মতলব প্রতিনিধি:
খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর আওতায় ১০ টাকা কেজি দরে চাউল ক্রয়ের তালিকায় নাম থাকলেও চাউলের দেখা নাই তাদের। সময় মত ডিলারের কাছে চাউল ক্রয় করতে গিয়ে প্রতিবারই খালি হাতে ফিরে আসায় এবার নিরুপায় হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন চাউল ক্রয় করতে না পারা ভুক্তভোগী হত দরিদ্র পরিবারের সদস্যরা।
অভিযোগ থেকে জানা যায়, মতলব দক্ষিণ উপজেলার উপাদী উত্তর ইউনিয়নের ওএমএস চাউল বিক্রয়ের ডিলার শাহআলমের কাছ থেকে ১০টাকা কেজি মূল্যে চাউল সরকার ঘোষিত সময়ে ক্রয় করতে গিয়ে প্রতিবারই খালি হাতে ফিরে আসতে হয়েছে তাদের। খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীতে তাদের নাম থাকলেও আজ পর্যন্ত তারা ১০ টাকা কেজি মূল্যে চাউল ওই ডিলারের কাছ থেকে ক্রয় করতে পারেনি। চাউল বিক্রির সময়ে তাঁর কাছে গেলে কটু কথা শুনে ফিরে আসতে হয়েছে তাদের।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর উপজেলার উপাদী উত্তর ইউনিয়নে হতদরিদ্র জনগণের মধ্যে ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রির জন্য দু’জন ডিলার নিয়োগ দেওয়া হয়। নিয়ম অনুসারে ডিলার হতে হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির তাঁর ইউনিয়নে বড় হাট বা বাজারে নির্ধারিত দোকান থাকতে হবে। আর ওই দোকানে কমপক্ষে ১৫ টন মালপত্র মজুত রাখার জায়গা থাকতে হবে। কিন্তু এই ইউনিয়নের ডিলার শাহআলম ও ছলেমান প্রধানের নেই কোনো বড় দোকান,তবুও রাজনৈতিক প্রভাবে তাদের ডিলার করা হয়।
সরেমিনে জানা যায়, ইউনিয়নের ১, ২, ৪ ও ৬ নং ওয়ার্ডে বসবাসরত হত দরিদ্র জনগণ খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর আওতায় ১০ টাকা কেজি দরে চাউল ক্রয়ে ডিলারের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন। ইউনিয়নের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর কার্ডধারী ১নং ওয়ার্ডের আব্দুর রহমান (কার্ড নং-৬৫), মরিয়ম বেগম (কার্ড নং- ৬৮), ২নং ওয়ার্ডের কোহিনূর বেগম (কার্ড নং-৮৭), শাহআলম (কার্ড নং-১৫২), ৪নং ওয়ার্ডের আল আমিন (কার্ড নং-২৮৫), রুফিয়া বেগম (কার্ড নং- ৩১২), আফিয়া খাতুন (কার্ড নং-৩১৫), রাবিয়া বেগম (কার্ড নং-৩১২), ৬নং ওয়ার্ডের শাহিনা বেগম (কার্ড নং-৫৯১), মোঃ মানিক (কার্ড নং- ৬০২) সহ একাধিক কার্ডধারী হত দরিদ্র পরিবার অভিযোগ করে বলেন, ‘এলাকার চেয়ারম্যান-মেম্বারদের কাছে বারবার ধরনা দিয়ে এই কার্ড পাইছিলাম। কিন্তু ১০ টাকা কেজি দরে চাউল কি জিসিন তা আজও দেখতে পাইলাম না। যখনই চাউল কিনতে গেছি ততবারই ডিলার শাহআলম চাউল নাই কইয়া আমাগো ফিরাইয়া দিচ্ছে, তাইলে এত চাউল কই যায়?’
অভিযোগের বিষয়ে ডিলার শাহ আলমের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করেও ওনার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে এই নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান শহিদ উল্ল্যাহ প্রধান বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে হত দরিদ্র মানুষের অভিযোগের বিষয়ে দেখা হচ্ছে। প্রমাণ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহমিদা হক জানান, অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ওনার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।