আজ পবিত্র শবেকদর

  • আপডেট: ১১:০৫:৫০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ মে ২০২০
  • ২১

অনলাইন ডেস্ক:

আজ দিবাগত রাতে পবিত্র শবেকদর। ধর্মপ্রাণ মুসলমানের কাছে এ রাত হাজার রাতের চেয়ে পুণ্যময়। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে এবার ঘরে থেকেই রাত জেগে নফল ইবাদত, কোরআন তিলাওয়াত ও জিকির-আসকারের মধ্য দিয়ে পবিত্র শবে কদর পালন করবেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা।

শবেকদর রমজানের বিশেষ এক নেয়ামত। মহান আল্লাহতায়ালা এ নেয়ামত অন্য কোনো নবীর উম্মতকে দান করেননি। পূর্ববর্তী উম্মতের আয়ু ছিল দীর্ঘ। উম্মতে মোহাম্মদীর আয়ু সে তুলনায় খুবই কম। তাই আল্লাহপাক অনুগ্রহপূর্বক মহানবীর (সা.) উম্মতকে শবেকদর দান করেছেন এবং এক রাতের ইবাদতের মর্যাদা এক হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও অধিক বলে ঘোষণা দিয়েছেন। ২১ থেকে ৩০ রমজানের মধ্যে যে কোনো বেজোড় রাতে শবেকদর হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও অধিকাংশের মতে, ২৬ তারিখ দিবাগত রাতে অর্থাৎ ২৭তম রাতে হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

শবেকদর অত্যন্ত মাহাত্ম্যপূর্ণ রাত। এ রাতের মর্যাদার কারণেই মূলত তাকে ‘লাইলাতুল কদর’ বলা হয়। আমাদের অনেকেই যাকে ‘শবেকদর’ বলে থাকি। শবেকদরের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো— এ রাতে মানবতার মুক্তির সনদ মহাগ্রন্থ আল-কোরআন লওহে মাহফুজ থেকে দুনিয়ার আসমানে নাজিল করা হয়েছে। এরপর দীর্ঘ ২৩ বছর বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন সময়ের তা মহানবীর (সা.) ওপর অবতীর্ণ করা হয়। হজরত রসুলুল্লাহ (সা.) রমজান মাসের শেষ ১০ দিন ইতেকাফ করতেন এবং বলতেন, ‘তোমরা রমজানের শেষ ১০ রাতে শবেকদর সন্ধান করো’ (সহিহ বুখারি ও মুসলিম)। হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে, ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে ও সওয়াব হাসিলের উদ্দেশ্যে কদরের রাতে দণ্ডায়মান হয়, তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে’ (সহিহ বুখারি ও মুসলিম)।

শবেকদর চেনার কিছু আলামত হলো— ১. এ রাতটি রমজানের শেষ দশকে। ২. এটি রমজানের বেজোড় রাতে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ৩. রমজানের ২৭ রজনী হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। ৪. রাতটি গভীর অন্ধকারে ছেয়ে যাবে না। ৫. সেই রাত নাতিশীতোষ্ণ হবে। অর্থাৎ গরম বা শীতের তীব্রতা থাকবে না। ৬. মৃদুমন্দ বাতাস প্রবাহিত হতে থাকবে। ৭. সে রাতে ইবাদত করে মানুষ অপেক্ষাকৃত অধিক তৃপ্তিবোধ করবে। ৮. ওই রাতে বৃষ্টি বর্ষণ হতে পারে। ৯. সকালে হালকা আলোকরশ্মিসহ সূর্যোদয় হবে। যা হবে পূর্ণিমার চাঁদের মতো (বুখারি ও মুসলিম)।

এ রাতে অধিক পরিমাণে নামাজ পড়া, কোরআন তেলাওয়াত ও জিকির-আজকারে মশগুল থাকা আমাদের সবার কর্তব্য। হাদিসে আছে, ‘যে ব্যক্তি ইবাদতের মাধ্যমে শবেকদর লাভ করবে, কিয়ামতের দিন আল্লাহতায়ালা তার মর্যাদা বুলন্দ করবেন।’ কেউ যদি পুণ্য অর্জনের এমন বড় সুযোগ পেয়েও গাফেল ও অমনোযোগী থাকে তবে তার মতো হতভাগা আর কে হবে?

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

হাটিলা পূর্ব ইউনিয়নে সিমস্ প্রকল্প বিষয়ক অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত

আজ পবিত্র শবেকদর

আপডেট: ১১:০৫:৫০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ মে ২০২০

অনলাইন ডেস্ক:

আজ দিবাগত রাতে পবিত্র শবেকদর। ধর্মপ্রাণ মুসলমানের কাছে এ রাত হাজার রাতের চেয়ে পুণ্যময়। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে এবার ঘরে থেকেই রাত জেগে নফল ইবাদত, কোরআন তিলাওয়াত ও জিকির-আসকারের মধ্য দিয়ে পবিত্র শবে কদর পালন করবেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা।

শবেকদর রমজানের বিশেষ এক নেয়ামত। মহান আল্লাহতায়ালা এ নেয়ামত অন্য কোনো নবীর উম্মতকে দান করেননি। পূর্ববর্তী উম্মতের আয়ু ছিল দীর্ঘ। উম্মতে মোহাম্মদীর আয়ু সে তুলনায় খুবই কম। তাই আল্লাহপাক অনুগ্রহপূর্বক মহানবীর (সা.) উম্মতকে শবেকদর দান করেছেন এবং এক রাতের ইবাদতের মর্যাদা এক হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও অধিক বলে ঘোষণা দিয়েছেন। ২১ থেকে ৩০ রমজানের মধ্যে যে কোনো বেজোড় রাতে শবেকদর হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও অধিকাংশের মতে, ২৬ তারিখ দিবাগত রাতে অর্থাৎ ২৭তম রাতে হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

শবেকদর অত্যন্ত মাহাত্ম্যপূর্ণ রাত। এ রাতের মর্যাদার কারণেই মূলত তাকে ‘লাইলাতুল কদর’ বলা হয়। আমাদের অনেকেই যাকে ‘শবেকদর’ বলে থাকি। শবেকদরের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো— এ রাতে মানবতার মুক্তির সনদ মহাগ্রন্থ আল-কোরআন লওহে মাহফুজ থেকে দুনিয়ার আসমানে নাজিল করা হয়েছে। এরপর দীর্ঘ ২৩ বছর বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন সময়ের তা মহানবীর (সা.) ওপর অবতীর্ণ করা হয়। হজরত রসুলুল্লাহ (সা.) রমজান মাসের শেষ ১০ দিন ইতেকাফ করতেন এবং বলতেন, ‘তোমরা রমজানের শেষ ১০ রাতে শবেকদর সন্ধান করো’ (সহিহ বুখারি ও মুসলিম)। হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে, ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে ও সওয়াব হাসিলের উদ্দেশ্যে কদরের রাতে দণ্ডায়মান হয়, তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে’ (সহিহ বুখারি ও মুসলিম)।

শবেকদর চেনার কিছু আলামত হলো— ১. এ রাতটি রমজানের শেষ দশকে। ২. এটি রমজানের বেজোড় রাতে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ৩. রমজানের ২৭ রজনী হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। ৪. রাতটি গভীর অন্ধকারে ছেয়ে যাবে না। ৫. সেই রাত নাতিশীতোষ্ণ হবে। অর্থাৎ গরম বা শীতের তীব্রতা থাকবে না। ৬. মৃদুমন্দ বাতাস প্রবাহিত হতে থাকবে। ৭. সে রাতে ইবাদত করে মানুষ অপেক্ষাকৃত অধিক তৃপ্তিবোধ করবে। ৮. ওই রাতে বৃষ্টি বর্ষণ হতে পারে। ৯. সকালে হালকা আলোকরশ্মিসহ সূর্যোদয় হবে। যা হবে পূর্ণিমার চাঁদের মতো (বুখারি ও মুসলিম)।

এ রাতে অধিক পরিমাণে নামাজ পড়া, কোরআন তেলাওয়াত ও জিকির-আজকারে মশগুল থাকা আমাদের সবার কর্তব্য। হাদিসে আছে, ‘যে ব্যক্তি ইবাদতের মাধ্যমে শবেকদর লাভ করবে, কিয়ামতের দিন আল্লাহতায়ালা তার মর্যাদা বুলন্দ করবেন।’ কেউ যদি পুণ্য অর্জনের এমন বড় সুযোগ পেয়েও গাফেল ও অমনোযোগী থাকে তবে তার মতো হতভাগা আর কে হবে?