আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
করোনাভাইরাস মোকাবেলায় যথেষ্ট পদক্ষেপ না নেয়ায় এবং এ কারণে এটি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ায় অর্থনৈতিক ক্ষতির অভিযোগ তুলে চীনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি অঙ্গরাজ্য।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরি অঙ্গরাজ্য সরকার চীন সরকার ও দেশটির ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির বিরুদ্ধে মামলাটি করে। করোনা ইস্যুতে ভাইরাসটির সূতিকাগার চীনের বিরুদ্ধে এটিই প্রথম মামলা।
মিসৌরির অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল এরিক স্মিথ সরকারের পক্ষে এই মামলা করেন। তিনি চীনের বিরুদ্ধে করোনাভাইরাস নিয়ে মিথ্যাচারেরও অভিযোগ করেছেন। খবর রয়টার্স ও সিএনএনের।
বৈশ্বিক মহামারী হিসেবে করোনার বিস্তারের নেপথ্যে চীনের দায়িত্বে অবহেলাকে কারণ হিসেবে হাজির করেছে মিসৌরি সরকার।
বলা হচ্ছে, চীন ভাইরাসটি নিয়ে লুকোচুরি করেছে। এই ভাইরাস যে এতটা সংক্রামক তা তারা আগে জানায়নি। এ নিয়ে তথ্য গোপন করেছে কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বাধীন সরকার।
মামলায় করোনাভাইরাসের কারণে লকডাউন থাকায় মিসৌরি অঙ্গরাজ্যের মানুষের অর্থনৈতিক ক্ষতির বিষয়টি সামনে আনা হয়েছে। বলা হয়েছে, কোটি কোটি মার্কিন ডলারের ক্ষতি হয়েছে চীনের অবহেলার কারণে।মামলায় ক্ষতিপূরণও দাবি করা হয়েছে।
মিসৌরির অ্যাটর্নি জেনারেল এরিক স্মিথ মামলা দায়েরের পর বলেন, চীন সরকার কোভিড -১৯ এর বিপদ ও এর অতি-সংক্রামক প্রকৃতির বিষয়ে বিশ্বকে মিথ্যা বলেছিল। এছাড়া প্রথম যে চিকিৎসক এই ভাইরাস সম্পর্কে সচেতন করে তাকেও এ নিয়ে কথা বলতে দেয়া হয়নি।
তিনি আরও বলেন, সব দিক দিয়েই চীন মহামারি এই রোগের বিস্তার থামাতে খুব কম চেষ্টাই করেছে। আর এ কারণে তাদের বিচার হতে হবে।মিসৌরিসহ বিশ্বের ওপর করোনার প্রাণহানি, যন্ত্রণা ও অর্থনৈতিক ক্ষতি সাধিত হচ্ছে তার জন্য চীনই দায়ী।
তবে মিসৌরি ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নির্বাহী পরিচালক লরেন জিপফোর্ড এই মামলাটিকে ‘চাল’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
তবে এই মামলা খুব বেশি প্রভাব ফেলবে কিনা তা স্পষ্ট নয়। কারণ মার্কিন আইনে কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া সাধারণত অন্য দেশের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়টি নিষিদ্ধ করে। এমনটাই জানিয়েছেন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হ্যাস্টিংস কলেজ অফ ল এর আন্তর্জাতিক আইন বিভাগের অধ্যাপক চিমেন কেটনার।
যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর সিস্টেমস সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দেয়া হিসাব অনুযায়ী, করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্যগুলোর মধ্যে মিসৌরি অন্যতম। মঙ্গলবার পর্যন্ত মিসৌরি অঙ্গরাজ্যে করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন ২১৫ জন। গত একদিনে নতুন শনাক্ত ১৫৬ নিয়ে সেখানে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এখন ৫ হাজার ৯৬৩।
জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গোটা যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৮ লাখ ২৪ হাজার ৪৩৮। অপরদিকে দেশটিতে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে ৪৫ হাজার ৩৯ জনের। মঙ্গলবার দেশটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৭ হাজার ১৭৯। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছে ২ হাজার ৮০৩ জন।