করোনা আক্রান্তদের ৮০ শতাংশের কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

  • আপডেট: ০৮:৪৬:৩১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২০
  • ৩৪

অনলাইন ডেস্ক:

নভেল করোনাভাইরাস আক্রান্তদের ৮০ শতাংশের কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না দাবি করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, অন্যদের অক্সিজেন সাপোর্ট ও কিছু ওষুধ লাগতে পারে।

দেশে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের সর্বশেষ পরিস্থিতি জানাতে শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।

মন্ত্রীর এই কথায় সায় দিয়ে আইইডিসিআরের পরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, আক্রান্তদের শতকরা ৩২ ভাগের হাসপাতালে যাওয়ার প্রয়োজন ছিল না। বিভিন্ন কারণে তাদের হাসপাতালে যেতে হয়। অনেকে সামাজিক কারণে বাড়িতে থাকতে পারেন না বলে হাসপাতালে যেতে হয়েছে।

জাহিদ মালেক বলেন, আইসিইউ, ভেন্টিলেটর নিয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছে। প্রস্তুতি নিয়ে হচ্ছে। এ ব্যবস্থা প্রতিনিয়ত উন্নত হচ্ছে। ভেন্টিলেটর দেওয়া হয় মুমূর্ষু রোগীদের। ইউরোপে আইসিইউর গড় প্রায় ৪ পারসেন্ট বা তার অধিক। তাদের বয়স্ক জনসংখ্যা বাংলাদেশের তুলনায় বেশি। বাংলাদেশের বর্তমান জনসংখ্যার ষাটোর্ধ্ব প্রায় ৭ পারসেন্ট, যা বর্তমানে আমাদের দেশের জন্য আশীর্বাদ। বর্তমানে সব হাসপাতালে ট্রিটমেন্ট গাইড দেওয়া হয়েছে।

আরো পড়ুন: ২৪ ঘন্টা করোনায় মৃত্যু ৯জন, নতুন আক্রান্ত ৩০৬

মন্ত্রী জানান, করোনাভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য সারা দেশে সব সরকারি হাসপাতালে এখন আইসোলেশন শয্যা রয়েছে নয় হাজার, আইসোলেশন সেন্টার রয়েছে ৫০০টি।

যেসব বেসরকারি হাসপাতাল কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে সেগুলোতে এক হাজার আইসোলেশন শয্যা হবে বলে জানান তিনি।

চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা সরঞ্জাম নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, পিপিইর সংকট নেই। পিপিই তৈরি করতে সময় লেগেছে কারণ পিপিইর কাঁচামাল দেশে ছিল না, রপ্তানি বন্ধ ছিল এবং প্রস্তুতকারক তেমন ছিল না। আমরা আস্তে আস্তে প্রস্তুতকারক তৈরি করেছি। আমরা প্রায় ১ লক্ষ পিপিই সারা বাংলাদেশে প্রতিদিন দিচ্ছি। এই সক্ষমতা আমরা অর্জন করেছি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাতে এখন ৩ লাখ ৯৬ হাজার ১৫২টি পিপিই মজুত রয়েছে বলে জানান তিনি।

দেশের বিভিন্ন জায়গায় এরই মধ্যে করোনাভাইরাস টেস্টের ২০টি ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে বলে জানান জাহিদ মালেক।

সারা দেশে কোভিড-১৯ রোগীদের পরীক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণ করা হলেও রোগীরা তাতে আগ্রহ দেখান না বলে অভিযোগ করে মন্ত্রী বলেন, সমস্যা হলো- রোগীরা টেস্ট করতে আগ্রহ প্রকাশ করে না, গোপন করে যায়। ফলে অনেক চিকিৎসক এতে আক্রান্ত হয়েছে। এই আচরণ আশঙ্কাজনক। আমি আহ্বান করব, বেশি করে টেস্ট করুন। নিজে সুস্থ থাকুন এবং করোনাভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণ করার সুযোগ দিন।

আরো পড়ুন: বাংলাদেশ থেকে ৪ বিশেষ ফ্লাইটে নাগরিকদের ফেরত নিচ্ছে যুক্তরাজ্য

দেশে প্রায় অর্ধশতাধিক জেলা ‘লকডাউন’ করা বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে বেশি সোচ্চার হওয়া প্রয়োজন, যার মাধ্যমে লকডাউনকে আরও কার্যকর করা যায়। বিভিন্ন স্থান বিশেষ করে হাটবাজার, দোকানে ঘোরাফেরা করে সংক্রমণ বৃদ্ধি করা হচ্ছে। রিকশা ও অন্যান্য যানবাহন অবাধে চলাচল করছে। ত্রাণ বিতরণেও জনগণ আক্রান্ত হচ্ছে। এ সমস্ত কারণে ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে অধিক গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।

রাজধানীর উত্তরার কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল ও মহাখালীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট, ফুলবাড়িয়া এলাকার রেলওয়ে হাসপাতাল ও নয়াবাজারের মহানগর জেনারেল হাসপাতালে কোভিড-১৯ আক্রান্তদের চিকিৎসা চলছে।

এছাড়াও মুগদা জেনারেল হাসপাতাল, শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ এবং মিরপুরের লালকুটি হাসপাতালকেও কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত রোগীদের জন্য নির্দিষ্ট করা হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রী।

ঘরবন্দী অবস্থায় নাগরিকদের মানসিক চাপ বৃদ্ধি পেতে পারে বলে উল্লেখ করে জাহিদ মালেক টিভি চ্যানেলগুলোতে বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান বেশি করে প্রচারের পরামর্শ দেন।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

ভারতে মসজিদের স্থানে মন্দির দাবি করে জরিপের চেস্টায় উত্তেজনা, পুলিশের গুলিতে ৩ মুসল্লি নিহত (ভিডিওসহ)

করোনা আক্রান্তদের ৮০ শতাংশের কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

আপডেট: ০৮:৪৬:৩১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২০

অনলাইন ডেস্ক:

নভেল করোনাভাইরাস আক্রান্তদের ৮০ শতাংশের কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না দাবি করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, অন্যদের অক্সিজেন সাপোর্ট ও কিছু ওষুধ লাগতে পারে।

দেশে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের সর্বশেষ পরিস্থিতি জানাতে শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।

মন্ত্রীর এই কথায় সায় দিয়ে আইইডিসিআরের পরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, আক্রান্তদের শতকরা ৩২ ভাগের হাসপাতালে যাওয়ার প্রয়োজন ছিল না। বিভিন্ন কারণে তাদের হাসপাতালে যেতে হয়। অনেকে সামাজিক কারণে বাড়িতে থাকতে পারেন না বলে হাসপাতালে যেতে হয়েছে।

জাহিদ মালেক বলেন, আইসিইউ, ভেন্টিলেটর নিয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছে। প্রস্তুতি নিয়ে হচ্ছে। এ ব্যবস্থা প্রতিনিয়ত উন্নত হচ্ছে। ভেন্টিলেটর দেওয়া হয় মুমূর্ষু রোগীদের। ইউরোপে আইসিইউর গড় প্রায় ৪ পারসেন্ট বা তার অধিক। তাদের বয়স্ক জনসংখ্যা বাংলাদেশের তুলনায় বেশি। বাংলাদেশের বর্তমান জনসংখ্যার ষাটোর্ধ্ব প্রায় ৭ পারসেন্ট, যা বর্তমানে আমাদের দেশের জন্য আশীর্বাদ। বর্তমানে সব হাসপাতালে ট্রিটমেন্ট গাইড দেওয়া হয়েছে।

আরো পড়ুন: ২৪ ঘন্টা করোনায় মৃত্যু ৯জন, নতুন আক্রান্ত ৩০৬

মন্ত্রী জানান, করোনাভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য সারা দেশে সব সরকারি হাসপাতালে এখন আইসোলেশন শয্যা রয়েছে নয় হাজার, আইসোলেশন সেন্টার রয়েছে ৫০০টি।

যেসব বেসরকারি হাসপাতাল কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে সেগুলোতে এক হাজার আইসোলেশন শয্যা হবে বলে জানান তিনি।

চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা সরঞ্জাম নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, পিপিইর সংকট নেই। পিপিই তৈরি করতে সময় লেগেছে কারণ পিপিইর কাঁচামাল দেশে ছিল না, রপ্তানি বন্ধ ছিল এবং প্রস্তুতকারক তেমন ছিল না। আমরা আস্তে আস্তে প্রস্তুতকারক তৈরি করেছি। আমরা প্রায় ১ লক্ষ পিপিই সারা বাংলাদেশে প্রতিদিন দিচ্ছি। এই সক্ষমতা আমরা অর্জন করেছি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাতে এখন ৩ লাখ ৯৬ হাজার ১৫২টি পিপিই মজুত রয়েছে বলে জানান তিনি।

দেশের বিভিন্ন জায়গায় এরই মধ্যে করোনাভাইরাস টেস্টের ২০টি ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে বলে জানান জাহিদ মালেক।

সারা দেশে কোভিড-১৯ রোগীদের পরীক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণ করা হলেও রোগীরা তাতে আগ্রহ দেখান না বলে অভিযোগ করে মন্ত্রী বলেন, সমস্যা হলো- রোগীরা টেস্ট করতে আগ্রহ প্রকাশ করে না, গোপন করে যায়। ফলে অনেক চিকিৎসক এতে আক্রান্ত হয়েছে। এই আচরণ আশঙ্কাজনক। আমি আহ্বান করব, বেশি করে টেস্ট করুন। নিজে সুস্থ থাকুন এবং করোনাভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণ করার সুযোগ দিন।

আরো পড়ুন: বাংলাদেশ থেকে ৪ বিশেষ ফ্লাইটে নাগরিকদের ফেরত নিচ্ছে যুক্তরাজ্য

দেশে প্রায় অর্ধশতাধিক জেলা ‘লকডাউন’ করা বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে বেশি সোচ্চার হওয়া প্রয়োজন, যার মাধ্যমে লকডাউনকে আরও কার্যকর করা যায়। বিভিন্ন স্থান বিশেষ করে হাটবাজার, দোকানে ঘোরাফেরা করে সংক্রমণ বৃদ্ধি করা হচ্ছে। রিকশা ও অন্যান্য যানবাহন অবাধে চলাচল করছে। ত্রাণ বিতরণেও জনগণ আক্রান্ত হচ্ছে। এ সমস্ত কারণে ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে অধিক গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।

রাজধানীর উত্তরার কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল ও মহাখালীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট, ফুলবাড়িয়া এলাকার রেলওয়ে হাসপাতাল ও নয়াবাজারের মহানগর জেনারেল হাসপাতালে কোভিড-১৯ আক্রান্তদের চিকিৎসা চলছে।

এছাড়াও মুগদা জেনারেল হাসপাতাল, শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ এবং মিরপুরের লালকুটি হাসপাতালকেও কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত রোগীদের জন্য নির্দিষ্ট করা হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রী।

ঘরবন্দী অবস্থায় নাগরিকদের মানসিক চাপ বৃদ্ধি পেতে পারে বলে উল্লেখ করে জাহিদ মালেক টিভি চ্যানেলগুলোতে বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান বেশি করে প্রচারের পরামর্শ দেন।