হাজীগঞ্জে সম্পত্তিগত বিরোধ নিয়ে ভাই-বোনদের দ্বন্দ্ব, পারস্পরিক অভিযোগ

  • আপডেট: ০৫:৫৮:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৪
  • ১৫

হাজীগঞ্জ বাজারস্থ বেগম প্লাজায় সম্পত্তিগত বিরোধের জেরে বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে ছোট ভাইকে অবরুদ্ধ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোববার (২৭ অক্টোবর) ভুক্তভোগী খোরশেদ আলম তাঁর বড় ভাই মোরশেদ আলমের বিরুদ্ধে সংবাদকর্মীদের কাছে এমন অভিযোগ জানান। এর আগে তিনি জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯, চাঁদপুরের পুলিশ সুপার ও হাজীগঞ্জ থানা পুলিশকে অবহিত করেন বলে জানান। তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন তাঁর বড় ভাই।

জানা গেছে, হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন সাবেক ২১৩নং হাল ৮৩নং মকিমাবাদ মৌজার বিএস ১৩১৮ খতিয়ানে ১ আনা অংশে ০.২৮০ একর ভূমি নিয়ে চার বোন ও এক ভাইয়ের সাথে অপর এক ভাইয়ের বিরোধ চলে আসছে। এই সম্পত্তিত্বে বেগম প্লাজা নামক চারতলা মার্কেট (ভবন) রয়েছে। এই বিরোধের জেরে রোববার সকালে মার্কেটের নিচতলায় একটি দোকানে খোরশেদ আলম ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় তার বড় ভাই ওই দোকানে তালাবদ্ধ করে দেন।

এমন অভিযোগে খোরশেদ আলম জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯, চাঁদপুরের পুলিশ সুপার, হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ ও হাজীগঞ্জে কর্মরত সংবাদকর্মীদের অবহিত করেন। খবর পেয়ে সংবাদকর্মী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে তাঁর বড় ভাই মোরশেদ আলম দোকানের তালা খুলে দেন। পরে খোরশেদ আলম ও তাঁর সংবাদকর্মীদের মাধ্যমে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনির দৃষ্টি আকর্ষণ এবং ন্যায়-বিচার প্রার্থনা করে বলেন, তারা নিরাপত্তাহীনতা ভুগছেন।

খোরশেদ আলম বলেন, ২.৮০ শতাংশের মধ্যে আমার মা আমাকে মার্কেটের সামনের অংশে ৩২ পয়েন্ট রেজিস্ট্রি করে দিয়ে গেছে। এরপর হিস্যা অনুযায়ী আমি আরও ৬২ পয়েন্ট পাবো। কিন্তু আমার ভাই ও বোনেরা আমাকে হিস্যা অনুযায়ী বন্টন করে নিয়ে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছে।

এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে মোরশেদ আলম বলেন, আমাদের মার্কেটটি কুমিল্লা-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে। মাকের্টের সামনের অংশে দুইটি দোকান রয়েছে। এর মধ্যে আজ সকালে (রোববার) মার্কেটে গিয়ে দেখি পূর্ব পাশের দোকানটির পশ্চিম পাশে সবগুলো সাটারে তালা আছে, কিন্তু উত্তর পাশের (মেইন রোড) দুইটি সাটারে তালা নেই এবং অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে। তাই, নিরাপত্তার স্বার্থে আমি ওই সাটার দুইটি তালাবদ্ধ করে দেই।

তিনি বলেন, দোকানের ভিতরে আমার ছোই ভাই (খোরশেদ আলম) ঘুমিয়ে ছিলো, তা আমার জানা ছিলো না। পরে এসআই’র (অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা) মাধ্যমে জানতে পেরে আমি তাৎখনিক তালা খুলে দিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু আমার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী তালা খুলতে দেয়নি। এরপর এসআই ঘটনাস্থলে আসার পর আমি তালা খুলে দিয়েছি। ওই সময় দেখি আপনারাসহ (সাংবাদিক) অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

এসময় তিনি আরও বলেন, আমরা দুই ভাই ও চার বোন। মা জীবিত থাকাবস্থায় আমার ছোট ভাই খোরশেদ আলম আমি ও আমার চারবোনকে বঞ্চিত করে দোকানের ভাড়া উত্তোলনসহ সবধরনের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেছে। আমরা মায়ের দিকে তাকিয়ে কিছুই বলিনি। মায়ের মৃত্যুর পর যখন আমরা বলে বন্টন করে যার যার পাওনা বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য, তখনি খোরশেদ আলম ঝামেলা শুরু করে। বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েকবার সালিশি বৈঠক হয়েছে।

তিনি বলেন, সালিশি বৈঠকের সিদ্ধান্ত না মানায় আমি থানায় অভিযোগ দিয়েছি এবং আদালতে ১৪৫ এর মাধ্যমে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন করেছি। এতে আদালত স্থিতাবস্থা নির্দেশনা দেয়। কিন্তু আমার ভাই ওই স্থিতাবস্থা না মেনে দোকান দখল ও ব্যবসায়ীক কার্যক্রম শুরু করে এবং এখন আবার আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে আমাদেরকে হয়রানি করছে।

এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, বিষয়টি তদন্তাধীন। দুই পক্ষকে আদালতের স্থিতাবস্থা মেনে চলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

সকালে ‘রিট করে’ বিকেলেই সুর পাল্টালেন সারজিস 

হাজীগঞ্জে সম্পত্তিগত বিরোধ নিয়ে ভাই-বোনদের দ্বন্দ্ব, পারস্পরিক অভিযোগ

আপডেট: ০৫:৫৮:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৪

হাজীগঞ্জ বাজারস্থ বেগম প্লাজায় সম্পত্তিগত বিরোধের জেরে বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে ছোট ভাইকে অবরুদ্ধ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোববার (২৭ অক্টোবর) ভুক্তভোগী খোরশেদ আলম তাঁর বড় ভাই মোরশেদ আলমের বিরুদ্ধে সংবাদকর্মীদের কাছে এমন অভিযোগ জানান। এর আগে তিনি জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯, চাঁদপুরের পুলিশ সুপার ও হাজীগঞ্জ থানা পুলিশকে অবহিত করেন বলে জানান। তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন তাঁর বড় ভাই।

জানা গেছে, হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন সাবেক ২১৩নং হাল ৮৩নং মকিমাবাদ মৌজার বিএস ১৩১৮ খতিয়ানে ১ আনা অংশে ০.২৮০ একর ভূমি নিয়ে চার বোন ও এক ভাইয়ের সাথে অপর এক ভাইয়ের বিরোধ চলে আসছে। এই সম্পত্তিত্বে বেগম প্লাজা নামক চারতলা মার্কেট (ভবন) রয়েছে। এই বিরোধের জেরে রোববার সকালে মার্কেটের নিচতলায় একটি দোকানে খোরশেদ আলম ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় তার বড় ভাই ওই দোকানে তালাবদ্ধ করে দেন।

এমন অভিযোগে খোরশেদ আলম জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯, চাঁদপুরের পুলিশ সুপার, হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ ও হাজীগঞ্জে কর্মরত সংবাদকর্মীদের অবহিত করেন। খবর পেয়ে সংবাদকর্মী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে তাঁর বড় ভাই মোরশেদ আলম দোকানের তালা খুলে দেন। পরে খোরশেদ আলম ও তাঁর সংবাদকর্মীদের মাধ্যমে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনির দৃষ্টি আকর্ষণ এবং ন্যায়-বিচার প্রার্থনা করে বলেন, তারা নিরাপত্তাহীনতা ভুগছেন।

খোরশেদ আলম বলেন, ২.৮০ শতাংশের মধ্যে আমার মা আমাকে মার্কেটের সামনের অংশে ৩২ পয়েন্ট রেজিস্ট্রি করে দিয়ে গেছে। এরপর হিস্যা অনুযায়ী আমি আরও ৬২ পয়েন্ট পাবো। কিন্তু আমার ভাই ও বোনেরা আমাকে হিস্যা অনুযায়ী বন্টন করে নিয়ে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছে।

এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে মোরশেদ আলম বলেন, আমাদের মার্কেটটি কুমিল্লা-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে। মাকের্টের সামনের অংশে দুইটি দোকান রয়েছে। এর মধ্যে আজ সকালে (রোববার) মার্কেটে গিয়ে দেখি পূর্ব পাশের দোকানটির পশ্চিম পাশে সবগুলো সাটারে তালা আছে, কিন্তু উত্তর পাশের (মেইন রোড) দুইটি সাটারে তালা নেই এবং অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে। তাই, নিরাপত্তার স্বার্থে আমি ওই সাটার দুইটি তালাবদ্ধ করে দেই।

তিনি বলেন, দোকানের ভিতরে আমার ছোই ভাই (খোরশেদ আলম) ঘুমিয়ে ছিলো, তা আমার জানা ছিলো না। পরে এসআই’র (অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা) মাধ্যমে জানতে পেরে আমি তাৎখনিক তালা খুলে দিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু আমার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী তালা খুলতে দেয়নি। এরপর এসআই ঘটনাস্থলে আসার পর আমি তালা খুলে দিয়েছি। ওই সময় দেখি আপনারাসহ (সাংবাদিক) অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

এসময় তিনি আরও বলেন, আমরা দুই ভাই ও চার বোন। মা জীবিত থাকাবস্থায় আমার ছোট ভাই খোরশেদ আলম আমি ও আমার চারবোনকে বঞ্চিত করে দোকানের ভাড়া উত্তোলনসহ সবধরনের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেছে। আমরা মায়ের দিকে তাকিয়ে কিছুই বলিনি। মায়ের মৃত্যুর পর যখন আমরা বলে বন্টন করে যার যার পাওনা বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য, তখনি খোরশেদ আলম ঝামেলা শুরু করে। বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েকবার সালিশি বৈঠক হয়েছে।

তিনি বলেন, সালিশি বৈঠকের সিদ্ধান্ত না মানায় আমি থানায় অভিযোগ দিয়েছি এবং আদালতে ১৪৫ এর মাধ্যমে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন করেছি। এতে আদালত স্থিতাবস্থা নির্দেশনা দেয়। কিন্তু আমার ভাই ওই স্থিতাবস্থা না মেনে দোকান দখল ও ব্যবসায়ীক কার্যক্রম শুরু করে এবং এখন আবার আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে আমাদেরকে হয়রানি করছে।

এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, বিষয়টি তদন্তাধীন। দুই পক্ষকে আদালতের স্থিতাবস্থা মেনে চলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।