বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিককে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে শোকজ করেছে দলটি। রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) বিএনপির দপ্তর সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে। এদিকে জেলা বিএনপির সভাপতি মানিক শোকজের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমাকে বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে শোকজের বিষয়টি জানানো হয়েছে। আমি আজ-কালের মধ্যেই উত্তর দেব।
তিনি আরও বলেন, সাংবাদিক জুলকারনাইনের অনুরোধে দুপক্ষের কিছু ঝামেলা আমি মীমাংসা করতে গিয়ে এ বিব্রত অবস্থায় পড়েছি। আমার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই। আশা করছি, দল আমার জবাবে সন্তুষ্ট হবে।
প্রসঙ্গত, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মানিককের বিরুদ্ধে জুলকারনাইন সায়ের নামের এক ব্যক্তি তাদের পৈতৃক সম্পত্তি দখলের অভিযোগ তোলেন।
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) ফেসবুকে জুলকারনাইন সায়ের তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘বেশ ঝামেলার মধ্যেই পড়লাম, চাঁদপুরের পৈতৃক সম্পদ বেহাত হওয়ার দশা, যদিও আমার ধারণা নাই কোথায় কি আছে, আমার চাচা ও অন্যান্য আত্মীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী স্থানীয় বিএনপি সমর্থিত একটি গোষ্ঠী আমাদের পৈতৃক সম্পদ জবরদখল করেছে, আর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসিনা নামের এক মহিলা চিকিৎসক এবং তার স্বামী নূরু ইঞ্জিনিয়ার এসবের নেপথ্যে কাজ করছে।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘আজ বিএনপির স্থানীয় নেতা ফরিদ উদ্দিন মানিকের সঙ্গে আমার চাচারা সাক্ষাৎ করলে, তাদেরকে বলা হয়েছে ‘আপনিতো আওয়ামী লীগ করতেন, ভিটা থেকে যদি আপনাকে উচ্ছেদ করে দেই তাহলে কি করবেন? আপনাকে ভিটা থেকে উচ্ছেদ করার ক্ষমতা আমার আছে।’
তিনি আরও লেখেন, ‘আমি কখনোই আমার ব্যক্তিগত সমস্যা সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করতে চাইনি, কিন্তু এই যদি হয় অবস্থা তাহলে তো সমস্যা ভয়াবহ।’
কে এই জুলকারনাইন সায়র
জুলকারনাইন সায়ের খান ওরফে সামি একজন নির্বাসিত বাংলাদেশি সাংবাদিক যিনি লন্ডনভিত্তিক অনুসন্ধানী ও জনস্বার্থ বিষয়ক ইন্টারনেটভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বাংলা আউটলুকের প্রধান সম্পাদক ও মানবাধিকার কর্মী। তিনি আল জাজিরা কর্তৃক বাংলা ভাষায় বাংলাদেশ নিয়ে প্রচারিত বিখ্যাত অনুসন্ধানী প্রামাণ্যচিত্র “ওরা প্রধানমন্ত্রীর লোক” নিয়ে কাজ করেন যেখানে তিনি গোপন রেকর্ডিংয়ের মাধ্যমে বুদাপেস্টে হারিস আহমেদের ব্যবসায়িক কার্যকলাপ নিয়ে অনুসন্ধান চালান।
মামলা
তাকে দেশবিরোধী অপপ্রচার চালানোর অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয় এবং ২০২০ সালে বাংলাদেশের সমালোচিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় আসামি করে রমনা থানায় মামলা করেছিল র্যাব। বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক টেলিভিশন চ্যানেল আলজাজিরায় সংবাদ প্রকাশের পর তার বিরুদ্ধে প্রথমে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি পরবর্তীতে তার সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দেন। সর্বশেষ ২০২১ সালে তাকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের এই মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। রমনা থানার তৎকালীন ওসি মনিরুল ইসলাম জানান, ‘তদন্তে তার প্রকৃত ঠিকানা খুঁজে পাওয়া যায়নি, এ কারণে তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে হাঙ্গেরিতে জঙ্গিবাদে জড়িত থাকার অভিযোগ ও রয়েছে।