নতুনেরকথা অনলাইন :
হাজীগঞ্জে সম্পত্তিগত বিরোধে জোরপূর্বক সীমানা পিলার ভাংচুর, কাঁটা তারের বেড়া উচ্ছেদসহ নিরিহ এক পরিবারকে হুমকি-ধমকি, অশালিন আচরনসহ বিভিন্নভাবে হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার বিকালে সংবাদকর্মীদের কাছে এমন অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগি এসআই মো. সুজায়েত আলী মাহমুদের পরিবার। উপজেলার গন্ধর্ব্যপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের স্থানীয় হোটনি গ্রামের গাজী বাড়ী প্রকাশ চকিদার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
সুজায়েত আলী মাহমুদের ছেলে নাজমুল আলম জুয়েল জানান, একই বাড়ীর মো. হোসেন আলী গাজী প্রকাশ দুলালের কাছ গত বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারী উপজেলার ১২৬নং হোটনী মৌজার সিএস/এসএ ২৫৮ দাগ, বিএস (চুড়ান্ত) ৫০৫ দাগে (বাড়ী) ২৯ শতাংশের অন্দরে তার নামে সোয়া এক শতাংশ, ছোট ভাই নাহিদ হাসানের নামে সোয়া এক শতাংশ ও চাচা এমদাদ হোসেনের নামে আড়াই শতাংশসহ মোট ৫ শতাংশ ভূমি রেজিষ্ট্রি দলিলমূলে (নং-১২৮৫) ক্রয় করেন। যা ক্রয়ের পরদিন থেকে ভোগ দখলে আছেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, গত কয়েকমাস ধরে হঠাৎ করে ভূমি দাতার নিকট আত্মীয় নুরুল ইসলাম, তার শশুর একেএম শহীদুল্লাহ, শহীদুল্লাহ’র ছেলে নবীর হোসেনসহ তাদের লোকজন আমাদেরকে হুমকি-ধমকি, অশালিন আচরনসহ বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছে। বিষয়টি আমরা স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল বাসার মেম্বারসহ এলাকার গন্যমান্যদের অবহিত করি। এমনকি ভূমি দাতা দুলালকেও একইভাবে হয়রানি করা হলে, তিনি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন।
পরবর্তীতে ইউপি সদস্যসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি ইব্রাহিম খলিল, হারুন সর্দার, মিজানুর রহমানসহ আরো অনেকের উপস্থিতিতে স্থানীয়ভাবে বেশ কয়েকবার সালিশি বৈঠক হয়। বৈঠকে আসছে ঈদুল আযহার পরে সবার উপস্থিতিতে বিষয়টির মিমাংসার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু তারা, তা না মেনে গত কয়েকদিন ধরে আমাদেরকে হুমকি-ধমকিসহ অশালিন আচরন করে আসছে।
এ ছাড়াও গত ৬ জুলাই উল্লেখিত ভূমির উপর থাকা সীমানা পিলার ভেঙ্গে ফেলে দিয়েছে তারা এবং কাটা-তাঁরের বেড়া নষ্ট করে, উল্টো আমাদেরকে বিবাদী করে গত ৭ জুলাই আদালতে ১৪৫ ফৌ.কা.বি’তে অভিযোগ দিয়েছেন। এরপরও তারা ক্ষ্যান্ত হয়নি, সংবাদকর্মীদের মিথ্যা তথ্য দিয়ে আমার বাবা এসআই মো. সুজায়েত আলী মাহমুদকে হেয় করেছে। যা গত ১৯ জুলাই স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
তাদের এমন আচরনে পরিবারসহ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে নাজমুল আলম জুয়েল জানান। তিনি বলেন, একেএম শহীদুল্লাহ ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ও তার ছেলে নবীর হোসেন ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক। এই প্রভাব খাটিয়ে তারা এলাকার মানুষকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছে। তার বাবা মানুষের সম্পত্তি নিজের নামে করে নিয়ে, আবার তা ফেরত দিয়েছেন, এমন রেকর্ড ও রয়েছে।
এ ব্যাপারে এসআই সুজায়েত আলী মাহমুদ বলেন, একেএম শহীদুল্লাহ ও তার ছেলে নবীর হোসেন গং’রা আমার সীমানায় এসে এবং আমার পরিবারের সদস্যদের বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকিসহ অশালিন আচরণ করে আসছে। বিষয়টি আমি, তদন্তকারী কর্মকর্তা থানা পুলিশ পরিদর্শক মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ স্যারকে জানিয়েছি।
তিনি বলেন, আমি ধৈয্যশীল এবং আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই, আইনিভাবে তাদেরকে জবাব দিবো। সম্পত্তির বিষয়ে তিনি বলেন, ভূমি দাতা মো. হোসেন আলী গাজী প্রকাশ দুলাল তার মোট ৮০ শতাংশের অন্দরে বাড়ীতে তিনি ২৯ শতাংশের মালিক। এই ২৯ শতাংশের অন্দরে আমার ছোট ভাই এমদাদ হোসেন এবং আমার দুই ছেলে নাজমুল আলম জুয়েল ও নাহিদ হাসানসহ তিনজনে মোট ৫ শতাংশ ভূমি ক্রয় করে। যা তাদের ভোগ-দখলে রয়েছে। কিন্তু অযথা দুলালের নিকট আত্মীয় নুরুল ইসলাম, তার শশুর একেএম শহীদুল্লাহ ও শহীদুল্লাহ’র ছেলে নবীর হোসেন গংরা আমাদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছে। অথচ তাদের সাথে আমাদের ক্রয়-বিক্রয় সংক্রান্ত সম্পত্তিগত বা অন্য কোন বিরোধ নেই।
এ দিকে অভিযোগ অস্বীকার করে একেএম শহীদুল্লাহ বলেন, তারা (সুজায়েত আলী মাহমুদ গং) যে অভিযোগ দিয়েছে, তা সম্পূর্ণ বিপরীত। বরং তারা আমার জামাতা নুরুল ইসলামের পরিবারকে হুমকি-ধমকিসহ অশালীন আচরন করে আসছে।
সম্পত্তির বিষয়ে তিনি বলেন, ওই সম্পত্তি (ভূমি) আমার জামাতা নুরুল ইসলামের ক্রয়কৃত। সে মো. হোসেন আলী গাজী প্রকাশ দুলালের ফুফু নুরজাহানের কাছ থেকে ক্রয় করেছেন। অথচ জোরপূর্বকভাবে ওই সম্পত্তি দখলের চেষ্টা করছেন সুজায়েত আলীর পরিবার। আমরা নিরিহ মানুষ, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, তাই ন্যায়-বিচারের স্বার্থে আমার জামাতা আইনে আশ্রয় নিয়েছেন।
এ বিষয়ে থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আলমগীর হোসেন রনি বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা উভয় পক্ষকে স্থিতিবস্থায় থাকার নির্দেশনা দিয়ে, আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।