চাঁদপুরের শাহরাস্তির চিতোষী ডিগ্রী কলেজের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারি মোঃ নিজাম উদ্দিনের উপরে অতর্কিত হামলার ঘটনায় সুষ্ঠ বিচার ও ইন্ধনদাতাদের গ্রেফাতারের দাবীতে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছে কলেজের শিক্ষক ও কর্মচারিবৃন্দ।
মঙ্গলবার (১১ জুলাই) দুপরে কলেজর শিক্ষক মিলনায়তনে প্রতিবাদসভা শেষে কলেজ মাঠে শিক্ষক, কর্মচারি ও শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করে।
হামলার স্বীকার নিজাম উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, গত ৭ জুলাই শুক্রবার কলেজে মিটিং আছে বলে অধ্যক্ষ ফোন দিলে আমি দায়িত্ব পালন করতে কলেজে আসি। কলেজে এসে আমি কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোঃ জাহাঙ্গীর আলম তালুকদার, অধ্যক্ষ মোঃ আনোয়ার হোসেন ভূঁঞা, কলেজ পরিচালনা পরিষদের সদস্য আব্দুল আজিজ মানিকসহ স্থানীয় দায়িত্বশীল নেতাদের দেখতে পাই। তারা আমাকে বিভিন্ন প্রশ্ন করে হেনস্তা করতে থাকলে এমতাবস্থায় কামাল হোসেন, শাহাদাত হোসেন, মনিরুজ্জামান আনসারী, নজরুল ইসলাম স্বপন, বেলায়েত হোসেন মিজান, হাবিব ও মাহবুবসহ আরও অনেকে কোন কারণ ছাড়াই আমার উপর অতর্কিত হামলা করে। আমি আত্ম রক্ষার্থে কলেজ থেকে পালিয়ে যাই।
কলেজের একাধিক শিক্ষক ও কর্মচারীরা জানান, উপাধ্যক্ষ মোঃ কামরুল আহসান চৌধুরী অধ্যক্ষ নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ এনে সভাপতির বিরুদ্ধে মামলা করেন। যা চলমান। কলেজের বর্তমান সভাপতি ও অধ্যক্ষ তাদের অনুসারী শিক্ষকদের মাধ্যমে দাপ্তরিক সকল কাজ করছেন। শিক্ষার্থীরা পড়াশুনার জন্য ভালো পরিবেশ পাচ্ছে না। পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত নয় তারা। শিক্ষার্থীদের অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে বর্তমান সভাপতি ও অধ্যক্ষ। কলেজের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম তালুকদার এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কেউই মুখ খুলতে চাচ্ছে না। তিনি ২০২০সালের ৭ জুন কলেজটির সভাপতি পদে নির্বাচিত হন। এরপর থেকে সভাপতি কলেজ একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিজের মর্জি মতো শিক্ষক/কর্মচারী নিয়োগ ও ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে কলেজের অর্থ আত্মসাৎ করার মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
হামলার বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া বলেন, কলেজের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারি মোঃ নিজাম উদ্দিনের উপর হামলার কোন ঘটনা ঘটেনি। বিষয়টি কেউ ঘোলাপানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে।
কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম তালুকদারের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী কলেজের উপাধ্যক্ষ এক বছরের বেশি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ থাকার নিয়ম নেই। সেই বিধি মোতাবেক আমাদের কলেজের উপাধ্যক্ষের মেয়াদ একবছর শেষ হওয়ার পর তাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদ হতে অব্যহতি দেওয়া হয়। তারপর হতে উপাধ্যক্ষ আমার পেছনে উঠে পড়ে লাগে। অধ্যক্ষ নিয়োগে কোন রকম অনিয়ম হয়নি। কলেজে কোনো মারামারির ঘটনা না ঘটলেও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিজাম উদ্দিনের সঙ্গে ওই দিন তার এক বন্ধুর সাথে কথা কাটাকাটি হয়। ওই সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জেড. এম আনোয়ার ও স্থানী আওয়ামীলীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। আমার বিরুদ্ধে মানববন্ধনের ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। উপাধ্যক্ষ কামরুল আহসান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হতে অধ্যক্ষ না হওয়ায় আজ আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।