বেনাপোল দিয়ে ভারতীয় চাল আমদানি বন্ধ

  • আপডেট: ১১:১২:১৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ নভেম্বর ২০২১
  • ২৩

দেশে চালের বাজার স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে ভারত থেকে চাল আমদানির সময়সীমা শনিবার (৩০ অক্টোবর) শেষ হয়েছে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে রবিবার (৩১ অক্টোবর) থেকে ভারতীয় চাল আমদানি বন্ধ রয়েছে। তবে ভারত সীমান্তে বেশ কিছু চালের ট্রাক আটকা পড়ে আছে এদেশে প্রবেশের অপেক্ষায়। খাদ্য মন্ত্রনালয়ের বেধে দেওয়া সময় সীমার পর এসব চাল আনতে হলে সরকারকে শতকরা ৬২ ভাগ শুল্ক পরিশোধ করে আনতে হবে। এর আগে আমদানিকৃত চালের শুল্ক ছিল শতকরা ২৫ ভাগ। সংশ্লিস্ট সূত্রে জানা যায়, দেশের বাজারে চালের দামের ঊর্ধ্বগতি রোধ ও আমদানি নিয়ন্ত্রণ করতে সরকার চলতি বছরের বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়। এতে গত ২৫ আগস্ট ৪০০ জন আমদানিকারককে সাড়ে ১৬ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানির অনুমতি দেয়। এর মধ্যে ১৪ লাখ ৫৩ হাজার মেট্রিক টন ছিল সিদ্ধ চাল ও এক লাখ ৯৭ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল। মোটা চাল প্রতি মেট্রিক টন ৩৭০ থেকে ৩৮০ ডলার এবং চিকন চাল প্রতি মেট্রিক টন ৪২৫ থেকে ৪৭০ ডলার মূল্যে আমদানি হয়। তবে শর্ত ছিল ৩০ অক্টোবরের মধ্যে এ সমস্ত চাল ভারত থেকে আমদানি শেষ করতে হবে। চুক্তি অনুযায়ী শনিবার ছিল চাল আমদানির শেষ দিন। ৩১ অক্টোবর থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ব্যবসায়ীরা আর চাল আমদানি করতে পারবেন না।

ব্যবসায়ীরা জানান, দেশে প্রতিবছর চালের চাহিদা রয়েছে দুই কোটি ৩১ লাখ ৮২ হাজার মেট্রিক টন। আর দেশে চাল উৎপাদন হয় বছরে গড়ে সাড়ে তিন কোটি মেট্রিক টন। চাল উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বের তৃতীয় অবস্থানে। সূত্র মতে, ২০১৯ সালে দেশে চাল উৎপাদন হয় তিন কোটি ৬৫ লাখ মেট্রিক টন। ২০২০ সালে তিন কোটি ৭৪ লাখ মেট্রিক টন এবং ২০২১ সালে তিন কোটি ৭৮ লাখ মেট্রিক টন। তবে বৈরি আবহাওয়া ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে মাঝে মধ্যে দেশে চাল আমদানির প্রয়োজন হয়। কিন্তু কিছু আমদানিকারকেরা সারা বছর ধরে চাল আমদানি করেন। এতে ভরা মৌসুমে চাষিরা ন্যায্যমূল্য না পেয়ে আর্থিক ক্ষতির শিকার হন। এ অবস্থায় সরকার চাহিদা মতো চাল আনতে আমদানিকারকদের তালিকা ও চাল আমদানির পরিমাণ নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নেয়। আমদানিকারক মোশাররফ হোসেন জানান, সরকারি চুক্তি অনুযায়ী ৩১ অক্টোবর থেকে আর চাল আমদানি করা যাবে না। তবে এখনও প্রবেশের অপেক্ষায় ভারতে চালের ট্রাক সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে রয়েছে বলে জানান তিনি। আমদানিকারক আব্দুস সামাদ জানান, বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি হওয়া মোটা চাল প্রতিকেজি ৪০ টাকা এবং চিকন চাল ৫২ টাকা দরে পাইকারি বিক্রি করা হচ্ছে। বন্দর থেকে ব্যবসায়ীরা চাল কিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাচ্ছেন। বেনাপোল বন্দরের উপ পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার জানান, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী রবিবার (৩০ অক্টোবর) এর পর থেকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে  চাল আমদানি বন্ধ আছে। খাদ্য মন্ত্রনালয়ের পরবর্তী নির্দেশনা আসলে ভারত সীমান্তে আটকে থাকা চাল শতকরা ২৫ ভাগ শুল্ক পরিশোধ করে চাল খালাস নিতে পারবেন। নির্দেশনা না এলে শতকরা ৬২ ভাগ শুল্ক পরিশোধ করে চাল খালাস নিতে হবে ব্যবসায়ীদের। চাল কেনা, শুল্ক পরিশোধ ও অন্যান্য খরচ দিয়ে প্রতিকেজি চালের মূল্য পড়বে প্রায় ৬০ টাকার  কাছাকাছি।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

ভারতে মসজিদের স্থানে মন্দির দাবি করে জরিপের চেস্টায় উত্তেজনা, পুলিশের গুলিতে ৩ মুসল্লি নিহত (ভিডিওসহ)

বেনাপোল দিয়ে ভারতীয় চাল আমদানি বন্ধ

আপডেট: ১১:১২:১৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ নভেম্বর ২০২১

দেশে চালের বাজার স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে ভারত থেকে চাল আমদানির সময়সীমা শনিবার (৩০ অক্টোবর) শেষ হয়েছে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে রবিবার (৩১ অক্টোবর) থেকে ভারতীয় চাল আমদানি বন্ধ রয়েছে। তবে ভারত সীমান্তে বেশ কিছু চালের ট্রাক আটকা পড়ে আছে এদেশে প্রবেশের অপেক্ষায়। খাদ্য মন্ত্রনালয়ের বেধে দেওয়া সময় সীমার পর এসব চাল আনতে হলে সরকারকে শতকরা ৬২ ভাগ শুল্ক পরিশোধ করে আনতে হবে। এর আগে আমদানিকৃত চালের শুল্ক ছিল শতকরা ২৫ ভাগ। সংশ্লিস্ট সূত্রে জানা যায়, দেশের বাজারে চালের দামের ঊর্ধ্বগতি রোধ ও আমদানি নিয়ন্ত্রণ করতে সরকার চলতি বছরের বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়। এতে গত ২৫ আগস্ট ৪০০ জন আমদানিকারককে সাড়ে ১৬ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানির অনুমতি দেয়। এর মধ্যে ১৪ লাখ ৫৩ হাজার মেট্রিক টন ছিল সিদ্ধ চাল ও এক লাখ ৯৭ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল। মোটা চাল প্রতি মেট্রিক টন ৩৭০ থেকে ৩৮০ ডলার এবং চিকন চাল প্রতি মেট্রিক টন ৪২৫ থেকে ৪৭০ ডলার মূল্যে আমদানি হয়। তবে শর্ত ছিল ৩০ অক্টোবরের মধ্যে এ সমস্ত চাল ভারত থেকে আমদানি শেষ করতে হবে। চুক্তি অনুযায়ী শনিবার ছিল চাল আমদানির শেষ দিন। ৩১ অক্টোবর থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ব্যবসায়ীরা আর চাল আমদানি করতে পারবেন না।

ব্যবসায়ীরা জানান, দেশে প্রতিবছর চালের চাহিদা রয়েছে দুই কোটি ৩১ লাখ ৮২ হাজার মেট্রিক টন। আর দেশে চাল উৎপাদন হয় বছরে গড়ে সাড়ে তিন কোটি মেট্রিক টন। চাল উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বের তৃতীয় অবস্থানে। সূত্র মতে, ২০১৯ সালে দেশে চাল উৎপাদন হয় তিন কোটি ৬৫ লাখ মেট্রিক টন। ২০২০ সালে তিন কোটি ৭৪ লাখ মেট্রিক টন এবং ২০২১ সালে তিন কোটি ৭৮ লাখ মেট্রিক টন। তবে বৈরি আবহাওয়া ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে মাঝে মধ্যে দেশে চাল আমদানির প্রয়োজন হয়। কিন্তু কিছু আমদানিকারকেরা সারা বছর ধরে চাল আমদানি করেন। এতে ভরা মৌসুমে চাষিরা ন্যায্যমূল্য না পেয়ে আর্থিক ক্ষতির শিকার হন। এ অবস্থায় সরকার চাহিদা মতো চাল আনতে আমদানিকারকদের তালিকা ও চাল আমদানির পরিমাণ নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নেয়। আমদানিকারক মোশাররফ হোসেন জানান, সরকারি চুক্তি অনুযায়ী ৩১ অক্টোবর থেকে আর চাল আমদানি করা যাবে না। তবে এখনও প্রবেশের অপেক্ষায় ভারতে চালের ট্রাক সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে রয়েছে বলে জানান তিনি। আমদানিকারক আব্দুস সামাদ জানান, বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি হওয়া মোটা চাল প্রতিকেজি ৪০ টাকা এবং চিকন চাল ৫২ টাকা দরে পাইকারি বিক্রি করা হচ্ছে। বন্দর থেকে ব্যবসায়ীরা চাল কিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাচ্ছেন। বেনাপোল বন্দরের উপ পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার জানান, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী রবিবার (৩০ অক্টোবর) এর পর থেকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে  চাল আমদানি বন্ধ আছে। খাদ্য মন্ত্রনালয়ের পরবর্তী নির্দেশনা আসলে ভারত সীমান্তে আটকে থাকা চাল শতকরা ২৫ ভাগ শুল্ক পরিশোধ করে চাল খালাস নিতে পারবেন। নির্দেশনা না এলে শতকরা ৬২ ভাগ শুল্ক পরিশোধ করে চাল খালাস নিতে হবে ব্যবসায়ীদের। চাল কেনা, শুল্ক পরিশোধ ও অন্যান্য খরচ দিয়ে প্রতিকেজি চালের মূল্য পড়বে প্রায় ৬০ টাকার  কাছাকাছি।