চাঁদপুরের ২ নৌ-টিআই অর্ধ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে

  • আপডেট: ০২:০৮:৪৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ জুন ২০১৯
  • ৪৫

বিশেষ প্রতিনিধি:

পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে চলাচল করা স্পেশাল লঞ্চের মালিকদের কাছে থেকে বেআইনীভাবে অর্থ হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে চাঁদপুর লঞ্চঘাট থেকে স্পেশাল লঞ্চ থেকে অর্ধ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে বিআইডব্লিউটিএ’র লঞ্চঘাটের ২ টিআই’র বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, চাঁদপুর লঞ্চঘাটের বিআইডব্লিউটিএ’র টিআই সুমন ও মাহাতাবের বিরুদ্ধে লঞ্চ থেকে অর্থিক সুবিধা নিয়ে লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী, পল্টুনে লঞ্চ অতিরিক্ত সময়ে বার্ধিং, চালকদের কাগজপত্র দেখানোর নামে হয়রানীসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।
সরোজমিনে লঞ্চঘাটে গেলে একাধিক লঞ্চের সুপারভাইজার ও চালকরা জানান, ২৭ থেকে ২৯ রমজান পর্যন্ত চাঁদপুর থেকে বরিশালগামী স্পেশাল সব লঞ্চ থেকে বিভিন্ন হারে বিনা রশিদে টাকা নেন বিআইডব্লিউটিএ’র দায়িত্বে থাকা টিআই মাহাতাব ও সুমন। চাঁদপুর থেকে বরিশালগামী যেসব লঞ্চ থেকে টাকা নিয়েছেন সেগুলো হলো- মানিক-১ লঞ্চ থেকে ৫ হাজার টাকা, পূবালী-৭ লঞ্চ থেকে ৪ হাজার টাকা, যুবরাজ-৪ লঞ্চ থেকে ৫ হাজার টাকা, শারুক-১ লঞ্চ থেকে ৫ হাজার টাকা, সোনারতরী-২ লঞ্চ থেকে ৫ হাজার টাকা, মশিরণ খান লঞ্চ থেকে ৪ হাজার টাকা, সোনারতরী-৫ লঞ্চ থেকে ৪ হাজার টাকা, আঁচল লঞ্চ থেকে ৪ হাজার টাকা।
এছাড়া ঈদের পর চাঁদপুর থেকে ঢাকাগামী স্পেশাল লঞ্চ থেকেও টাকা নেন বিআইডব্লিউটিএ’র দায়িত্বে থাকা টিআই মাহাতাব ও সুমন। লঞ্চগুলো হলো- সোনারতরী-২, বোগদাদীয়া-৮, দেশান্তর, মিতালী ও প্রিন্স অব রাসেল লঞ্চ থেকে ২ হাজার টাকা করে নেয়া হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক লঞ্চের সুপারভাইজার ও চালকরা জানান, বিআইডব্লিউটিএ’র দায়িত্বে থাকা টিআই মাহাতাব ও সুমন বিভিন্ন লঞ্চ ছাড়ার আগে অতিরিক্ত যাত্রী বহনের অজুহাতে ৫শ’ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত নেন। এছাড়া লঞ্চের চালকদের কাগজপত্র দেখার নামে বিভিন্ন অঙ্কের অর্থে নেন তারা। তাদের চাহিদামতো টাকা না দিলে মামলা দেয়ার হুমকি দেয়া হয়। মামলার ভয়ে তাদের চাহিদামতো টাকা দেয়া হতো।
এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ’র লঞ্চ ঘাটে দায়িত্বে থাকা টিআই মাহাতাব বলেন, স্পেশাল লঞ্চের নামে আমি কোন টাকা নেইনি। আমি এখানে নতুন এসেছি। টিআই সুমন পুরনো, আপনারা সুমনের সাথে কথা বলেন। লঞ্চ টাইম না মানলে বন্দর কর্মকর্তাকে জানানো হয়। তিনি যে নির্দেশনা দেন সে মোতাবেক আমরা কাজ করি। এতে বন্দর কর্মকর্তা যদি মামলা দিতে বলেন, তাহলে আমরা মামলা দেই।
টিআই মাহাতাবের কাছে ঈদে ছেড়ে যাওয়া স্পেশাল লঞ্চের তালিকা চাইলে তিনি বলেন, তালিকা আমার কাছে নেই। বন্দর কর্মকর্তার কাছে জমা দেয়া হয়ে গেছে। আর বন্দর কর্মকর্তার কথা ছাড়া আমি কোন তালিকা দিতে পারবো না।
এ বিষয়ে টিআই সুমনের বক্তব্য নিতে গিয়ে লঞ্চঘাটে তাকে পাওয়া যায়নি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিনি শুক্রবার ছুটিতে গেছেন। মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, এ ধরনের কোন টাকা নেয়া হয়নি। আপনি বন্দর কর্মকর্তার সাথে কথা বলেন।
বন্দর কর্মকর্তা মো. আব্দুর রাজ্জাক জানান, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আমি আপনার কাছ থেকে শুনলাম। কি কারণে টাকা নিলো, ক্ষতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বন্দর এলাকায় এরকম কোনো অনিয়ম দেখা গেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

মতলব উত্তর উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ কুদ্দুস’সহ ২০৬ জনকে আসামী করে মামলা

চাঁদপুরের ২ নৌ-টিআই অর্ধ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে

আপডেট: ০২:০৮:৪৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ জুন ২০১৯

বিশেষ প্রতিনিধি:

পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে চলাচল করা স্পেশাল লঞ্চের মালিকদের কাছে থেকে বেআইনীভাবে অর্থ হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে চাঁদপুর লঞ্চঘাট থেকে স্পেশাল লঞ্চ থেকে অর্ধ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে বিআইডব্লিউটিএ’র লঞ্চঘাটের ২ টিআই’র বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, চাঁদপুর লঞ্চঘাটের বিআইডব্লিউটিএ’র টিআই সুমন ও মাহাতাবের বিরুদ্ধে লঞ্চ থেকে অর্থিক সুবিধা নিয়ে লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী, পল্টুনে লঞ্চ অতিরিক্ত সময়ে বার্ধিং, চালকদের কাগজপত্র দেখানোর নামে হয়রানীসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।
সরোজমিনে লঞ্চঘাটে গেলে একাধিক লঞ্চের সুপারভাইজার ও চালকরা জানান, ২৭ থেকে ২৯ রমজান পর্যন্ত চাঁদপুর থেকে বরিশালগামী স্পেশাল সব লঞ্চ থেকে বিভিন্ন হারে বিনা রশিদে টাকা নেন বিআইডব্লিউটিএ’র দায়িত্বে থাকা টিআই মাহাতাব ও সুমন। চাঁদপুর থেকে বরিশালগামী যেসব লঞ্চ থেকে টাকা নিয়েছেন সেগুলো হলো- মানিক-১ লঞ্চ থেকে ৫ হাজার টাকা, পূবালী-৭ লঞ্চ থেকে ৪ হাজার টাকা, যুবরাজ-৪ লঞ্চ থেকে ৫ হাজার টাকা, শারুক-১ লঞ্চ থেকে ৫ হাজার টাকা, সোনারতরী-২ লঞ্চ থেকে ৫ হাজার টাকা, মশিরণ খান লঞ্চ থেকে ৪ হাজার টাকা, সোনারতরী-৫ লঞ্চ থেকে ৪ হাজার টাকা, আঁচল লঞ্চ থেকে ৪ হাজার টাকা।
এছাড়া ঈদের পর চাঁদপুর থেকে ঢাকাগামী স্পেশাল লঞ্চ থেকেও টাকা নেন বিআইডব্লিউটিএ’র দায়িত্বে থাকা টিআই মাহাতাব ও সুমন। লঞ্চগুলো হলো- সোনারতরী-২, বোগদাদীয়া-৮, দেশান্তর, মিতালী ও প্রিন্স অব রাসেল লঞ্চ থেকে ২ হাজার টাকা করে নেয়া হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক লঞ্চের সুপারভাইজার ও চালকরা জানান, বিআইডব্লিউটিএ’র দায়িত্বে থাকা টিআই মাহাতাব ও সুমন বিভিন্ন লঞ্চ ছাড়ার আগে অতিরিক্ত যাত্রী বহনের অজুহাতে ৫শ’ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত নেন। এছাড়া লঞ্চের চালকদের কাগজপত্র দেখার নামে বিভিন্ন অঙ্কের অর্থে নেন তারা। তাদের চাহিদামতো টাকা না দিলে মামলা দেয়ার হুমকি দেয়া হয়। মামলার ভয়ে তাদের চাহিদামতো টাকা দেয়া হতো।
এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ’র লঞ্চ ঘাটে দায়িত্বে থাকা টিআই মাহাতাব বলেন, স্পেশাল লঞ্চের নামে আমি কোন টাকা নেইনি। আমি এখানে নতুন এসেছি। টিআই সুমন পুরনো, আপনারা সুমনের সাথে কথা বলেন। লঞ্চ টাইম না মানলে বন্দর কর্মকর্তাকে জানানো হয়। তিনি যে নির্দেশনা দেন সে মোতাবেক আমরা কাজ করি। এতে বন্দর কর্মকর্তা যদি মামলা দিতে বলেন, তাহলে আমরা মামলা দেই।
টিআই মাহাতাবের কাছে ঈদে ছেড়ে যাওয়া স্পেশাল লঞ্চের তালিকা চাইলে তিনি বলেন, তালিকা আমার কাছে নেই। বন্দর কর্মকর্তার কাছে জমা দেয়া হয়ে গেছে। আর বন্দর কর্মকর্তার কথা ছাড়া আমি কোন তালিকা দিতে পারবো না।
এ বিষয়ে টিআই সুমনের বক্তব্য নিতে গিয়ে লঞ্চঘাটে তাকে পাওয়া যায়নি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিনি শুক্রবার ছুটিতে গেছেন। মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, এ ধরনের কোন টাকা নেয়া হয়নি। আপনি বন্দর কর্মকর্তার সাথে কথা বলেন।
বন্দর কর্মকর্তা মো. আব্দুর রাজ্জাক জানান, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আমি আপনার কাছ থেকে শুনলাম। কি কারণে টাকা নিলো, ক্ষতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বন্দর এলাকায় এরকম কোনো অনিয়ম দেখা গেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।