রাজনৈতিক অঙ্গন বেশ কিছুটা উত্তপ্ত। বিএনপি বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) ঢাকায় মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে আগেই। বিএনপির শরিকদলগুলোও মাঠে থাকবে বলে জানিয়েছে। একই দিন পাল্টা সমাবেশের ডাক দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
এ দিন ইসলামী আন্দোলনও বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে সমাবেশের ডাক দিয়েছে। মহাসমাবেশের চার দিন পর ১ আগস্ট জামায়াতে ইসলামীও রাজধানীতে সমাবেশ ডেকেছে। ফলে আগামী ২৭ জুলাই এবং এর পরবর্তী কয়েকটি দিন কী হতে যাচ্ছে, তা নিয়ে জনমনে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা বাড়ছে।
বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে তাদের সমমনা দলগুলো অন্তত ১০ স্থানে যুগপৎভাবে সমাবেশ করবে। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগের সহযোগী তিন সংগঠন—ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ। আওয়ামী লীগের কাছাকাছি থাকবে ইসলামী আন্দোলন।
এক থেকে দেড় কিলোমিটার জায়গাজুড়ে এতগুলো সমাবেশে ওই দিন রাজপথ উত্তপ্ত থাকবে বলে ধারণা করছে সবাই। স্বাভাবিক জীবনযাত্রা অচল হয়ে পড়ার আশঙ্কা করছে অনেকে।
এতগুলো দলের একসঙ্গে কর্মসূচি থাকায় অনুমতির বিষয়টি পুলিশকে ভাবনায় ফেলেছে। আইন-শৃঙ্খলার বিষয়টি খতিয়ে দেখে সমাবেশের অনুমতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবে তারা।
তবে সব দলকে অনুমতি দিতে গিয়ে একটি জটিলতা তৈরি হতে পারেও বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে পুলিশ প্রশাসন বিএনপিকে মহাসমাবেশের তারিখ পরিবর্তনের জন্য অনুরোধ করেছে। বিএনপি তাতে রাজি হয়নি।
মহাসমাবেশ থেকে বিএনপি কী ধরনের কর্মসূচি দেবে তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের পরামর্শ নিচ্ছেন বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব।
তবে সমাবেশ থেকে যে টানা কয়েকটি কর্মসূচি আসছে তা দলের নেতাকর্মীদের কথায় বোঝা যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় নির্দেশনায় জেলা নেতাদের বলা হচ্ছে, মহাসমাবেশের পরও কয়েক দিন নেতাকর্মীদের ঢাকায় থাকতে হতে পারে। অর্থাৎ মহাসমাবেশের পরও টানা কয়েক দিন কর্মসূচি থাকবে বিএনপির।
আওয়ামী লীগও পাল্টা কৌশল হিসেবে রাজপথ দখলে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিএনপি যাতে ঢাকা অচল করতে না পারে সে জন্য ক্ষমতাসীন নেতাকর্মীরাও মাঠে থাকবে। তারাও তাদের শক্তি দেখাবে। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকেও আগের চেয়ে তৎপর করতে পারে সরকার। দুই দলের পাল্টাপাল্টি এমন কৌশলে সংঘাতের আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
হঠাৎ ঢাকামুখী বিএনপির কর্মসূচি বাড়িয়ে দেওয়ার বিষয়ে কেউ বলছেন, বিদেশি শক্তিগুলোর সায় পেয়ে সরকার পতনে মাঠে নেমেছে বিএনপি। সূত্রগুলো বলছে, তারা নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার আগেই রাজপথের আন্দোলনের মাধ্যমে নির্বাচনকালীন সংকটের ফায়সালা করতে চায়।
দুই দলের শীর্ষ নেতাদের পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে উত্তেজনা ছড়াচ্ছে।
গতকাল সকালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘খবর পাচ্ছি, সীমান্ত থেকে অস্ত্র কিনছে তারা (বিএনপি)। চাঁপাইনবাবগঞ্জ তাদের অস্ত্র সরবরাহের একটি ঘাঁটি। আগ্নেয়াস্ত্র এনে তারা মজুত করছে। তারা মনে করে, অস্ত্রশক্তি হলো আসল শক্তি। ’
বিকেলে এর প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘কী ভয়ংকর কথা। যখন জনগণ জেগে উঠছে, যখন জনগণ তাদের চূড়ান্ত আন্দোলন শুরু করেছে, ঠিক সেই সময়ে মহাসমাবেশ রুখে দিতে এসব কথা বলে তারা নতুন একটা চক্রান্ত শুরু করেছে। আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, এসব কথা বলে আপনারা যদি আবার জনগণের ওপর অস্ত্র ব্যবহার করেন তার সব দায়-দায়িত্ব আপনাদের বহন করতে হবে এবং জনগণ তার উত্তর দেবে। ’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, আন্দোলনের নামে জানমাল, সম্পত্তি ধ্বংস অথবা জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করলে আইন অনুযায়ী বিএনপির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে সরকারের কোনো বাধা থাকবে না। গতকাল সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ইমন গিলমোরের নেতৃত্বে আসা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
মাঠ ছাড়বে না আওয়ামী লীগ
আগামীকাল ঢাকায় আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম তিন সংগঠন এবং বিএনপির পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির দিনে নিজ এলাকায় সতর্ক অবস্থান নিতে বলা হয়েছে ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্যদের। রাজধানী ও আশপাশের এলাকায় আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের মাঠে দলীয় কর্মকাণ্ডে সক্রিয় হতে বলেছেন সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। দলীয় একাধিক সূত্র গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছে।
গতকাল দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সহযোগী সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ, ঢাকা ও আশপাশের জেলার দলীয় সংসদ সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। এ সময় সাংগঠনিক কর্মসূচিতে দলের সংসদ সদস্যদের অনেকের আগ্রহ না থাকার বিষয় আলোচনায় আসে। তখন সংসদ সদস্যদের প্রতি উষ্মা জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি সংসদ সদস্যদের হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেন, আগামী দিনে মনোনয়ন পাবেন কী পাবেন না তা মাঠের কর্মকাণ্ডের ওপর নির্ভর করবে।
সভায় উপস্থিত একাধিক নেতা সংবাদ মাধ্যমকে জানান, প্রতিটি এলাকায়ই সংসদ সদস্যদের নিজস্ব কর্মী-সমর্থক থাকে। তারা মাঠে সক্রিয় থাকলে বিরোধীদের আন্দোলন মোকাবেলা সহজ হবে। ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, ‘সংসদ সদস্যদের সবাইকে সক্রিয় থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যাঁরা ঘন ঘন বিদেশ থাকেন, তাঁদের বলা হয়েছে এলাকায় সময় দিতে। কারণ নির্বাচন তো সামনে। ’
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান বলেন, মতবিনিময়সভায় বিভিন্ন এলাকার সংসদ সদস্যদের ভূমিকা নিয়ে কথা হয়েছে। তাঁদের অনেকেই ঠিকমতো কর্মসূচিতে আসেন না। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, ‘শুধু এমপিগিরি করলে চলবে না, দলের কর্মসূচিতেও থাকতে হবে। রাজপথে কর্মসূচিতে সক্রিয় থাকার মধ্য দিয়ে সংসদ সদস্যদের আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। ’
আগামীকাল বিএনপির সমাবেশ সামনে রেখে বড় ধরনের সহিংসতার প্রস্তুতি চলছে বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় গুরুত্বপূর্ণ নেতারা। সে ক্ষেত্রে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি দলের নেতাকর্মীদেরও সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা গণমাধ্যমকে জানান, আগামীকাল তিন সংগঠনের শান্তি সমাবেশে দুই লাখ লোক উপস্থিত রাখার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। লক্ষ্য পূরণে ঢাকার আশপাশের জেলা ও মহানগরের নেতা এবং সংসদ সদস্যদের সমাবেশে লোক পাঠাতে বলা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘জনগণ যে আমাদের সঙ্গে আছে, সেটাই আমরা দেখাতে চাই। ’ বিএনপি তো নাশকতার প্রস্তুতি নিয়েই মাঠে নামছে। এরই মধ্যে দেশের একাধিক জায়গায় তারা আমাদের নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। ’
শেখ বজলুর রহমান বলেন, ‘আমরা বৃহস্পতিবার সমাবেশে যাব না। আমাদের নেতাকর্মীরা প্রতিটি ওয়ার্ডে সতর্ক অবস্থানে থাকবে। যদি বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা অতর্কিত কোনো হামলা, নাশকতার চেষ্টা করে সেগুলো প্রতিহত করবে আমাদের নেতাকর্মীরা। ’
বিএনপির অবস্থান
সমাবেশের অনুমতি চাইতে বিএনপি নেতারা সোমবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কার্যালয়ে গেলে তাদের সমাবেশের তারিখ পরিবর্তনের অনুরোধ করা হয়। তবে বিএনপি ২৭ জুলাই করবে বলে জানিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে গত সোমবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও আলোচনা হয়।
বৈঠক সূত্র জানায়, ২৯ জুলাই আশুরার তাজিয়া মিছিলকে কেন্দ্র করে পুলিশের পূর্বপ্রস্তুতির বিষয় তুলে ধরে বিএনপিকে সমাবেশ পেছানোর অনুরোধ করা হয়। তবে স্থায়ী কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ২৭ জুলাই তারা সমাবেশ করবে। নয়াপল্টন অথবা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের যেকোনো একটি স্থান দিলে তাদের আপত্তি থাকবে না। বৈঠক সূত্র জানায়, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার অসুস্থ থাকায় মহাসমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য মির্জা আব্বাস।
স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত সরকার পদত্যাগ করে একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করবে, ততক্ষণ রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাব। ’
ঢাকামুখী নেতাকর্মীরা
বিএনপি থেকে সব মহানগর ও জেলায় চিঠি দিয়ে নেতাকর্মীদের আগামী ২৬ জুলাইয়ের মধ্যে ঢাকায় অবস্থান নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রের নির্দেশ পেয়ে অনেক জেলা থেকে খণ্ড খণ্ড হয়ে নেতাকর্মীরা ঢাকায় আসতে শুরু করেছেন। গতকাল বিকালে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে কুড়িগ্রাম, রাজশাহী ও ফেনী এলাকার কয়েকজন নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা সবাই মহাসমাবেশ উপলক্ষে ঢাকায় এসেছেন।
ফেনী জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সালাহউদ্দিন মামুন বলেন, ‘আমাদের নেতাকর্মীদের একটি অংশ ঢাকায় চলে গেছেন। বাকিরা আজকের মধ্যে ঢাকায় পৌঁছাবেন। ’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রংপুর মহানগর বিএনপি এক জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, তাঁদের নেতাকর্মীদের অনেকে এখন ঢাকার পথে আছেন।
সমাবেশ ডাকল ইসলামী আন্দোলনও
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বৃহস্পতিবার প্রতিবাদ সমাবেশ ডেকেছে। দলটির বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মোরেলগঞ্জে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির ফয়জুল করীমের বক্তব্যের সময় পুলিশের বাধা ও অসৌজন্যমূলক আচরণের প্রতিবাদ, ব্যর্থ নির্বাচন কমিশন বাতিল, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনপদ্ধতির প্রবর্তন, বিদ্যমান রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে সংসদ ভেঙে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে এ সমাবেশ হবে।
সমাবেশ করবে জামায়াত
আগামী ১ আগস্ট রাজধানীতে সমাবেশ করতে চায় জামায়াতে ইসলামী। দলটি জাতীয় বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর ফটকে সমাবেশের অনুমতি চেয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে দলটির কয়েক নেতা ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের দপ্তরে এসে আবেদন জমা দেন। জামায়াতের আশা, যৌক্তিক সময়ের মধ্যে পুলিশ অনুমতি দেবে।
শিক্ষ-প্রতিষ্ঠানগুলোর কী হবে?
বৃহস্পতিবার সারা দেশের স্কুল-কলেজ খোলা থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (মাধ্যমিক) মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন। শাহ রেজওয়ান হায়াত বলেন, নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা শুক্র ও শনিবার দুদিন বন্ধ পায়। অতিরিক্ত ছুটি দিলে শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে ফেরার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।
বেলাল হোসাইন বলেন, নভেম্বরের মধ্যে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা শেষ করতে হবে। নির্ধারিত সময়ে তাদের সিলেবাস শেষ করতে হবে।
তবে মহাসমাবেশে শিক্ষার্থী ভোগান্তি এড়াতে কিছু বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিশেষ করে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলো ওই দিন অনলাইনে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। এ ব্যাপারে তারা শিক্ষার্থীদের খুদে বার্তা পাঠিয়েছে।