নিজস্ব প্রতিনিধি:
গত ১৩ অক্টোবর (বুধবার) কুমিল্লার নানুয়ার দিঘির পাড়ের পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ রাখার ঘটনার জের ধরে সন্ধ্যায় হাজীগঞ্জ বাজারে বিক্ষোভ মিছিল বের করে একদল যুবক। মিছিল থেকে পৌর এলাকার কয়েকটি মন্দিরে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে জনৈক অনুপ কুমার সাহা গত ২৮ অক্টোবর মহামান্য হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করে। সেই রিট পিটিশনের আলোকে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লা ঘটনাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ প্রদান করেন।
হাইকোর্টের নির্দেশনা মোতাবেক বুধবার (২৪ নভেম্বর) তদন্ত কাজ শুরু করে চাঁদপুর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সামছুল আলম। আগামী ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই তদন্ত কাজ চলবে।
তদন্তকালিন সময়ে আরো উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ কফিল উদ্দিন, পিবিআই’র দু’জন ইন্সপেক্টর উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ হারুনুর রশিদ, হাজীগঞ্জ উপজেলা হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক স্বপন পাল, শ্রী শ্রী রাজা লক্ষ¥ী নারায়ণ জিউড় আখড়ার সভাপতি দিলিপ কুমার সাহা, হাজীগঞ্জ পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সুমন তপদার, পৌর পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্যামল সাহা, নিহার রঞ্জন হালদার মিলন প্রমূখ।
ঘটনা তদন্তকারী দলের প্রধান চাঁদপুর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সামছুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, গত ১৩ অক্টোবর হাজীগঞ্জ একটি সহিংসতার ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনার তদন্তে মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশে আমরা তদন্ত করতে আসি। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৩ অক্টোবর হাজীগঞ্জে মন্দিরে হামলার ঘটনায় পুলিশের সাথে সংঘর্ষ। এতে পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলে তিন জন, হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর একজন এবং ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজনসহ মোট পাঁচ জনের মৃত্যু হয়। সেই সময় মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন চট্রগ্রাম বিভাগীয় ডিআইজি আনোয়ার হোসেন পিপিএম (বার) পিপিএম (বার)।
এ ঘটনায় হাজীগঞ্জ থানায় পুলিশ বাদী হয়ে ২টি ও ক্ষতিগ্রস্থ মন্দির কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে ৮টি মামালা দায়ের করেন। হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) ইব্রাহীম খলিল জানান ১০টি মামলায় প্রায় ৫ হাজার লোককে আসামী করা হয়েছে। বুধবার (২৪ নভেম্বর) পর্যন্ত আটক হয়েছে ১০২জন।
মো. মহিউদ্দিন আল আজাদ
হাজীগঞ্জ, চাঁদপুর।