ঐক্যের ডাক দিলেন রাষ্ট্রপতি

  • আপডেট: ০৭:৫৫:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ নভেম্বর ২০২১
  • ৩০

অনলাইন ডেস্ক:

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর ‘স্বপ্নের সোনার বাংলা’ গড়ে তোলার অঙ্গীকার বাস্তবায়নে এবং সাম্প্রদায়িকতা, অগণতান্ত্রিকতা ও সহিংসতার বিরুদ্ধে ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

রাষ্টপতি হামিদ বুধবার একাদশ জাতীয় সংসদের পঞ্চদশ অধিবেশনে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ভাষণে একথা বলেন।

রাষ্ট্র প্রধান দল-মতের পার্থক্য ভুলে, ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে জাতির গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা ও দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার মধ্য দিয়ে লাখো শহিদের রক্তের ঋণ পরিশোধ করার ও আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ‘স্বপ্নের সোনার বাংলা’ গড়ে তোলার অঙ্গীকার বাস্তবায়নে প্রয়োজন ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে সবার মধ্যে ঐক্য।

আবদুল হামিদ বলেন, সুশাসন প্রতিষ্ঠায় দল-মত নির্বিশেষে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজ এবং অংশীজনদের সমন্বিতভাবে কাজ করে যেতে হবে। রাষ্ট্রপতি রাজনৈতিক দলগুলোকে পরমতসহিষ্ণুতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের সংস্কৃতি গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

আবদুল হামিদ চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রসঙ্গে বলেন, ‘উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রয়োজন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে কাজে লাগিয়ে দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখা।’ একইসঙ্গে তিনি জানান, নিশ্চিত করতে হবে পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা, ব্যাপক শিল্পায়ন, অর্থনীতি সুসংহতকরণ, সুষ্ঠু অবকাঠামো এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলাসহ মেধাভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণ। এ লক্ষ্যে সবাইকে নিরলসভাবে কাজ করতে হবে।

জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিশেষ অধিবেশনে সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন।

রাষ্ট্রপতি বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে বলেন বাংলাদেশ এখন বিশ্বের উন্নয়নের রোল মডেল। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ‘উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ’ গড়ার প্রত্যয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি সংসদকে জানান, সরকার ‘রূপকল্প ২০২১’ এর সার্থক বাস্তবায়ন শেষে ‘রূপকল্প-২০৪১’ বাস্তবায়ন করছে। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সফল সমাপ্তিতে গৃহীত হয়েছে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ২০২১-২০২৫।

আবদুল হামিদ বলেন, দেশের পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা, জলবায়ু পরিবর্তন এবং পরিবেশগত বিবর্তনাধীন বিষয়গুলো বিবেচনা করে প্রণীত হয়েছে দীর্ঘমেয়াদি বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২০২১। এর প্রেক্ষাপটে ২০৩১ সালের মধ্যে চরম দারিদ্র্যের অবসান ও উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে উত্তরণ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে দারিদ্র্যের অবসানসহ উচ্চ আয়ের দেশের মর্যাদায় আসীন হওয়ার লক্ষ্যে সরকার নিরলসভাবে কাজ করছে।

সংসদে তার সংক্ষিপ্ত ভাষণে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ফিরিস্তি তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি বলেন, জাতি হিসেবে আমরা এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত অতিক্রম করছি।

রাষ্ট্রপতি বলেন, সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর নির্মাণ এখন সমাপ্তির পথে। চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বহুলেন টানেলের দ্বিতীয় টানেলের নির্মাণকাজ সমাপ্ত হয়েছে। ৫৭তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট সফলভাবে উৎক্ষেপণ করেছে।

তিনি উল্লেখ করেন যে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। সমগ্র দেশে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। ডিসেম্বর ২০২২ সালে বিজয় দিবসের উপহার হিসেবে দেশের জনগণ প্রথম মেট্রো রেলে চলাচল করতে পারবে। বাংলাদেশেরপ্র প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, এমডিজির সাফল্যের ধারাবাহিকতায় ২০১৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত এসডিজির বিভিন্ন সূচকে অনন্য অগ্রগতির স্বীকৃতিস্বরূপ সম্প্রতি বাংলাদেশ ‘এসডিজি প্রোগ্রেস অ্যাওয়ার্ড’-এ ভূষিত হয়।

তিনি বলেন, ‘এ প্রাপ্তি আন্তর্জাতিক পরিসরে বাংলাদেশের জন্য এক বিশাল অর্জন। এ সম্মান বাংলাদেশের, এ সম্মান সমগ্র বাঙালি জাতির।’

তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি আমাদের উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারাকে সাময়িকভাবে বাধাগ্রস্ত করলেও থেমে থাকেনি আমাদের অর্থনীতির চাকা।

রাষ্ট্রপতি সরকারের সময়োচিত ও দূরদর্শী পদক্ষেপের প্রশংসা করে বলেন, ‘জীবন-জীবিকার অসাধারণ সমন্বয়ের মাধ্যমে করোনা সংকট মোকাবিলায় অনন্য সাধারণ ভূমিকার কারণে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ এবং জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অকুণ্ঠ প্রশংসা করেছে।’

আবদুল হামিদ জানান, ইতোমধ্যে ৪ কোটি ৫৫ লাখ ৯১ হাজার ৫৭৮ জনকে টিকার আওতায় আনা হয়েছে। করোনার সংকট মোকাবিলায় অর্থনীতিকে দ্রুত পুনর্গঠন এবং এর গতি পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে সরকার ২৮টি প্যাকেজের আওতায় ১ লাখ ৮৭ হাজার ৬৭৯ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়ন করছে।

মাদক, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও উগ্রবাদ এবং সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধকল্পে সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, এই কারণে দেশে স্বস্তি বিরাজ করছে, যা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হচ্ছে।

পরিবেশ সুরক্ষা, দূষণ নিয়ন্ত্রণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের বলিষ্ঠ ভূমিকা আন্তর্জাতিক অঙ্গণেও আজ স্বীকৃত বলে তিনি সংসদকে অবহিত করেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব রোধে ‘জলবায়ু দুর্বলতাগুলোকে’ ‘জলবায়ু সমৃদ্ধিতে’ রূপান্তর করতে ‘মুজিব ক্লাইমেট প্রসপারিটি প্ল্যান’ গ্রহণ করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর এ স্বীকৃতি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গৌরবের বলে মন্তব্য করে রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, ‘এই স্বীকৃতি বিশ্ব দরবারে আমাদের সম্মান আরো বৃদ্ধি করেছে। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিক অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’

রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, জাতির পিতার সোনার বাংলার আধুনিক রূপ ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ কোনো স্বপ্ন নয়, বাস্তবতা।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরামর্শ ও দিক-নির্দেশনায় ডিজিটাল বাংলাদেশের বাস্তবায়ন শুধু দেশে নয়, বিশ্বে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

তিনি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, সকল বীর মুক্তিযোদ্ধা ও অমর শহিদকে, যাদের অনন্যসাধারণ বীরত্ব ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা অর্জন করেছি এই স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

যেভাবে হ ত্যা করা হয় তরুণ আইনজীবী সাইফলকে

ঐক্যের ডাক দিলেন রাষ্ট্রপতি

আপডেট: ০৭:৫৫:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ নভেম্বর ২০২১

অনলাইন ডেস্ক:

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর ‘স্বপ্নের সোনার বাংলা’ গড়ে তোলার অঙ্গীকার বাস্তবায়নে এবং সাম্প্রদায়িকতা, অগণতান্ত্রিকতা ও সহিংসতার বিরুদ্ধে ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

রাষ্টপতি হামিদ বুধবার একাদশ জাতীয় সংসদের পঞ্চদশ অধিবেশনে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ভাষণে একথা বলেন।

রাষ্ট্র প্রধান দল-মতের পার্থক্য ভুলে, ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে জাতির গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা ও দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার মধ্য দিয়ে লাখো শহিদের রক্তের ঋণ পরিশোধ করার ও আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ‘স্বপ্নের সোনার বাংলা’ গড়ে তোলার অঙ্গীকার বাস্তবায়নে প্রয়োজন ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে সবার মধ্যে ঐক্য।

আবদুল হামিদ বলেন, সুশাসন প্রতিষ্ঠায় দল-মত নির্বিশেষে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজ এবং অংশীজনদের সমন্বিতভাবে কাজ করে যেতে হবে। রাষ্ট্রপতি রাজনৈতিক দলগুলোকে পরমতসহিষ্ণুতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের সংস্কৃতি গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

আবদুল হামিদ চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রসঙ্গে বলেন, ‘উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রয়োজন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে কাজে লাগিয়ে দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখা।’ একইসঙ্গে তিনি জানান, নিশ্চিত করতে হবে পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা, ব্যাপক শিল্পায়ন, অর্থনীতি সুসংহতকরণ, সুষ্ঠু অবকাঠামো এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলাসহ মেধাভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণ। এ লক্ষ্যে সবাইকে নিরলসভাবে কাজ করতে হবে।

জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিশেষ অধিবেশনে সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন।

রাষ্ট্রপতি বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে বলেন বাংলাদেশ এখন বিশ্বের উন্নয়নের রোল মডেল। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ‘উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ’ গড়ার প্রত্যয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি সংসদকে জানান, সরকার ‘রূপকল্প ২০২১’ এর সার্থক বাস্তবায়ন শেষে ‘রূপকল্প-২০৪১’ বাস্তবায়ন করছে। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সফল সমাপ্তিতে গৃহীত হয়েছে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ২০২১-২০২৫।

আবদুল হামিদ বলেন, দেশের পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা, জলবায়ু পরিবর্তন এবং পরিবেশগত বিবর্তনাধীন বিষয়গুলো বিবেচনা করে প্রণীত হয়েছে দীর্ঘমেয়াদি বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২০২১। এর প্রেক্ষাপটে ২০৩১ সালের মধ্যে চরম দারিদ্র্যের অবসান ও উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে উত্তরণ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে দারিদ্র্যের অবসানসহ উচ্চ আয়ের দেশের মর্যাদায় আসীন হওয়ার লক্ষ্যে সরকার নিরলসভাবে কাজ করছে।

সংসদে তার সংক্ষিপ্ত ভাষণে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ফিরিস্তি তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি বলেন, জাতি হিসেবে আমরা এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত অতিক্রম করছি।

রাষ্ট্রপতি বলেন, সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর নির্মাণ এখন সমাপ্তির পথে। চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বহুলেন টানেলের দ্বিতীয় টানেলের নির্মাণকাজ সমাপ্ত হয়েছে। ৫৭তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট সফলভাবে উৎক্ষেপণ করেছে।

তিনি উল্লেখ করেন যে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। সমগ্র দেশে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। ডিসেম্বর ২০২২ সালে বিজয় দিবসের উপহার হিসেবে দেশের জনগণ প্রথম মেট্রো রেলে চলাচল করতে পারবে। বাংলাদেশেরপ্র প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, এমডিজির সাফল্যের ধারাবাহিকতায় ২০১৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত এসডিজির বিভিন্ন সূচকে অনন্য অগ্রগতির স্বীকৃতিস্বরূপ সম্প্রতি বাংলাদেশ ‘এসডিজি প্রোগ্রেস অ্যাওয়ার্ড’-এ ভূষিত হয়।

তিনি বলেন, ‘এ প্রাপ্তি আন্তর্জাতিক পরিসরে বাংলাদেশের জন্য এক বিশাল অর্জন। এ সম্মান বাংলাদেশের, এ সম্মান সমগ্র বাঙালি জাতির।’

তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি আমাদের উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারাকে সাময়িকভাবে বাধাগ্রস্ত করলেও থেমে থাকেনি আমাদের অর্থনীতির চাকা।

রাষ্ট্রপতি সরকারের সময়োচিত ও দূরদর্শী পদক্ষেপের প্রশংসা করে বলেন, ‘জীবন-জীবিকার অসাধারণ সমন্বয়ের মাধ্যমে করোনা সংকট মোকাবিলায় অনন্য সাধারণ ভূমিকার কারণে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ এবং জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অকুণ্ঠ প্রশংসা করেছে।’

আবদুল হামিদ জানান, ইতোমধ্যে ৪ কোটি ৫৫ লাখ ৯১ হাজার ৫৭৮ জনকে টিকার আওতায় আনা হয়েছে। করোনার সংকট মোকাবিলায় অর্থনীতিকে দ্রুত পুনর্গঠন এবং এর গতি পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে সরকার ২৮টি প্যাকেজের আওতায় ১ লাখ ৮৭ হাজার ৬৭৯ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়ন করছে।

মাদক, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও উগ্রবাদ এবং সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধকল্পে সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, এই কারণে দেশে স্বস্তি বিরাজ করছে, যা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হচ্ছে।

পরিবেশ সুরক্ষা, দূষণ নিয়ন্ত্রণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের বলিষ্ঠ ভূমিকা আন্তর্জাতিক অঙ্গণেও আজ স্বীকৃত বলে তিনি সংসদকে অবহিত করেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব রোধে ‘জলবায়ু দুর্বলতাগুলোকে’ ‘জলবায়ু সমৃদ্ধিতে’ রূপান্তর করতে ‘মুজিব ক্লাইমেট প্রসপারিটি প্ল্যান’ গ্রহণ করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর এ স্বীকৃতি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গৌরবের বলে মন্তব্য করে রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, ‘এই স্বীকৃতি বিশ্ব দরবারে আমাদের সম্মান আরো বৃদ্ধি করেছে। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিক অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’

রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, জাতির পিতার সোনার বাংলার আধুনিক রূপ ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ কোনো স্বপ্ন নয়, বাস্তবতা।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরামর্শ ও দিক-নির্দেশনায় ডিজিটাল বাংলাদেশের বাস্তবায়ন শুধু দেশে নয়, বিশ্বে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

তিনি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, সকল বীর মুক্তিযোদ্ধা ও অমর শহিদকে, যাদের অনন্যসাধারণ বীরত্ব ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা অর্জন করেছি এই স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ।