নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির সংলাপে অংশ নেবে না বিএনপি

  • আপডেট: ১২:৩২:১৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২১
  • ৩৪

নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপকে অর্থহীন মন্তব্য করে এতে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি।

নির্বাচন কমিশন গঠনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সংলাপের আয়োজন করেন রাষ্ট্রপতি। এরই মধ্যে ৯টি রাজনৈতিক দল রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়েছে। তবে, দেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপি সংলাপে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দলটি সংলাপে অংশ নেয়াকে অর্থহীন বলেও মন্তব্য করেছে। বুধবার দলটির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সংলাপে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান হয়।

দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২৭শে ডিসেম্বর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই ভার্চুয়াল বৈঠকে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তবে, সংলাপে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্তটি আজ বুধবার দলীয় বিবৃতির মাধ্যমে নিশ্চিত করল বিএনপি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতি সাথে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। আলোচনা শেষে দেয়া বিবৃতিতে বলা হয়, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নির্বাচনকালীন সময়ের নিরপেক্ষ সরকার গঠন এবং নিরপেক্ষ প্রশাসনের সাংবিধানিক নিশ্চয়তা ব্যতীত নির্বাচন কমিশনের গঠন নিয়ে সংলাপ শুধু সময়ের অপচয়। এর আগে, দু’টি নির্বাচন কমিশন গঠনের পূর্বে রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণে নিবন্ধনকৃত রাজনৈতিক দলগুলো অংশ নিয়ে তাদের মতামত দিয়েছিলো। সে সময় বিএনপি নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রক্রিয়া নিয়ে সুস্পষ্ট প্রস্তাব লিখিত ভাবে রাষ্ট্রপতির নিকট পেশ করেছিলো। কিন্তু, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার কারণে সব উদ্যোগ ব্যর্থ হয়েছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আরও বলা হয়, রাষ্ট্রযন্ত্রকে বেআইনিভাবে ব্যবহার, নির্বাচন কমিশনের চরম ব্যর্থতা, অযোগ্যতার কারণে নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস হয়েছে। নির্বাচন কমিশন আওয়ামী লীগের দলীয় সংগঠনে পরিণত হয়েছে। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে পরপর দু’টি নির্বাচন কমিশনই চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে।

২০১২ সালে সংবিধান পরিবর্তন করে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান বাতিল করে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিধান বহাল করে আওয়ামী লীগ সরকার গণতন্ত্র বিকাশের সকল পথ বন্ধ করে দিয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়।

স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বলা হয়, বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দলীয় সরকার বহাল রেখে নির্বাচন কমিশন কখনই স্বাধীনভাবে নিরপেক্ষ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে পারবেনা। বিএনপি বিশ্বাস করে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকার ব্যতিরেকে সুষ্ঠু, অবাধ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কোনও নির্বাচন কমিশনই করতে পারবেনা। রাষ্ট্রপতি নিজেই বলেছেন তার কোনও ক্ষমতা নেই পরিবর্তন করার। সে কারণে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপ কোনও ইতিতবাচক ফলাফল আনতে পারবেনা। ফলে, বিএনপি অর্থহীন কোনও সংলাপে অংশগ্রহণ করবে না।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ ভার্চুয়াল বৈঠকে অংশ নেন, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান এবং ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

‘ম্যানেজ করে’ এক সাথে দুই স্বামীর সংসার করছিলেন জান্নাতুল!

নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির সংলাপে অংশ নেবে না বিএনপি

আপডেট: ১২:৩২:১৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২১

নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপকে অর্থহীন মন্তব্য করে এতে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি।

নির্বাচন কমিশন গঠনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সংলাপের আয়োজন করেন রাষ্ট্রপতি। এরই মধ্যে ৯টি রাজনৈতিক দল রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়েছে। তবে, দেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপি সংলাপে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দলটি সংলাপে অংশ নেয়াকে অর্থহীন বলেও মন্তব্য করেছে। বুধবার দলটির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সংলাপে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান হয়।

দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২৭শে ডিসেম্বর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই ভার্চুয়াল বৈঠকে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তবে, সংলাপে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্তটি আজ বুধবার দলীয় বিবৃতির মাধ্যমে নিশ্চিত করল বিএনপি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতি সাথে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। আলোচনা শেষে দেয়া বিবৃতিতে বলা হয়, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নির্বাচনকালীন সময়ের নিরপেক্ষ সরকার গঠন এবং নিরপেক্ষ প্রশাসনের সাংবিধানিক নিশ্চয়তা ব্যতীত নির্বাচন কমিশনের গঠন নিয়ে সংলাপ শুধু সময়ের অপচয়। এর আগে, দু’টি নির্বাচন কমিশন গঠনের পূর্বে রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণে নিবন্ধনকৃত রাজনৈতিক দলগুলো অংশ নিয়ে তাদের মতামত দিয়েছিলো। সে সময় বিএনপি নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রক্রিয়া নিয়ে সুস্পষ্ট প্রস্তাব লিখিত ভাবে রাষ্ট্রপতির নিকট পেশ করেছিলো। কিন্তু, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার কারণে সব উদ্যোগ ব্যর্থ হয়েছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আরও বলা হয়, রাষ্ট্রযন্ত্রকে বেআইনিভাবে ব্যবহার, নির্বাচন কমিশনের চরম ব্যর্থতা, অযোগ্যতার কারণে নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস হয়েছে। নির্বাচন কমিশন আওয়ামী লীগের দলীয় সংগঠনে পরিণত হয়েছে। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে পরপর দু’টি নির্বাচন কমিশনই চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে।

২০১২ সালে সংবিধান পরিবর্তন করে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান বাতিল করে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিধান বহাল করে আওয়ামী লীগ সরকার গণতন্ত্র বিকাশের সকল পথ বন্ধ করে দিয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়।

স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বলা হয়, বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দলীয় সরকার বহাল রেখে নির্বাচন কমিশন কখনই স্বাধীনভাবে নিরপেক্ষ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে পারবেনা। বিএনপি বিশ্বাস করে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকার ব্যতিরেকে সুষ্ঠু, অবাধ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কোনও নির্বাচন কমিশনই করতে পারবেনা। রাষ্ট্রপতি নিজেই বলেছেন তার কোনও ক্ষমতা নেই পরিবর্তন করার। সে কারণে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপ কোনও ইতিতবাচক ফলাফল আনতে পারবেনা। ফলে, বিএনপি অর্থহীন কোনও সংলাপে অংশগ্রহণ করবে না।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ ভার্চুয়াল বৈঠকে অংশ নেন, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান এবং ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।