পবিত্র শবেবরাতে আমাদের করণীয়

  • আপডেট: ০৮:৩৬:৩৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ এপ্রিল ২০২০
  • ২৭

হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ-ফাইল ছবি

শবে বরাতের প্রকৃত নাম হাদীসের ভাষায় “ লাইলাতুন্ নিসফ মিন শাবান ” বা শাবানের মধ্যরাতে। আমরা এই রাতকে শবে-বরাত কিংবা লাইলাতুল বরাত বলে থাকি। হাদীসের গ্রন্থ সমূহে এই রাত্রকে লাইলাতুল বরাত কোথাও বলা হয়নি। এই রাত সম্পর্কে হাদীসে শিরোনাম ব্যবহৃত হয়েছে- শাবানের মধ্যরাত সম্পর্কে বর্ণনা। আমাদের সমাজে এ রাতের প্রচলিত নাম হলো শবে বরাত ‘শব’ শব্দের অর্থ রাত আর বরাত হচ্ছে মুক্তি। এ হিসেবে শবে বরাতের অর্থ দাঁড়ায় ‘মুক্তির রাত’। এ নাম জনসাধারণে বহুল প্রচলিত।

এই রাতের গুরুত্ব ও তাৎপর্য সম্পর্কে হযরত আয়শা (রা:) বর্ণনা করেন যে, এক রাতে আল্লাহর রাসুল আমার ঘরে থাকার কথা ছিল, রাতে তিনি আমার ঘরে শুছেন। হঠাৎ আমার ঘুম ভেঙ্গে যাওয়ার পর আমি আশেপাশে অনেক খুঁজে দেখলাম যে, আল্লাহর রাসুল (সা:) বিছানায় নেই। আমি সন্দেহ করলাম কি ব্যাপার, আল্লাহর রাসুল কি আমাকে ছেড়ে অন্য স্ত্রীর ঘরে চলে গেলেন ? আজকের রাততো আমার হক্ব।

আজ রাত্রে তো আল্লাহর রাসুল আমার ঘরে থাকার কথা, তিনি কোথায় ? রাসুলকে খোঁজার জন্য তিনি বের হয়ে গেলেন। বের হয়ে দেখলেন যে, তিনি মসজিদে নববীর পাশে জান্নাতুল বাকী কবরস্থানে দাড়িয়ে যিয়ারত করছেন। আল্লাহর রাসুল যখন টের পেলেন যে, হযরত আয়েশা (রা:) এসেছেন, তখন তিনি আয়েশা (রা:) এর সাথে কথা বললেন, জিজ্ঞাসা করলেন, হে আয়েশা! তোমার কি আশঙ্কা হয়েছে যে, আল্লাহর রাসুল কারো হক্ব নষ্ট করবেন ? জেনে রাখ, আল্লাহর রাসুল কারো হক্ব নষ্ট করতে পারেনা। কোনো মানুষর উপর জুলুম করতে পারে না। হে আয়েশা আজকের রাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাত। এই রাতে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আসমানে অবতরণ করেন। অর্থাৎ- মাগরীব থেকে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন রহমত নিয়ে প্রথম আসমানে আসেন। আল্লাহর রহমতের দৃষ্টি বান্দাদের প্রতি নিবদ্ধ করার জন্য তার রহমত প্রেরণ করেন।

আল্লাহর রাসুল বলেন হে আয়েশা ! আল্লাহ তায়ালা দয়া নিয়ে প্রথম আসমানে নাযিল হন এবং প্রচুর সংখ্যক মানুষের গুনাহকে ক্ষমা করেন। এ জন্যই আমি যারা কবরে শুয়ে আছে তাদের যিয়ারত করতে এসেছি। তাদের রুহের মাগফীরাত কামনা করছি। হাদীস দ্বারা বুঝা যায়, এই রাত হচ্ছে তওবার রাত, এই রাত হচ্ছে আল্লাহর কাছে পাওয়ার রাত, চাওয়ার রাত। এই রাত হচ্ছে আল্লাহর দরবারে কাঁদার রাত। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন গুনাহ মাফ করার জন্য প্রস্তুত। আমাদের মাফ চাইতে হবে। আমরা শবে বরাতে ঘরে কিংবা মসজিদে নীরব জায়গায় আল্লাহর দরবারে কান্না করার চেস্টা করব। কারণ, এই রাত হচ্ছে কান্নার রাত। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এই রাতে লক্ষ লক্ষ মানুষকে ক্ষমা করেন। আর আমি যেন এই লক্ষ মানুষের বাহিরে না থাকি আল্লাহর রহমতের চাদরে যেন অন্তর্ভূক্ত থাকি। এ জন্য আল্লাহর কাছে কাঁদতে হবে। হাদীসে আছে মশার ডানা পরিমাণ অর্থাৎ- এক কণা চোখ দিয়ে যদি পানি বের হয় তাহলে সে চোখকে কখনো জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবেনা।

আসুন, শবে বরাতে আমরা কাঁদি এবং দুআ করি, হে আল্লাহ! তুমি আমাদেরকে ক্ষমা করে দাও। হে আল্লাহ তুমি মাবুদ, তুমি রহমান, তুমি রহীম, আমাদেরকে ক্ষমা করে দাও।

এভাবে বলব আর কাঁদবো, আল্লাহর কাছে চাইব, নিজেকে ছোট মনে করব, তওবা করব। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পবিত্র কুরআনে বার বার বলেছেন, হে বান্দা তওবা করো, ক্ষমা চাও, মাফ চাও, দুনিয়ার মানুষ মাফ চাইলে মাফ করতে পারেনা, কিন্তু আল্লাহ পাক বলেন আমি মাফ করে দিতে প্রস্তুত। আমি রহমানুর রাহীম। শবে বরাতের একটি বিশেষ আমল নামায। এ রাতে অধিক হারে নফল নামাজ আদায় করার চেষ্টা করবো। দু’ রাকাত নফল নামাজ যদি আল্লাহর দরবারে কবুল হয় আমরা জান্নাতে যাওয়ার জন্য সে দু’ রাকাতই যথেষ্ট হয়ে যাবে। বৎসরের প্রতি রাতেইতো আমরা ঘুমাচ্ছি। অন্তত: কয়েকটি রাত যেমন: শবে বরাত, শবে কদর, দুই ঈদের রাত জাগ্রত থেকে যদি আমরা ইবাদত করি তাহলে আমাদের কোনো ক্ষতি হবে না। কাজেই আমরা নামাজ পড়ব। সহীহ ও সুন্দরভাবে তেলাওয়াত করব।

বেশী বেশী করে আল্লাহর নবীর উপর দুরূদ পাঠ করব। যে ব্যক্তি একবার দুরূদ পাঠ করবে আল্লাহ তায়ালা তার উপর দশটি রহমত নাযিল করবেন। যে দোয়ার শুরুতে দুরূদ পড়া হয়না আল্লাহ তায়ালা তা কবুল করেন না। এজন্য দোয়ার শুরুতে এবং শেষে দুরূদ পাঠ করতে হবে। এরপর আমরা ইস্তেগফার পড়ব। বলবো হে আল্লাহ ! অনেক গুনাহ করেছি, সে গুনাহ থেকে আমরা ক্ষমা চাই। এটাকে বলা হয় ইস্তেগফার।

এটা বার বার করতে থাকব। কারণ, এটা তাওবার রাত, গুনাহ মাফ চাওয়ার রাত। আর রাতে আমরা কবর যিয়ারত করব। একটু আগেই আমরা আয়েশা (রা:) এর হাদীস থেকে জানতে পেরেছি যে, এ রাতে মহানবী (সা:) জান্নাতুল বাকীতে কবর যিয়ারত করেছেন। কাজেই আমরা কবর যিয়ারতের চেষ্টা করব।

এ দিনে রোযা পালনীয়:
ইবনে মাজাহ শরীফের হাদীসে আছে, যখন শাবানের মধ্যরাত আসবে তখন তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো, কান্নাকাটি করে, ইবাদতের মাধ্যমে রাত জাগ্রত কর। আর দিনের বেলায় রোজা রাখা। শাবান মাসে আল্লাহর রাসুল সবচেয়ে বেশী রোযা রাখতেন, বিশেষ করে শাবান মাসের ১৫ তারিখে রোজা রাখার কথা হাদীসে বর্ণিত আছে। এ রাতে যারা অসুস্থ কিংবা দুর্বল পুরারাত এবাদত করার সুযোগ হবেনা, তারা তাড়াতাড়ি শুয়ে ভোর রাতে উঠে যাবে। যাতে তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করতে পারে। কারণ, তাহাজ্জুদের সময় দোয়া কবুলের সময়। বিশেষ করে শাবানের এই রাতে কারো যেন তাহাজ্জুদ ছুটে না যায়। এই রাতে যদি তাহাজ্জুদ পড়তে না পারি তাহলে আমার চেয়ে পোড়া কপাল আর কার হতে পারে। সাহরী খেয়ে ফজরের নামাজ মসজিদে আদায় করতে হবে। কারণ হাদীসে এসেছে, যে ব্যক্তি এশার নামাজ এবং ফজরের নামাজ মসজিদে জামাতের সাথে আদায় করবে, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাকে সারারাত ইবাদত করার সওয়াব দান করবেন। কাজেই, এশার এবং ফজরের নামাজ প্রথম তাকবীরের সাথে জামাতে আদায় করব। এ ছাড়া শবে বরাতে যত পারি যিকির করব, তসবীহ পাঠ করবো, সাধ্যমত দান-সদকা করবো। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কুরআন হাদীসের আলোকে আমাদেরকে শবেবরাত পালন করার তাওফীক দান করুন। আমিন।

লেখিকা পরিচিতি
মোসা: তাবাসসুম সুলতানা
পিতা- মুফতি শেখ মো. এনামুল হক
হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ
হাজীগঞ্জ-চাঁদপুর।
০১৭১২৬৫১০৮২

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

যে কারণে পুরুষে ৪টি বিয়ের পক্ষে হীরা সুমরো

পবিত্র শবেবরাতে আমাদের করণীয়

আপডেট: ০৮:৩৬:৩৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ এপ্রিল ২০২০

শবে বরাতের প্রকৃত নাম হাদীসের ভাষায় “ লাইলাতুন্ নিসফ মিন শাবান ” বা শাবানের মধ্যরাতে। আমরা এই রাতকে শবে-বরাত কিংবা লাইলাতুল বরাত বলে থাকি। হাদীসের গ্রন্থ সমূহে এই রাত্রকে লাইলাতুল বরাত কোথাও বলা হয়নি। এই রাত সম্পর্কে হাদীসে শিরোনাম ব্যবহৃত হয়েছে- শাবানের মধ্যরাত সম্পর্কে বর্ণনা। আমাদের সমাজে এ রাতের প্রচলিত নাম হলো শবে বরাত ‘শব’ শব্দের অর্থ রাত আর বরাত হচ্ছে মুক্তি। এ হিসেবে শবে বরাতের অর্থ দাঁড়ায় ‘মুক্তির রাত’। এ নাম জনসাধারণে বহুল প্রচলিত।

এই রাতের গুরুত্ব ও তাৎপর্য সম্পর্কে হযরত আয়শা (রা:) বর্ণনা করেন যে, এক রাতে আল্লাহর রাসুল আমার ঘরে থাকার কথা ছিল, রাতে তিনি আমার ঘরে শুছেন। হঠাৎ আমার ঘুম ভেঙ্গে যাওয়ার পর আমি আশেপাশে অনেক খুঁজে দেখলাম যে, আল্লাহর রাসুল (সা:) বিছানায় নেই। আমি সন্দেহ করলাম কি ব্যাপার, আল্লাহর রাসুল কি আমাকে ছেড়ে অন্য স্ত্রীর ঘরে চলে গেলেন ? আজকের রাততো আমার হক্ব।

আজ রাত্রে তো আল্লাহর রাসুল আমার ঘরে থাকার কথা, তিনি কোথায় ? রাসুলকে খোঁজার জন্য তিনি বের হয়ে গেলেন। বের হয়ে দেখলেন যে, তিনি মসজিদে নববীর পাশে জান্নাতুল বাকী কবরস্থানে দাড়িয়ে যিয়ারত করছেন। আল্লাহর রাসুল যখন টের পেলেন যে, হযরত আয়েশা (রা:) এসেছেন, তখন তিনি আয়েশা (রা:) এর সাথে কথা বললেন, জিজ্ঞাসা করলেন, হে আয়েশা! তোমার কি আশঙ্কা হয়েছে যে, আল্লাহর রাসুল কারো হক্ব নষ্ট করবেন ? জেনে রাখ, আল্লাহর রাসুল কারো হক্ব নষ্ট করতে পারেনা। কোনো মানুষর উপর জুলুম করতে পারে না। হে আয়েশা আজকের রাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাত। এই রাতে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আসমানে অবতরণ করেন। অর্থাৎ- মাগরীব থেকে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন রহমত নিয়ে প্রথম আসমানে আসেন। আল্লাহর রহমতের দৃষ্টি বান্দাদের প্রতি নিবদ্ধ করার জন্য তার রহমত প্রেরণ করেন।

আল্লাহর রাসুল বলেন হে আয়েশা ! আল্লাহ তায়ালা দয়া নিয়ে প্রথম আসমানে নাযিল হন এবং প্রচুর সংখ্যক মানুষের গুনাহকে ক্ষমা করেন। এ জন্যই আমি যারা কবরে শুয়ে আছে তাদের যিয়ারত করতে এসেছি। তাদের রুহের মাগফীরাত কামনা করছি। হাদীস দ্বারা বুঝা যায়, এই রাত হচ্ছে তওবার রাত, এই রাত হচ্ছে আল্লাহর কাছে পাওয়ার রাত, চাওয়ার রাত। এই রাত হচ্ছে আল্লাহর দরবারে কাঁদার রাত। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন গুনাহ মাফ করার জন্য প্রস্তুত। আমাদের মাফ চাইতে হবে। আমরা শবে বরাতে ঘরে কিংবা মসজিদে নীরব জায়গায় আল্লাহর দরবারে কান্না করার চেস্টা করব। কারণ, এই রাত হচ্ছে কান্নার রাত। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এই রাতে লক্ষ লক্ষ মানুষকে ক্ষমা করেন। আর আমি যেন এই লক্ষ মানুষের বাহিরে না থাকি আল্লাহর রহমতের চাদরে যেন অন্তর্ভূক্ত থাকি। এ জন্য আল্লাহর কাছে কাঁদতে হবে। হাদীসে আছে মশার ডানা পরিমাণ অর্থাৎ- এক কণা চোখ দিয়ে যদি পানি বের হয় তাহলে সে চোখকে কখনো জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবেনা।

আসুন, শবে বরাতে আমরা কাঁদি এবং দুআ করি, হে আল্লাহ! তুমি আমাদেরকে ক্ষমা করে দাও। হে আল্লাহ তুমি মাবুদ, তুমি রহমান, তুমি রহীম, আমাদেরকে ক্ষমা করে দাও।

এভাবে বলব আর কাঁদবো, আল্লাহর কাছে চাইব, নিজেকে ছোট মনে করব, তওবা করব। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পবিত্র কুরআনে বার বার বলেছেন, হে বান্দা তওবা করো, ক্ষমা চাও, মাফ চাও, দুনিয়ার মানুষ মাফ চাইলে মাফ করতে পারেনা, কিন্তু আল্লাহ পাক বলেন আমি মাফ করে দিতে প্রস্তুত। আমি রহমানুর রাহীম। শবে বরাতের একটি বিশেষ আমল নামায। এ রাতে অধিক হারে নফল নামাজ আদায় করার চেষ্টা করবো। দু’ রাকাত নফল নামাজ যদি আল্লাহর দরবারে কবুল হয় আমরা জান্নাতে যাওয়ার জন্য সে দু’ রাকাতই যথেষ্ট হয়ে যাবে। বৎসরের প্রতি রাতেইতো আমরা ঘুমাচ্ছি। অন্তত: কয়েকটি রাত যেমন: শবে বরাত, শবে কদর, দুই ঈদের রাত জাগ্রত থেকে যদি আমরা ইবাদত করি তাহলে আমাদের কোনো ক্ষতি হবে না। কাজেই আমরা নামাজ পড়ব। সহীহ ও সুন্দরভাবে তেলাওয়াত করব।

বেশী বেশী করে আল্লাহর নবীর উপর দুরূদ পাঠ করব। যে ব্যক্তি একবার দুরূদ পাঠ করবে আল্লাহ তায়ালা তার উপর দশটি রহমত নাযিল করবেন। যে দোয়ার শুরুতে দুরূদ পড়া হয়না আল্লাহ তায়ালা তা কবুল করেন না। এজন্য দোয়ার শুরুতে এবং শেষে দুরূদ পাঠ করতে হবে। এরপর আমরা ইস্তেগফার পড়ব। বলবো হে আল্লাহ ! অনেক গুনাহ করেছি, সে গুনাহ থেকে আমরা ক্ষমা চাই। এটাকে বলা হয় ইস্তেগফার।

এটা বার বার করতে থাকব। কারণ, এটা তাওবার রাত, গুনাহ মাফ চাওয়ার রাত। আর রাতে আমরা কবর যিয়ারত করব। একটু আগেই আমরা আয়েশা (রা:) এর হাদীস থেকে জানতে পেরেছি যে, এ রাতে মহানবী (সা:) জান্নাতুল বাকীতে কবর যিয়ারত করেছেন। কাজেই আমরা কবর যিয়ারতের চেষ্টা করব।

এ দিনে রোযা পালনীয়:
ইবনে মাজাহ শরীফের হাদীসে আছে, যখন শাবানের মধ্যরাত আসবে তখন তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো, কান্নাকাটি করে, ইবাদতের মাধ্যমে রাত জাগ্রত কর। আর দিনের বেলায় রোজা রাখা। শাবান মাসে আল্লাহর রাসুল সবচেয়ে বেশী রোযা রাখতেন, বিশেষ করে শাবান মাসের ১৫ তারিখে রোজা রাখার কথা হাদীসে বর্ণিত আছে। এ রাতে যারা অসুস্থ কিংবা দুর্বল পুরারাত এবাদত করার সুযোগ হবেনা, তারা তাড়াতাড়ি শুয়ে ভোর রাতে উঠে যাবে। যাতে তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করতে পারে। কারণ, তাহাজ্জুদের সময় দোয়া কবুলের সময়। বিশেষ করে শাবানের এই রাতে কারো যেন তাহাজ্জুদ ছুটে না যায়। এই রাতে যদি তাহাজ্জুদ পড়তে না পারি তাহলে আমার চেয়ে পোড়া কপাল আর কার হতে পারে। সাহরী খেয়ে ফজরের নামাজ মসজিদে আদায় করতে হবে। কারণ হাদীসে এসেছে, যে ব্যক্তি এশার নামাজ এবং ফজরের নামাজ মসজিদে জামাতের সাথে আদায় করবে, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাকে সারারাত ইবাদত করার সওয়াব দান করবেন। কাজেই, এশার এবং ফজরের নামাজ প্রথম তাকবীরের সাথে জামাতে আদায় করব। এ ছাড়া শবে বরাতে যত পারি যিকির করব, তসবীহ পাঠ করবো, সাধ্যমত দান-সদকা করবো। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কুরআন হাদীসের আলোকে আমাদেরকে শবেবরাত পালন করার তাওফীক দান করুন। আমিন।

লেখিকা পরিচিতি
মোসা: তাবাসসুম সুলতানা
পিতা- মুফতি শেখ মো. এনামুল হক
হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ
হাজীগঞ্জ-চাঁদপুর।
০১৭১২৬৫১০৮২