অনলাইন ডেস্ক:
একসময় রাজধানীর স্পোর্টস ক্লাবগুলো ছিল ছড়িয়ে ছিটিয়ে। বেশিরভাগই ছিল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের আশপাশে। আশির দশকের শেষ দিকে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ স্টেডিয়াম এলাকা থেকে সরিয়ে ক্লাবগুলোর জায়গা করে ফকিরেরপুল, আরামবাগ ও মতিঝিলে। এরপর থেকে এ এলাকার নাম হয়ে যায়, ক্লাব পাড়া।
বিস্তৃত এ জায়গায় আছে এক ডজনের মতো ক্লাব, দেশের ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা বাফুফের প্রধান কার্যালয়, ফুটবলের অ্যাস্ট্রোটার্ফ। পশ্চিম দিকে ফকিরেরপুল ইয়ংমেন্স ক্লাব থেকে শুরু করে ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাব, আজাদ বয়েজ ক্লাব, আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ, দিলকুশা স্পোর্টিং ক্লাব, আজাদ স্পোর্টিং ক্লাব, সাবেক ফুটবলারদের সংগঠন সোনালী অতীত ক্লাব, ঢাকা মেরিনার ইয়াংস ক্লাব, বাফুফে ভবন, বাফুফে ভবন সংলগ্ন টার্ফ, ওয়ারি ক্লাব, ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাব এবং সবার পূর্বে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব আছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের দেয়া এই বিশাল জায়গায়।
একসময় সব ক্লাবের খেলাধুলায় সুনাম থাকলেও ধীরে ধীরে তা হারিয়ে যাচ্ছে। এ অঞ্চলের মধ্যে এখন হাতেগোনা কয়েকটি ক্লাবের আছে খেলাধুলায় প্রাধান্য। বাকিগুলোতে পুরোপুরি গেঁড়ে বসেছে জুয়ার আস্তানা।
দল গঠন, ক্যাম্প চালানো এবং দৈনন্দিন খরচ মেটানোর জন্য ক্লাবগুলোতে অভ্যন্তরীণ খেলা হিসেবে হাউজি এবং জুয়ার বোর্ড আগে থেকেই চলে আসছিল। এখান থেকে যে টাকা পাওয়া যায়, তা দিয়ে ক্লাবগুলোর ব্যয়ের একটা অংশ সংকুলান হয়।
কিন্তু সেই জুয়াই ধীরে ধীরে গ্রাস করেছে বেশিরভাগ ক্লাবকে। এ এলাকার ক্লাবগুলোর মধ্যে মোহামেডান ও আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ খেলছে ঘরোয়া ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে। প্রিমিয়ার হকিতে খেলে মেরিনার্স। ইয়ংমেন্স, ওয়ারি ও ভিক্টোরিয়া খেলে ফুটবলের চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে। প্রিমিয়ার ক্রিকেটের দল মোহামেডান ও ভিক্টোরিয়া।
ইয়ংমেন্স ক্লাব, ভিক্টোরিয়া, ওয়ান্ডারার্সসহ কয়েকটি ক্লাবে এখন আর খেলোয়াড়দের আবাসনের জায়গা নেই। একসময় এ ক্লাবগুলো ক্রীড়াবিদদের পদচারণায় মুখরিত থাকলেও এখন পুরোপুরি জুয়াড়িদের দখলে।
ক্লাবগুলোতে ঢুঁ মারলে ক্রীড়াবিদ পাওয়া যায় না। খেলোয়াড়দের অন্য জায়গায় রেখে সেখানে জুয়ার বোর্ড আর ক্যাসিনোর ব্যবস্থা করছে কয়েকটি ক্লাব। মোহামেডান, মেরিনার্স ও আরামবাগ খেলাকে প্রাধান্য দিয়ে কার্যক্রম চালালেও অন্য ক্লাবগুলোতে যেন জুয়াই সব।