চাঁদপুরে মেঘনা নদীতে বালু উত্তোলণ বন্ধে ব‌্যবস্থা গ্রহ‌নে জেলা প্রশাসক‌কে চি‌ঠি

  • আপডেট: ০১:৩৫:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • ৩২

চাঁদপুরে মেঘনা নদীতে অপরিকল্পিত ভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও কেন্দ্র প্রধান ড. মো. হারুনর রশিদের স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, চাঁদপুরের উপর দিয়ে প্রবাহিত মেঘনা নদীতে গত কয়েক বছর যাবত অপরিকল্পিতভাবে যত্রতত্র বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। উক্ত নদী থেকে স্থানীয় কিছু ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ডুবোচর খননের নামে সরকারি বিধি-নিষেধ উপেক্ষা করে এ কাজটি দীর্ঘদিন ধরে করে যাচ্ছে। এর ফলে ইলিশের বৃহত্তম বিচরণক্ষেত্র ও অভয়াশ্রম (ষাটনল হতে চর আলেকভাণ্ডার) নষ্টসহ নদীর জীববৈচিত্র্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।

এতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণায় দেখা গেছে মেঘনা নদীতে অনিয়ন্ত্রিত বালু উত্তোলনের ফলে প্রজনন মৌসুমে চাঁদপুরের অংশে ইলিশের প্রজনন ও বিচরন সাম্প্রতিক সময়ে মারাত্মক ভাবে হ্রাস পেয়েছে।

গবেষণার ফলাফলে দেখা যায়, অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে শতশত ডেজারের প্রপেলারের আঘাত, নির্গত পোড়া মবিল ও তেলের কারণে মাছের প্রধান প্রাকৃতিক খাদ্য নদীর প্লাংটন আশংকাজনক হারে কমে গেছে।

এছাড়া বালু উত্তোলনে নদী দূষণসহ নদীগর্ভের গঠন প্রক্রিয়া পাল্টে যাওয়ার ফলে বাসস্থানের বাস্তুতন্ত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণীকূলের এ ধরনের পরিবর্তনের ফলে তাদের আবাসস্থল যেমন ধবংস হচ্ছে, তেমনি ইলিশসহ অন্যান্য মাছের খাদ্যের উৎস নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

ফলশ্রুতিতে মাছের বিচরণ ও প্রজনন প্রক্রিয়া পাল্টে যাওয়াসহ ইলিশের উৎপাদন মেঘনা নদীতে ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে জাতীয় মাছ ইলিশকে রক্ষা এবং এর আবাসস্থল নিরাপদ করতে প্রধান প্রজনন ও বিচরণ মৌসুমে মেঘনাতে বালু উত্তোলন পুরোপুরি বন্ধসহ ড্রেজাসমূহ স্থায়ীভাবে উচ্ছেদ করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ বিশেষ প্রয়োজন। এমতাবস্থায়, চাঁদপুর জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশকে মেঘনা নদীতে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করার বলা হয়েছে।

এদিকে বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জেলা টাস্কফোর্স কমিটির সভায় জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, জাটকা রক্ষায় আগামী দুই মাস নদীতে ড্রেজার বন্ধ থাকবে। নদী সংলগ্ যেসব খালগুলি রয়েছে সেখানে প্রতিটি খালের প্রবেশমুখে ভেড়া দিতে হবে। নদীতে ড্রেজারসহ ইঞ্জিন চালিত যেসব নৌকা রয়েছে সেগুলো বন্ধ রাখতে হবে। আর এসবের দায়িত্বে থাকবেন ইউপি চেয়ারম্যান ও পৌরসভা হলে সেই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর।

Tag :

সম্পাদক ও প্রকাশক:
মোঃ মহিউদ্দিন আল আজাদ

মোবাইল : ০১৭১৭-৯৯২০০৯ (নিউজ) বিজ্ঞাপন : ০১৬৭০-৯০৭৩৬৮
ইমেইলঃ notunerkotha@gmail.com

দেশে HMPV ভাইরাসে আক্রান্ত নারীর মৃত্যু, বাড়ছে আতঙ্ক

চাঁদপুরে মেঘনা নদীতে বালু উত্তোলণ বন্ধে ব‌্যবস্থা গ্রহ‌নে জেলা প্রশাসক‌কে চি‌ঠি

আপডেট: ০১:৩৫:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২২

চাঁদপুরে মেঘনা নদীতে অপরিকল্পিত ভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও কেন্দ্র প্রধান ড. মো. হারুনর রশিদের স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, চাঁদপুরের উপর দিয়ে প্রবাহিত মেঘনা নদীতে গত কয়েক বছর যাবত অপরিকল্পিতভাবে যত্রতত্র বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। উক্ত নদী থেকে স্থানীয় কিছু ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ডুবোচর খননের নামে সরকারি বিধি-নিষেধ উপেক্ষা করে এ কাজটি দীর্ঘদিন ধরে করে যাচ্ছে। এর ফলে ইলিশের বৃহত্তম বিচরণক্ষেত্র ও অভয়াশ্রম (ষাটনল হতে চর আলেকভাণ্ডার) নষ্টসহ নদীর জীববৈচিত্র্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।

এতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণায় দেখা গেছে মেঘনা নদীতে অনিয়ন্ত্রিত বালু উত্তোলনের ফলে প্রজনন মৌসুমে চাঁদপুরের অংশে ইলিশের প্রজনন ও বিচরন সাম্প্রতিক সময়ে মারাত্মক ভাবে হ্রাস পেয়েছে।

গবেষণার ফলাফলে দেখা যায়, অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে শতশত ডেজারের প্রপেলারের আঘাত, নির্গত পোড়া মবিল ও তেলের কারণে মাছের প্রধান প্রাকৃতিক খাদ্য নদীর প্লাংটন আশংকাজনক হারে কমে গেছে।

এছাড়া বালু উত্তোলনে নদী দূষণসহ নদীগর্ভের গঠন প্রক্রিয়া পাল্টে যাওয়ার ফলে বাসস্থানের বাস্তুতন্ত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণীকূলের এ ধরনের পরিবর্তনের ফলে তাদের আবাসস্থল যেমন ধবংস হচ্ছে, তেমনি ইলিশসহ অন্যান্য মাছের খাদ্যের উৎস নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

ফলশ্রুতিতে মাছের বিচরণ ও প্রজনন প্রক্রিয়া পাল্টে যাওয়াসহ ইলিশের উৎপাদন মেঘনা নদীতে ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে জাতীয় মাছ ইলিশকে রক্ষা এবং এর আবাসস্থল নিরাপদ করতে প্রধান প্রজনন ও বিচরণ মৌসুমে মেঘনাতে বালু উত্তোলন পুরোপুরি বন্ধসহ ড্রেজাসমূহ স্থায়ীভাবে উচ্ছেদ করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ বিশেষ প্রয়োজন। এমতাবস্থায়, চাঁদপুর জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশকে মেঘনা নদীতে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করার বলা হয়েছে।

এদিকে বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জেলা টাস্কফোর্স কমিটির সভায় জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, জাটকা রক্ষায় আগামী দুই মাস নদীতে ড্রেজার বন্ধ থাকবে। নদী সংলগ্ যেসব খালগুলি রয়েছে সেখানে প্রতিটি খালের প্রবেশমুখে ভেড়া দিতে হবে। নদীতে ড্রেজারসহ ইঞ্জিন চালিত যেসব নৌকা রয়েছে সেগুলো বন্ধ রাখতে হবে। আর এসবের দায়িত্বে থাকবেন ইউপি চেয়ারম্যান ও পৌরসভা হলে সেই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর।