চাঁদপুরে কোস্টগার্ড কর্তৃক অস্ত্রসহ আটক ১৪ ডাকাতকে ছেড়ে দেয়ার ঘটনায় তোলপাড়

  • আপডেট: ০৭:০১:৪৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২০
  • ৩০

বিশেষ প্রতিনিধি॥
চাঁদপুরে কোস্টগার্ড স্টেশন কর্তৃক মেঘনা নদী থেকে দেশীয় অস্ত্র, ইয়াবা ও গাঁজাসহ ডাকাত সন্দেহে আটক ১৪জন ব্যাক্তির বিরুদ্ধে কোন প্রকার মামলা দায়ের না করে অর্থের বিনিময়ে বিশেষ ব্যক্তির তদবিরে ছেড়ে দেয়ারা অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনা নিয়ে জানাজানি হওয়ার পর চাঁদপুরের রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় শুরু হয়েছে। অস্ত্রসহ ডাকাতদের আটকের পরে মামলা দায়ের না করে ছেড়ে দেয়ায় চাঁদপুরের নদী বন্দরসহ জেলে পরিবারে আত্মক বিরাজ করছে। এনিয়ে জনমনে মারাত্বক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) গভীর রাতে তাদেরকে আটক করে বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) ১৪জন ডাকাত সন্দেহে আটক ব্যাক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে জেলে পাঠানোর নিয়ম থাকলেও কোস্টগার্ড চাঁদপুর তা’নাকরে ছেড়ে দেন।
একটি সূত্রে জানা গেছে, ঢাকায় অবৈধভাবে কেসিনো জুয়া পরিচালনাকারী আটক যুবলীগের সভাপতি সম্রাটের চাঁদপুরের ১ নম্বর সহযোগির এসব ডাকাত দল। অবৈধভাবে নদীতে বালু উত্তোলনকারী ড্রেজার ও কার্গোর সাথে থাকা এ ১৪ ব্যাক্তিকে আটক করা হয়েছিল। সেই ক্ষমতাধর নেতার পক্ষে তার’ একটি অবৈধ চক্র কোস্টগার্ডের চাঁদপুর কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে তাদের সাথে দেন দরবার করে ১৪জন ডাকাত সন্দেহের নদীর জলদস্যুকে ছাড়িয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে।

প্রশ্ন উঠেছে, কোস্টগার্ড চাঁদপুরের কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার (৫ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছিলেন, যে আটক ১৪ জনের কাছে দেশীয় অস্ত্র, ইয়াবা ও গাঁজা পাওয়া গিয়েছে। যে কোস্টগার্ড কর্তৃপক্ষ আটক ১৪জনকে ডাকাত সন্দেহ করেছেন,সে কোস্টগার্ড কর্তৃপক্ষ কোন প্রকার মামলা বা আটকদের এলাকার স্থানীয় চেয়ারম্যানের সাটিফিকেট ছাড়া পুনরায় ১৪জনকে ছেড়ে দিয়ে জানান, তদন্ত সাপেক্ষে তারা জানতে পেরেছে, আটক ১৪ ব্যাক্তি সাধারণ শ্রমিক হওয়ায় তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
জনমনে আরো প্রশ্ন উঠেছে, কোস্টগার্ড কর্তৃপক্ষ নদীতে ডাকাত ও জলদস্যুকে আটকের ক্ষমতা রাখলেও তাদেরকে ছেড়ে দেওয়ার ক্ষমতা আইনানুগভাবে তাদের আছে কিনা।

কোস্টগার্ড চাঁদপুর স্টেশন কমান্ডার লেফট্যানেন্ট এ এস এম লুৎফর রহমান (৬ ফেব্রুয়ারি) মঙ্গলবার সকাল ১০টায় কোস্টগার্ড চাঁদপুর স্টেশন থেকে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করে জানান, চাঁদপুরের মেঘনা নদীর লগ্গিমারা চরে ডাকাত সন্দেহে ১৪ ট্রলার ও ড্রেজার শ্রমিক আটক করেছে কোস্টগার্ড চাঁদপুর স্টেশন কর্মকর্তারা। এসময় দুইটি ট্রলার ও একটি ড্রেজারও জব্দ করা হয়। রাতে আমাদের অভিযানের সময় নদীতে ট্রলার দেখলে থামানোর নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু ট্রলার না থামানোয় দুই রাউন্ড ফাঁকাগুলি ছোড়া হয়। পরে তারা একটি বাল্কহেডে গিয়ে পালালে সেখানে থেকে তাদের আটক করা হয়। এসময় কিছু দেশীয় অস্ত্র, ১০পিচ ইয়াবা ও গাঁজা উদ্ধার করা হয়। অভিযানে কোস্টগার্ড চাঁদপুর স্টেশন কমান্ডার ও টহল সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এ ব্যাপারে কোস্টগার্ড চাঁদপুর স্টেশন কমান্ডার লেফট্যানেন্ট এ এস এম লুৎফর রহমান তার মুঠো ফোনটি রিসিভ না করায়, তার কার্যালয়ের মিডিয়া সেলের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা লে: মো: হায়াত জানান, ডাকাত সন্দেহে আটক ১৪জনের ব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষে জানা গেছে,সন্দেহ ভাজন ডাকাত এরা সাধারন শ্রমিক। আমরা ( কোস্টগার্ড) যাওয়ার আগে (ডাকাতরা) পালিয়ে যায়। যে অস্ত্র উদ্বার করা হয়েছে,সে অস্ত্র ডাকাতদের ফেলে যাওয়া অস্ত্র। এ সব যানার পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

Tag :

সম্পাদক ও প্রকাশক:
মোঃ মহিউদ্দিন আল আজাদ

মোবাইল : ০১৭১৭-৯৯২০০৯ (নিউজ) বিজ্ঞাপন : ০১৬৭০-৯০৭৩৬৮
ইমেইলঃ notunerkotha@gmail.com

সর্বাধিক পঠিত

সমন্বয়ক আর জামায়াতের কারণে ইউনুছ সরকার ব্যর্থ হবে-ইঞ্জি. মমিনুল হক

চাঁদপুরে কোস্টগার্ড কর্তৃক অস্ত্রসহ আটক ১৪ ডাকাতকে ছেড়ে দেয়ার ঘটনায় তোলপাড়

আপডেট: ০৭:০১:৪৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২০

বিশেষ প্রতিনিধি॥
চাঁদপুরে কোস্টগার্ড স্টেশন কর্তৃক মেঘনা নদী থেকে দেশীয় অস্ত্র, ইয়াবা ও গাঁজাসহ ডাকাত সন্দেহে আটক ১৪জন ব্যাক্তির বিরুদ্ধে কোন প্রকার মামলা দায়ের না করে অর্থের বিনিময়ে বিশেষ ব্যক্তির তদবিরে ছেড়ে দেয়ারা অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনা নিয়ে জানাজানি হওয়ার পর চাঁদপুরের রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় শুরু হয়েছে। অস্ত্রসহ ডাকাতদের আটকের পরে মামলা দায়ের না করে ছেড়ে দেয়ায় চাঁদপুরের নদী বন্দরসহ জেলে পরিবারে আত্মক বিরাজ করছে। এনিয়ে জনমনে মারাত্বক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) গভীর রাতে তাদেরকে আটক করে বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) ১৪জন ডাকাত সন্দেহে আটক ব্যাক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে জেলে পাঠানোর নিয়ম থাকলেও কোস্টগার্ড চাঁদপুর তা’নাকরে ছেড়ে দেন।
একটি সূত্রে জানা গেছে, ঢাকায় অবৈধভাবে কেসিনো জুয়া পরিচালনাকারী আটক যুবলীগের সভাপতি সম্রাটের চাঁদপুরের ১ নম্বর সহযোগির এসব ডাকাত দল। অবৈধভাবে নদীতে বালু উত্তোলনকারী ড্রেজার ও কার্গোর সাথে থাকা এ ১৪ ব্যাক্তিকে আটক করা হয়েছিল। সেই ক্ষমতাধর নেতার পক্ষে তার’ একটি অবৈধ চক্র কোস্টগার্ডের চাঁদপুর কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে তাদের সাথে দেন দরবার করে ১৪জন ডাকাত সন্দেহের নদীর জলদস্যুকে ছাড়িয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে।

প্রশ্ন উঠেছে, কোস্টগার্ড চাঁদপুরের কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার (৫ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছিলেন, যে আটক ১৪ জনের কাছে দেশীয় অস্ত্র, ইয়াবা ও গাঁজা পাওয়া গিয়েছে। যে কোস্টগার্ড কর্তৃপক্ষ আটক ১৪জনকে ডাকাত সন্দেহ করেছেন,সে কোস্টগার্ড কর্তৃপক্ষ কোন প্রকার মামলা বা আটকদের এলাকার স্থানীয় চেয়ারম্যানের সাটিফিকেট ছাড়া পুনরায় ১৪জনকে ছেড়ে দিয়ে জানান, তদন্ত সাপেক্ষে তারা জানতে পেরেছে, আটক ১৪ ব্যাক্তি সাধারণ শ্রমিক হওয়ায় তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
জনমনে আরো প্রশ্ন উঠেছে, কোস্টগার্ড কর্তৃপক্ষ নদীতে ডাকাত ও জলদস্যুকে আটকের ক্ষমতা রাখলেও তাদেরকে ছেড়ে দেওয়ার ক্ষমতা আইনানুগভাবে তাদের আছে কিনা।

কোস্টগার্ড চাঁদপুর স্টেশন কমান্ডার লেফট্যানেন্ট এ এস এম লুৎফর রহমান (৬ ফেব্রুয়ারি) মঙ্গলবার সকাল ১০টায় কোস্টগার্ড চাঁদপুর স্টেশন থেকে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করে জানান, চাঁদপুরের মেঘনা নদীর লগ্গিমারা চরে ডাকাত সন্দেহে ১৪ ট্রলার ও ড্রেজার শ্রমিক আটক করেছে কোস্টগার্ড চাঁদপুর স্টেশন কর্মকর্তারা। এসময় দুইটি ট্রলার ও একটি ড্রেজারও জব্দ করা হয়। রাতে আমাদের অভিযানের সময় নদীতে ট্রলার দেখলে থামানোর নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু ট্রলার না থামানোয় দুই রাউন্ড ফাঁকাগুলি ছোড়া হয়। পরে তারা একটি বাল্কহেডে গিয়ে পালালে সেখানে থেকে তাদের আটক করা হয়। এসময় কিছু দেশীয় অস্ত্র, ১০পিচ ইয়াবা ও গাঁজা উদ্ধার করা হয়। অভিযানে কোস্টগার্ড চাঁদপুর স্টেশন কমান্ডার ও টহল সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এ ব্যাপারে কোস্টগার্ড চাঁদপুর স্টেশন কমান্ডার লেফট্যানেন্ট এ এস এম লুৎফর রহমান তার মুঠো ফোনটি রিসিভ না করায়, তার কার্যালয়ের মিডিয়া সেলের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা লে: মো: হায়াত জানান, ডাকাত সন্দেহে আটক ১৪জনের ব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষে জানা গেছে,সন্দেহ ভাজন ডাকাত এরা সাধারন শ্রমিক। আমরা ( কোস্টগার্ড) যাওয়ার আগে (ডাকাতরা) পালিয়ে যায়। যে অস্ত্র উদ্বার করা হয়েছে,সে অস্ত্র ডাকাতদের ফেলে যাওয়া অস্ত্র। এ সব যানার পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।