজমিন পরিদর্শন করে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের তিনটি শ্রেণিকক্ষে বেঞ্চে বসে ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে একটি শ্রেণিকক্ষে প্রধান শিক্ষক এবং অপর দুইটি শ্রেণিকক্ষে দুইজন সহকারী শিক্ষক (শিক্ষিকা) পাঠদান করাচ্ছেন। এসময় শিক্ষার্থীদের সাথে কথা হলে তারা জানান, আজ সকালে শ্রেণিকক্ষে এসে তারা বেঞ্চগুলো দেখতে পেয়েছেন। এজন্য সবাই খুশি।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মাহমুদ হাছান মোস্তফা জানান, আমাদের পুরানো টিনশেড ভবন ও শ্রেণিকক্ষে থাকা অধিকাংশ বেঞ্চগুলো ব্যবহার ও মেরামতের অনুপযোগী হয়ে গেছে। কয়েক মাস আগে আমাদের নতুন ভবনের উদ্বোধন করা হয়েছে। এই নতুন ভবনের সাথে নতুন বেঞ্চেরও বরাদ্দ আছে। কিন্তু বেঞ্চগুলো পেতে সময় লাগছে। কারণ, আগে বেঞ্চগুলো ভবন নির্মাণের ঠিকাদার দিতেন, আর এখন জেলা শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে।
রাজারগাঁও ইউনিয়নের ক্লাস্টারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শাহজাহান ভুঁইয়া বলেন, আমার ক্লাস্টারে ৪৫টি বিদ্যালয় রয়েছে, আর আমি কয়েকমাস হলো দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। এর মধ্যে সবকটি বিদ্যালয় একাধিকবার পরিদর্শন করেছি। পরিদর্শনকালীন সময়ে এই বিদ্যালয়টিতে (আহমেদাবাদ সপ্রাবি) কিছু বেঞ্চ সংকট দেখতে পেয়ে পাশাপাশি কয়েকটি বিদ্যালয় থেকে মেরামতযোগ্য ৩৪ জোড়া বেঞ্চ সংগ্রহ করেছি।
তিনি বলেন, সংগ্রহকৃত বেঞ্চগুলো মেরামত করতে কিছুদিন সময় লেগেছে। এর মধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয় বিষয়টি জানতে পেরেছেন। পরবর্তীতে স্যারের নির্দেশনা এবং উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার মহোদয়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে আমরা দ্রুততম সময়ে বেঞ্চগুলো মেরামত করে ব্যবহার উপযোগি করি। এরপর আজ (রোববার) ক্লাশ শুরুর আগেই বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে বেঞ্চগুলো সাজানো হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাশেদুল ইসলাম জানান, জেলা প্রশাসক স্যারের নজরে কোন একটা সংবাদ এসেছে। পরবর্তীতে স্যারের নির্দেশনায় বিদ্যালয়ে বেঞ্চের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এটি একটি সাময়িক সমস্যা। আমি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এবং ওই ক্লাস্টারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে কথা বলে বলেছি। আশাকরি, আগামি মাসের মধ্যেই নতুন ভবনের সাথে বরাদ্দকৃত বেঞ্চগুলো চলে আসবে। বাকি যেসব সমস্যা আছে, তা পর্যায়ক্রমে সমাধান করা হবে।