• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ২৬ নভেম্বর, ২০২১
সর্বশেষ আপডেট : ২৬ নভেম্বর, ২০২১

কচুয়ায় সেনা কর্মকর্তার বাড়ি থেকে ১৭ গোখরো ও দাড়াইশ সাপ উদ্ধার

অনলাইন ডেস্ক
[sharethis-inline-buttons]

চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার তেতুয়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডে অবস্থিত খিড্ডা গ্রামের মো: হাকিম আলী হাজী বাড়িসহ তার পাশবর্তী দুটি বাড়ি থেকে জীবন্ত অবস্থায় বড় আকারের ৪টি, ছোট ৭টি ও হাজীবাড়ির বাসিন্দারা পিটিয়ে মেরে ফেলা অবস্থায় ৬টিসহ মোট ১৭টি দাড়াইশ ও গোখরো সাপ (কালী ফানক সাপ) উদ্ধার করা হয়েছে। খবরটি জানিয়েছেন হাজী বাড়ির গৃহকর্তী অবসর প্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তার স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা রাজু।

এ সময় বিষধর সাপ বিষ ছুড়ে মেরে সাপুড়ে সর্পরাজ মো: সাহাবুদ্দিন কবিরাজকে আহত করেছে। তাৎক্ষনিক কবিরাজকে আহত অবস্থা থেকে উদ্ধার করে কচুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এ সাপ ধরার অভিযান চালানো হয়।

এতগুলো গোখরো সাপ এক সঙ্গে ধরে ফেলা ও ৬টি সাপ মেরে ফেলায় এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে ও পুরো খিড্ডা পল্লীর এলাকায় ব্যাপক আতংকো বিরাজ করছে বলে ওই এলাকায় বসবাসরত বাসিন্দারা জানিয়েছেন। এ সাপ গুলো ধরতে সর্পরাজ সাহাবুদ্দিন কবিরাজসহ ৬ ব্যাক্তি এ সাপ ধরা অভিযানে অংশ গ্রহন করায় তাদেরকে ৯ হাজার টাকা দিতে হয়েছে বলে বাড়ির মালিকরা জানিয়েছেন। বর্তমানে ২টি স্ত্রী সাপ ধরা পড়লেও ২টি পুরুষ সাপ ধরতে পারেনি সাপুড়ে।

সাপুড়ে জানান,পুরুষ সাপ ২টি বাড়িতে নেই। সেই গুলো আহারের জন্য হয়তো বাহিরে গেছে। সেগুলো রাতে আসবে। এ কথা শুনার পর বাড়ির গৃহকর্তী বর্তমানে আতংকে রয়েছে।

কচুয়া উপজেলার খিড্ডা হাজি বাড়ির অবসর প্রাপ্ত সেনা কর্মকতা (মৃত:মেজর এম এফ রহমান) এর স্ত্রী সুলতানা রাজিয়া রাজু জানান, দীর্ঘ দিন যাবত আমি বাড়িতে বসবাসরত অবস্থায় দেখতে পাই ছোট ছোট গোখরো সাপের বাঁচ্চা আমার ঘরের ভিতরে আসা-যাওয়া করছে। আমি এতে আতংকিত হয়ে পড়ি। গত কয়েকদিন যাবত সাপুড়ে, ওজা খুজতে থাকি। হঠাৎ বাসায় থাকা একজন প্রবীন সাপুড়ে কবিরাজের ঠিকানা পাই। তার নাম মো: আকরাম আলী সর্প বিষারর্থ। তাকে মোবাইল ফোনে খবর দিতে গিয়ে জানতে পারি সে আকরাম আলী মারা গেছে। তার ছেলে সর্পরাজ মো: সাহাবুদ্দিন কবিরাজ বর্তমানে সাপ ধরার কাজ করে।

তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাপ ধরতে হলে ১১হাজার টাকা দিতে হবে বলে জানান। পরে ধর কসাকশিতে ৬হাজার টাকায় বাড়িতে এসে সাপ ধরবেন বলে জানান। এরই মধ্যে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গৃহকর্তী রাজিয়া মাগরিবের নামাজ পড়তে থাকেন চেয়ারে বসে। হঠাৎ দেখতে পান পায়ের কাছ দিয়ে একটি সাপের বাঁচ্চা হেটে যাচ্ছে।

তিনি হঠাৎ সাপের বাঁচ্চা দেখতে পেয়ে পা’শড়াতে চাইলে সাপের বাঁচ্চাটি ফর্স করে উঠে। গৃহকর্তী রাজিয়া ভয়ে আতংকিত হয়ে পড়েন। তিনি নিজ বাড়ির ঘরে না থেকে অন্যত্র গিয়ে আশ্রয় নেন।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টায় সর্পরাজ মো: শাহাবুদ্দিন কবিরাজ তার সাথে একই পেশার আরো ৬জনসহ বাড়িতে এসে হাজির হন। তার পর তিনি যথাযথ নিয়মে ১০ কেজি চাউলের কুড়ার সাথে মেডিসিন মিশিয়ে বাড়ির উল্লেখ্য যোগ্য স্থান গুলোতে ছিটিয়ে দেন। ২ থেকে ৩ ঘন্টার মধ্যে সাপ ধরার একসান শুরু হয়ে যায়।

দেখা যায় সাপের বাঁচ্চা গুলো যার যার গন্তব্য থেকে বেড় হয়ে আসতে থাকে। অল্প সময়ের মধ্যে প্রায় দেড় থেকে ২হাত লম্বা ৭টি ছোট ছোট বাঁচ্চা সাপ সর্পরাজ শাহাবুদ্দিনের সাথে থাকা লোকেরা ধরে বাড়ির উঠানে নিয়ে আসে। ছোট সাপগুলো বেড় হয়ে আসলেও বড় সাপ গুলো বেড় হয়ে আসছিল না। হতাশার মধ্যে পড়েন গৃহকর্তী রাজিয়া।

তিনি সর্পরাজ ও কবিরাজকে জানান, ছোট সাপ যখন পেয়েছেন,তাহলে চেস্টা করে দেখেন বড় সাপ পেতে পারেন। সর্পরাজ পূনরায় ব্যাপক চেস্টা চালিয়ে দেখেন গৃহকর্ত্রীর ঘরের ভিতরে পাটাতনের মাচানে থাকা লাকড়ীর ভিতরে বড় আকারের(প্রায় ৬হাত লম্বা) একটি গোখরো সাপ (কালি ফানক সাপ) দেখতে পেয়ে সেটিকে আটক করে ধরে ফেলেন।

পরে আরো চেস্টা চালিয়ে ঘরের অন্যস্থান থেকে বড় আকারের (প্রায় ৮হাত লম্বা) একটি দাড়াইশ(দুধরাজ সাপ) সাপকে ধরে ফেলে।

পরে সাপুড়ে পাশবর্তী বাড়িতে ৩ হাজার টাকা চুক্তির মাধ্যমে একটি বড় আকারে গোখরো সাপ ধরে ফেলেছে। দুপুরে অপর একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মারাত্মক জিদি বিষধর একটি সাপকে ধরতে গেলে সেটি পালিয়ে যাচ্ছিল। সাপুড়ে না ছাড়বান্দা সে বিষধর সাপটি ধরে ফেললে সাপটি মুহুর্তের মধ্যে তার মূখ থেকে বিষ নিক্ষেপ করলে সাপুড়ের চোঁখে পড়ে। এতে সাপুড়ে মারাত্মক আহত হয়ে পড়ে। তাকে তাৎক্ষনিক কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ রিপোট লেখা পর্যন্ত সে চিকিৎসাধীন আছে বলে হাসপাতাল সুত্রে জানা গেছে।

Sharing is caring!

[sharethis-inline-buttons]

আরও পড়ুন

  • কচুয়া এর আরও খবর
error: Content is protected !!