বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনায় ঈদ উদযাপন করছেন চাঁদপুরের ৪২ গ্রামের মানুষ

  • আপডেট: ০৪:৫৩:০৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জুন ২০১৯
  • ৮২
মোঃ মহিউদ্দিন আল আজাদ:

বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনায় চাঁদপুরের ৫ উপজেলার ৪২টি গ্রামে আজ মঙ্গলবার পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে।

সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে দীর্ঘ ৯০ বছর যাবৎ এসব গ্রামে আগাম রোজা শুরু ও ঈদ পালিত হয়ে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় এবারও একদিন আগে রোজা রাখা শুরু করেন এসব গ্রামের মানুষ।
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ, ফরিদগঞ্জ, মতলব উত্তর, শাহরাস্তি ও কচুয়া উপজেলার ৪২টি গ্রামের অর্ধ লক্ষাধিক মুসলিম আজ ঈদ উদযাপন করছেন।
হাজীগঞ্জের সাদ্রা গ্রামের সাদ্রা হামিদিয়া সিনিয়র মাদরাসা প্রাঙ্গণ, মুন্সীরহাট জামে মসজিদ, টোরা মুন্সীরহাট ঈদগাহ ময়দানসহ বিভিন্ন স্থানে ঈদের জামাত সকাল সাড়ে ৯টায় ও ১০টায় শুরু হবে। ঈদকে ঘিরে বিভিন্ন এলাকায় মেলাও বসেছে।

১৯২৮ সালে হাজিগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা দরবারের মরহুম পীর মাওলানা ইসহাক (রহঃ) প্রথম বাংলাদেশে এ মতটি চালু করেন। পরবর্তীতে তাঁর অনুসারী হয়ে এসব অঞ্চলের মুসলমানগন চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল প্রতিটি ধর্মীয় উৎসব সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে পালন করে থাকেন।

এসব অঞ্চলের ঈদগাহের ইমামগণ সূত্রে জানা যায় বাংলাদেশ থেকে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর প্রাণকেন্দ্র সৌদি আরবের ভূ-খ- অনেকটা উচ্চতা থাকায় সৌদি আরব বাসিন্দারা সাধারণত আগে চাঁদ দেখে থাকেন এছাড়া এসব অঞ্চলের ইমামগণ বিজ্ঞানগত আরো যুক্তি পেশ করে বলেন বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের সময়গত পার্থক্য ২ ঘন্টা ৪৮ মিনিট ৪৬ সেকেন্ড তাই আমরা বাংলাদেশে ইসলামের অনুসারী হয়ে সামান্য সময় পার্থক্যের কারণে রোজা ও ঈদ পালনে ১দিন অপেক্ষা করতে পারেন না।

উক্ত মতের প্রবক্তা মরহুম পীর মাওলানা ইসহাক (রহঃ) ফতোয়ার কিতাব অনুসারে আরো জানা যায় মাজহাবের মাসায়ালা ভিন্নতায় তিনি এ মতটি চালু করেন। তিনি ইমামুল আজম আবু হানিফা (রহঃ) এর মাসায়ালা “পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে চাঁদ দেখা গেলে রোজা রাখা ও ঈদ পালন কর” এর অনুসারে তিনি তাঁর মতটি সকলের নিকট প্রসিদ্ধ করার চেষ্টা করার পাশাপাশি পালন করতেন।

যদিও মতটি বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও বাংলাদেশের আলেমগণ গ্রহণ না করে রাসূল (সঃ) এর হাদীস “চাঁদ দেখে রোজা রাখ ও চাঁদ দেখে রোজা ভঙ্গ কর” এর অনুকরণে ইমাম আবু হানিফা (রহঃ) এর ফতোয়া পরিবর্তন করেন। তাই বাংলাদেশের ইজতেহাদী (গবেষক) ওলামায়ে কেরামগণ ও বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশন উক্ত ফতোয়া গ্রহণ করেন নি।

এ দিকে বিষয়টি নিয়ে প্রাথমিক বছরগুলোতে বিতর্ক সৃষ্টি হলেও এখন আর তা হচ্ছে না। তবে প্রতি বছর দু’ঈদে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থতি সুষ্ঠ রাখার স্বার্থে ওইসব অঞ্চলের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ঈদগাহে পুলিশ প্রশাসনের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।

তবে একই ভূ-খণ্ডে ২ দিনে একই ধর্মীয় উৎসব পালন করায় বিষয়টি স্বাভাবিক মেনে নিতে না পেরে সাধারণ মানুষ অনেকই নানা মন্তব্য করে থাকেন

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

‘ম্যানেজ করে’ এক সাথে দুই স্বামীর সংসার করছিলেন জান্নাতুল!

বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনায় ঈদ উদযাপন করছেন চাঁদপুরের ৪২ গ্রামের মানুষ

আপডেট: ০৪:৫৩:০৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জুন ২০১৯
মোঃ মহিউদ্দিন আল আজাদ:

বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনায় চাঁদপুরের ৫ উপজেলার ৪২টি গ্রামে আজ মঙ্গলবার পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে।

সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে দীর্ঘ ৯০ বছর যাবৎ এসব গ্রামে আগাম রোজা শুরু ও ঈদ পালিত হয়ে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় এবারও একদিন আগে রোজা রাখা শুরু করেন এসব গ্রামের মানুষ।
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ, ফরিদগঞ্জ, মতলব উত্তর, শাহরাস্তি ও কচুয়া উপজেলার ৪২টি গ্রামের অর্ধ লক্ষাধিক মুসলিম আজ ঈদ উদযাপন করছেন।
হাজীগঞ্জের সাদ্রা গ্রামের সাদ্রা হামিদিয়া সিনিয়র মাদরাসা প্রাঙ্গণ, মুন্সীরহাট জামে মসজিদ, টোরা মুন্সীরহাট ঈদগাহ ময়দানসহ বিভিন্ন স্থানে ঈদের জামাত সকাল সাড়ে ৯টায় ও ১০টায় শুরু হবে। ঈদকে ঘিরে বিভিন্ন এলাকায় মেলাও বসেছে।

১৯২৮ সালে হাজিগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা দরবারের মরহুম পীর মাওলানা ইসহাক (রহঃ) প্রথম বাংলাদেশে এ মতটি চালু করেন। পরবর্তীতে তাঁর অনুসারী হয়ে এসব অঞ্চলের মুসলমানগন চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল প্রতিটি ধর্মীয় উৎসব সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে পালন করে থাকেন।

এসব অঞ্চলের ঈদগাহের ইমামগণ সূত্রে জানা যায় বাংলাদেশ থেকে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর প্রাণকেন্দ্র সৌদি আরবের ভূ-খ- অনেকটা উচ্চতা থাকায় সৌদি আরব বাসিন্দারা সাধারণত আগে চাঁদ দেখে থাকেন এছাড়া এসব অঞ্চলের ইমামগণ বিজ্ঞানগত আরো যুক্তি পেশ করে বলেন বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের সময়গত পার্থক্য ২ ঘন্টা ৪৮ মিনিট ৪৬ সেকেন্ড তাই আমরা বাংলাদেশে ইসলামের অনুসারী হয়ে সামান্য সময় পার্থক্যের কারণে রোজা ও ঈদ পালনে ১দিন অপেক্ষা করতে পারেন না।

উক্ত মতের প্রবক্তা মরহুম পীর মাওলানা ইসহাক (রহঃ) ফতোয়ার কিতাব অনুসারে আরো জানা যায় মাজহাবের মাসায়ালা ভিন্নতায় তিনি এ মতটি চালু করেন। তিনি ইমামুল আজম আবু হানিফা (রহঃ) এর মাসায়ালা “পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে চাঁদ দেখা গেলে রোজা রাখা ও ঈদ পালন কর” এর অনুসারে তিনি তাঁর মতটি সকলের নিকট প্রসিদ্ধ করার চেষ্টা করার পাশাপাশি পালন করতেন।

যদিও মতটি বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও বাংলাদেশের আলেমগণ গ্রহণ না করে রাসূল (সঃ) এর হাদীস “চাঁদ দেখে রোজা রাখ ও চাঁদ দেখে রোজা ভঙ্গ কর” এর অনুকরণে ইমাম আবু হানিফা (রহঃ) এর ফতোয়া পরিবর্তন করেন। তাই বাংলাদেশের ইজতেহাদী (গবেষক) ওলামায়ে কেরামগণ ও বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশন উক্ত ফতোয়া গ্রহণ করেন নি।

এ দিকে বিষয়টি নিয়ে প্রাথমিক বছরগুলোতে বিতর্ক সৃষ্টি হলেও এখন আর তা হচ্ছে না। তবে প্রতি বছর দু’ঈদে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থতি সুষ্ঠ রাখার স্বার্থে ওইসব অঞ্চলের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ঈদগাহে পুলিশ প্রশাসনের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।

তবে একই ভূ-খণ্ডে ২ দিনে একই ধর্মীয় উৎসব পালন করায় বিষয়টি স্বাভাবিক মেনে নিতে না পেরে সাধারণ মানুষ অনেকই নানা মন্তব্য করে থাকেন