শরীয়তপুর-চাঁদপুর মেঘনা সেতুর সম্ভাব্যতা যাচাই শেষ পর্যায়ে, জুনেই দিতে হবে রিপোর্ট

  • আপডেট: ০৯:০৬:৫২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জুন ২০২২
  • ১৬

শরীয়তপুর-চাঁদপর জেলার মধ্যে মেঘনা নদীর দূরত্ব নদীপথে ১০ কিলোমিটার। এখানেই মেঘনা সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করছে সরকার। নির্মাণের পূর্বেই শুরু হয়েছে সম্ভাব্যতা যাচাই। কয়েক ধাপে হয় একই কাজটি। গত মে মাস জুড়েই শরীয়তপুর ও চাঁদপুর অংশে নদীর মাঝখানে এবং উপকূলে সমীক্ষা প্রকল্পের প্রকৌশলীরা মাটি ও ভূগর্ভস্থ অবস্থা নির্নয় সম্পন্ন করেছেন। জুন মাসের ৩০ তারিখের মধ্যেই এই সমীক্ষা রিপোর্ট মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়ার কথা। এরপর অর্থ বরাদ্দ এবং সেতু নির্মাণে সরকার অগ্রসর হবেন জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, শরীয়তপুর-চাঁদপুর মেঘনা নদীর উপর সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্তের পর সরকার একজন পরামর্শক নিয়োগ দেন। একই সাথে সেতু নির্মাণের জন্য ‘মেঘনা সেতু সমীক্ষা প্রকল্প’ এর আওতায় সম্ভাব্যতা যাচাই শুরু হয় গত মে মাসে। চলতি মাসের শুরুতেই সেই সমীক্ষা শেষ হয়েছে।

সরেজমিন দেখাগেছে, মেঘনা নদীর চাঁদপুর অংশের বহরিয়া এলাকা থেকে সমীক্ষা কাজের পন্টুন ও যন্ত্রাশং সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই সব ধরণের সমীক্ষা কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

মেঘনা নদী পার হওয়ার জন্য চাঁদপুর-শরীয়তপুরে এখন ফেরিই একমাত্র অবলম্বন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও ফেরিগুলো বিকল হলে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় গণপরিবহন ও মালবাহী যানবাহনগুলোর। অনেক সময় পার হওয়ার জন্য কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হয়। তবে এখানে সেতু নির্মাণ হলে সিলেটসহ দেশের পশ্চিম ও দক্ষিণাঞ্চলের ২৫ জেলার সাথে চট্টগ্রাম বিভাগের সড়ক পথে বৈপ্লবিক পরিবর্তন হবে এবং দেশের অর্থনীতিতেও আসবে ইতিবাচক প্রভাব। সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপন হবে ৩টি নৌ বন্দরের সাথে।

হরিণা ফেরিঘাটে অপেক্ষায় থাকা যাত্রীবাহী বাস অথৈ পরিবহনের চালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, মেঘনা সেতু নির্মাণ হলে অব্যশই আমাদের জন্য ভাল হবে। যানজট হবে না এবং সময়ও কম লাগবে। এখনত আমাদেরকে অনেক সময় অপেক্ষা করতে হয়। যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েন।

চট্টগ্রাম থেকে আসা বাগেরহাটের যাত্রীদের মধ্যে সোলাইমান ও রাকিব বলেন, আমরাও চাই এখানে সেতু নির্মাণ হউক। এটি নির্মাণ হলে সাধারণ মানুষ যেমন উপকৃত হবে, তেমনি যোগাযোগ ব্যবস্থাও উন্নত হবে। দীর্ঘ সময় আমাদেরকে যানজটে অপেক্ষা করতে হবে না।

শরীয়তপুর-চাঁদপুর ‘মেঘনা সেতু সমীক্ষা প্রকল্প’ পরিচালক লিয়াকত আলী মুঠোফোনে জানান, ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে সেতু নির্মাণের সম্ভাব্যতা সমীক্ষার অধিকাংশ কাজ সম্পন্ন হবে। কয়েক ধাপে এই সমীক্ষা হয়। ইতোমধ্যে নদীর মাটি ও ভূগর্ভস্থ অবস্থা নির্নয় হয়েছে। এরপর অর্থয়ানের বিষয়। আমি মনে করে রিপোর্ট জমা দেয়ার পর সরকার সেতু নির্মাণে অগ্রসর হবেন।

সম্প্রতি পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম সেতুর সম্ভাব্যতা সমীক্ষার কাজ পরিদর্শনে এসে বলেন, শরীয়তপুর এবং চাঁদপুরবাসীর দীর্ঘদিনের দাবী মেঘনা সেতু নির্মাণ। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা ৩০ জুনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিবেন। আশা করি এই বছরের মধ্যেই ফিজিবিলিটি সমীক্ষা সম্পন্ন করবেন তারা।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

বন্যা পূনবার্সন পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনী কর্তৃক বিভিন্ন উপজেলায় কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে-বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. ফারুক হাওলাদার

শরীয়তপুর-চাঁদপুর মেঘনা সেতুর সম্ভাব্যতা যাচাই শেষ পর্যায়ে, জুনেই দিতে হবে রিপোর্ট

আপডেট: ০৯:০৬:৫২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জুন ২০২২

শরীয়তপুর-চাঁদপর জেলার মধ্যে মেঘনা নদীর দূরত্ব নদীপথে ১০ কিলোমিটার। এখানেই মেঘনা সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করছে সরকার। নির্মাণের পূর্বেই শুরু হয়েছে সম্ভাব্যতা যাচাই। কয়েক ধাপে হয় একই কাজটি। গত মে মাস জুড়েই শরীয়তপুর ও চাঁদপুর অংশে নদীর মাঝখানে এবং উপকূলে সমীক্ষা প্রকল্পের প্রকৌশলীরা মাটি ও ভূগর্ভস্থ অবস্থা নির্নয় সম্পন্ন করেছেন। জুন মাসের ৩০ তারিখের মধ্যেই এই সমীক্ষা রিপোর্ট মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়ার কথা। এরপর অর্থ বরাদ্দ এবং সেতু নির্মাণে সরকার অগ্রসর হবেন জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, শরীয়তপুর-চাঁদপুর মেঘনা নদীর উপর সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্তের পর সরকার একজন পরামর্শক নিয়োগ দেন। একই সাথে সেতু নির্মাণের জন্য ‘মেঘনা সেতু সমীক্ষা প্রকল্প’ এর আওতায় সম্ভাব্যতা যাচাই শুরু হয় গত মে মাসে। চলতি মাসের শুরুতেই সেই সমীক্ষা শেষ হয়েছে।

সরেজমিন দেখাগেছে, মেঘনা নদীর চাঁদপুর অংশের বহরিয়া এলাকা থেকে সমীক্ষা কাজের পন্টুন ও যন্ত্রাশং সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই সব ধরণের সমীক্ষা কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

মেঘনা নদী পার হওয়ার জন্য চাঁদপুর-শরীয়তপুরে এখন ফেরিই একমাত্র অবলম্বন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও ফেরিগুলো বিকল হলে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় গণপরিবহন ও মালবাহী যানবাহনগুলোর। অনেক সময় পার হওয়ার জন্য কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হয়। তবে এখানে সেতু নির্মাণ হলে সিলেটসহ দেশের পশ্চিম ও দক্ষিণাঞ্চলের ২৫ জেলার সাথে চট্টগ্রাম বিভাগের সড়ক পথে বৈপ্লবিক পরিবর্তন হবে এবং দেশের অর্থনীতিতেও আসবে ইতিবাচক প্রভাব। সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপন হবে ৩টি নৌ বন্দরের সাথে।

হরিণা ফেরিঘাটে অপেক্ষায় থাকা যাত্রীবাহী বাস অথৈ পরিবহনের চালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, মেঘনা সেতু নির্মাণ হলে অব্যশই আমাদের জন্য ভাল হবে। যানজট হবে না এবং সময়ও কম লাগবে। এখনত আমাদেরকে অনেক সময় অপেক্ষা করতে হয়। যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েন।

চট্টগ্রাম থেকে আসা বাগেরহাটের যাত্রীদের মধ্যে সোলাইমান ও রাকিব বলেন, আমরাও চাই এখানে সেতু নির্মাণ হউক। এটি নির্মাণ হলে সাধারণ মানুষ যেমন উপকৃত হবে, তেমনি যোগাযোগ ব্যবস্থাও উন্নত হবে। দীর্ঘ সময় আমাদেরকে যানজটে অপেক্ষা করতে হবে না।

শরীয়তপুর-চাঁদপুর ‘মেঘনা সেতু সমীক্ষা প্রকল্প’ পরিচালক লিয়াকত আলী মুঠোফোনে জানান, ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে সেতু নির্মাণের সম্ভাব্যতা সমীক্ষার অধিকাংশ কাজ সম্পন্ন হবে। কয়েক ধাপে এই সমীক্ষা হয়। ইতোমধ্যে নদীর মাটি ও ভূগর্ভস্থ অবস্থা নির্নয় হয়েছে। এরপর অর্থয়ানের বিষয়। আমি মনে করে রিপোর্ট জমা দেয়ার পর সরকার সেতু নির্মাণে অগ্রসর হবেন।

সম্প্রতি পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম সেতুর সম্ভাব্যতা সমীক্ষার কাজ পরিদর্শনে এসে বলেন, শরীয়তপুর এবং চাঁদপুরবাসীর দীর্ঘদিনের দাবী মেঘনা সেতু নির্মাণ। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা ৩০ জুনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিবেন। আশা করি এই বছরের মধ্যেই ফিজিবিলিটি সমীক্ষা সম্পন্ন করবেন তারা।