হাইমচর প্রতিনিধি ॥
চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার আলগী উত্তর ইউনিয়নের নয়ানী লক্ষ্মীপুর গ্রামে রাতের আধাঁরে মো. রোকন বন্দুকশী (৩০) নামে যুবককে অপহরন করে এবং বেধম পিটিয়ে হত্যার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে রাস্তায় ফেলেগেছে অজ্ঞতানামা মুখোশধারী সন্ত্রাসী যুবকরা। বর্তমানে রোকন চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
সোমবার (৪ মে) দিনগত রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টার দিকে তারাবি নামাজের শেষে ৩টি মোটর বাইক করে ৬জন সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী যুবক রোকনকে তার মামা মো. অলি উল্যাহর বাড়ীর বাহিরে রাস্তা থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে তাকে রাতে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। যারা অপহরণ করেছে তারা বিভিন্ন মাধ্যমে রোকনের মামা অলি উল্লাহকে জানান তাকে মেরে ওই বাগানে রাখা হয়েছে। কিন্তু সেখানে গিয়ে পাওয়া যায়নি।
অপহরণের শিকার রোকনের মামা অলি উল্লাহ জানান, আমি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত লোক। আমার কোন সন্তান নেই। আমি আর আমার স্ত্রী বাড়ীতে থাকি। আমার ঔষধ কেনার মত কোন লোক নেই। সে জন্য আমার ভাগিনা রোকন আমার কাছে থাকে। আমার দেখাশুনা করার কারণে আমি প্রকাশ্যে বলেছি আমার সম্পদ তাকে লিখে দিব। এই বিষয় জানার পরে আমার চাচাত ভাই ও ভাতিজারা বিরোধিতা শুরু করে এবং ভাগিনাকে হুমকি ধমকি দিতে থাকে। অর্থাৎ তারা আমার সম্পদ দখল করতে পারবে না বলে ঝগড়া বিবাদ শুরু করে। তারই জের ধরে আমার বাড়ির সম্পর্কের চাচাত ভাই নুরুজ্জামানের ছেলে নুর মোহাম্মদ, ভাতিজা সবুজ ও মৃত আতাউজ্জামান এর ছেলে খোকন রাঢ়ী ষড়যন্ত্র করে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী এনে আমার ভাগিনাকে অপরণ করে হত্যার জন্য নিয়ে যায়। নুরুজ্জামান এই ঘটনার মূল পরিকল্পনা করে।
তিনি আরো বলেন, অপহরণের পরে তারা তাকে বেধম পিটিয়ে আহত করে। হত্যার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে হরিণা ফেরিঘাট এলাকায় রাস্তার পাশে পেলে রেখে চলে যায়। মঙ্গলবার সকালে একজন সিএনজি চালক তাকে উদ্ধার করে প্রথমে হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় এবং পরবর্তীতে সেখান থেকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়েছে। আমি অসুস্থ্য যে কারণে আমার স্ত্রী এখন ভাগিনার সাথে হসপিটালে রয়েছে। আমি খুবই অসহায়, যারা এই ঘটনার সাথে জড়িত তারা খুবই প্রভাবশালী। আমি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে তাদের শাস্তির দাবী জানাই।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোকন জানায়, সে একজন রাজমিস্ত্রি। মামা অসুস্থ্য হওয়ার কারণে তার দেখা-শুনা করার জন্য এই বাড়ী থাকেন। তারাবি নামাজের পরে তাকে মুখোশধারী ৬-৭জন যুবক বাড়ী থেকে তুলে নিয়ে যায়। তারপরে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে মারধর করে হরিনাঘাট এলাকায় রেখে চলে যায়। সে অজ্ঞান হয়ে যাওয়ায় আর কিছু মনে নেই। বর্তমানে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় পুরুষ ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন।
হাইমচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, এই বিষয়ে তিনি অবগত আছেন। ওই যুবককে হরিণা ঘাট থেকে উদ্ধার করেছেন সিএনজি চালক। সে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তাদের মধ্যে সম্পত্তি নিয়ে মারধরের ঘটনাও হয়েছে। তারা মামা থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।