গণউৎপাত থেকে রক্ষা পাওয়া নাগরিকের অধিকার: অধ্যক্ষ ড. মো. আলমীর কবির পাটওয়ারী

  • আপডেট: ০৩:৪২:২১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২০
  • ২৫

???? ???????? ???? ????? - ????? ?????????? ??-??????

মানুষ সমাজিক জীব। সামাজিক প্রশান্তি আমাদের সকলের কাম্য। হাজারো সমস্যা মানুষকে অতিক্রম করতে হয়। সমস্যার পাহাড়ের মধ্যে কিছু কিছু সমস্যা একটু সচেতন হলেই অতিক্রম করা সম্ভব। এর মধ্যে একটি ছোট্ট বিষয় সম্পর্কে আলোকপাত করছি, আমাদের দেশে সামাজিক বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠানের সধ্যে বিশেষ করে ধর্মীয় সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক কার্যক্রম মাইক বা সাউন্ড সিস্টেমের ব্যবহারের গুরুত্ব অপরিসীম। এর ব্যবহার যখন গণউৎপাতে পরিণত হয় সে ক্ষেত্রে সচেতন মানুষ কিংবা গণপ্রতিনিধি সর্বোপরি জন প্রশাসনের হস্তক্ষেপ বা ভূমিকা অপরিহার্য হয়ে পড়ে। এ’ ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল ব্যক্তিগণ নিরব থাকলে জনদুর্ভোগ বেড়েই চলে।

সকলের ব্যস্ততম সময় দিনের বেলায় মাইক ব্যবহারের কথা বাদ দিলেও বলা প্রয়োজন যে, রাতে মাইক বা সাউন্ড সিস্টেমের আওয়াজ একেবারে অসহনীয় ও যন্ত্রনাদায়ক। আর সে কারণে জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রচারের ক্ষেত্রেও রাতে সকল প্রচারনা রাষ্ট্রীয়ভাবে বন্ধ রাখা হয়। দিনের বেলা মাইকে ঔষধ বিক্রেতা থেকে শুরু করে কত ধরনের মাইকের ব্যবহারে মানুষের শ্রবণজনিত শব্দ দূষণ করেই যাচ্ছে। তার মধ্যে রাতের বিভিন্ন সময়ে মাইক বা সাউন্ড সিস্টেমে শব্দ দূষণ অনেক বেশি বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাতভর মাইকের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারে জনদুর্ভোগ বাড়িয়ে দিচ্ছে দিনের পর দিন। কাজেই জনস্বার্থে মাইকের যথেচ্ছ ব্যবহার রোধ সচেতন বা দায়িত্বশীল ব্যক্তি বা অনুষ্ঠানের আয়োজকদেরকে দায়িত্বশীল ভূমিকা নিয়ে বিষয়টি নিয়ন্ত্রনে এগিয়ে আসা প্রয়োজন।

আমাদের সমাজে রাষ্ট্রীয়ভাবে নির্ধারিত দিবস ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক / গান বাজনাসহ বিনোদন মূলক অনুষ্ঠান বছরের বিভিন্ন সময়ে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। ওয়াজ মাহফিল বা ধর্মীয় কার্যক্রম করা হয়ে থাকে ধর্মীয়ভাবে নির্ধারিত রাত ব্যতীত অনেক হক্কানী আলেম, বুজুর্গ এবং পীর সাহেবগণ সাধারণত: রাত ১০টা কিংবা সর্বোচ্চ ১১ টার পর মাহফিলে ওয়াজ করেন না। অথচ কেউ কেউ কোন কিছু তোয়াক্কা না করে বেপরোয়া হয়ে রাতের সিংহভাগ সময় নিয়ে মাহফিল করেন, যার প্রেক্ষিতে ক্ষতিকর অবস্থায় সৃষ্টি হয়। কাজেই সর্বাবস্থায় কল্যাণমূলক মাহফিল বা অন্যান্য অনুষ্ঠানগুলো যেন ক্ষতি বা বিরক্তির কারণ না হয় সে দিকটি বিবেচনায় নিয়ে মাহফিল বা যে কোন অনুষ্ঠানের আয়োজন বা ব্যবস্থা করা আবশ্যক।

পবিত্র কালামে পাক থেকে তেলওয়াত কানে আসা মাত্র একজন মুসলমান শ্রোতাকে পবিত্রতার সাথে মনোযোগ দিয়ে তা, শুনতে হয়। পবিত্র কোরআন খতম যা একান্তই ব্যক্তিগত বা পারিবারিক আমল হিসেবেই উদ্যোক্তা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে পবিত্রতার সাথে নিজে করবেন বা করাবেন এটাই স্বাভবিক। কিন্তু মাইক লাগিয়ে সময়ে অসময়ে অন্যদেরকে শুনতে বাধ্য করার কোনো যুক্তিকতা আছে বলে মনে করি না। বিশেষ করে রাতের বেলায় মানুষ কত রকম অবস্থায় থাকে। পবিত্র কালামে পাক শুনার মত পবিত্রতা অনেকের পক্ষে ধরে রাখা সম্ভব হয়ে উঠে না। এতে শ্রোতার দোষ না হয়ে, যিনি শুনতে বাধ্য করান, নিশ্চয়ই তিনি বা আয়োজকগণই শরীয়তের দৃষ্টিতে দায়ী হবেন। কখনও কখনও মাহফিলের নামে সারাত ব্যপী মাইকের আওয়াজের যতেচ্ছে ব্যবহার যা অন্যের জন্যে ক্ষতিকারক- তা নিশ্চই শোভনীয় বা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। প্রসঙ্গত না বলে পারছি না যে, আমরা কি জানি না, কয়জনে ‘বিরাট’ হয় ? বিরাট ওয়াজ ও দোয়ার মাহফিল বলে ব্যাপক প্রচার করা হলেও অধিকাংশ মাহফিল স্থরে ২-৩ শত দর্শক বা শ্রোতা উপস্থিত থাকে না; এ’ রকম অবস্থায় উদ্যোক্তাগণের লজ্জা পাওয়ারই কথা। বরং তা’ না হয়ে রাতের অধিকাংশ সময় জুড়ে চলে মাইকের বিকট আওয়াজ। যা অনুষ্ঠান কিংবা মাহফিল স্থানের বাহিরে হাজার হাজার মানুষের বিরক্তি সৃষ্টি করে মাহফিল বা ওয়াজ শুনার জন্য কারো ইচ্ছা থাকলে তিনি অবশ্যই পবিত্রতার সাথে বা পবিত্র মনে, মাহফিলের স্থানে উপস্থিত হবেন- এটাই স্বাভাবিক। দীর্ঘ দিন কোনো একটি অনুষ্ঠানের ব্যাপক প্রচার প্রচারণা অথচ অনুষ্ঠানের দিন দর্শক শ্রোতার উপস্থিতি একান্তই হাতে গুনার মত। সমাজের বাকি কানের ভেতর আওয়াজ ঢুকিয়ে দেয়ার প্রয়োজনটা কি ? যারা শুনার আগ্রহ নিয়ে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন তাদেরকেই শুনাবেন। এতে কারো আপত্তি থাকবে না। কাজেই যদি কেউ সারারাত ব্যাপি মাহফিল বা অনুষ্ঠান করতেই চান তা’হলে পবিত্র মাহফিল বা যে কোনো অনুষ্ঠানে উপস্থিত শ্রোতাগণের জন্য যতটুকু সাউন্ড বা আওয়াজের ব্যবস্থা করা দরকার ঠিক ততটুকু আওয়াজের ব্যবস্থা রাখাই উত্তম। তাতে করে সারারাত ব্যাপি মাহফিল বা অনুষ্ঠান চালাতে চাইলে অন্যদের তেমন ক্ষতি হয় না। যে কার্যক্রম অন্যের ক্ষতি করে, সে কার্যক্রম থেকে ভালো মানুষদের দূরে থাকা প্রয়োজন যা ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেও সমর্থনযোগ্য।

জনস্বার্থে যন্ত্রনা দায়ক যে কোনো কাজ থেকে বিবেকবান মানুষ নিজে বিরত থাকবেন এবং অন্যকেও বিরত রাখবেন এটাই স্বাভাবিক। কাজেই ধর্মীয় বা রাষ্ট্রীয়ভাবে নির্ধারিত দিবস ছাড়া সারাবছর অন্যান্য দিবসে যদি কেউ সারারাত যে কোনো সামাজিক সাংস্কৃতিক / গান বাজনা সহ বিনোদনমুলক অনুষ্ঠান অথবা ওয়াজ মাহফিল করতেই চান তবে উপস্থিত শ্রোতাগণের কষ্ট হবে না। গণউৎপাত থেকে অধিকার। আমরা জানি শব্দ দূষণে বধিরতা বাড়ে; এমনকি একজন লোক শব্দ দূষণ জনিত কারণে শ্রবণশক্তি হারালে এ ক্ষতি কখনো পূরন হয় না। তা’ছাড়া শ্রবন বহির্ভূত প্রতিক্রিয়াও মারাত্মক। ¯œায়ুজনিত সমস্যা এবং হৃদরোগীর ইফেক্টও মারাত্মক। শিশুদের ক্ষেত্রে এর প্রভাব অনেক বেশি। তা’ছাড়াও-

১। অধিকাংশ মুসলমান ফজরের নামাজ পড়েন, তাই রাত্রিতে মাইকের আওয়াজের কারণে সময়মত ঘুমাতে না পারলে ফজরের সময় ঘুম থেকে উঠতে কষ্ট হয় বা সময়মত নামাজ পড়া হয় না বা পড়তে পারেন না, যাদের কারণে একজন নামাজী ব্যাক্তির নামাজের ক্ষতি হল, তারাকি গুনাহগার হবেন না?

২। সারা বছরই কোনো না কোনো স্তরের (প্রাইমারী থেকে উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নিত্যদিনে লেখাপড়ার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা/ পাবলিক পরীক্ষা থাকে; মাইকের আওয়াজে নিত্যদিনের লেখাপড়া এবং পরীক্ষার প্রস্তুতিতে শিক্ষার্থীরা মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং মাইকের যন্ত্রনা পরীক্ষার্থীরা ঠিকমত পড়তেও পারে না। রাতের ঘুমটা পরীক্ষার্থীর জন্যে জরুরী। মাইকের আওয়াজে পরীক্ষার্থী সময়মত ঘুমাতে পারে না, অনেকে ঘুমের জন্যে রাতবর ছট্ফট্ করে; যার ফলশ্রুতিতে পরদিন প্রত্যাশিত মানে পরীক্ষার খাতায় প্রশ্নের উত্তর সঠিক ভাবে লিখা সম্ভব হয়ে উঠে না। একজন পরীক্ষার্থী আগামী প্রজন্মের ভবিষ্যত। তাদের স্বার্থের কথা বিবেচনা না করে কেন একজন পরীক্ষার্থীর ক্ষতি করব?

৩। রাতের বেলায় মাইক চালানোর কারণে অনেক শিশু মাইকের আওয়াজে ঠিকমত ঘুমাতে না পারলে পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও ঘুমাতে পারেন না। পরিবারের কষ্টের কথা বাদই দিলাম; কেন একজন শিশুর শান্তিপূর্ণ ঘুমের অধিকার নষ্ট করব?

৪। সাউন্ড সিস্টেম বা মাইকের আওয়াজের কারণে হাসপাতালে ভর্তি কিংবা বিছানায় পড়ে থাকা বিভিন্ন বয়সের রোগী রাতে প্রয়োজনীয় ঘুম ঘুমাতে পারে না। অতিরিক্ত শব্দের কোন রোগী ঘুমাতে না পারলে অতিরিক্ত ডোজের ঘুমের ঔষধ দিয়েও কাজ হয় না। রোগী আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে। রোগীদের অসুবিধার কথা বিবেচনায় না নিয়ে কেন একজন রোগাক্রান্ত অসুস্থ মানুষের ক্ষতি করব?

৫। যারা মাইক বাজিয়ে অনুষ্ঠান করলেন তারাতো পরদিন একটানা ঘুমাবেন; কিন্তু যে, চাকুরিজীবি/ ব্যবসায়ী মানুষ মাইকের আওয়াজের কারণে রাতে ঠিকমত ঘুমাতে পারলোনা অথচ পরদিন অফিস বা কর্মক্ষেত্রে সময়মত যেতে বাধ্য এবং রোটিন মোতাবেক কাজ করতেও বাধ্য। মাইকের যন্ত্রণায় ঘুমের ক্ষতি হলে কর্মজীবি মানুষের দায়িত্ব থাকা রোটিন মাফিক কাজের ক্ষতি হয়। একজন চাকুরিজীবি বা ব্যবসায়ীর জনস্বার্থ বিরোধী এ’ ক্ষতি কেন করব?

উপরোক্ত অবস্থার আলোকে মাইকের অযাচিত ব্যবহারে শব্দদূষণ জনিত গণউৎপাতের প্রাসঙ্গিকতায় সংশ্লিষ্ট আয়োজক বা উদ্যোক্তাগণ নিজের বিবেক খাটিয়ে বিষয়টি নিয়ন্ত্রন করার অনুরোধ রইল। দিন বা রাতের প্রথম অংশের সময় বাদ দিলেও রাত সাড়ে ১০ টা থেকে সর্বোচ্চ ১১ টার পর সকল প্রকার মাইক বা শব্দ যন্ত্রের ব্যবহার সম্পূর্ণ বন্ধ বা পরিপূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রাখা আবশ্যক। জাতীয় ভাবে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনের মত গুরুত্বপূর্ণ প্রচার প্রাপাকান্ডায় যেখানে রাত ৮ টার পর মাইকের প্রচার নিষিদ্ধ থাকে সেখানে কোন বিবেচনায় সারারাত মাইকের আওয়াজ চালু থাকে? অনুষ্ঠান বা মাহফিলের আওয়াজ ব্যবস্থাপনায় উদ্যোক্তাগণের মানবিক আচরণ অপরিহার্য। কাজেই, আমরা যে, যেভাবে পারি সমাবেশ স্থলের বাহিরের আওয়াজ নিয়ন্ত্রণে সচেতন হই। উদ্যোগ গ্রহণ করি, কট্টর- গোমরা, বেপরোয়া লোকদের সাথে প্রয়োজনে আলোচনা করি এবং পরামর্শ দিয়ে সকল ক্ষেত্রে সাধ্যমত জনগণের অধিকার রক্ষা করি।

শব্দদূষণ জনিত উপরোল্লিখিত গণউৎপাতের দিকগুলো ছাড়াও আরও অনেক ধরণের গণউৎপাত সমাজে বিদ্যমান। ভুলে গেলে চলবে না; দুনিয়া অল্প ক’দিনের? বিচার হবে বিবেকের। অন্যকে কষ্ট দিলে আজ না হোক কাল অবশ্যই আল্লাহর থেকে শাস্তি বা কষ্ট পেতে হবে। শক্তি বা ক্ষমতার দাপট আল্লাহ পছন্দ করেন না এবং ক্ষমা করেন না। অনেকের চেয়ে অনেক দাপটী ক্ষমতাবান পূর্বসূরীদের জীবনের শেষ দিনগুলো বা পরিণতির দিকে তাকালেই বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠবে। কাজেই বিবেক বিবর্জিত যে কোনো ধরণের ক্ষতিকারক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকা অপরিহার্য। মানুষের কল্যাণে কাজ করলে আল্লাহ সন্তুষ্ট হন। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে তাই করা উচিত। আমাদের প্রিয় নবী নিজে কষ্ট পেয়েছেন, কিন্তু অন্যকে কষ্ট দেননি। আমরা সকলেই সাধ্যমত একটু একটু করে এ’ ধরনের কষ্ট দেয়ার মত কার্যক্রম থেকে বিরত থাকি। গণমানুষের কল্যাণে সৌহাদ্যপূর্ণ সুন্দর সমাজ বিনির্মাণে এগিয়ে আসি, সকল ধরণের গণউৎপাত থেকে সর্ব সাধারণকে রক্ষা করি।

প্রচার ও প্রকাশনায় ঃ আহমাদিয়া ফাউন্ডেশন, হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ কমপ্লেক্স
আহমাদ আলী পাটওয়ারী ওয়াক্ফ এস্টেট, হাজীগঞ্জ; চাঁদপুর। মোবাইল ঃ ০১৭১২-৬৫১০৮২
নিজে পড়–ন, অন্যকে পড়তে উৎসাহিত কুরন।

জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ছেই, সমস্যায় পড়ছে সীমিত আয়ের মানুষ?

কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া গত কয়েক বছরে দেশের মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় ধারাবাহিকভাবে বাড়লেও সেভাবে আয় বৃদ্ধি পায়নি। এতে মধ্যবিত্ত ও নি¤œমধ্যবিত্ত পর্যায়ের মানুষকে জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

নিত্যপণ্যের বাজারের অস্থিরতাসহ সার্বিকভাবে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ার ফলে বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষের দুর্ভোগ কতটা বেড়েছে গতকাল যুগান্তরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে তা তুলে ধরা হয়েছে। জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন রাজধানীসহ বিভিন্ন শহরে বসবাসরত সীমিত আয়ের মানুষ।

বস্তুত বাড়ি ভাড়া ও সন্তানের লেখাপড়ার খরচসহ আনুষঙ্গিক অন্যান্য ব্যয় মেটাতে গিয়ে বর্তমানে অনেক সীমিত আয়ের মানুষের অবস্থা এমন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে যে তারা জরুরি প্রয়োজনেও সময়মতো চিকিৎসকের কাছে যেতে পারছেন না।

ব্যয়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে যাদের আয় বাড়েনি তাদের জীবনযাত্রার মান কমেছে। অনেকে সঞ্চয় ভেঙে দৈনন্দিন চাহিদা মেটাচ্ছেন। যাদের সঞ্চয় নেই তারা জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে দিশেহারা হচ্ছেন। বতর্মানে নিত্যপণ্যের দাম কমার কোনো লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না।

এ অবস্থায় কী করে পরিবারের খরচ মেটানো হবে, এটাই সীমিত আয়ের মানুষের প্রধান চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগামীতে বিশ্ববাজারে জ্বালানির দামসহ নিত্যপণ্যের দাম বাড়লে এর প্রভাব আমাদের দেশেও পড়বে।

অর্থাৎ আগামীতে কোনো কারণে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিসহ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়লে অনেক মানুষের জীবনমান আরেক দফা কমবে। কাজেই যখন তখন নিত্যপণ্যের বাজার যাতে অস্থির না হয় এবং মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় না বাড়ে সে জন্য সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।

বিশেষ করে বিভিন্ন পণ্যের দাম যাতে অসহনীয় পর্যায়ে না যায় সে ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে। অতীতে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর কারসাজির কারণে ভোক্তাদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। এমন অবস্থার পুনরাবৃত্তি রোধে কর্তৃপক্ষকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।

এটা ঠিক, অতীতের তুলনায় বর্তমানে নি¤œ আয়ের মানুষের মজুরি বেড়েছে। কিন্তু প্রকৃত মজুরি কতটা বেড়েছে তা বিবেচনায় নিতে হবে। অর্থাৎ যে হারে তাদের আয় বেড়েছে বিভিন্ন পণ্যের দাম তার চেয়ে বেশি বেড়েছে।

মোটকথা, সব শ্রেণির মানুষের জীবনমান উন্নয়নে বিদ্যমান সব বাধা দূর করতে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া না হলে যথাসময়ে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় (এসডিজি) উল্লেখিত লক্ষ্য অর্জনে নানারকম জটিলতা দেখা দিতে পারে।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

যে কারণে পুরুষে ৪টি বিয়ের পক্ষে হীরা সুমরো

গণউৎপাত থেকে রক্ষা পাওয়া নাগরিকের অধিকার: অধ্যক্ষ ড. মো. আলমীর কবির পাটওয়ারী

আপডেট: ০৩:৪২:২১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২০

মানুষ সমাজিক জীব। সামাজিক প্রশান্তি আমাদের সকলের কাম্য। হাজারো সমস্যা মানুষকে অতিক্রম করতে হয়। সমস্যার পাহাড়ের মধ্যে কিছু কিছু সমস্যা একটু সচেতন হলেই অতিক্রম করা সম্ভব। এর মধ্যে একটি ছোট্ট বিষয় সম্পর্কে আলোকপাত করছি, আমাদের দেশে সামাজিক বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠানের সধ্যে বিশেষ করে ধর্মীয় সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক কার্যক্রম মাইক বা সাউন্ড সিস্টেমের ব্যবহারের গুরুত্ব অপরিসীম। এর ব্যবহার যখন গণউৎপাতে পরিণত হয় সে ক্ষেত্রে সচেতন মানুষ কিংবা গণপ্রতিনিধি সর্বোপরি জন প্রশাসনের হস্তক্ষেপ বা ভূমিকা অপরিহার্য হয়ে পড়ে। এ’ ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল ব্যক্তিগণ নিরব থাকলে জনদুর্ভোগ বেড়েই চলে।

সকলের ব্যস্ততম সময় দিনের বেলায় মাইক ব্যবহারের কথা বাদ দিলেও বলা প্রয়োজন যে, রাতে মাইক বা সাউন্ড সিস্টেমের আওয়াজ একেবারে অসহনীয় ও যন্ত্রনাদায়ক। আর সে কারণে জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রচারের ক্ষেত্রেও রাতে সকল প্রচারনা রাষ্ট্রীয়ভাবে বন্ধ রাখা হয়। দিনের বেলা মাইকে ঔষধ বিক্রেতা থেকে শুরু করে কত ধরনের মাইকের ব্যবহারে মানুষের শ্রবণজনিত শব্দ দূষণ করেই যাচ্ছে। তার মধ্যে রাতের বিভিন্ন সময়ে মাইক বা সাউন্ড সিস্টেমে শব্দ দূষণ অনেক বেশি বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাতভর মাইকের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারে জনদুর্ভোগ বাড়িয়ে দিচ্ছে দিনের পর দিন। কাজেই জনস্বার্থে মাইকের যথেচ্ছ ব্যবহার রোধ সচেতন বা দায়িত্বশীল ব্যক্তি বা অনুষ্ঠানের আয়োজকদেরকে দায়িত্বশীল ভূমিকা নিয়ে বিষয়টি নিয়ন্ত্রনে এগিয়ে আসা প্রয়োজন।

আমাদের সমাজে রাষ্ট্রীয়ভাবে নির্ধারিত দিবস ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক / গান বাজনাসহ বিনোদন মূলক অনুষ্ঠান বছরের বিভিন্ন সময়ে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। ওয়াজ মাহফিল বা ধর্মীয় কার্যক্রম করা হয়ে থাকে ধর্মীয়ভাবে নির্ধারিত রাত ব্যতীত অনেক হক্কানী আলেম, বুজুর্গ এবং পীর সাহেবগণ সাধারণত: রাত ১০টা কিংবা সর্বোচ্চ ১১ টার পর মাহফিলে ওয়াজ করেন না। অথচ কেউ কেউ কোন কিছু তোয়াক্কা না করে বেপরোয়া হয়ে রাতের সিংহভাগ সময় নিয়ে মাহফিল করেন, যার প্রেক্ষিতে ক্ষতিকর অবস্থায় সৃষ্টি হয়। কাজেই সর্বাবস্থায় কল্যাণমূলক মাহফিল বা অন্যান্য অনুষ্ঠানগুলো যেন ক্ষতি বা বিরক্তির কারণ না হয় সে দিকটি বিবেচনায় নিয়ে মাহফিল বা যে কোন অনুষ্ঠানের আয়োজন বা ব্যবস্থা করা আবশ্যক।

পবিত্র কালামে পাক থেকে তেলওয়াত কানে আসা মাত্র একজন মুসলমান শ্রোতাকে পবিত্রতার সাথে মনোযোগ দিয়ে তা, শুনতে হয়। পবিত্র কোরআন খতম যা একান্তই ব্যক্তিগত বা পারিবারিক আমল হিসেবেই উদ্যোক্তা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে পবিত্রতার সাথে নিজে করবেন বা করাবেন এটাই স্বাভবিক। কিন্তু মাইক লাগিয়ে সময়ে অসময়ে অন্যদেরকে শুনতে বাধ্য করার কোনো যুক্তিকতা আছে বলে মনে করি না। বিশেষ করে রাতের বেলায় মানুষ কত রকম অবস্থায় থাকে। পবিত্র কালামে পাক শুনার মত পবিত্রতা অনেকের পক্ষে ধরে রাখা সম্ভব হয়ে উঠে না। এতে শ্রোতার দোষ না হয়ে, যিনি শুনতে বাধ্য করান, নিশ্চয়ই তিনি বা আয়োজকগণই শরীয়তের দৃষ্টিতে দায়ী হবেন। কখনও কখনও মাহফিলের নামে সারাত ব্যপী মাইকের আওয়াজের যতেচ্ছে ব্যবহার যা অন্যের জন্যে ক্ষতিকারক- তা নিশ্চই শোভনীয় বা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। প্রসঙ্গত না বলে পারছি না যে, আমরা কি জানি না, কয়জনে ‘বিরাট’ হয় ? বিরাট ওয়াজ ও দোয়ার মাহফিল বলে ব্যাপক প্রচার করা হলেও অধিকাংশ মাহফিল স্থরে ২-৩ শত দর্শক বা শ্রোতা উপস্থিত থাকে না; এ’ রকম অবস্থায় উদ্যোক্তাগণের লজ্জা পাওয়ারই কথা। বরং তা’ না হয়ে রাতের অধিকাংশ সময় জুড়ে চলে মাইকের বিকট আওয়াজ। যা অনুষ্ঠান কিংবা মাহফিল স্থানের বাহিরে হাজার হাজার মানুষের বিরক্তি সৃষ্টি করে মাহফিল বা ওয়াজ শুনার জন্য কারো ইচ্ছা থাকলে তিনি অবশ্যই পবিত্রতার সাথে বা পবিত্র মনে, মাহফিলের স্থানে উপস্থিত হবেন- এটাই স্বাভাবিক। দীর্ঘ দিন কোনো একটি অনুষ্ঠানের ব্যাপক প্রচার প্রচারণা অথচ অনুষ্ঠানের দিন দর্শক শ্রোতার উপস্থিতি একান্তই হাতে গুনার মত। সমাজের বাকি কানের ভেতর আওয়াজ ঢুকিয়ে দেয়ার প্রয়োজনটা কি ? যারা শুনার আগ্রহ নিয়ে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন তাদেরকেই শুনাবেন। এতে কারো আপত্তি থাকবে না। কাজেই যদি কেউ সারারাত ব্যাপি মাহফিল বা অনুষ্ঠান করতেই চান তা’হলে পবিত্র মাহফিল বা যে কোনো অনুষ্ঠানে উপস্থিত শ্রোতাগণের জন্য যতটুকু সাউন্ড বা আওয়াজের ব্যবস্থা করা দরকার ঠিক ততটুকু আওয়াজের ব্যবস্থা রাখাই উত্তম। তাতে করে সারারাত ব্যাপি মাহফিল বা অনুষ্ঠান চালাতে চাইলে অন্যদের তেমন ক্ষতি হয় না। যে কার্যক্রম অন্যের ক্ষতি করে, সে কার্যক্রম থেকে ভালো মানুষদের দূরে থাকা প্রয়োজন যা ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেও সমর্থনযোগ্য।

জনস্বার্থে যন্ত্রনা দায়ক যে কোনো কাজ থেকে বিবেকবান মানুষ নিজে বিরত থাকবেন এবং অন্যকেও বিরত রাখবেন এটাই স্বাভাবিক। কাজেই ধর্মীয় বা রাষ্ট্রীয়ভাবে নির্ধারিত দিবস ছাড়া সারাবছর অন্যান্য দিবসে যদি কেউ সারারাত যে কোনো সামাজিক সাংস্কৃতিক / গান বাজনা সহ বিনোদনমুলক অনুষ্ঠান অথবা ওয়াজ মাহফিল করতেই চান তবে উপস্থিত শ্রোতাগণের কষ্ট হবে না। গণউৎপাত থেকে অধিকার। আমরা জানি শব্দ দূষণে বধিরতা বাড়ে; এমনকি একজন লোক শব্দ দূষণ জনিত কারণে শ্রবণশক্তি হারালে এ ক্ষতি কখনো পূরন হয় না। তা’ছাড়া শ্রবন বহির্ভূত প্রতিক্রিয়াও মারাত্মক। ¯œায়ুজনিত সমস্যা এবং হৃদরোগীর ইফেক্টও মারাত্মক। শিশুদের ক্ষেত্রে এর প্রভাব অনেক বেশি। তা’ছাড়াও-

১। অধিকাংশ মুসলমান ফজরের নামাজ পড়েন, তাই রাত্রিতে মাইকের আওয়াজের কারণে সময়মত ঘুমাতে না পারলে ফজরের সময় ঘুম থেকে উঠতে কষ্ট হয় বা সময়মত নামাজ পড়া হয় না বা পড়তে পারেন না, যাদের কারণে একজন নামাজী ব্যাক্তির নামাজের ক্ষতি হল, তারাকি গুনাহগার হবেন না?

২। সারা বছরই কোনো না কোনো স্তরের (প্রাইমারী থেকে উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নিত্যদিনে লেখাপড়ার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা/ পাবলিক পরীক্ষা থাকে; মাইকের আওয়াজে নিত্যদিনের লেখাপড়া এবং পরীক্ষার প্রস্তুতিতে শিক্ষার্থীরা মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং মাইকের যন্ত্রনা পরীক্ষার্থীরা ঠিকমত পড়তেও পারে না। রাতের ঘুমটা পরীক্ষার্থীর জন্যে জরুরী। মাইকের আওয়াজে পরীক্ষার্থী সময়মত ঘুমাতে পারে না, অনেকে ঘুমের জন্যে রাতবর ছট্ফট্ করে; যার ফলশ্রুতিতে পরদিন প্রত্যাশিত মানে পরীক্ষার খাতায় প্রশ্নের উত্তর সঠিক ভাবে লিখা সম্ভব হয়ে উঠে না। একজন পরীক্ষার্থী আগামী প্রজন্মের ভবিষ্যত। তাদের স্বার্থের কথা বিবেচনা না করে কেন একজন পরীক্ষার্থীর ক্ষতি করব?

৩। রাতের বেলায় মাইক চালানোর কারণে অনেক শিশু মাইকের আওয়াজে ঠিকমত ঘুমাতে না পারলে পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও ঘুমাতে পারেন না। পরিবারের কষ্টের কথা বাদই দিলাম; কেন একজন শিশুর শান্তিপূর্ণ ঘুমের অধিকার নষ্ট করব?

৪। সাউন্ড সিস্টেম বা মাইকের আওয়াজের কারণে হাসপাতালে ভর্তি কিংবা বিছানায় পড়ে থাকা বিভিন্ন বয়সের রোগী রাতে প্রয়োজনীয় ঘুম ঘুমাতে পারে না। অতিরিক্ত শব্দের কোন রোগী ঘুমাতে না পারলে অতিরিক্ত ডোজের ঘুমের ঔষধ দিয়েও কাজ হয় না। রোগী আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে। রোগীদের অসুবিধার কথা বিবেচনায় না নিয়ে কেন একজন রোগাক্রান্ত অসুস্থ মানুষের ক্ষতি করব?

৫। যারা মাইক বাজিয়ে অনুষ্ঠান করলেন তারাতো পরদিন একটানা ঘুমাবেন; কিন্তু যে, চাকুরিজীবি/ ব্যবসায়ী মানুষ মাইকের আওয়াজের কারণে রাতে ঠিকমত ঘুমাতে পারলোনা অথচ পরদিন অফিস বা কর্মক্ষেত্রে সময়মত যেতে বাধ্য এবং রোটিন মোতাবেক কাজ করতেও বাধ্য। মাইকের যন্ত্রণায় ঘুমের ক্ষতি হলে কর্মজীবি মানুষের দায়িত্ব থাকা রোটিন মাফিক কাজের ক্ষতি হয়। একজন চাকুরিজীবি বা ব্যবসায়ীর জনস্বার্থ বিরোধী এ’ ক্ষতি কেন করব?

উপরোক্ত অবস্থার আলোকে মাইকের অযাচিত ব্যবহারে শব্দদূষণ জনিত গণউৎপাতের প্রাসঙ্গিকতায় সংশ্লিষ্ট আয়োজক বা উদ্যোক্তাগণ নিজের বিবেক খাটিয়ে বিষয়টি নিয়ন্ত্রন করার অনুরোধ রইল। দিন বা রাতের প্রথম অংশের সময় বাদ দিলেও রাত সাড়ে ১০ টা থেকে সর্বোচ্চ ১১ টার পর সকল প্রকার মাইক বা শব্দ যন্ত্রের ব্যবহার সম্পূর্ণ বন্ধ বা পরিপূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রাখা আবশ্যক। জাতীয় ভাবে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনের মত গুরুত্বপূর্ণ প্রচার প্রাপাকান্ডায় যেখানে রাত ৮ টার পর মাইকের প্রচার নিষিদ্ধ থাকে সেখানে কোন বিবেচনায় সারারাত মাইকের আওয়াজ চালু থাকে? অনুষ্ঠান বা মাহফিলের আওয়াজ ব্যবস্থাপনায় উদ্যোক্তাগণের মানবিক আচরণ অপরিহার্য। কাজেই, আমরা যে, যেভাবে পারি সমাবেশ স্থলের বাহিরের আওয়াজ নিয়ন্ত্রণে সচেতন হই। উদ্যোগ গ্রহণ করি, কট্টর- গোমরা, বেপরোয়া লোকদের সাথে প্রয়োজনে আলোচনা করি এবং পরামর্শ দিয়ে সকল ক্ষেত্রে সাধ্যমত জনগণের অধিকার রক্ষা করি।

শব্দদূষণ জনিত উপরোল্লিখিত গণউৎপাতের দিকগুলো ছাড়াও আরও অনেক ধরণের গণউৎপাত সমাজে বিদ্যমান। ভুলে গেলে চলবে না; দুনিয়া অল্প ক’দিনের? বিচার হবে বিবেকের। অন্যকে কষ্ট দিলে আজ না হোক কাল অবশ্যই আল্লাহর থেকে শাস্তি বা কষ্ট পেতে হবে। শক্তি বা ক্ষমতার দাপট আল্লাহ পছন্দ করেন না এবং ক্ষমা করেন না। অনেকের চেয়ে অনেক দাপটী ক্ষমতাবান পূর্বসূরীদের জীবনের শেষ দিনগুলো বা পরিণতির দিকে তাকালেই বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠবে। কাজেই বিবেক বিবর্জিত যে কোনো ধরণের ক্ষতিকারক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকা অপরিহার্য। মানুষের কল্যাণে কাজ করলে আল্লাহ সন্তুষ্ট হন। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে তাই করা উচিত। আমাদের প্রিয় নবী নিজে কষ্ট পেয়েছেন, কিন্তু অন্যকে কষ্ট দেননি। আমরা সকলেই সাধ্যমত একটু একটু করে এ’ ধরনের কষ্ট দেয়ার মত কার্যক্রম থেকে বিরত থাকি। গণমানুষের কল্যাণে সৌহাদ্যপূর্ণ সুন্দর সমাজ বিনির্মাণে এগিয়ে আসি, সকল ধরণের গণউৎপাত থেকে সর্ব সাধারণকে রক্ষা করি।

প্রচার ও প্রকাশনায় ঃ আহমাদিয়া ফাউন্ডেশন, হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ কমপ্লেক্স
আহমাদ আলী পাটওয়ারী ওয়াক্ফ এস্টেট, হাজীগঞ্জ; চাঁদপুর। মোবাইল ঃ ০১৭১২-৬৫১০৮২
নিজে পড়–ন, অন্যকে পড়তে উৎসাহিত কুরন।

জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ছেই, সমস্যায় পড়ছে সীমিত আয়ের মানুষ?

কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া গত কয়েক বছরে দেশের মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় ধারাবাহিকভাবে বাড়লেও সেভাবে আয় বৃদ্ধি পায়নি। এতে মধ্যবিত্ত ও নি¤œমধ্যবিত্ত পর্যায়ের মানুষকে জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

নিত্যপণ্যের বাজারের অস্থিরতাসহ সার্বিকভাবে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ার ফলে বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষের দুর্ভোগ কতটা বেড়েছে গতকাল যুগান্তরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে তা তুলে ধরা হয়েছে। জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন রাজধানীসহ বিভিন্ন শহরে বসবাসরত সীমিত আয়ের মানুষ।

বস্তুত বাড়ি ভাড়া ও সন্তানের লেখাপড়ার খরচসহ আনুষঙ্গিক অন্যান্য ব্যয় মেটাতে গিয়ে বর্তমানে অনেক সীমিত আয়ের মানুষের অবস্থা এমন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে যে তারা জরুরি প্রয়োজনেও সময়মতো চিকিৎসকের কাছে যেতে পারছেন না।

ব্যয়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে যাদের আয় বাড়েনি তাদের জীবনযাত্রার মান কমেছে। অনেকে সঞ্চয় ভেঙে দৈনন্দিন চাহিদা মেটাচ্ছেন। যাদের সঞ্চয় নেই তারা জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে দিশেহারা হচ্ছেন। বতর্মানে নিত্যপণ্যের দাম কমার কোনো লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না।

এ অবস্থায় কী করে পরিবারের খরচ মেটানো হবে, এটাই সীমিত আয়ের মানুষের প্রধান চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগামীতে বিশ্ববাজারে জ্বালানির দামসহ নিত্যপণ্যের দাম বাড়লে এর প্রভাব আমাদের দেশেও পড়বে।

অর্থাৎ আগামীতে কোনো কারণে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিসহ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়লে অনেক মানুষের জীবনমান আরেক দফা কমবে। কাজেই যখন তখন নিত্যপণ্যের বাজার যাতে অস্থির না হয় এবং মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় না বাড়ে সে জন্য সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।

বিশেষ করে বিভিন্ন পণ্যের দাম যাতে অসহনীয় পর্যায়ে না যায় সে ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে। অতীতে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর কারসাজির কারণে ভোক্তাদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। এমন অবস্থার পুনরাবৃত্তি রোধে কর্তৃপক্ষকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।

এটা ঠিক, অতীতের তুলনায় বর্তমানে নি¤œ আয়ের মানুষের মজুরি বেড়েছে। কিন্তু প্রকৃত মজুরি কতটা বেড়েছে তা বিবেচনায় নিতে হবে। অর্থাৎ যে হারে তাদের আয় বেড়েছে বিভিন্ন পণ্যের দাম তার চেয়ে বেশি বেড়েছে।

মোটকথা, সব শ্রেণির মানুষের জীবনমান উন্নয়নে বিদ্যমান সব বাধা দূর করতে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া না হলে যথাসময়ে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় (এসডিজি) উল্লেখিত লক্ষ্য অর্জনে নানারকম জটিলতা দেখা দিতে পারে।