স্টাফ রিপোর্টার:
আজ সোমবার পবিত্র ঈদুল আজহা। বাঙালি সমাজে কোরবানির ঈদ নামেও পরিচিত মুসলমানদের এই অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। শনিবার পবিত্র হজ সম্পন্ন হয়েছে। স্থানীয় হিজরি মাস গণনা অনুযায়ী গতকাল সৌদি আরবে ঈদুল আজহা উদযাপিত হচ্ছে। আজ দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা ত্যাগের মহিমায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ঈদের নামাজ শেষে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টলাভের উদ্দেশ্যে পশু কোরবানি দেবেন।
বিশ্বের মুসলিমরা ১০ জিলহজ আল্লাহর অনুগ্রহ লাভের প্রত্যাশায় পশু কোরবানি করে থাকেন। তবে ১১ ও ১২ জিলহজও পশু কোরবানি করার বিধান রয়েছে।
রাজধানী ঢাকা বা দেশের অন্য এলাকায় যারা জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে থাকেন, তারা অনেকেই বরাবরের মতো গ্রামের বাড়ি গেছেন। কষ্ট ভোগ করে লাখো মানুষ ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে স্বজনদের কাছে ছুটে গেছেন।
তবে ডেঙ্গু আতঙ্কের কারণে এবার গ্রামে মানুষ যাওয়ার ঢল অন্যান্য বছরের তুলনায় কিছুটা কম। রাজধানীসহ সারা দেশের মানুষের মধ্যেই ডেঙ্গু আতঙ্ক বিরাজ করছে। তারপরও আল্লাহর সন্তুষ্টলাভের আশায় তারা কষ্ট শিকার করে গ্রামে যাচ্ছেন কোরবানি দিতে।
ঈদুল আজহা ইব্রাহিম (আ.) ও তার পুত্র ইসমাইলের (আ.) সঙ্গে সম্পর্কিত। ইব্রাহিম (আ.) স্বপ্নে আদিষ্ট হয়ে পুত্র ইসমাইলকে আল্লাহর উদ্দেশে কোরবানি করতে গিয়েছিলেন।
আল্লাহর পক্ষ থেকে এই আদেশ ছিল ইব্রাহিমের জন্য পরীক্ষা। তিনি পুত্রকে আল্লাহর নির্দেশে জবাই করার সব প্রস্তুতি নিয়ে সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ।
বর্ণিত আছে, নিজের চোখ বেঁধে পুত্র ইসমাইলকে ভেবে যখন জবাই সম্পন্ন করেন, তখন চোখ খুলে দেখেন ইসমাইলের পরিবর্তে পশু কোরবানি হয়েছে, যা এসেছিল আল্লাহর পক্ষ থেকে।
সেই ঐতিহাসিক ঘটনার স্মৃতি ধারণ করেই ইব্রাহিমের (আ.) ওয়াজিব হিসেবে পশু জবাইয়ের মধ্য দিয়ে কোরবানির বিধান এসেছে ইসলামী শরিয়তে। সেই মোতাবেক প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমানের জন্য পশু কোরবানি করা ওয়াজিব।
দেশবাসীকে ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানিয়ে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পৃথক বাণীতে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সংসদের বিরোধী দলীয় উপনেতা রওশন এরশাদ, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের প্রমুখ।
এসব বাণীতে তারা দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে দেশ, জাতিসহ গোটা মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ ও বিশ্বশান্তি কামনা করেছেন।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাষ্ট্রীয়ভাবে সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের ভবনগুলোয় আলোকসজ্জা করা হয়েছে। জাতীয় সংবাদপত্রগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে।
বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলো ঈদ উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করবে।
ঈদের দিন সরকারিভাবে হাসপাতাল, কারাগার, এতিমখানা ও শিশুসদনে উন্নত বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হবে।
আজ সকালে মুসল্লিরা নিকটস্থ ঈদগাহ বা মসজিদে ঈদুল আজহার দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায় করবেন। খতিব নামাজের খুতবায় তুলে ধরবেন কোরবানির তাৎপর্য। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ধনি-গরিব নির্বিশেষে সবাই একত্রে নামাজ আদায় ও শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।
রাজধানী ঢাকায় বেশ কয়েকটি ঈদের নামাজের জামাত হবে। প্রধান জামাত সকাল সাড়ে ৮টায় জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হবে। ঈদের জামাতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র্যাব ও পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সার্বক্ষণিক নজরদারিতে থাকবেন।