চাঁদপুরে মাথা ন্যাড়া করার হিড়িক

  • আপডেট: ০২:৩৯:৪১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ এপ্রিল ২০২০
  • ২৮

হাজীগঞ্জ, ১৭ এপ্রিল, শুক্রবার:

শহর থেকে গ্রাম- সর্বত্রই এখন হিড়িক পড়েছে মাথা ন্যাড়া করার। অনেকে মাথা ন্যাড়ার পর নানা ভঙ্গিতে ছবি তুলে তা আবার ছড়াচ্ছেন ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও। অনেকে মনে করেন, মাথা ন্যাড়া করলে করোনা আক্রান্ত হবে না। তবে চাঁদপুরের স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে এটি গুজব।

যারা ন্যাড়া হচ্ছেন তাদের দাবি, বৈশ্বিক মহামারী করোনার প্রাদুর্ভাব কমাতে সরকারের নির্দেশে বেশির ভাগ মানুষ ঘরে অবস্থান করছেন। আর একই কারণে বর্তমানে সারা দেশের সব সেলুনও বন্ধ রয়েছে। এতে বেশির ভাগ মানুষ চুল ছোট করতে না পেরে ন্যাড়া হয়ে যাচ্ছেন। তবে অনেকে আবার ভালো লাগা থেকেও ন্যাড়া হয়েছেন। আবার অনেকে পরিচিতজনের ন্যাড়া হওয়া দেখে উৎসাহিত হয়ে এ পথে হাঁটছেন।

জানা গেছে, এক সপ্তাহ ধরে চাঁদপুর জেলার৮টি উপজেলার গ্রামে-গঞ্জে মাথা ন্যাড়া করার হিড়িক পড়েছে। বিশেষ করে তরুণ ও যুবকদের মধ্যে এ প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা গেছে। তবে পিছিয়ে নেই শিশুরাও। অভিভাবকরা সুযোগটিকে কাজে লাগিয়ে শিশুদের মাথাও ন্যাড়া করে দিচ্ছেন।

জেলার হাজীগঞ্জ পৌর এলাকার মকিমাবাদ গ্রামের তরুণ আনন্দ গাজী জানান আামরা বন্ধুরা অন্তত ২০ জন মাথা ন্যাড়া করেছেন। তারা জানান, গরমের এমন সময়টাতে প্রতিবছরই দল বেঁধে একই বয়সের তরুণদের মাঝে মাথা ন্যাড়া হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে। যদিও চলতি সময়ে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের নির্দেশে ঘরে থাকতে হচ্ছে। আর সেলুনও দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। তাই এমন পরিস্থিতিতে মাথা ন্যাড়া করেছেন তারা।

এদিকে হাজীগঞ্জ উপজেলার কলেজ রোডস্থ এক সেলুন মালিক জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতেও বাড়ি গিয়ে চুল ছাঁটানোর জন্য দু-একজন ফোন দিচ্ছেন। পরিচিত মানুষ হলে বাড়িতে গিয়ে চুল কেটে দিয়ে আসছি। আর এজন্য একটু বেশি টাকা দিচ্ছেন তারা।

অপর দিকে হাজীগঞ্জের সদর ইউনিয়নের সিদলা গ্রামে এক বাগানের ভেতরে গড়ে উঠেছে সেলুন। প্রতিদিন বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উঠতি বয়সী যুবক-কিশোররা মোটর সাইকেল নিয়ে এসে মাথা ন্যাড়া করছে। অনেকে মাথা ন্যাড়ার বিষয়টি ফেইসবুকে লাইভও করছে।

জেলার ফরিদগঞ্জ, চাঁদপুর সদর, হাইমচর, মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ, কচুয়া, হাজীগঞ্জ, শাহরাস্তি সকল উপজেলাতেই মাথা ন্যাড়ার এক প্রকার প্রতিযোগিতা চলছে।

চাঁদপুরের সিভিল সার্জন ডাক্তার সাখাওয়াত উল্যাহ বলেন, মাথা ন্যাড়া করলে করোনা আসবে না এটা স্রেফ একটা গুজব ছাড়া আর কিছুই নয়। বরং মাথা ন্যাড়া করলে করোনা ছড়ানোর সংক্রমণ বেশি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, মাথা ন্যাড়া করতে হলে আরেকজনের সহযোগিতা নিতে হবে। মাথা ন্যাড়া করলে করোনা আসবে না এটাকে স্রেফ গুজব হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, এর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। এ বিষয়ে কান না দেওয়ার জন্য তিনি যুবকদের আহ্বান জানান।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

চাঁদপুরে ভ্রাম্যমান আদালতে ৬৫০ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ

চাঁদপুরে মাথা ন্যাড়া করার হিড়িক

আপডেট: ০২:৩৯:৪১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ এপ্রিল ২০২০

হাজীগঞ্জ, ১৭ এপ্রিল, শুক্রবার:

শহর থেকে গ্রাম- সর্বত্রই এখন হিড়িক পড়েছে মাথা ন্যাড়া করার। অনেকে মাথা ন্যাড়ার পর নানা ভঙ্গিতে ছবি তুলে তা আবার ছড়াচ্ছেন ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও। অনেকে মনে করেন, মাথা ন্যাড়া করলে করোনা আক্রান্ত হবে না। তবে চাঁদপুরের স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে এটি গুজব।

যারা ন্যাড়া হচ্ছেন তাদের দাবি, বৈশ্বিক মহামারী করোনার প্রাদুর্ভাব কমাতে সরকারের নির্দেশে বেশির ভাগ মানুষ ঘরে অবস্থান করছেন। আর একই কারণে বর্তমানে সারা দেশের সব সেলুনও বন্ধ রয়েছে। এতে বেশির ভাগ মানুষ চুল ছোট করতে না পেরে ন্যাড়া হয়ে যাচ্ছেন। তবে অনেকে আবার ভালো লাগা থেকেও ন্যাড়া হয়েছেন। আবার অনেকে পরিচিতজনের ন্যাড়া হওয়া দেখে উৎসাহিত হয়ে এ পথে হাঁটছেন।

জানা গেছে, এক সপ্তাহ ধরে চাঁদপুর জেলার৮টি উপজেলার গ্রামে-গঞ্জে মাথা ন্যাড়া করার হিড়িক পড়েছে। বিশেষ করে তরুণ ও যুবকদের মধ্যে এ প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা গেছে। তবে পিছিয়ে নেই শিশুরাও। অভিভাবকরা সুযোগটিকে কাজে লাগিয়ে শিশুদের মাথাও ন্যাড়া করে দিচ্ছেন।

জেলার হাজীগঞ্জ পৌর এলাকার মকিমাবাদ গ্রামের তরুণ আনন্দ গাজী জানান আামরা বন্ধুরা অন্তত ২০ জন মাথা ন্যাড়া করেছেন। তারা জানান, গরমের এমন সময়টাতে প্রতিবছরই দল বেঁধে একই বয়সের তরুণদের মাঝে মাথা ন্যাড়া হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে। যদিও চলতি সময়ে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের নির্দেশে ঘরে থাকতে হচ্ছে। আর সেলুনও দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। তাই এমন পরিস্থিতিতে মাথা ন্যাড়া করেছেন তারা।

এদিকে হাজীগঞ্জ উপজেলার কলেজ রোডস্থ এক সেলুন মালিক জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতেও বাড়ি গিয়ে চুল ছাঁটানোর জন্য দু-একজন ফোন দিচ্ছেন। পরিচিত মানুষ হলে বাড়িতে গিয়ে চুল কেটে দিয়ে আসছি। আর এজন্য একটু বেশি টাকা দিচ্ছেন তারা।

অপর দিকে হাজীগঞ্জের সদর ইউনিয়নের সিদলা গ্রামে এক বাগানের ভেতরে গড়ে উঠেছে সেলুন। প্রতিদিন বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উঠতি বয়সী যুবক-কিশোররা মোটর সাইকেল নিয়ে এসে মাথা ন্যাড়া করছে। অনেকে মাথা ন্যাড়ার বিষয়টি ফেইসবুকে লাইভও করছে।

জেলার ফরিদগঞ্জ, চাঁদপুর সদর, হাইমচর, মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ, কচুয়া, হাজীগঞ্জ, শাহরাস্তি সকল উপজেলাতেই মাথা ন্যাড়ার এক প্রকার প্রতিযোগিতা চলছে।

চাঁদপুরের সিভিল সার্জন ডাক্তার সাখাওয়াত উল্যাহ বলেন, মাথা ন্যাড়া করলে করোনা আসবে না এটা স্রেফ একটা গুজব ছাড়া আর কিছুই নয়। বরং মাথা ন্যাড়া করলে করোনা ছড়ানোর সংক্রমণ বেশি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, মাথা ন্যাড়া করতে হলে আরেকজনের সহযোগিতা নিতে হবে। মাথা ন্যাড়া করলে করোনা আসবে না এটাকে স্রেফ গুজব হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, এর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। এ বিষয়ে কান না দেওয়ার জন্য তিনি যুবকদের আহ্বান জানান।