বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বেই মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছি: মো. মাজেদুর রহমান খান

  • আপডেট: ০৫:১২:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯
  • ২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক:
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. মাজেদুর রহমান খান বলেছেন, চাঁদপুরের মুক্তিযোদ্ধাদের একত্রে পেয়ে আমরা খুবই আনন্দিত। আপনাদেরকে জেলা প্রশাসক সংবর্ধনা দেয়নি। সংবর্ধনা দেয়ারমত অবস্থান জেলা প্রশাসনের নেই। আমরা রাষ্ট্রের প্রতিনিধি হিসেবে আপনাদেরকে সংবর্ধনা দিচ্ছি।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি সবাই যার যার অবস্থান থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দিচ্ছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের হৃদয়ে যে ভালোবাসা ও যে গভীরতা এবং কতখানি ভালোবাসলে একটি দেশ হাজার বছর নয়, খুব অল্প সময়ই যুদ্ধ করে সফল হতে পারে।

আমাদের দেশে এমন একজন পিতার জন্ম নিয়েছিন, তিনি হলেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার নেতৃত্বেই খুব অল্প সময়ে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে একটি দেশ উপহার পেয়েছি। এখনো বিশ্বে অনেক দেশ রয়েছে, যারা যুগের পর যুগ যুদ্ধ করে যাচ্ছে, তবে তাদের যুদ্ধ শেষ হচ্ছে না। স্বাধীনতা দেখাতো দূরের কথা।

সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় জেলা প্রশাসনের আয়োজনে চাঁদপুর সার্কিট হাউজ সম্মেলন কক্ষে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা কে? তিনি হলেন আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধুর সাথে আপনাদের (মুক্তিযোদ্ধা) ভালবাসা একাকার হয়ে গেছেন। তখন সবকিছু ত্যাগ করে আপনারা মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিলেন।

জেলা প্রশাসক বলেন, বাংলাদেশের দু’টি জেলা ইতিহাসের অনেক সাক্ষ্যবহন করে। সেখানে আমার যাওয়ার সুযোগ হয়েছে এবং সাক্ষাৎকার নিতে পেরেছি। এই দু’টি জেলায় অনেক বড় ঘটনা ঘটেছে। একটি হচ্ছে গোপালগঞ্জ জাতির পিতার জন্মস্থান। যেখানে তিনি বেড়ে উঠেছিলেন। এই জেলার তার সব স্থানে বিচরণ ছিলো। আরেকটি জেলা হচ্ছে মেহেরপুর। যেখানে মুজিবনগর নামক স্থানে শপথ গ্রহন করার জন্য বেছে নেয়া হয়েছিলো।

সর্বশেষ জেলাপ্রশাসক মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ অনেক এগিয়েগেছে। মুক্তিযোদ্ধাদের অনেক সম্মান দিয়েছে। আপনাদের মৌলিক চাহিদাগুলো পুরন করার জন্য সরকার অবশ্যই চেষ্টা করবে।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ও মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা উপ-কমিটির আহবায়ক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান এর সভাপতিত্বে ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কানিজ ফাতেমার সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মাহবুবুর রহমান পিপিএম (বার)।

তিনি বলেন, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে যেসব আয়োজন রয়েছে, তার মধ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এই আয়োজনের সাথে সরাসরি যুক্তরয়েছে মুক্তিযোদ্ধারা। যারা যুদ্ধের মাধ্যমে এদেশকে স্বাধীন করেছেন।

যার ফলে আজকে আমরা এখানে দাঁড়িয়ে কথা বলার সুযোগ পেয়েছি। মুক্তিযোদ্ধাদের আজকের বক্তব্যে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে যে, তাদের কোন চাওয়া পাওয়া ছিলো না। তাদের চাওয়া পাওয়ার একটি বিষয়ছিলো একটি মানচিত্র একটি পতাকা। সেটা কিন্তু তারা পেয়েছেন। আজ সেই পতাকা ও মানচিত্র তখনই সম্মানিত হবে, যখন আমরা সেই মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারদের সম্মানিত করতে পারবো।

পুলিশ সুপার আরো বলেন, আমরা যারা প্রশাসন কিংবা পুলিশের দায়িত্ব পালন করছি, তারা যখনই মুক্তিযোদ্ধাদের সংশ্লিষ্ট কোন ইস্যু আমাদের সামনে আসবে, তখন সবার আগে ওই ইস্যুকে গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। আমাদের শত ব্যস্ততা থাকলেও মুক্তিযোদ্ধাদের কোন বিষয় থাকলে গুরুত্ব দিতে হবে। আমাদের সকল কাজের মধ্যে একটিই অনুপ্রেরণা, তাহচ্ছে মুক্তিযোদ্ধাদের যথাযথ সম্মান দেয়া।

বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ আবু নইম পাটওয়ারী দুলাল, যুদ্ধকালীন কমান্ডার হানিফ পাটওয়ারী, সাবেক ডেপুটি কমান্ডার সিরাজুল ইসলাম বরকন্দাজ, মুক্তিযোদ্ধা মহসিন পাঠান প্রমূখ।

আলোচনা সভার শুরুতে পবিত্র কুরআন থেকে তিলাওয়াত করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সানা উল্যাহ ও গীতা পাঠ করেন মুক্তিযোদ্ধা সাধন সরকার।
আলোচনা পর্বের শুরুতেই অনুষ্ঠানের অতিথিবৃন্দ সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে ফুল দিয়ে বরণ করেন এবং অনুষ্ঠানের শেষে মুক্তিযোদ্ধাদেরকে উপহার সামগ্রী প্রদান করা হয়।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

হাজীগঞ্জ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর মাইনুদ্দিন মিয়াজী আটক

বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বেই মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছি: মো. মাজেদুর রহমান খান

আপডেট: ০৫:১২:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯

নিজস্ব প্রতিবেদক:
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. মাজেদুর রহমান খান বলেছেন, চাঁদপুরের মুক্তিযোদ্ধাদের একত্রে পেয়ে আমরা খুবই আনন্দিত। আপনাদেরকে জেলা প্রশাসক সংবর্ধনা দেয়নি। সংবর্ধনা দেয়ারমত অবস্থান জেলা প্রশাসনের নেই। আমরা রাষ্ট্রের প্রতিনিধি হিসেবে আপনাদেরকে সংবর্ধনা দিচ্ছি।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি সবাই যার যার অবস্থান থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দিচ্ছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের হৃদয়ে যে ভালোবাসা ও যে গভীরতা এবং কতখানি ভালোবাসলে একটি দেশ হাজার বছর নয়, খুব অল্প সময়ই যুদ্ধ করে সফল হতে পারে।

আমাদের দেশে এমন একজন পিতার জন্ম নিয়েছিন, তিনি হলেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার নেতৃত্বেই খুব অল্প সময়ে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে একটি দেশ উপহার পেয়েছি। এখনো বিশ্বে অনেক দেশ রয়েছে, যারা যুগের পর যুগ যুদ্ধ করে যাচ্ছে, তবে তাদের যুদ্ধ শেষ হচ্ছে না। স্বাধীনতা দেখাতো দূরের কথা।

সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় জেলা প্রশাসনের আয়োজনে চাঁদপুর সার্কিট হাউজ সম্মেলন কক্ষে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা কে? তিনি হলেন আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধুর সাথে আপনাদের (মুক্তিযোদ্ধা) ভালবাসা একাকার হয়ে গেছেন। তখন সবকিছু ত্যাগ করে আপনারা মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিলেন।

জেলা প্রশাসক বলেন, বাংলাদেশের দু’টি জেলা ইতিহাসের অনেক সাক্ষ্যবহন করে। সেখানে আমার যাওয়ার সুযোগ হয়েছে এবং সাক্ষাৎকার নিতে পেরেছি। এই দু’টি জেলায় অনেক বড় ঘটনা ঘটেছে। একটি হচ্ছে গোপালগঞ্জ জাতির পিতার জন্মস্থান। যেখানে তিনি বেড়ে উঠেছিলেন। এই জেলার তার সব স্থানে বিচরণ ছিলো। আরেকটি জেলা হচ্ছে মেহেরপুর। যেখানে মুজিবনগর নামক স্থানে শপথ গ্রহন করার জন্য বেছে নেয়া হয়েছিলো।

সর্বশেষ জেলাপ্রশাসক মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ অনেক এগিয়েগেছে। মুক্তিযোদ্ধাদের অনেক সম্মান দিয়েছে। আপনাদের মৌলিক চাহিদাগুলো পুরন করার জন্য সরকার অবশ্যই চেষ্টা করবে।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ও মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা উপ-কমিটির আহবায়ক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান এর সভাপতিত্বে ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কানিজ ফাতেমার সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মাহবুবুর রহমান পিপিএম (বার)।

তিনি বলেন, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে যেসব আয়োজন রয়েছে, তার মধ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এই আয়োজনের সাথে সরাসরি যুক্তরয়েছে মুক্তিযোদ্ধারা। যারা যুদ্ধের মাধ্যমে এদেশকে স্বাধীন করেছেন।

যার ফলে আজকে আমরা এখানে দাঁড়িয়ে কথা বলার সুযোগ পেয়েছি। মুক্তিযোদ্ধাদের আজকের বক্তব্যে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে যে, তাদের কোন চাওয়া পাওয়া ছিলো না। তাদের চাওয়া পাওয়ার একটি বিষয়ছিলো একটি মানচিত্র একটি পতাকা। সেটা কিন্তু তারা পেয়েছেন। আজ সেই পতাকা ও মানচিত্র তখনই সম্মানিত হবে, যখন আমরা সেই মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারদের সম্মানিত করতে পারবো।

পুলিশ সুপার আরো বলেন, আমরা যারা প্রশাসন কিংবা পুলিশের দায়িত্ব পালন করছি, তারা যখনই মুক্তিযোদ্ধাদের সংশ্লিষ্ট কোন ইস্যু আমাদের সামনে আসবে, তখন সবার আগে ওই ইস্যুকে গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। আমাদের শত ব্যস্ততা থাকলেও মুক্তিযোদ্ধাদের কোন বিষয় থাকলে গুরুত্ব দিতে হবে। আমাদের সকল কাজের মধ্যে একটিই অনুপ্রেরণা, তাহচ্ছে মুক্তিযোদ্ধাদের যথাযথ সম্মান দেয়া।

বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ আবু নইম পাটওয়ারী দুলাল, যুদ্ধকালীন কমান্ডার হানিফ পাটওয়ারী, সাবেক ডেপুটি কমান্ডার সিরাজুল ইসলাম বরকন্দাজ, মুক্তিযোদ্ধা মহসিন পাঠান প্রমূখ।

আলোচনা সভার শুরুতে পবিত্র কুরআন থেকে তিলাওয়াত করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সানা উল্যাহ ও গীতা পাঠ করেন মুক্তিযোদ্ধা সাধন সরকার।
আলোচনা পর্বের শুরুতেই অনুষ্ঠানের অতিথিবৃন্দ সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে ফুল দিয়ে বরণ করেন এবং অনুষ্ঠানের শেষে মুক্তিযোদ্ধাদেরকে উপহার সামগ্রী প্রদান করা হয়।