অনলাইন ডেস্ক:
বাহরাইন ও অবৈধ ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে ইরান সংকট নিয়ে একটি বৈঠক শেষে ছবি তুলে টুইটারে পোস্ট দিয়েছেন।
আর সেই ছবিতে হাস্যোজ্জ্বল এই দুই নেতার পেছনের একটি চেয়ারে মনমরা হয়ে বসে থাকতে দেখা গেছে বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সদ্য বরখাস্ত হওয়া সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহাকে।
ইসরাইলি দৈনিক টাইমস অব ইসরাইলে এ ছবি প্রকাশের পর প্রিয়া সেখানে কেন এবং কী উদ্দেশ্যে গেছেন, সামাজিকমাধ্যমে তা নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় চলছে।
যদিও পত্রিকাটির অনলাইনের সংস্করণের ওই খবরে প্রিয়া সাহাকে নিয়ে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
দলিত সম্প্রদায় নিয়ে কাজ করা বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা শারির পরিচালক প্রিয়া সাহা ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে ওয়াশিংটনে আয়োজিত এক সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে গত ১৭ জুলাই হোয়াইট হাউসে গিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে অভিযোগ করেছিলেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্পকে তিনি বলেন, বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা মৌলবাদীদের নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। প্রায় তিন কোটি ৭০ লাখ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান নিখোঁজ (ডিজঅ্যাপিয়ার্ড) হয়েছেন। তারা যেন দেশে থাকতে পারেন, সে জন্য ট্রাম্প যেন সহায়তা করেন।
তার ওই বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় বিভিন্ন মহলে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও কঠোর ভাষায় তার সমালোচনা করেন।
টাইমস অব ইসরাইলের খবরে বলা হয়েছে, ইসরাইলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ তার বাহরাইনি সমকক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এতে দুই দেশের সম্পর্ক আরও উন্নতির দিকে যাবে বলে মনে করছে জেরুজালেম।
বৃহস্পতিবার ইসরায়েল কাটজ ও বাহরাইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী খালিদ বিন আহমদ আল খালিফার ছবিটি যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত জেসন গ্রিনব্লাট টুইটারে পোস্ট দেন। পরবর্তী সময়ে কাটজ সেটিকে নিজের টাইমলাইনে শেয়ার দেন।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত ধর্মীয় স্বাধীনতাবিষয়ক অনুষ্ঠানে ছবিটি তোলা হয়েছে। এটিকে বিরল দৃষ্টান্ত আখ্যায়িত করে পত্রিকাটি বলছে, একজন জ্যেষ্ঠ ইসরাইলি নেতার সঙ্গে একজন আরব নেতার প্রকাশ্য বৈঠক।
দুই নেতার এ বৈঠককে বন্ধুত্বপূর্ণ বিনিময় বলে মন্তব্য করে গ্রিনব্লাট বলেন, এর মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্কের ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে।
কাটজ বলেন, আমাদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বৃদ্ধি পাওয়া কূটনৈতিক যোগাযোগের আরেকটি উদাহরণ হচ্ছে এ বৈঠক। উপসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গে ইসরাইলের সম্পর্ক বাড়াতে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে আমি অব্যাহতভাবে কাজ করে যেতে চাই।
পরবর্তী সময়ে এক বিবৃতিতে ইসরাইলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বৈঠকের আয়োজন করেছে। এতে তিনি এবং খালিফা ইরান, আঞ্চলিক হুমকি ও দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করেছেন।
তবে বাহরাইনি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছ থেকে এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। অন্যান্য আরব দেশের মতোই বাহরাইনের সঙ্গে ইসরাইলের কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। কিন্তু ইরানের বিরুদ্ধে বৈরিতাকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যকার সম্পর্ক প্রকাশ্যে চলে এসেছে।