ওমর ফারুক সাইম, কচুয়া॥
কচুয়ার ১শ’৭১ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বুধবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ৪ ঘন্টা (অর্ধদিবস) কর্মবিরতি পালন করছে শিক্ষকরা। প্রধান শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড ও সহকারি শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড নিশ্চিতকরনের দাবীতে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদের ব্যানারে কচুয়া উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষকবৃন্দ টানা ৩য় দিনের মত কর্মবিরতি পালন করেন।
এতে শিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ৬০ নং কোয়া কোর্ট মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ শ্রেণির শিক্ষার্থী আদিবা সুলতানা এ প্রতিবেদককে বলেন, শিক্ষকরা ক্লাস বর্জন করায় আমরা পড়ালেখা থেকে পিছিয়ে পরছি। তাছাড়া নভেম্বর মাসে আমাদের প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা। ক্লাস না হওয়ার কারনে আমাদের সিলেবাস শেষ করতে সমস্যা হবে। আমাদের নানা দিক থেকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে বেতনবৈষম্য নিরসনের দাবিতে দেশজুড়ে শিক্ষকরা কর্মবিরতি পালন করছেন। প্রথম দিন সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত ২ ঘন্টা কর্মবিরতি পালন করলেও দ্বিতীয় মঙ্গলবার ৩ ঘন্টা ও তৃতীয় দিন ৪ ঘন্টা (অর্ধদিবস) শিক্ষকরা ক্লাস বর্জন করে নিজ নিজ স্কুলে এ কর্মবিরতিতে অংশগ্রহণ করেছেন। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ১৪টি সংগঠন নিয়ে গঠিত বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদের ব্যানারে দেশব্যাপী কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষকরা।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বর্তমানে প্রধান শিক্ষক জাতীয় বেতন স্কেলে ১১তম গ্রেড ও সহকারী শিক্ষকরা ১৪তম গ্রেডে বেতন পান। তাদের মধ্যে বেতনের ব্যবধান তিন ধাপ। এটি কমিয়ে প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেড ও সহকারী শিক্ষকদের বেতন ১১তম গ্রেডে করার জন্য শিক্ষকরা দাবি জানিয়ে আসছেন। গত ৬ অক্টোবর এ দাবিতে তারা কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
সে হিসেবে গত সোমবার (১৪ অক্টোবর) থেকে তারা কর্মবিরতি শুরু করেন। ঘোষণা অনুযায়ী দাবি মানা না হলে সোমবার দুই ঘন্টা, মঙ্গলবার তিন ঘণ্টা, বুধবার অর্ধদিবস এবং বৃহস্পতিবার পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালন করবেন শিক্ষকরা। এরপরও দাবি মানা না হলে ২৩ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশ পালন করার কর্মসূচি রয়েছে। সারা দেশে বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৬৫ হাজার ৯৯টি।
এ দিকে আন্দোলনরত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ সংক্রান্ত প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের আদেশ রয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব শামসুদ্দীন মাসুদ বলেন, ব্যবস্থা নিলে চার লাখ শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। কারণ সারা দেশের সব শিক্ষক এ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন।
ব্যবস্থা গ্রহণের আদেশ সংক্রান্ত চিঠির পরও তাদের পরবর্তী কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, কর্মসূচি চলবে। সরকার আমাদের দাবি মেনে নিলেই কেবল কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হবে।
অর্ধদিবস কর্মবিরতির বিষয়ে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদ কচুয়া শাখা কমিটির সদস্য সচিব ও বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি ওমর খৈয়াম বাগদাদী রুমি বলেন, আমাদের এ ২ দফা দাবির প্রেক্ষিতে সারাদেশে সোমবার ২ঘন্টা, মঙ্গলবার ৩ঘন্টা, বুধবার অর্ধদিবস, বৃহস্পতিবার পূর্ন দিবস কর্মবিরতি পালন করবো। দাবী মানা না হলে ২৩ অক্টোবর ঢাকায় মহা সমাবেশে ঘোষনা দেয়া হয়েছে। আমরা কেন্দ্রিয় কমিটির ঘোষনানুযায়ী কর্ম বিরতি পালন করছি। আমাদের যৌক্তিক দাবী সরকার মেনে না নিলে কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। সরকারকে আমাদের এ দাবী মেনে নিতে হবে।