নিজস্ব প্রতিবেদক:
চেয়ারম্যান সাহেবরা কি সত্যিই চোর ? অনেক প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে একজন ইউপি চেয়ারম্যান তথা স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার সর্বনিম্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি হলেও জনগণের সাথে সরাসরি কাজ করার সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ পদটি হচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান । এ
কজন চেয়ারম্যান কে সরকারের নির্দেশনা মেনে কাজ করতে হয়, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হয়, প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সাথে সঠিকভাবে যোগাযোগ রাখতে হয়, ইউনিয়ন পরিষদকে কার্যকর ও গতিশীল রাখতে ইউপি সদস্যগণের সাথে সমন্বয় করতে হয়, দলীয় নেতা-কর্মীদের সাথে সমন্বয় করতে হয়, জনগণের চাহিদা মেটাতে হয়, জনগণের ভালবাসা অর্জনের চেষ্টা করতে হয়, সঠিক তালিকা প্রস্তুত করতে হয়, সঠিক ওজন নিশ্চিত করতে হয়, জনগণকে সঠিকভাবে এবং জনগণের সময় ও চাহিদামত সেবা নিশ্চিত করতে হয়, মাঠ পর্যায়ের সংবাদ কর্মীদের সাথে সঠিক যোগাযোগ রক্ষা করতে হয়। এই সবের ব্যর্তয় ঘটলেই চেয়ারম্যান সাহেবরা চোর !
১) চাঁদপুর সিএসডি গোডাউন থেকে ৫ নং রামপুর ইউনিয়ন পরিষদে ১ টন পৌঁছাতে, গাড়িতে মালামাল লোডে লেবার চার্জ, অফিস খরচ, গাড়ি ভাড়া এবং মালামাল আনলোডে প্রায় ২৫০০/= টাকা খরচ । এইরূপভাবে ভিজিডি, জেলেদের চাউল, বিশেষ বিজিএফ এবং জিআর চাউল উত্তোলনের ক্ষেত্রে পরিমাণের ওপর খরচের হারহার । এই ক্ষেত্রে সরকারি কেরিং চার্জ খুবই নগণ্য । এভাবেই সিএসডি গোডাউনের সকল বরাদ্দের কার্যক্রম ৪ বছর চলমান।
২) চাউল ওজনে কম পেলেও, জনগণের মাঝে বিতরণের সময় ওজন ঠিক মতো নিশ্চিত করতে হবে । ওজনে কম পাওয়ার কারণে, বিতরণের সময় সামান্য কিছু কম পেলেও চেয়ারম্যান সাহেবরা চোর ।
৩) ইউনিয়ন পরিষদে নির্দিষ্ট সংখ্যক মানুষের মাঝে সঠিক পরিমাণ চাউল বিতরণ করার পরও অনেক সংখ্যক তালিকা ছাড়া অসহায় মানুষ ইউনিয়ন পরিষদের সামনে চাউলের জন্য অপেক্ষায় থাকে । অসহায় মানুষগুলো চাউল না পেলে চেয়ারম্যান সাহেবরা চোর! এইখানে চেয়ারম্যান সাহেবরা কোথায় চুরি করেছে আপনারা বলতে পারেন ? আমি আমার কথা বলছি, আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান ।
চাঁদপুর সরকারি কলেজ থেকে সমাজ কর্মে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেছি । ছোট কাল থেকেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কে বুকে ধারণ করে বেড়ে উঠেছি । আমি ১৯৯৭ সালে নবম শ্রেণীতে অধ্যায়নরত অবস্থায় রামপুর ইউনিয়ন শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদের নির্বাচিত সভাপতি হিসেবে সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে পথচলা শুরু করি । তারপর ইউনিয়ন ছাত্রলীগ, বলাখাল মুকবুল আহম্মদ ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগ, সদর উপজেলা ছাত্রলীগ, চাঁদপুর সরকারি কলেজের জিয়া হল শাখা ছাত্রলীগ এবং চাঁদপুর জেলা ছাত্রলীগের একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি । বর্তমানে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের একজন কর্মী হিসেবে কাজ করছি ।
ইনশাআল্লাহ সততা, নিষ্ঠা, একাগ্রতা এবং পরিশ্রম করে আমি আমার প্রিয় রামপুর ইউনিয়নবাসী কে সেবা দিয়ে যাচ্ছি । কতটুকু সঠিক সেবা দিতে পারছি সেটা জনগণ বিচার করবে । তবে নিজে স্বাভাবিকভাবে চলতে এবং সবকিছু ম্যানেজ করতে কষ্ট হয়। অনেক বাস্তবতা নিয়ে কাজ করতে হয়, অনেক কিছু বলা যায় না, নিরবে সহ্য করে নিতে হয় । আমি উচ্চাভিলাষী নই, সাধারণভাবে বেঁচে থাকতেই অভ্যস্ত ।
চেয়ারম্যান সাহেবরাও মানুষ, ভুল-ত্রুটি থাকতে পারে। আবার সকল চেয়ারম্যান সাহেবরা এক রকম নয়, সকলকে এক রকম ভাবাও ঠিক না । কর্ম দিয়েই মানুষকে মূল্যায়ন করবেন, তাহলেই ভাল মানুষগুলো কাজ করতে স্পৃহা পাবে । তারপরও চেয়ারম্যান সাহেবরা চুরির তকমা মাথায় নিয়ে জনগণের সেবা করে চলেছে অবিরত। কারণ চেয়ারম্যান হওয়ার কারণেই কিছু অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পেরেছে এবং সেবা দিতে পেরেছে।
আর সাধারণ মানুষের ভালবাসা পাওয়া। এটাই দিন শেষে চেয়ারম্যানদের তৃপ্তি । যেহেতু মানবসেবায় নিজেকে জড়িয়ে ফেলেছি, তাই মানবসেবায় থাকতে চাই । আমি জানি এই সেবা করতে গিয়ে অনেক ঘাত-প্রতিঘাত আসবে, অনেক সমালোচনা হবে, ভাল কাছে বাঁধা আসবে এবং পরিবার থেকে বেশির ভাগ সময় দূরে থাকতে হবে জেনেই এখানে এসেছি । ইনশাআল্লাহ বাকীটা সময় মানুষের পাশে থাকতে চাই । আমি হতাশাগ্রস্ত নই আমি বাস্তবতায় বিশ্বাসী । বিগত দিনে সবাই যেভাবে আমাকে সহযোগিতা করেছেন, সেভাবেই বর্তমান ও ভবিষ্যতে সহযোগিতা করবেন এই প্রত্যাশা করছি । লিখনির মাধ্যমে যা প্রকাশ করলাম তা সম্পূর্ণ আমার ব্যক্তিগত মতামত । এতে করে যদি কেউ ব্যক্তিগতভাবে বা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে মনে কোন কষ্ট পেয়ে থাকেন তাহলে আমাকে ক্ষমা করবেন । আল্লাহ্ হাফেজ ।
মোঃ আল মামুন পাটওয়ারী চেয়ারম্যান,
৫ নং রামপুর ইউনিয়ন পরিষদ, চাঁদপুর সদর, চাঁদপুর ।