চাঁদপুর জেলা বিএনপির সম্মেলনকে ঘিরে অনিয়মের প্রতিবাদে বিএনপির ৫ প্রার্থীর সাংবাদিক সম্মেলন

  • আপডেট: ০৯:২৮:৫৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ মার্চ ২০২২
  • ৩০

স্টাফ রিপোর্টার:

আগামি ২ এপ্রিল চাঁদপুর জেলা বিএনপির সম্মেলন অনিয়মের অভিযোগে ৫ জন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত পত্র নিয়ে চাঁদপুর প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন। উক্ত সম্মেলনে প্রার্থীদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বর্তমান সভাপতি প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার মমিনুল হক।

শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে সাংবাদিক সম্মেলনে ইঞ্জিনিয়ার মমিনুল হক বলেন, দীর্ঘদিন পর চাঁদপুর জেলা বিএনপির সম্মেলন হতে যাচ্ছে। আমরা আশা করেছিলাম জেলা বিএনপি একটি সুন্দর সম্মেলন উপহার দিবে। কিন্তু দেখলাম একজন সভাপতি প্রার্থী শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক পেশী শক্তি ও নির্বাচন কমিশন অগঠনতান্ত্রিক পদ্ধতি ব্যবহার করছে। তিনি গঠনতন্ত্রের অজুহাতে কারো প্রার্থীতা বাতিল, কাউকে হুমকি-ধমকী, কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সামনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীদের উপর সন্ত্রাসী হামলা এবং কারো কারো বাসা বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভীতির রাজ্য কায়েম করার চেষ্টা করছেন। অর্থাৎ তিনি জেলা বিএনপি কে তাঁর একক আধিপত্য বিস্তারে চেষ্টা করছেন। কাউন্সিলরদের প্রদত্ত ভোট কারচুপির মাধ্যমে গননা পেশীশক্তি ব্যবহার করে ফলাফল নিজের পক্ষে নেওয়ার জন্য বারবার তফসিল পরিবর্তন করা হয়। তিনি জেলা বিএনপির সম্মেলনে গঠিত নির্বাচন কমিশন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। আমাদের সাংবাদিক সম্মেলন কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয়, ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচন ও নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে।

তিনি বলেন, শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক পেশি শক্তি ব্যবহার করে ফলাফল তার পক্ষে নিতে নির্বাচনী তফসিল পরিবর্তন করেছেন। সম্মেলনে সভাপতি প্রার্থী মানিক সাহেব গঠনতন্ত্রের কোন ধারায় নির্বাচন কমিশনার অ্যাড. শামছুল ইসলাম মন্টু তাকে বৈধ ঘোষণা করলেন। এর সঠিক জবাব নিয়ে সাংবাদিকদের মাধ্যমে প্রধান নির্বাচন কমিশনার জবাব দিবেন বলে আশা করছি। যদি নির্বাচন কমিশনার আমাদের প্রশ্নের সঠিক জবাব দিতে পারেন, তাহলে আমরা মেনে নেব।

তিনি আরও বলেন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকে দলের ভালোর জন্যে কারো পরামর্শ গ্রহণ করেন না। আসন্ন সম্মেলনের তারিখ, স্থান নির্বাচন, নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ, অতিথিবৃন্দ সম্পর্কে চাঁদপুর জেলার কোন আসনের এমপি প্রার্থী এবং আমরা যারা এই নির্বাচনে বিভিন্ন পদে প্রার্থী কারো সাথেই আলোচনা না করে এককভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।

ইঞ্জিনিয়ার মমিনুল হক বলেন, ২০১৬ সালে শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের বাসভবনে কচুয়া উপজেলা বিএনপির সভায় তার বিরুদ্ধে বক্তব্য দেয়ায় বাড়ির মেইন গেট বন্ধ করে সাবেক এমপি আ.ন.এহনসানুল হক মিলনের সমর্থিত ১৫ নেতা কর্মীকে পিটিয়ে আহত করা হয়। এবারের দ্বিবার্ষি সম্মেলনকে সফল করতে মাননীয় চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়ারর উপস্থিতিতে গত ২৫ মার্চ চাঁদপুর জেলা কার্যালয়ে মিটিং চলাকালে শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের নির্দেশে ইঞ্জিনিয়ার মমিনুল হকের সমর্থিত শাহারাস্তি-হাজিগঞ্জ বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর ককলেট নিক্ষেপ করে আক্রমণ এবং মারধর করে 8 জনকে আহত করা হয়। গত ২৯ মার্চ জেলা বিএনটির সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী দেওয়ান মো. সফিকউজ্জামানের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের জন্য চাপ প্রয়োগ করেন এবং তিনি মনোনয়ন প্রত্যাহার না করায় জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেনের নেতৃত্বে তার বাড়ি ভাঙচুর করা হয়।

লিখিত তিনি ৪টি বিশেষ প্রস্তাব রাখেন। সেগুলো হলো, ১. বিএনপি গণতন্ত্রের বিশেষ বিধান ধারা ১৫-খ মতে শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের প্রার্থিতা অবৈধ ঘোষণা করা, ২. সম্মেলনে স্থান হিসেবে নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয় অথবা চাঁদপুর জেলার ৮টি উপজেলায় ভোট কেন্দ্র স্থাপন করা, ৩. বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃত্বে ৯ সদস্যবিশিষ্ট নির্বাচন কমিশন গঠন, ৪. ১৫১৫ জন কাউন্সিলার স্ব স্ব ইউনিটে ভোটকেন্দ্র স্থাপন করে নিজস্ব মতামত মহাসচিবের কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা করা দাবি জানান।

চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি গিয়াসউদ্দিন মিলনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ ফেরদৌসের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি রোটাঃ কাজী শাহাদাত ,সাবেক সাধারণ সম্পাদক সোহেল রুশদী,এএইচ এম আহসান উল্লাহ, সাংবাদিক শাহাদাত হোসেন শান্ত, কাদের পলাশসহ স্থানীয় বিভিন্ন পত্রিকার সম্পাদক এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও স্হানীয় পত্রিকার সাংবাদিকবৃন্দ।

বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর জেলা বিএনপি’র সন্মেলনে সভাপতি প্রার্থী মোঃ কামাল উদ্দিন, মাহবুবুর রহমান শাহীন, সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মোঃ মোস্তফা খান সফরী, কাজী গোলাম মোস্তফা বিএনপি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

‘ম্যানেজ করে’ এক সাথে দুই স্বামীর সংসার করছিলেন জান্নাতুল!

চাঁদপুর জেলা বিএনপির সম্মেলনকে ঘিরে অনিয়মের প্রতিবাদে বিএনপির ৫ প্রার্থীর সাংবাদিক সম্মেলন

আপডেট: ০৯:২৮:৫৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ মার্চ ২০২২

স্টাফ রিপোর্টার:

আগামি ২ এপ্রিল চাঁদপুর জেলা বিএনপির সম্মেলন অনিয়মের অভিযোগে ৫ জন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত পত্র নিয়ে চাঁদপুর প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন। উক্ত সম্মেলনে প্রার্থীদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বর্তমান সভাপতি প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার মমিনুল হক।

শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে সাংবাদিক সম্মেলনে ইঞ্জিনিয়ার মমিনুল হক বলেন, দীর্ঘদিন পর চাঁদপুর জেলা বিএনপির সম্মেলন হতে যাচ্ছে। আমরা আশা করেছিলাম জেলা বিএনপি একটি সুন্দর সম্মেলন উপহার দিবে। কিন্তু দেখলাম একজন সভাপতি প্রার্থী শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক পেশী শক্তি ও নির্বাচন কমিশন অগঠনতান্ত্রিক পদ্ধতি ব্যবহার করছে। তিনি গঠনতন্ত্রের অজুহাতে কারো প্রার্থীতা বাতিল, কাউকে হুমকি-ধমকী, কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সামনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীদের উপর সন্ত্রাসী হামলা এবং কারো কারো বাসা বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভীতির রাজ্য কায়েম করার চেষ্টা করছেন। অর্থাৎ তিনি জেলা বিএনপি কে তাঁর একক আধিপত্য বিস্তারে চেষ্টা করছেন। কাউন্সিলরদের প্রদত্ত ভোট কারচুপির মাধ্যমে গননা পেশীশক্তি ব্যবহার করে ফলাফল নিজের পক্ষে নেওয়ার জন্য বারবার তফসিল পরিবর্তন করা হয়। তিনি জেলা বিএনপির সম্মেলনে গঠিত নির্বাচন কমিশন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। আমাদের সাংবাদিক সম্মেলন কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয়, ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচন ও নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে।

তিনি বলেন, শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক পেশি শক্তি ব্যবহার করে ফলাফল তার পক্ষে নিতে নির্বাচনী তফসিল পরিবর্তন করেছেন। সম্মেলনে সভাপতি প্রার্থী মানিক সাহেব গঠনতন্ত্রের কোন ধারায় নির্বাচন কমিশনার অ্যাড. শামছুল ইসলাম মন্টু তাকে বৈধ ঘোষণা করলেন। এর সঠিক জবাব নিয়ে সাংবাদিকদের মাধ্যমে প্রধান নির্বাচন কমিশনার জবাব দিবেন বলে আশা করছি। যদি নির্বাচন কমিশনার আমাদের প্রশ্নের সঠিক জবাব দিতে পারেন, তাহলে আমরা মেনে নেব।

তিনি আরও বলেন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকে দলের ভালোর জন্যে কারো পরামর্শ গ্রহণ করেন না। আসন্ন সম্মেলনের তারিখ, স্থান নির্বাচন, নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ, অতিথিবৃন্দ সম্পর্কে চাঁদপুর জেলার কোন আসনের এমপি প্রার্থী এবং আমরা যারা এই নির্বাচনে বিভিন্ন পদে প্রার্থী কারো সাথেই আলোচনা না করে এককভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।

ইঞ্জিনিয়ার মমিনুল হক বলেন, ২০১৬ সালে শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের বাসভবনে কচুয়া উপজেলা বিএনপির সভায় তার বিরুদ্ধে বক্তব্য দেয়ায় বাড়ির মেইন গেট বন্ধ করে সাবেক এমপি আ.ন.এহনসানুল হক মিলনের সমর্থিত ১৫ নেতা কর্মীকে পিটিয়ে আহত করা হয়। এবারের দ্বিবার্ষি সম্মেলনকে সফল করতে মাননীয় চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়ারর উপস্থিতিতে গত ২৫ মার্চ চাঁদপুর জেলা কার্যালয়ে মিটিং চলাকালে শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের নির্দেশে ইঞ্জিনিয়ার মমিনুল হকের সমর্থিত শাহারাস্তি-হাজিগঞ্জ বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর ককলেট নিক্ষেপ করে আক্রমণ এবং মারধর করে 8 জনকে আহত করা হয়। গত ২৯ মার্চ জেলা বিএনটির সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী দেওয়ান মো. সফিকউজ্জামানের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের জন্য চাপ প্রয়োগ করেন এবং তিনি মনোনয়ন প্রত্যাহার না করায় জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেনের নেতৃত্বে তার বাড়ি ভাঙচুর করা হয়।

লিখিত তিনি ৪টি বিশেষ প্রস্তাব রাখেন। সেগুলো হলো, ১. বিএনপি গণতন্ত্রের বিশেষ বিধান ধারা ১৫-খ মতে শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের প্রার্থিতা অবৈধ ঘোষণা করা, ২. সম্মেলনে স্থান হিসেবে নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয় অথবা চাঁদপুর জেলার ৮টি উপজেলায় ভোট কেন্দ্র স্থাপন করা, ৩. বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃত্বে ৯ সদস্যবিশিষ্ট নির্বাচন কমিশন গঠন, ৪. ১৫১৫ জন কাউন্সিলার স্ব স্ব ইউনিটে ভোটকেন্দ্র স্থাপন করে নিজস্ব মতামত মহাসচিবের কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা করা দাবি জানান।

চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি গিয়াসউদ্দিন মিলনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ ফেরদৌসের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি রোটাঃ কাজী শাহাদাত ,সাবেক সাধারণ সম্পাদক সোহেল রুশদী,এএইচ এম আহসান উল্লাহ, সাংবাদিক শাহাদাত হোসেন শান্ত, কাদের পলাশসহ স্থানীয় বিভিন্ন পত্রিকার সম্পাদক এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও স্হানীয় পত্রিকার সাংবাদিকবৃন্দ।

বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর জেলা বিএনপি’র সন্মেলনে সভাপতি প্রার্থী মোঃ কামাল উদ্দিন, মাহবুবুর রহমান শাহীন, সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মোঃ মোস্তফা খান সফরী, কাজী গোলাম মোস্তফা বিএনপি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।