নিজস্ব প্রতিনিধি॥
চাঁদপুর জেলায় এই প্রথম আগামী ১৩ জানুয়ারি ইলেকট্রনিক ভোটিং (ইভিএম) পদ্ধতিতে হাইমচর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ইভিএম পদ্ধতির সাথে ভোটাররা পরিচিত না হলেও ভোটারদের মধ্যে আগ্রহ ও ভোটিং পদ্ধতি শিখিয়ে তা বাস্তবায়নের জন্য ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহন না করার জন্য প্রার্থীদের মধ্যে কেউ কেউ বিরোধীতা করলেও নির্বাচন কমিশন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত উপজেলার ৩১টি কেন্দ্রের ২শ’ কক্ষে দক্ষ জনবল দিয়ে ইভিএম এর মাধ্যমে ভোট গ্রহন করা হবে।
হাইমচর উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানাগেছে, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৩জন চেয়ারম্যান প্রার্থী, ৮জন ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) ও ২জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মেঘনা নদীর পশ্চিম ও পূর্ব পাড়ে ৬ ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এই উপজেলায় ভোটার সংখ্যা ৮০ হাজার ২৩৪জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৪১ হাজার ৪১৭ এবং নারী ভোটার ৩৮ হাজার ৮১৭জন।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানাগেছে, হাইমচর উপজেলা নির্বাচনকে প্রশাসন গুরুত্ব সহকারে দেখছেন। নির্বাচনে সার্বিক নিরাপত্তার জন্য ৩জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিয়েছেন। এর মধ্যে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পুরো উপজেলা তত্ত্ববধায়ন করবেন। বাকী দুইজনের মধ্যে একজন মেঘনার পশ্চিম পাড়ে এবং একজন পূর্বপাড়ে ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত নির্বাচনের আচরণ বিধি লঙনসহ সার্বিক দায়িত্ব পালনে নিয়োজিত থাকবেন।
এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর একাধিক সমর্থক ও ভোটার জানান, আগামী ১৩ জানুয়ারি ভোট গ্রহনে অনৈতক কাজ করার জন্য প্রার্থীদের মধ্যে কেউ কেউ ইভিএম পদ্ধতি না রাখার জন্য জোর চেষ্টা তদ্বির চালায়। তবে নির্বাচন কমিশন শক্ত অবস্থানে থাকার কারণে তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। আমরা নিজ উদ্যোগে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট দেয়ার জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের উৎসাহ দিচ্ছি। কারণ ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহন করা হলে কেন্দ্র দখলের ভয় থাকবে না।
সরেজমিন ঘুরে ও খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, উপজেলার সর্বত্র এখন নির্বাচনের আমেজ। নির্বাচনের প্রতিক বরাদ্দের পরে একাধিকবার চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে হামলার ঘটনা ঘটলেও পরবর্তীতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। হামলার ঘটনায় এই পর্যন্ত হাইমচর থানায় ৪টি মামলা হয়েছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই প্রার্থী নির্বাচনী প্রচারণা থাকলেও স্বতন্ত্রপ্রার্থী মোতালেব জমাদার হামলায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
হাইমচর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ রিপন হোসেন বলেন, ইভিএম পদ্ধতিতে হাইমচর উপজেলায় এই প্রথম নির্বাচন। ৩১টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহনের সকল প্রযুক্তি আমাদের কাছে ইতোপূর্বে এসে পৌঁছেছে। ভোট গ্রহনের জন্য প্রত্যেক কেন্দ্র ও কক্ষের লোক নির্ধারণ করা হয়েছে। দক্ষ লোকদের অগ্রাধিকার দিয়ে প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং, পোলিং এজেন্টদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। সর্বশেষ তাদের দক্ষতা যাচাই করার জন্য ১১ জানুয়ারি মক ভোটিং করা হবে। মক ভোটিং এসে ভোট প্রদান পদ্ধতি শিখতে পারবে যে কোন ভোটার। মক ভোটিং বিষয়ে পুরো উপজেলায় মাইকিং করে প্রচার করা হবে।