অনলাইন ডেস্ক:
ঘূর্ণিঝড় আম্ফান এর ক্ষতি এড়াতে চট্টগ্রাম বন্দর জেটিতে থাকা ১৯টি জাহাজ পণ্য ওঠানামার কাজ বন্ধ রেখে বহির্নোঙরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে বন্দর জেটিতে কোনো জাহাজ নেই; পুরোটাই ফাঁকা। বন্দরের ভেতর ইয়ার্ডে স্তূপ আকারে থাকা পণ্যভর্তি কন্টেইনার সমানভাবে স্তূপ করে রাখা হয়েছে যাতে বাতাসের তোড়ে কন্টেইনার ছিটকে পড়ে পণ্যের ক্ষতি না হয়। একই সাথে জেটিতে থাকা কি গ্যান্ট্রি ক্রেনকে সারিবদ্ধভাবে বেঁধে নিরাপদে রাখা হয়েছে।
কর্ণফুলী নদীতে জাহাজ চলাচলের মূল চ্যানেল থেকে ছোট জাহাজ, ফিশিং ট্রলার সরিয়ে নিরাপদ দূরত্বে পাঠিয়ে দেওয়ার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। একই সাথে লাইটার জাহাজগুলোকে কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতুর উজানে নিয়ে নিরাপদ দূরত্বে থাকার নির্দেশনা কার্যকর করা হয়েছে। বন্দরের তিনটি বিভাগ পরিবহন, মেরিন সচিব বিভাগ পৃথকভাবে নিয়ন্ত্রণকক্ষ চালু করেছে।
জানতে চাইলে বন্দর কর্তৃপক্ষের ডেপুটি কনজারভেটর ক্যাপ্টেন ফরিদুল আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, ছয় নম্বর সংকেত জানার পরই আমরা মোট ১৯টি জাহাজ পণ্য ওঠানামার কাজ বন্ধ রেখে সাগরে পাঠিয়ে দিয়েছি। সেই জাহাজগুলোকে দুটি ইঞ্জিন সচল রেখে নিরাপদ দূরত্বে থাকতে বলা হয়েছে। অন্য জাহাজগুলোকে আর গভীর সাগরে গিয়ে সতর্ক থেকে বন্দর নিয়ন্ত্রণকক্ষে যোগাযোগ রাখতে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, সার্বক্ষণিকভাবে বন্দর জাহাজ তদারককারী ভিটিএমআইএস ২৪ ঘণ্টা সচল রেখে জাহাজগুলোর গতিবিধি তদারক করা হচ্ছে।
এদিকে, আম্ফানের কারণে ছয় নম্বর বিপদ সংকেতের কারণে গত সোমবার রাত থেকেই জাহাজের কাজ বন্ধ রেখে সাগরে পাঠিয়ে দেওয়ার কাজ শুরু হয়। রাত ১০টা পর্যন্ত মাত্র দুটি জাহাজ পাঠানো হয়; ভোর থেকে বাকি ১৭টি জাহাজ পাঠিয়ে দিয়ে জেটি ফাঁকা করা হয়।
বন্দরের টার্মিনাল অপারেটর সাইফ পাওয়ারটেকের চিফ অপারেটিং অফিসার ক্যাপ্টেন তানভির হোসাইন কালের কণ্ঠকে বলেন, জোয়ারের সময় জাহাজগুলো জেটি থেকে সাগরে পাঠানো শুরু হয়; জেটিতে থেকে সর্বশেষ জাহাজটি ছেড়ে যায় সকাল ৮টা ২০ মিনিটে। এখন জেটিতে কোনা জাহাজ নেই। পণ্য ওঠানামার কাজ পুরোপুরি বন্ধ। তিনি বলেন, গ্যান্ট্রি ক্রেনগুলো বাতাসের গতির কারণে ক্ষতি এড়াতে নিরাপত্তার জন্য বুম আপ অবস্থায় রাখা হয়েছে। তবে বন্দরের ভেতর ইয়ার্ড থেকে ইয়ার্ডে পণ্য স্থানান্তরের কাজ কিছুটা চলছে।
উল্লেখ্য, ঘূর্ণিঝড় আম্ফান আগামীকাল বুধবার সন্ধ্যা নাগাদ পশ্চিমবঙ্গের দীঘা এবং চট্টগ্রামের হাতিয়ার একটি অংশ দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলে ধারণা আবহাওয়াবিদদের।