শাহরাস্তি প্রতিনিধি॥
চাঁদপুরের অবরুদ্ধ করে রাখে। শনিবার দুপুরে পৌর আওয়ামী লীগের আহবায়ক ও পৌর মেয়রের বাস ভবনে এ ঘটনা ঘটে। এছাড়া কয়েকটি ইউনিয়নে ও ওয়ার্ডে গিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের মারধর করে যুবলীগ নেতাকর্মীরা ফরম ছিনিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, কেন্দ্র ও জেলা আওয়ামী লীগের নির্দেশে শনিবার সকাল থেকে উপজেলা আওয়ামী লীগ প্রতিটি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে দলের সদস্য ফরম বিক্রি শুরু করেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফরম পূরনের জন্য অঙ্গ ও সহযোগী সংঠনের নেতাকর্মীদের পদ পদবী ত্যাগ করে প্রমাণ পত্র নিয়ে ফরম সংগ্রহের নির্দেশনা দেওয়া হয়। এই শর্ত জুড়ে দেওয়ায় যুবলীগের নেতাকর্মীরা বিক্ষুব্দ হয়। তারা সূচীপাড়া উত্তর, টামটা উত্তর ও দক্ষিন ইউনিয়ন এবং কয়েকটি ওয়ার্ডে গিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাদের কাছ থেকে জোরপূর্বক ফরম ছিনিয়ে নেয়। এ সময় তাদের হাতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা নাজেহাল হয়। সূচীপাড়া উত্তর ইউনিয়নে সদস্য ফরম ক্রয় করায় নজরুল ইসলাম (৪৫) এক নেতাকে বেদম মারধর করেন তারা। নজরুল পরে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছে।
আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন ইউনিয়নে ফরম বিক্রি বন্ধ করে দেওয়ার পর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান ফরিদ উল্লাহ চৌধুরী, সহসভাপতি মোস্তফা কামাল মজুমদার, সাধারন সম্পাদক মোঃ কামরুজ্জামান মিন্টু, পৌর আওয়ামী লীগের আহবায়ক ও পৌর মেয়র আব্দুল লতিফ, উপজেলা আওয়মী লীগের সদস্য হূমায়ন কবির মজুমদার ও সালেহ আহম্মদ পৌর মেয়রের বাসভবনে বসেন। এ সময় পৌর যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক তুষার চৌধুরীর নেতৃত্বে যুবলীগের নেতারা সেখানে হাজির হয়। ফরম পূরন নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে তুমুল বাকবিতন্ডা হয়। যুবলীগের নেতা কর্মীরা নেতাদের সামনে শ্লোগান দেন তালিবালি করিস না পিঠের চামড়া থাকবে না। তাদের বাকবিতন্ডার বিষয়টি ছাত্রলীগ নেতা সাজিদ মাহমুদ সাদ্দামের ফেসবুক পোষ্ট থেকে ভাইরাল হয়। এ ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক কামরুজ্জামান মিন্টু বলেন দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী অঙ্গ ও সহযোগী সংঠনের নেতাকর্মীরা মূল দলের সদস্য হওয়ার জন্য ঐ সংগঠন থেকে পদত্যাগ করতে হবে। বিষয়টি তারা মানতে চাচ্ছে না। তারা জোরপূর্বক বিভিন্ন ইউনিয়নে গিয়ে আওয়ামীলীগ নেতাদের নাজেহাল করে ফরম ছিনিয়ে নিয়েছে। যে কারণে সদস্য ফরম পূরন স্থগিত রাখা হয়েছে।
কামরুজ্জামান মিন্টু আরো বলেন। আমরা সাথে সাথে ঘটনাটি চট্টগ্রাম বিভাগের সাংগঠনিক দায়িত্বে থাকা দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ন সাধারন সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফকে জানিয়েছি। তিনি কোনভাবেই যুবলীগ নেতাদের ফরম না দেওয়ার নির্দেশনা দেন । পরে রাতে স্থানীয় সংসদ সদস্য মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তমের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হয়। তিনিও যুবলীগের দাবীর সাথে একমত হননি। আর যুবলীগের অশালীন ও আওয়ামী লীগ নেতাদের অবরোধ করার বিষয়টি যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের জানানো হয়েছে। তারা আস্বাস দিয়েছেন, এ বিষয়ে তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।
টামটা দক্ষিন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোঃ শফিকুর রহমান মজুমদার অভিযোগ করে বলেন, আমার ইউনিয়নে ৩নং ওয়ার্ডে ফরম বিক্রির সময় সভাপতি নজু গাজীর কাছ থেকে যুবলীগের নেতাকর্মীরা জোরপূর্বক ফরম ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, মান সম্মান নিয়ে এখন আর রাজনীতি করা যাবে না।
তবে উপজেলা যুবলীগের এক নম্বর যুগ্ম আহবায়ক ও টামটা উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক দর্জি বলেন, অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা পদত্যাগ করে মূল দলের সদস্য ফরম সংগ্রহ করতে হবে। এ নিয়ম আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রে নেই। উপজেলা আওয়ামী লীগ যুবলীগ নেতাদের সদস্যপদ ঠেকাতে এ ব্যবস্থা নিয়েছেন। তিনি বলেন, শাহরাস্তিতে এখনও অনেক নেতা মূলদল ও সহযোগী সংঠনের পদ নিয়ে আছেন। আওয়ামী লীগ নেতাদের অপমান ও অপদস্থ করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি মেয়রের বাসভবনে যাইনি। সেখানে কি ঘটেছে আমার জানা নেই।