টেকনাফে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের হাতে অপহৃত কৃষকদের একজনের লাশ উদ্ধার

  • আপডেট: ০২:০৮:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ মে ২০২০
  • ২৫

ওমর ফারুক, টেকনাফ:

টেকনাফে অপহৃত তিন কৃষক থেকে একজনকে হত্যা করেছে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা। বাকিদের জন্য ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছে। অন্যথায় তাদেরও মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে রোহিঙ্গা হাকিম ডাকাতের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। নিহত কৃষক মিনাবাজার মৌলভী আবুল কাছিমের ছেলে আক্তারুল্লাহ (২৪)।

শুক্রবার ভোর রাতে উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের রোহিঙ্গা ক্যাম্প (২২ নম্বর) উনছিপ্রাং পুটিবনিয়ার পশ্চিমে ছনখোলা থেকে ওই কৃষকের গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে একদল পুলিশসহ গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন। মরদেহ উদ্ধার করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে পুলিশ।

জানা গেছে, ২৯ এপ্রিল দিবাগত রাতে মিনাবাজার শামসু হ্যাডম্যানের ঘোনায় কৃষকের ধানক্ষেতে কাজ করা অবস্থায় সশস্ত্র একদল রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা কৃষক আবুল হাশেম ও তার দুই ছেলে জামাল এবং রিয়াজুদ্দিন, স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে শাহেদ (২৫), মৌলভী আবুল কাছিমের ছেলে আকতারুল্লাহ (২৪) ও মৃত মোহাম্মদ কাশেমের ছেলে ইদ্রিসকে অপহরণ করে। সেখান থেকে চাল ও অন্যান্য খাদ্যসামগ্রীর বিনিময়ে হাসেমসহ তার দুইছেলেকে ছেড়ে দিলেও বাকি তিনজনদের ছেড়ে দেয়নি সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। অপহৃত শাহেদের মোবাইল থেকে তার পরিবারের কাছে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছিল। অন্যথায় তাদের মেরে ফেলার হুমকি দেন।

এরই প্রেক্ষিতে শুক্রবার ভোরে ওই কৃষককে মাথায় গুলি করে হত্যা করে ফেলে রেখে পরিবার পরিজনকে খবর দেয় রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা। মরদেহের শরীর থেকে একটি চিরকূট ও ঘটনাস্থল থেকে খালি কার্তুজ পাওয়া গেছে বলে জানা যায়। বাকি দুই কৃষককে জীবিত পেতে হলে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ দাবি করা হয়। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, কুখ্যাত হাকিম ডাকাত তাদের অপহরণ করেছে।

অপহৃত শাহেদের মুঠোফোনের বরাত দিয়ে শামসুদ্দিন হ্যাডম্যান বলেন, শাহেদ ভোরে মুঠোফোনে তার মার কাছে জানান, আক্তারুল্লাহকে মেরে ফেলেছে হাকিম ডাকাত। ২০ লাখ টাকা না দিলে তাদেরও দু’য়েক দিনের মধ্যে মেরে ফেলা হবে।

পুটিবনিয়া রোহিঙ্গা শিবিরের পশ্চিম পাশে ছনখোলা হতে আক্তারুল্লাহ মরদেহ উদ্ধার করতে স্থানীয় মেম্বার ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গেছে। এর আগের দিন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা স্থানীয় ছয় ব্যক্তিকে অপহরণ করে। পরে কৌশলে তিনজন ফিরে এলেও বাকিদের মুক্তিপণ ছাড়া ছেড়ে দেয়নি। তাদের মধ্য থেকে মধ্য থেকে ভোরে একজনকে হত্যা করা হয়।

অভিযান অব্যাহত রেখেছে হোয়াইক্যং পুলিশের একটি টীম। ইনচার্জ এসআই মশিউর রহমান জানিয়েছেন, গহীন পাহাড়ে পুলিশের ছয়টি টিম করে অভিযান পরিচালনা করে তাদের (রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের) আস্তানা হতে নানা সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়েছিল। গহীন পাহাড় হওয়ায় রিপোর্ট লেখা অবধি কাউকে এ উদ্ধার করা যায়নি।

Tag :

সম্পাদক ও প্রকাশক:
মোঃ মহিউদ্দিন আল আজাদ

মোবাইল : ০১৭১৭-৯৯২০০৯ (নিউজ) বিজ্ঞাপন : ০১৬৭০-৯০৭৩৬৮
ইমেইলঃ notunerkotha@gmail.com

দেশে HMPV ভাইরাসে আক্রান্ত নারীর মৃত্যু, বাড়ছে আতঙ্ক

টেকনাফে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের হাতে অপহৃত কৃষকদের একজনের লাশ উদ্ধার

আপডেট: ০২:০৮:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ মে ২০২০

ওমর ফারুক, টেকনাফ:

টেকনাফে অপহৃত তিন কৃষক থেকে একজনকে হত্যা করেছে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা। বাকিদের জন্য ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছে। অন্যথায় তাদেরও মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে রোহিঙ্গা হাকিম ডাকাতের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। নিহত কৃষক মিনাবাজার মৌলভী আবুল কাছিমের ছেলে আক্তারুল্লাহ (২৪)।

শুক্রবার ভোর রাতে উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের রোহিঙ্গা ক্যাম্প (২২ নম্বর) উনছিপ্রাং পুটিবনিয়ার পশ্চিমে ছনখোলা থেকে ওই কৃষকের গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে একদল পুলিশসহ গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন। মরদেহ উদ্ধার করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে পুলিশ।

জানা গেছে, ২৯ এপ্রিল দিবাগত রাতে মিনাবাজার শামসু হ্যাডম্যানের ঘোনায় কৃষকের ধানক্ষেতে কাজ করা অবস্থায় সশস্ত্র একদল রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা কৃষক আবুল হাশেম ও তার দুই ছেলে জামাল এবং রিয়াজুদ্দিন, স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে শাহেদ (২৫), মৌলভী আবুল কাছিমের ছেলে আকতারুল্লাহ (২৪) ও মৃত মোহাম্মদ কাশেমের ছেলে ইদ্রিসকে অপহরণ করে। সেখান থেকে চাল ও অন্যান্য খাদ্যসামগ্রীর বিনিময়ে হাসেমসহ তার দুইছেলেকে ছেড়ে দিলেও বাকি তিনজনদের ছেড়ে দেয়নি সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। অপহৃত শাহেদের মোবাইল থেকে তার পরিবারের কাছে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছিল। অন্যথায় তাদের মেরে ফেলার হুমকি দেন।

এরই প্রেক্ষিতে শুক্রবার ভোরে ওই কৃষককে মাথায় গুলি করে হত্যা করে ফেলে রেখে পরিবার পরিজনকে খবর দেয় রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা। মরদেহের শরীর থেকে একটি চিরকূট ও ঘটনাস্থল থেকে খালি কার্তুজ পাওয়া গেছে বলে জানা যায়। বাকি দুই কৃষককে জীবিত পেতে হলে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ দাবি করা হয়। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, কুখ্যাত হাকিম ডাকাত তাদের অপহরণ করেছে।

অপহৃত শাহেদের মুঠোফোনের বরাত দিয়ে শামসুদ্দিন হ্যাডম্যান বলেন, শাহেদ ভোরে মুঠোফোনে তার মার কাছে জানান, আক্তারুল্লাহকে মেরে ফেলেছে হাকিম ডাকাত। ২০ লাখ টাকা না দিলে তাদেরও দু’য়েক দিনের মধ্যে মেরে ফেলা হবে।

পুটিবনিয়া রোহিঙ্গা শিবিরের পশ্চিম পাশে ছনখোলা হতে আক্তারুল্লাহ মরদেহ উদ্ধার করতে স্থানীয় মেম্বার ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গেছে। এর আগের দিন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা স্থানীয় ছয় ব্যক্তিকে অপহরণ করে। পরে কৌশলে তিনজন ফিরে এলেও বাকিদের মুক্তিপণ ছাড়া ছেড়ে দেয়নি। তাদের মধ্য থেকে মধ্য থেকে ভোরে একজনকে হত্যা করা হয়।

অভিযান অব্যাহত রেখেছে হোয়াইক্যং পুলিশের একটি টীম। ইনচার্জ এসআই মশিউর রহমান জানিয়েছেন, গহীন পাহাড়ে পুলিশের ছয়টি টিম করে অভিযান পরিচালনা করে তাদের (রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের) আস্তানা হতে নানা সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়েছিল। গহীন পাহাড় হওয়ায় রিপোর্ট লেখা অবধি কাউকে এ উদ্ধার করা যায়নি।