মিল্ক ভিটা, প্রাণ ও আড়ংসহ ৭টি দুধে ক্ষতিকর উপাদান

  • আপডেট: ০৯:৫০:৪৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ জুন ২০১৯
  • ৫৯

notunerkotha.com

দেশের বাজারে বিক্রি হওয়া মিল্ক ভিটা, প্রাণ ও আড়ংসহ পাস্তুরিত সাতটি দুধ মানহীন বলে জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফার্মেসি বিভাগ। এসব দুধে মাত্রাতিরিক্ত কলিফর্ম এবং কয়েকটি কোম্পানির দুধে অ্যান্টিবায়োটিকের অস্তিত্ব মিলেছে।

এছাড়া এসব প্রতিষ্ঠানের টিনে বিক্রি হওয়া ঘিতেও মান কম পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার ঢাবির ফার্মেসি বিভাগ থেকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

১১টি ফ্রুট ড্রিংকসের নমুনা পরীক্ষা করে সবগুলোতে নিষিদ্ধ ক্ষতিকর সাইক্লামেট পাওয়া গেছে বলে ফার্মেসি বিভাগের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এগুলো হলো, স্টার শিপ ম্যাংগো ফ্রুট ড্রিংকস, সেজান ম্যাংগো ড্রিংক, প্রাণ ফ্রুট, অরেনজি, প্রাণ জুনিয়র ম্যাংগো ফ্রুট ড্রিংক, রিটল ফ্রুটিকা, সান ড্রপ, চাবা রেড এপল, সানভাইটাল নেক্টার ডি ম্যাংগো, লোটে সুইটেন্ডএপল, ট্রপিকানা টুইস্টার।

এছাড়াও আড়ং, বাঘাবাড়ী, প্রাণ, মিল্ক ভিটা, মিল্কম্যান, সুমির ও টিনে বিক্রি হওয়া দুধ ও ঘিয়ের মান উত্তরণে ব্যর্থ হয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো। এছাড়া রূপচাঁদা, পুষ্টি, সুরেশ, ড্যানিশ, ও বসুধা সরিষা তেলসহ বাজারে বিক্রি হওয়া বিভিন্ন ভোজ্যতেলেও মানহীনতার চিত্র ওঠে আসে প্রতিবেদনে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল ফার্মেসি এবং ফার্মাকোলজি বিভাগের অধ্যাপক আ ব ম ফারুক বলেন, এসব কোম্পানির দুধ পরীক্ষা করে মাত্রাতিরিক্ত কলিফর্মের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এছাড়া কিছু দুধে অ্যান্টিবায়োটিকও পাওয়া গেছে।

তিনি বলেন, প্রাণ, মিল্ক ভিটা, আড়ংসহ পাস্তুরিত দুধের সাতটি নমুনার কোনোটিতেই কাঙিক্ষত মাত্রার ‘সলিড নট ফ্যাট’ পাওয়া যায়নি। এই সাতটি নমুনায় ছিল : মিল্ক ভিটা, আড়ং ও প্রাণ।

সরকারি প্রতিষ্ঠান মিল্ক ভিটাও মানহীন দুধ বিক্রি করছে— সেক্ষেত্রে মানুষ কি খাবে? এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাবির এই অধ্যাপক বলেন, ‘আমারও একই প্রশ্ন আমরা কি খাব? কিন্তু এই প্রশ্ন কার কাছে করব। সত্য কথা হলো অসাধু বাণিজ্য যার হাতে পড়বে, তারা এমনটা করবেই। সে সরকারি হোক- কি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। এর থেকে উত্তরণে অবশ্যই যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। না হলে মানহীন পণ্যই মানুষ কিনে খেতে বাধ্য হবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা গবেষণা করে কিছু দিন পরে ফলাফল তুলে ধরি। কিন্তু যারা নীতিনির্ধারণী আছেন তারা বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করতে পারেন।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের এক গবেষণা প্রতিবেদনে গরুর দুধ বা দুগ্ধজাত খাদ্যে পাওয়া যায় মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর নানা উপাদান। এমন প্রতিবেদন গণমাধ্যমে আসার পর থেকেই সারা দেশে এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। বিষয়টি গড়ায় হাইকোর্টেও।

এমন পরিস্থিতিতে ঢাবির ফার্মেসি বিভাগ বাজার থেকে দুধ ও ঘিসহ আটটি ভোগ্যপণ্যের নমুনা সংগ্রহ করে গবেষণা করে।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

হাজীগঞ্জ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর মাইনুদ্দিন মিয়াজী আটক

মিল্ক ভিটা, প্রাণ ও আড়ংসহ ৭টি দুধে ক্ষতিকর উপাদান

আপডেট: ০৯:৫০:৪৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ জুন ২০১৯

notunerkotha.com

দেশের বাজারে বিক্রি হওয়া মিল্ক ভিটা, প্রাণ ও আড়ংসহ পাস্তুরিত সাতটি দুধ মানহীন বলে জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফার্মেসি বিভাগ। এসব দুধে মাত্রাতিরিক্ত কলিফর্ম এবং কয়েকটি কোম্পানির দুধে অ্যান্টিবায়োটিকের অস্তিত্ব মিলেছে।

এছাড়া এসব প্রতিষ্ঠানের টিনে বিক্রি হওয়া ঘিতেও মান কম পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার ঢাবির ফার্মেসি বিভাগ থেকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

১১টি ফ্রুট ড্রিংকসের নমুনা পরীক্ষা করে সবগুলোতে নিষিদ্ধ ক্ষতিকর সাইক্লামেট পাওয়া গেছে বলে ফার্মেসি বিভাগের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এগুলো হলো, স্টার শিপ ম্যাংগো ফ্রুট ড্রিংকস, সেজান ম্যাংগো ড্রিংক, প্রাণ ফ্রুট, অরেনজি, প্রাণ জুনিয়র ম্যাংগো ফ্রুট ড্রিংক, রিটল ফ্রুটিকা, সান ড্রপ, চাবা রেড এপল, সানভাইটাল নেক্টার ডি ম্যাংগো, লোটে সুইটেন্ডএপল, ট্রপিকানা টুইস্টার।

এছাড়াও আড়ং, বাঘাবাড়ী, প্রাণ, মিল্ক ভিটা, মিল্কম্যান, সুমির ও টিনে বিক্রি হওয়া দুধ ও ঘিয়ের মান উত্তরণে ব্যর্থ হয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো। এছাড়া রূপচাঁদা, পুষ্টি, সুরেশ, ড্যানিশ, ও বসুধা সরিষা তেলসহ বাজারে বিক্রি হওয়া বিভিন্ন ভোজ্যতেলেও মানহীনতার চিত্র ওঠে আসে প্রতিবেদনে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল ফার্মেসি এবং ফার্মাকোলজি বিভাগের অধ্যাপক আ ব ম ফারুক বলেন, এসব কোম্পানির দুধ পরীক্ষা করে মাত্রাতিরিক্ত কলিফর্মের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এছাড়া কিছু দুধে অ্যান্টিবায়োটিকও পাওয়া গেছে।

তিনি বলেন, প্রাণ, মিল্ক ভিটা, আড়ংসহ পাস্তুরিত দুধের সাতটি নমুনার কোনোটিতেই কাঙিক্ষত মাত্রার ‘সলিড নট ফ্যাট’ পাওয়া যায়নি। এই সাতটি নমুনায় ছিল : মিল্ক ভিটা, আড়ং ও প্রাণ।

সরকারি প্রতিষ্ঠান মিল্ক ভিটাও মানহীন দুধ বিক্রি করছে— সেক্ষেত্রে মানুষ কি খাবে? এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাবির এই অধ্যাপক বলেন, ‘আমারও একই প্রশ্ন আমরা কি খাব? কিন্তু এই প্রশ্ন কার কাছে করব। সত্য কথা হলো অসাধু বাণিজ্য যার হাতে পড়বে, তারা এমনটা করবেই। সে সরকারি হোক- কি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। এর থেকে উত্তরণে অবশ্যই যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। না হলে মানহীন পণ্যই মানুষ কিনে খেতে বাধ্য হবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা গবেষণা করে কিছু দিন পরে ফলাফল তুলে ধরি। কিন্তু যারা নীতিনির্ধারণী আছেন তারা বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করতে পারেন।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের এক গবেষণা প্রতিবেদনে গরুর দুধ বা দুগ্ধজাত খাদ্যে পাওয়া যায় মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর নানা উপাদান। এমন প্রতিবেদন গণমাধ্যমে আসার পর থেকেই সারা দেশে এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। বিষয়টি গড়ায় হাইকোর্টেও।

এমন পরিস্থিতিতে ঢাবির ফার্মেসি বিভাগ বাজার থেকে দুধ ও ঘিসহ আটটি ভোগ্যপণ্যের নমুনা সংগ্রহ করে গবেষণা করে।