রামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে নকলে বাঁধা দেওয়ায় শিক্ষক অবরুদ্ধ!

  • আপডেট: ০৪:৪৫:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২০
  • ২৮

নিজস্ব প্রতিনিধি
হাজীগঞ্জের রামপুর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে শিক্ষাথীদের নকলে বাঁধা দেওয়ায় কর্মকর্তা ও হল পরিদর্শকদের অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থী ওই রামপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার কালচোঁ দক্ষিণ ইউনিয়নের রামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের এস.এস.সি পরীক্ষা কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। ওই কেন্দ্রে মৈশাইদ পল্লী মঙ্গল উচ্চ বিদ্যালয়, আল বান্না উচ্চ বিদ্যালয়, রামপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও বোরখাল উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীরা অংশ নেয়। ।
জানা গেছে, মঙ্গলবার গণিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা ভালো না হওয়ায় এবং পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে বিশেষ সুবিধা না পেয়ে পরীক্ষা শেষে তারা, কেন্দ্রে দায়িত্বরত কর্মকর্তা ও শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে রাখে। বিষয়টি উপজেলা উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বৈশাখী বড়ুয়াকে অবহিত করা হলে, তিনি তাৎখনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং পুলিশের উপস্থিতিতে পরীক্ষার খাতা নিয়ে কেন্দ্র ত্যাগ করেন, দায়িত্বরত কর্মকর্তা ও শিক্ষকরা। এর আগে ইংরেজী পরীক্ষা চলাকালীণ সময়ে রামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেনকে তার বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীদের সহযোগিতা করার অভিযোগ উঠলে, তাকে সতর্ক করেন কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রনজিৎ।
যদিও কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রনজিৎ তার (জাহাঙ্গীর হোসেন) কাছে ইংরেজী পরীক্ষার উত্তরপত্রসহ পান বলে গুঞ্জন রয়েছে। এরপর থেকেই প্রশাসন বাড়তি সর্তকর্তা অবলম্বন করে পরীক্ষা কেন্দ্রের নিরাপত্তা জোরদার করে। তারপর থেকেই রামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থী ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। অভিযোগ রয়েছে, পরীক্ষা ভালো না হওয়ায় এবং বিশেষ সুবিধা না পেয়েই মঙ্গলবার পরীক্ষা শেষে কেন্দ্রের দায়িত্বরত কর্মকর্তা ও শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে।
এ সময় তারা (রামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীরা) সহকারী কেন্দ্র সচিব ও মৈশাইদ পল্লী মঙ্গল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহ্ এমরান হোসেনের উপর চড়াও হন। এ ছাড়াও কেন্দ্রের বাইরে রামপুর এলাকার যুবকেরা মৈশাইদ পল্লী মঙ্গল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পরীক্ষার্থীদের সাথে অশোভন আচরনসহ হুমকি-ধমকি দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।
এ ব্যাপারে রামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেনের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ উদ্দেশ্য প্রনোদিত, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট।
সহকারী কেন্দ্র সচিব ও মৈশাইদ পল্লী মঙ্গল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহ্ এমরান হোসেন জানান, রামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীরা অযথা আমি এবং আমার বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীদের উপর ক্ষিপ্ত। তিনি বলেন, ওই বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীরা এবং এলাকার লোকজন আমাকে এবং আমার পরীক্ষার্থীদের বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। এতে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। বিষয়টি তিনি ইউএনও’কে অবহিত করেছেন বলে জানান।
এ দিকে উল্লেখিত বিষয় জানার জন্য এবং কেন্দ্র সচিবের বক্তব্যে নেয়ার লক্ষ্যে কেন্দ্র সচিব ও রামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. কবির হোসেনকে বেশ কয়েকবার মুঠোফোনে (রবি ও গ্রামীণফোন নম্বর) কল দিলেও, তিনি মোবাইল ফোনটি রিসিভ করেন নি এবং পরে ফোন ব্যাকও করেন নি।
থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আলমগীর হোসেন রনি জানান, খবর পেয়ে তাৎখনিক রামপুর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ফোর্স পাঠানো হয়। কিন্তু পুলিশ যাওয়ার আগেই বিষয়টি মীমাংসা হয়ে যায়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বৈশাখী বড়ুয়া বলেন, শিক্ষকদের অবরুদ্ধের খবর পেয়ে তাৎখনিক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এবং পরীক্ষা কেন্দ্র ও পরীক্ষা চলাকালীণ সময়ে কেন্দ্রের বাইরে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও পরীক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টির প্রতি জোর দেয়া হবে। এর ব্যতয় ঘটলে পরবর্তীতে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

হাটিলা পূর্ব ইউনিয়নে সিমস্ প্রকল্প বিষয়ক অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত

রামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে নকলে বাঁধা দেওয়ায় শিক্ষক অবরুদ্ধ!

আপডেট: ০৪:৪৫:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২০

নিজস্ব প্রতিনিধি
হাজীগঞ্জের রামপুর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে শিক্ষাথীদের নকলে বাঁধা দেওয়ায় কর্মকর্তা ও হল পরিদর্শকদের অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থী ওই রামপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার কালচোঁ দক্ষিণ ইউনিয়নের রামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের এস.এস.সি পরীক্ষা কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। ওই কেন্দ্রে মৈশাইদ পল্লী মঙ্গল উচ্চ বিদ্যালয়, আল বান্না উচ্চ বিদ্যালয়, রামপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও বোরখাল উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীরা অংশ নেয়। ।
জানা গেছে, মঙ্গলবার গণিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা ভালো না হওয়ায় এবং পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে বিশেষ সুবিধা না পেয়ে পরীক্ষা শেষে তারা, কেন্দ্রে দায়িত্বরত কর্মকর্তা ও শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে রাখে। বিষয়টি উপজেলা উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বৈশাখী বড়ুয়াকে অবহিত করা হলে, তিনি তাৎখনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং পুলিশের উপস্থিতিতে পরীক্ষার খাতা নিয়ে কেন্দ্র ত্যাগ করেন, দায়িত্বরত কর্মকর্তা ও শিক্ষকরা। এর আগে ইংরেজী পরীক্ষা চলাকালীণ সময়ে রামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেনকে তার বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীদের সহযোগিতা করার অভিযোগ উঠলে, তাকে সতর্ক করেন কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রনজিৎ।
যদিও কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রনজিৎ তার (জাহাঙ্গীর হোসেন) কাছে ইংরেজী পরীক্ষার উত্তরপত্রসহ পান বলে গুঞ্জন রয়েছে। এরপর থেকেই প্রশাসন বাড়তি সর্তকর্তা অবলম্বন করে পরীক্ষা কেন্দ্রের নিরাপত্তা জোরদার করে। তারপর থেকেই রামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থী ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। অভিযোগ রয়েছে, পরীক্ষা ভালো না হওয়ায় এবং বিশেষ সুবিধা না পেয়েই মঙ্গলবার পরীক্ষা শেষে কেন্দ্রের দায়িত্বরত কর্মকর্তা ও শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে।
এ সময় তারা (রামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীরা) সহকারী কেন্দ্র সচিব ও মৈশাইদ পল্লী মঙ্গল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহ্ এমরান হোসেনের উপর চড়াও হন। এ ছাড়াও কেন্দ্রের বাইরে রামপুর এলাকার যুবকেরা মৈশাইদ পল্লী মঙ্গল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পরীক্ষার্থীদের সাথে অশোভন আচরনসহ হুমকি-ধমকি দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।
এ ব্যাপারে রামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেনের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ উদ্দেশ্য প্রনোদিত, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট।
সহকারী কেন্দ্র সচিব ও মৈশাইদ পল্লী মঙ্গল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহ্ এমরান হোসেন জানান, রামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীরা অযথা আমি এবং আমার বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীদের উপর ক্ষিপ্ত। তিনি বলেন, ওই বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীরা এবং এলাকার লোকজন আমাকে এবং আমার পরীক্ষার্থীদের বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। এতে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। বিষয়টি তিনি ইউএনও’কে অবহিত করেছেন বলে জানান।
এ দিকে উল্লেখিত বিষয় জানার জন্য এবং কেন্দ্র সচিবের বক্তব্যে নেয়ার লক্ষ্যে কেন্দ্র সচিব ও রামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. কবির হোসেনকে বেশ কয়েকবার মুঠোফোনে (রবি ও গ্রামীণফোন নম্বর) কল দিলেও, তিনি মোবাইল ফোনটি রিসিভ করেন নি এবং পরে ফোন ব্যাকও করেন নি।
থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আলমগীর হোসেন রনি জানান, খবর পেয়ে তাৎখনিক রামপুর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ফোর্স পাঠানো হয়। কিন্তু পুলিশ যাওয়ার আগেই বিষয়টি মীমাংসা হয়ে যায়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বৈশাখী বড়ুয়া বলেন, শিক্ষকদের অবরুদ্ধের খবর পেয়ে তাৎখনিক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এবং পরীক্ষা কেন্দ্র ও পরীক্ষা চলাকালীণ সময়ে কেন্দ্রের বাইরে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও পরীক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টির প্রতি জোর দেয়া হবে। এর ব্যতয় ঘটলে পরবর্তীতে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।