স্টাফ রিপোর্টারঃ
চাঁদপুর সদর উপজেলার ৪ নং শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড মান্দারী গ্রামের তালুকদার বাড়ির মৃত. আবিল হোসেন তালুকদারের ছেলে আক্কাছ তালুকদার গংদের পৈত্রিক সম্পত্তির উপর একই গ্রামের হাজী বাড়ির মৃত আব্দুল বারেক হাজির ছেলে সৌদি প্রবাসী মোঃ সফিকুল ইসলাম মঞ্জু ( সফিক ) সম্পত্তির হিসাব-নিকাশ ছাড়াই খামখেয়ালি ভাবে টাকার জোরে বিল্ডিং নির্মাণের মাধ্যমে দখলের চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, গত মে মাসের ২৩ তারিখে প্রবাসী মোঃ সফিকুল ইসলাম মঞ্জু ( সফিক ) মৃত. আবিল হোসেন তালুকদারের ছেলে আক্কাছ তালুকদার গংদের পৈত্রিক সম্পত্তির উপর বিল্ডিং নির্মাণ করার জন্য প্রস্তুতি নিতে গেলে সেখানে সফিকুল ইসলাম মঞ্জু ওরফে সফিককে বাধা প্রদান করে এবং আক্কাছ তালুকদার বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে শাহমাহমুদপুর ইউনিয়ন পরিষদে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, চাঁদপুর জেলাধীন ৪৯ নং মান্দারী মৌজার সি.এস ১৮১ নং খতিয়ান, এস.এ ১৩৫ নং খতিয়ানে মোট ৩ একর ৮৪ সতাংশ সম্পত্তির মধ্যে সি.এস ৪০৮ দাগে ২৩ সতাংশ, ৬১০ দাগে ৬ শতাংশ, ৬১১ দাগে ৯ সতাংশ, ৬১২ দাগে ৫ সতাংশ, ৬১৮ দাগে ৮ সতাংশ, ৬২৩ দাগে ৭৫ পয়েন্ট, ৬০৭ দাগে ৩৮ শতাংশ ৭৫ পয়েন্ট, ৬০৬ দাগে ২ সতাংশ ২৫ পয়েন্টসহ ৮ টি দাগ অন্দরে হিস্যা অনুযায়ী সাদেক আলী ৪ আনা বা মোট ৯২ সতাংশ ৭৫ পয়েন্ট সম্পত্তির মালিক হন।
সাদেক আলী ও তার স্ত্রীর মৃত্যুর পরে তাদের রেখে যাওয়া মোট ৯২ সতাংশ ৭৫ পয়েন্ট সম্পত্তির মালিক তাদের তিন সন্তান (১) মৃত.আব্দুল মজিদ তালুকদার, (২) মৃত.আ: হালিম তালুকদার ও (৩) মৃত. খলিলুর রহমান। তারা ৩ ভাই সমান ভাবে হিস্যা অনুযায়ী প্রত্যেকে ৩০ সতাংশ ৮৯ পয়েন্ট সম্পত্তির মালিক হন এবং ভোগদখল করেন।
পরবর্তীতে দেখা যায়, (১) মৃত আব্দুল মজিদ তালুকদারের রেখে যাওয়া ওয়ারিশ ২ ছেলে ও ৩ মেয়ে যথাক্রমে মৃত. মোঃ আবিল হোসেন তালুকদার, মৃত. আঃ রহমান তালুকদার, মৃত. সাফিয়া খাতুন, মৃত. মমিনা খাতুন, মৃত. আমিরা খাতুন। (২) মৃত. আঃ হালিম তালুকদারের কোন পুত্র সন্তান নেই। একমাত্র কন্যা সন্তান ওয়ারিশ শামছুন্নেছা (৭৫)। (৩) মৃত. খলিলুর রহমান তালুকদারের ওয়ারিশ ১ ছেলে ৪ মেয়ে যথাক্রমে মৃত. জয়নাল তালুকদার, সালমা খাতুন (৬৫), মৃত. মনোয়ারা, মৃত. হাশমতি, মৃত. ফাতেমা। পর্যায়ক্রমে বর্তমানে উপরোক্ত মৃত ব্যক্তিদের ও জীবিতদের ওয়ারিশগন সম্পত্তি ভোগ দখল করে আসছেন।
আরো দেখা যায়, মৃত . আঃ হালিম তালুকদারের একমাত্র কন্যা সন্তান শামছুন্নেছা (৭৫) জন্ম গ্রহণ করায় তার প্রাপ্ত ৩০ সতাংশ ৮৯ পয়েন্ট সম্পত্তির ভাইয়ালী অর্ধেক অংশ ১৫ সতাংশ ৪৫ পয়েন্ট সমান ভাবে বন্টন করলে মৃত. আঃ মজিদ তালুকদার পায় ৭ সতাংশ ৭২ পয়েন্ট এবং মৃত. খলিলুর রহমান পায় ৭ সতাংশ ৭২ পয়েন্ট। তাহলে তাদের উভয়ের পৈত্রিক প্রাপ্ত সম্পত্তির সাথে ভাইয়ালী অংশ যোগ করলে মোট দাঁড়ায় ( ৩০.৮৮ + ৭.৭২) = ৩৮.৬১ সতাংশ।
অপরদিকে দেখা যায়, মৃত. আঃ মজিদ তালুকদারের বড় ছেলে মোঃ আবিল হোসেন তালুকদারের সাথে মৃত. আঃ হালিম তালুকদারের একমাত্র কন্যা শামছুন্নেছার বিবাহ হয়। সে সুবাধে আঃ মজিদ তালুকদারের মোট প্রাপ্ত ৩৮ সতাংশ ৬১ পয়েন্টের সাথে শামছুন্নেছার প্রাপ্ত ১৫ সতাংশ ৪৫ পয়েন্ট যোগ করলে দাঁড়ায় ( ৩৮.৬১ + ১৫.৪৫ ) = ৫৪.৬ সতাংশ। কিন্তু আবিল হোসেন তালুকদারের ছেলে আক্কাছ তালুকদার গংদের বক্তব্য হচ্ছে তাদের দখলিয় সম্পত্তিতে যেন অন্যায়ভাবে বিল্ডিং নির্মাণ কিংবা কোন রকম দখল করতে না পারে সেজন্য প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
এই বিষয়ে প্রবাসী মোঃ সফিকুল ইসলাম মঞ্জু (শফিক) এর সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমার পিতা মোহাম্মদ আঃ বারী মৃত আঃ রশিদ খানের ছেলে মোহাম্মদ আব্দুস সালাম খান এর কাছ থেকে ২৮/২/৮৭ ইং সনে ১৮০৭ নং সাফ কবলা দলিল মূলে ৬১০ দাগে ৬ শতাংশ, ৬১১ দাগে ৯ শতাংশ, মোঃ ১৫ সতাংশ সম্পত্তি ক্রয় করে এবং ১/২/৭৭ ইং সনে ১০৯ নং দলিল মূলে ৬১২, ৬১৩, ৬১৪, ৬১৫, ৬১৬ দাগে একুনে ১২ সতাংশ সম্পত্তি ক্রয় করে। বিভিন্ন দাগের অন্দরে মোট ২৭ সতাংশ সম্পত্তি ক্রয় করেন। ১৯৮৭ সালে খলিলুর রহমানের কাছ থেকে আঃ সালাম খান ১৫ সতাংশ এবং ১৯৭৭ সালে ১২ সতাংশ সম্পত্তি ক্রয় করেন। আর সালাম খানের কাছ থেকে আমার বাবা মালিক হন।
দেখা যায়, মৃত. খলিলুর রহমান তালুকদার ১৮১ নং সি.এস খতিয়ানের ৬১০ দাগে ৬ শতাংশের অন্দরে ২ সতাংশ, ৬১১ দাগে ৯ শতাংশের অন্দরে ৩ শতাংশ, ৬১২ দাগে ৫ শতাংশের অন্দরে ১ শতাংশ ৬৬ পয়েন্ট পৈত্রিক সম্পত্তির মালিক। কিন্তু প্রবাসী মোঃ সফিকুল ইসলাম মঞ্জু (শফিক)’র তথ্য অনুসারে দেখা যাচ্ছে হিস্যার অতিরিক্ত সম্পত্তি হস্তান্তর করছেন মৃত. খলিলুর রহমান তালুকদার। যেমন ৬১০ দাগে ৬ শতাংশ, ৬১১ দাগে ৯ শতাংশ এককভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে। এছাড়া তার দলিলে উল্লেখিত বাকী যে দাগগুলো রয়েছে তাতে খলিলুর রহমান তালুকদারের পিতা মৃত. সাদেক আলীর অংশীদারিত্ব নেই।