গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের হল থেকে গাঁজার গাছ উদ্ধারের ঘটনায় তোলপাড় চলছে। গত শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) রাতে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার হলের ৪১৩ নম্বর কক্ষ থেকে গাঁজার গাছটিউদ্ধার করা হয়। ঘটনা অনুসন্ধানে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার হলের ৪১৩ নম্বর কক্ষে একটি টবের মধ্যে একটি বড় আকারের গাঁজার গাছ দেখতে পেয়ে শিক্ষার্থীরা। এরপর তারা বিষয়টি হল কর্তৃপক্ষকে জানায়। পরে হল প্রাধ্যক্ষ আব্দুস সালাম গাঁজার গাছটি উদ্ধার করেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে একটি গ্রুপ প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়ায় মাদকের ব্যবসা করে আসছে। বিষয়টি সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে অসংখ্যবার হল প্রশাসনকে জানানো হলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
শিক্ষার্থীরা জানান, যে কক্ষ থেকে গাঁজা গাছ উদ্ধার করা হয়, সে রুমে বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ উন্নয়ন অনুষদের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রাফিম খান থাকেন। ছাত্রশৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে ২০২২ সালের ২৭ এপ্রিল সামার-২০২১ টার্মের ফাইনাল পরীক্ষায় নিষেধাজ্ঞা এবং শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার হল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একটি অংশের সহযোগিতায় তিনি সামার ২০২১ টার্মের ফাইনাল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন এবং আবাসিক হলে অবৈধভাবে রয়েছেন।
এদিকে গাঁজা গাছের চারা উদ্ধার হওয়ার কয়েকদিন পার হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন রাফিম খানের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়নি। এ নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এ বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। প্রভাবশালী এই গ্রুপটির কারণে বঙ্গবন্ধুর নামে প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘ দিনের সুনাম এখন হুমকির মুখে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ফারহানা হক বলেন, উদ্ধার হওয়া গাছটি গাঁজার গাছ কি না, তা উদ্ভিদবীদরা বলতে পারবেন। এ ব্যাপারে একটি তদন্ত কমিটি কাজ করছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গিয়াস উদ্দিন মিয়া বলেন, এখানে ছাত্রলীগের দুটি গ্রুপ রয়েছে। কীভাবে এ ঘটনা ঘটলো, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ জন্য ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে যারা দোষী প্রমাণিত হবে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।