ক্যাসিনো খালেদের ১৪ দিনের রিমান্ড চেয়েছে পুলিশ

  • আপডেট: ০১:২১:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯
  • ১৩

অনলাইন ডেস্ক:

অস্ত্র, মাদক ও মানি লন্ডারিং মামলায় গ্রেফতার রাজধানীর ফকিরাপুলের ইয়াংমেনস ক্লাবের অবৈধ ক্যাসিনো মালিক যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে আদালতে নেয়া হচ্ছে।

অস্ত্র ও মাদক মামলায় ‘ক্যাসিনো খালেদকে’ জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আদালতে পুলিশ ১৪ দিনের রিমান্ড আবেদন করবে। এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে গুলশান থানায় অস্ত্র ও মাদক রাখা এবং মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা দায়ের হয়।

খালেদা মাহমুদ ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে র‌্যাব-৩ এর পক্ষ থেকে এ মামলা করা হয়। গুলশান থানায় অস্ত্র ও ইয়াবা রাখার অভিযোগে এবং মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে এ তিন মামলা করা হয়। আর মাদক আইনে মামলার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে মতিঝিল থানায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বুধবার রাতে খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গ্রেফতারের সময় অস্ত্র ও ইয়াবা পাওয়া যায়। এ ছাড়া তার ক্যাসিনো থেকে নারী, মদসহ নিষিদ্ধ বস্তু উদ্ধার করে র‌্যাব।

বুধবার রাতে দীর্ঘ অভিযান শেষে গুলশানের বাসা থেকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। এ সময় অস্ত্র, গুলি, মাদকসহ গ্রেফতার করা হয়। এর পর থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত র‌্যাব-৩ এর হেফাজতে ছিলেন খালেদ।

বৃহস্পতিবার মামলা দায়েরের পর খালেদকে গুলশান থানায় হস্তান্তর করা হয়। তার রিমান্ড আবেদন করে আদালতে তোলা হবে বলে গুলশান থানা পুলিশ জানিয়েছে।

বুধবার খালেদকে গ্রেফতারের আগে ফকিরাপুলের ইয়াংমেন ক্লাবে নিষিদ্ধ ক্যাসিনোতেও অভিযান চালায় র‌্যাব। এখান থেকে দুই নারীসহ ১৪২ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়েছে। ক্যাসিনোতে মদ আর জুয়ার বিপুল সরঞ্জামের পাশাপাশি প্রায় ২৫ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।

ক্লাবটির সভাপতি খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া। অনেক দিন ধরে এখানে জুয়াসহ নানা অপকর্ম চলছিল। সাম্প্রতিককালে অতিমাত্রায় বেড়ে যাওয়ার পর বুধবার অভিযান পরিচালিত হয়। ইয়াংমেন্স ক্লাবের পর ওই রাতেই ঢাকার আরও তিনটি ক্যাসিনোতে অভিযান চালায় র্যা ব।

র‌্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক সারোয়ার বিন কাশেম বলেন, ইয়াংমেন্স ক্লাব থেকে মাদক এবং জুয়ার সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়েছে। ক্লাবের কাউন্টার থেকে প্রায় ২৫ লাখ টাকা জব্দ করা হয়।

তিনি বলেন, এদিন মতিঝিলের ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাব এবং বনানী এলাকার একটি ক্যাসিনোতে অভিযান চালানো হয়। ওয়ান্ডারার্স ক্লাব থেকে মাদক, জালটাকা, বিপুল পরিমাণ টাকা ও ক্যাসিনো সামগ্রী জব্দ করা হয়েছে।

এর পর ক্যাসিনোটি সিলগালা করে দেয়া হয়। বনানীর আহমেদ টাওয়ারে অবস্থিত গোল্ডেন ঢাকা বাংলাদেশ নামে ক্যাসিনোতে অভিযান চালিয়ে সিলগালা করে দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের নেতৃত্বে আছেন মমিনুল হক সাঈদ এবং আবু কাউসার মোল্লা নামে দুই ব্যক্তি।

দুজনই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এদিকে বুধবার রাতেই গুলিস্তানে পীর ইয়েমেনী মার্কেটসংলগ্ন একটি ক্যাসিনোতে অভিযান চালায় র‌্যাব। স্থানীয় কয়েকজন জানান, এ ক্যাসিনোর নেতৃত্বে আছেন ইসমাইল হোসেন সম্রাট।

খালেদ মাহমুদের সন্ধানে বুধবার দুপুরের পর থেকে তার গুলশান-২ এর ৫৯ নম্বর রোডের ৫নং বাসা ঘিরে রাখে র‌্যাব। প্রিমোরোজ গার্ডেন নামে ৬ তলাবিশিষ্ট এ ভবনের তিনতলায় পরিবার নিয়ে থাকেন যুবলীগ নেতা খালেদ।

বাড়ির ব্যবস্থাপক জানান, প্রথমে ডিবি পরিচয়ে একদল লোক বাসায় আসে। এর পর আসে র‌্যাব। রাতে এখান থেকেই তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় বাসার লকার ও দেয়াল আলমিরা থেকে অবৈধ অস্ত্র, ইয়াবা, টাকা, ডলার উদ্ধার করা হয়।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

ভারতে মসজিদের স্থানে মন্দির দাবি করে জরিপের চেস্টায় উত্তেজনা, পুলিশের গুলিতে ৩ মুসল্লি নিহত (ভিডিওসহ)

ক্যাসিনো খালেদের ১৪ দিনের রিমান্ড চেয়েছে পুলিশ

আপডেট: ০১:২১:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯

অনলাইন ডেস্ক:

অস্ত্র, মাদক ও মানি লন্ডারিং মামলায় গ্রেফতার রাজধানীর ফকিরাপুলের ইয়াংমেনস ক্লাবের অবৈধ ক্যাসিনো মালিক যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে আদালতে নেয়া হচ্ছে।

অস্ত্র ও মাদক মামলায় ‘ক্যাসিনো খালেদকে’ জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আদালতে পুলিশ ১৪ দিনের রিমান্ড আবেদন করবে। এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে গুলশান থানায় অস্ত্র ও মাদক রাখা এবং মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা দায়ের হয়।

খালেদা মাহমুদ ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে র‌্যাব-৩ এর পক্ষ থেকে এ মামলা করা হয়। গুলশান থানায় অস্ত্র ও ইয়াবা রাখার অভিযোগে এবং মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে এ তিন মামলা করা হয়। আর মাদক আইনে মামলার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে মতিঝিল থানায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বুধবার রাতে খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গ্রেফতারের সময় অস্ত্র ও ইয়াবা পাওয়া যায়। এ ছাড়া তার ক্যাসিনো থেকে নারী, মদসহ নিষিদ্ধ বস্তু উদ্ধার করে র‌্যাব।

বুধবার রাতে দীর্ঘ অভিযান শেষে গুলশানের বাসা থেকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। এ সময় অস্ত্র, গুলি, মাদকসহ গ্রেফতার করা হয়। এর পর থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত র‌্যাব-৩ এর হেফাজতে ছিলেন খালেদ।

বৃহস্পতিবার মামলা দায়েরের পর খালেদকে গুলশান থানায় হস্তান্তর করা হয়। তার রিমান্ড আবেদন করে আদালতে তোলা হবে বলে গুলশান থানা পুলিশ জানিয়েছে।

বুধবার খালেদকে গ্রেফতারের আগে ফকিরাপুলের ইয়াংমেন ক্লাবে নিষিদ্ধ ক্যাসিনোতেও অভিযান চালায় র‌্যাব। এখান থেকে দুই নারীসহ ১৪২ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়েছে। ক্যাসিনোতে মদ আর জুয়ার বিপুল সরঞ্জামের পাশাপাশি প্রায় ২৫ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।

ক্লাবটির সভাপতি খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া। অনেক দিন ধরে এখানে জুয়াসহ নানা অপকর্ম চলছিল। সাম্প্রতিককালে অতিমাত্রায় বেড়ে যাওয়ার পর বুধবার অভিযান পরিচালিত হয়। ইয়াংমেন্স ক্লাবের পর ওই রাতেই ঢাকার আরও তিনটি ক্যাসিনোতে অভিযান চালায় র্যা ব।

র‌্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক সারোয়ার বিন কাশেম বলেন, ইয়াংমেন্স ক্লাব থেকে মাদক এবং জুয়ার সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়েছে। ক্লাবের কাউন্টার থেকে প্রায় ২৫ লাখ টাকা জব্দ করা হয়।

তিনি বলেন, এদিন মতিঝিলের ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাব এবং বনানী এলাকার একটি ক্যাসিনোতে অভিযান চালানো হয়। ওয়ান্ডারার্স ক্লাব থেকে মাদক, জালটাকা, বিপুল পরিমাণ টাকা ও ক্যাসিনো সামগ্রী জব্দ করা হয়েছে।

এর পর ক্যাসিনোটি সিলগালা করে দেয়া হয়। বনানীর আহমেদ টাওয়ারে অবস্থিত গোল্ডেন ঢাকা বাংলাদেশ নামে ক্যাসিনোতে অভিযান চালিয়ে সিলগালা করে দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের নেতৃত্বে আছেন মমিনুল হক সাঈদ এবং আবু কাউসার মোল্লা নামে দুই ব্যক্তি।

দুজনই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এদিকে বুধবার রাতেই গুলিস্তানে পীর ইয়েমেনী মার্কেটসংলগ্ন একটি ক্যাসিনোতে অভিযান চালায় র‌্যাব। স্থানীয় কয়েকজন জানান, এ ক্যাসিনোর নেতৃত্বে আছেন ইসমাইল হোসেন সম্রাট।

খালেদ মাহমুদের সন্ধানে বুধবার দুপুরের পর থেকে তার গুলশান-২ এর ৫৯ নম্বর রোডের ৫নং বাসা ঘিরে রাখে র‌্যাব। প্রিমোরোজ গার্ডেন নামে ৬ তলাবিশিষ্ট এ ভবনের তিনতলায় পরিবার নিয়ে থাকেন যুবলীগ নেতা খালেদ।

বাড়ির ব্যবস্থাপক জানান, প্রথমে ডিবি পরিচয়ে একদল লোক বাসায় আসে। এর পর আসে র‌্যাব। রাতে এখান থেকেই তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় বাসার লকার ও দেয়াল আলমিরা থেকে অবৈধ অস্ত্র, ইয়াবা, টাকা, ডলার উদ্ধার করা হয়।