পাতিলে পাথর ‘রাঁধছেন’ মা, চুলার পাশে অপেক্ষায় ৮ সন্তান

  • আপডেট: ১০:২৬:২০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ মে ২০২০
  • ২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

করোনারভাইরাসে প্রাদুর্ভাবের কারণে বন্ধ হয়ে গেছে উপার্জন। ক্ষুধার্থ সন্তানের মন তো আর তা বোঝে না; তাই বাধ্য হয়েই খাবার রান্নার ছলে পাথর জ্বালাচ্ছিলেন এক মা। ভেবেছিলেন- খাবার রান্না হচ্ছে দেখতে দেখতেই হয়তো ঘুমিয়ে পড়বে তারা!

কেনিয়ার উকূলীয় মোম্বাসা এলাকার ওই হতভাগ্য নারীর এক প্রতিবেশীর মাধ্যমে সম্প্রতি টেলিভিশনে এই মর্মস্পর্শী খবর প্রচার হওয়ার পর তা ছড়িয়ে পড়ে। অবশেষে তাকে সহায়তার জন্য হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন অসংখ্য মানুষ।

বিবিসি বলছে, পেনিনাহ বাহতী কিতসাও স্থানীয় একটি লন্ড্রিতে কাজ করতেন। তবে করোনা পরিস্থিতিতে তার এই কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। তার প্রতিবেশী পাথর ‘রান্নার’ খবর জানতে পেরে কেনিয়ার এনটিভিকে বিষয়টি জানান। এরপরই এতে তার সাক্ষাতকার প্রচারিত হয়।

আট সন্তানের এই জননী লিখতে পড়তে জানেন না। টেলিভিশনে সাক্ষাতকার প্রচারের পর তার সহায়তায় এগিয়ে আসেন অনেকে। এক পর্যায়ে মোবাইল ফোনে এবং ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়া হয় তার। পরে এর মাধ্যমে অর্থিক সহায়তা পান তিনি।

পানি-বিদ্যুতহীন দুই কক্ষের একটি বাসায় থাকা কিতসাওয়ের জীবনে এমন সহায়তা পাওয়ার ঘটনা ‘অলৌকিক’ বলে মনে করছেন তিনি।

তিনি বলেন, কেনিয়ার মানুষ এত ভালোবাসা জানাবে আমি বিশ্বাসই করিনি। সারাদেশ থেকে ফোন এসেছে; সবাই জানতে চেয়েছন কিভাবে তারা সহায়তা করতে পারে। এই নারী বলেন, দীর্ঘসময় ধরে যখন রান্নার অভিনয় করছিলাম তখন আমার সন্তানের বলছিল- তুমি মিথ্যা বলছো। আমি বলতে পারিনি; আমার কিছুই করার ছিল না।

শিশুদের কান্নার শব্দে এক পর্যায়ে তার প্রতিবেশী প্রিসকা মোমানিই তাদের বাড়িতে আসেন। এ সময় তিনি ঘটনাটি দেখতে পান।

করোনার প্রাদুর্ভাবে নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোকে সহায়তা দিয়েছে কেনিয়ার সরকার; তবে এই নারীর ঘর পর্যন্ত তা পৌঁছেনি। গত বছর সন্ত্রাসীদের হাতে তার স্বামী নিহত হন। এরপর থেকেই আট সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন তিনি। (বিবিসি)

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

হাজীগঞ্জে বাজার তদারকি অভিযানে ২ প্রতিষ্ঠানকে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা

পাতিলে পাথর ‘রাঁধছেন’ মা, চুলার পাশে অপেক্ষায় ৮ সন্তান

আপডেট: ১০:২৬:২০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ মে ২০২০

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

করোনারভাইরাসে প্রাদুর্ভাবের কারণে বন্ধ হয়ে গেছে উপার্জন। ক্ষুধার্থ সন্তানের মন তো আর তা বোঝে না; তাই বাধ্য হয়েই খাবার রান্নার ছলে পাথর জ্বালাচ্ছিলেন এক মা। ভেবেছিলেন- খাবার রান্না হচ্ছে দেখতে দেখতেই হয়তো ঘুমিয়ে পড়বে তারা!

কেনিয়ার উকূলীয় মোম্বাসা এলাকার ওই হতভাগ্য নারীর এক প্রতিবেশীর মাধ্যমে সম্প্রতি টেলিভিশনে এই মর্মস্পর্শী খবর প্রচার হওয়ার পর তা ছড়িয়ে পড়ে। অবশেষে তাকে সহায়তার জন্য হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন অসংখ্য মানুষ।

বিবিসি বলছে, পেনিনাহ বাহতী কিতসাও স্থানীয় একটি লন্ড্রিতে কাজ করতেন। তবে করোনা পরিস্থিতিতে তার এই কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। তার প্রতিবেশী পাথর ‘রান্নার’ খবর জানতে পেরে কেনিয়ার এনটিভিকে বিষয়টি জানান। এরপরই এতে তার সাক্ষাতকার প্রচারিত হয়।

আট সন্তানের এই জননী লিখতে পড়তে জানেন না। টেলিভিশনে সাক্ষাতকার প্রচারের পর তার সহায়তায় এগিয়ে আসেন অনেকে। এক পর্যায়ে মোবাইল ফোনে এবং ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়া হয় তার। পরে এর মাধ্যমে অর্থিক সহায়তা পান তিনি।

পানি-বিদ্যুতহীন দুই কক্ষের একটি বাসায় থাকা কিতসাওয়ের জীবনে এমন সহায়তা পাওয়ার ঘটনা ‘অলৌকিক’ বলে মনে করছেন তিনি।

তিনি বলেন, কেনিয়ার মানুষ এত ভালোবাসা জানাবে আমি বিশ্বাসই করিনি। সারাদেশ থেকে ফোন এসেছে; সবাই জানতে চেয়েছন কিভাবে তারা সহায়তা করতে পারে। এই নারী বলেন, দীর্ঘসময় ধরে যখন রান্নার অভিনয় করছিলাম তখন আমার সন্তানের বলছিল- তুমি মিথ্যা বলছো। আমি বলতে পারিনি; আমার কিছুই করার ছিল না।

শিশুদের কান্নার শব্দে এক পর্যায়ে তার প্রতিবেশী প্রিসকা মোমানিই তাদের বাড়িতে আসেন। এ সময় তিনি ঘটনাটি দেখতে পান।

করোনার প্রাদুর্ভাবে নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোকে সহায়তা দিয়েছে কেনিয়ার সরকার; তবে এই নারীর ঘর পর্যন্ত তা পৌঁছেনি। গত বছর সন্ত্রাসীদের হাতে তার স্বামী নিহত হন। এরপর থেকেই আট সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন তিনি। (বিবিসি)