বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সাথে সারাদেশে সংঘর্ষে শিক্ষার্থী ও পথচারীসহ ১১জন নিহত হয়েছে। সারা দেশে আজ ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ঘোষণা করেছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলন। ঢাকাসহ সারা দেশে সড়ক অবরোধ করে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ বিক্ষোভকারীরা। এরই মধ্যে শুধু ঢাকায় ১০ জন ও মাদারীপুরে একজন নিহতের খবর পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভকারীরা। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে এসব সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
রাজধানীর উত্তরায় পুলিশ ও র্যাবের সঙ্গে সংঘর্ষে ছয়জন, মোহাম্মদপুরে একজন, বাড্ডায় একজন, সাভারে একজন ও মাদারীপুরে একজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ ছাড়া দেশজুড়ে বিক্ষোভে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে কয়েক শ জন আহত হয়েছেন।
কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্য এটিসি শামীম বলেন, ‘পুলিশ-ছাত্রদের সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত চারজনের লাশ কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে রয়েছে।’
সেখানে নিহত চারজনের মধ্যে একজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। তিনি হলেন আইইউবিএটির (ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি) শিক্ষার্থী মোহাম্মদ তানভীর (২৫)। তাঁর বাবার নাম সামসুজ্জামান এবং মায়ের নাম বীথি আক্তার।
উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে আরও দুজনের মরদেহ রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মিজানুর রহমান।
বাড্ডা এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের সময় দুলাল মাতবর নামে একজন হাইয়েস গাড়ির চালক নিহত হন। ঘটনাস্থল থেকে তাঁকে উদ্ধার করে বনশ্রী ফরাজী হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়।
ঢাকার সাভারে পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে ইয়ামিন (২২) নামের এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। এ সময় পুলিশসহ অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আজ বেলা ৩টার দিকে সাভারের পাকিজার মোড় এলাকায় হামলায় আহত হলে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। রাজধানীর মিরপুরে এমআইএসটির ছাত্র ছিলেন ইয়ামিন।
রাজধানীর ধানমন্ডিতে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষে বিক্ষোভকারীদের মধ্য থেকে ফারহান ফাইয়াজ রাতুল নামের এক ছাত্র নিহত হয়েছে। সে রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র। ধানমন্ডি ২৭ নম্বর এলাকায় বেলা সাড়ে ৩টার দিকেও থেমে থেমে সংঘর্ষ হয়। সেখান থেকে আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে মোহাম্মদপুর সিটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে তার মৃত্যু হয়। তার শরীরে রাবার বুলেটের ক্ষত রয়েছে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী, রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ ও সিটি হাসপাতালের সহকারী ব্যবস্থাপক ওসমান গণি মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ ছাড়া মাদারীপুরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের সময় শকুনি লেকে পড়ে এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। তিনি মাদারীপুর সরকারি কলেজের ছাত্র ছিলেন। মাদারীপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. মনিরুজ্জামান ফকির এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।