শাহরাস্তির আলোচিত গৃহবধু ইতি হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন॥ আদালতে স্বামীর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

  • আপডেট: ০২:২৭:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারী ২০২০
  • ৩১

বিশেষ প্রতিনিধি॥
শাহরাস্তির আলোচিত গৃহবধু মেহজাবিন সুলতানা ইতি হত্যা মামলার মূল রহস্য উদঘাটন হয়েছে। ওই ঘটনায় আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে নিহত ইতি’র স্বামী একরামুল হক রাজু। ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি) (কুমিল্লা-নোয়াখালী) বিভাগের বি-বাড়িয়া জেলার পুলিশ পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) মোঃ আবদুল মান্নান মাত্র ১ মাসেই আলোচিত এ মামলার রহস্য উদঘাটন করেন।
সরেজমিন প্রতিবেদনে জানা যায়, শাহরাস্তি পৌর শহরের ঘুঘুশাল গ্রামের আমির হোসেনের কণ্যা মেহজাবিন সুলতানা ইতির বিয়ে হয় পাশ্ববর্তি মেহের দক্ষিণ ইউনিয়নের মালরা গ্রামের আবদুল কুদ্দুছের মেঝ ছেলে একরামুল হক রাজুর (২৭) সাথে। গত ২৩ জুন ২০১৮ তারিখ সন্ধ্যায় ইতি’র বিয়ের মাত্র ২ মাস ১৮ দিন সময়ের মধ্যে রহস্যজনক মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় পরদিন ২৪ জুন ২০১৮ তারিখ একটি অপমৃত্যু মামলা হয়। পরবর্তীতে ২৮ জুন তারিখে নিহত ইতি’র ভাই নূরে আলম বাদী হয়ে ৪জনকে আসামী করে শাহরাস্তি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর পুলিশের তদন্ত রহস্যজনক মনে করে বাদী আপত্তি জানালে ৫ জুলাই ২০১৮ তারিখে চাঁদপুর জেলা গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) মামলাটি বদলি করা হয়। গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পুলিশ পরিদর্শক এম এ রউফ খান মামলাটি তদন্ত করে হত্যার বিষয়টি মিথ্যা বলে ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে আদালতে চুড়ান্ত প্রতিবেদন (ফাইনাল রিপোর্ট) দাখিল করেন। ওই চুড়ান্ত প্রতিবেদনের (ফাইনাল রিপোর্ট) বিষয়ে আদালতে অনাস্থা জানিয়ে ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৯ তারিখে মামলার বাদী আবেদন করেন। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত পুনরায় তদন্তের জন্য ২৭ মে ২০১৯ তারিখ ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি) চাঁদপুরকে নির্দেশ প্রদান করেন। ওই আদেশের প্রেক্ষিতে সিআইডির উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ আবদুল মান্নান সরকার পুনরায় মামলাটি তদন্ত শুরু করেন। মামলা তদন্তকালীন সময়ে ২৪ আগষ্ট ২০১৯ তারিখ শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার মালরা গ্রাম থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মামলার প্রধান আসামী ইতি’র স্বামী একরামুল হক রাজুকে শাহরাস্তি থানার সহযোগিতায় সিআইডি চাঁদপুর আটক করে আদালতে সোপর্দ করে। ওই তদন্তকালীন সময়ে পুনরায় সিআইডি’র উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবদুল মান্নান সরকার থেকে মামলাটি বদলি করে ৩১ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে একই দপ্তরের পুলিশ পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) সাইফুল ইসলামকে দেয়া হয়।
একের পর এক মামলাটি বিভিন্ন দপ্তরে বদলি হতে থাকায় বাদী পরিবার নিরাশ হয়ে পড়ে। ন্যায় বিচার হতে বঞ্চিত হয়ে নিহত গৃহবধু ইতি’র পরিবার দিশেহারা হয়ে সুষ্ঠু ও সঠিক বিচারের প্রত্যাশায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, মুক্তিযুদ্ধের ১নং সেক্টর কমান্ডার ও স্থানীয় সংসদ সদস্য মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তমের স্বরণাপন্ন হন। ইতি’র পরিবার ন্যায় বিচারের আশায় স্থানীয় সংসদ সদস্য বরাবর একটি আবেদন করেন। পরবর্তীতে স্থানীয় সংসদ সদস্য বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষে মামলাটির সার্বিক নজরদারিতা করেন।
মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য চাঁদপুর সিআইডি থেকে ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া সিআইডিতে ১৪ নভেম্বর ২০১৯ তারিখে বদলি করা হয়। অতিরিক্ত পুলিশ মহা-পরিদর্শক (সিআইডি) স্বাক্ষরিত পত্রে মামলাটি সিআইডি ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার পুলিশ পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) মোঃ আবদুল মান্নানকে তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়। ওই নির্দেশের আলোকে বিশেষ পুলিশ সুপার (কুমিল্লা-নোয়াখালী) মোঃ কুতুব উদ্দিনের সার্বিক দিকনির্দেশনায় তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলার দায়িত্ব বুঝে নিয়ে ২৪ নভেম্বর ২০১৯ তারিখে জেলখানায় আটক ইতি’র স্বামী একরামুল হক রাজু’র ৭দিনের পুলিশি রিমান্ড ও কবর হতে লাশ উত্তোলন পূর্বক পুনরায় ময়নাতদন্তের জন্য বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত জেলখানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ড ও লাশ উত্তোলনের নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি’র পুলিশ পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) মোঃ আবদুল মান্নান জেলখানায় আসামী একরামুল হক রাজুকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে সে ইতি হত্যার সম্পূর্ণ ঘটনা খুলে বলে। পরবর্তীতে চাঁদপুরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ শফিউল আযমের আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।
স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দিতে আসামী একরামুল হক রাজু জানায়, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় আমি বাড়িতে এসে ইতি’র সাথে কথা বলি। কথা বলার এক পর্যায়ে আমার সাথে তার বাকবিতন্ডা হয়। আমি রাগের বশবর্তি হয়ে তার গলায় চাপ দিলে তার শ্বাস বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে দিশেহারা হয়ে কোন উপায় না দেখে দ্রুত বাড়ি থেকে বের হয়ে তাদের (ইতির) বাড়িতে চলে যাই। সেখানে গিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের বলি ইতি অসুস্থ্য, আপনারা তাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। প্রকৃতপক্ষে আমি রাগের বশে তার গলা চেপে ধরি। আমি বুঝতে পারিনি সে মরে যাবে।
এ বিষয়ে ইতি’র পরিবার জানায়, বিয়ের পর হতেই ইতি ওই পরিবারের নানান যন্ত্রণার শিকার হয়েছে। তার মৃত্যুর পর মামলা নিয়ে ঘুরপাক করতে গিয়ে মনে হয়েছে আমরা ইতি হত্যার বিচার পাবো না। সবাই টাকার কাছে বিক্রি হয়ে যায়। আজকে প্রমাণিত হলো পৃথিবীতে ন্যায় বিচার আছে। আমরা স্থানীয় সংসদ সদস্য মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম স্যারের প্রতি কৃতজ্ঞ। যার দয়ার দৃষ্টিতে আজকে আমরা হত্যার রহস্য উদঘাটনের সুযোগ পেয়েছি। আমরা আরো কৃতজ্ঞ সিআইডি’র পুলিশ পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) আবদুল মান্নান স্যারের প্রতি। যিনি আমাদের সবসময় সাহস যুগিয়েছেন। আমরা তার মামলা তদন্তের সময় কিছুটা আশার আলো দেখতে পেয়েছি। আজকে আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া জানাই এবং প্রাণ খুলে দোয়া করি যাদের জন্য আমরা আমাদের মেয়ে ইতি’র হত্যার সঠিক রহস্য উদঘাটনে সহযোগিতা পেয়েছি। এছাড়া আমরা আদালতের মাধ্যমে দোষি ব্যক্তির উপযুক্ত শাস্তি দাবী করছি। যাতে আর কেউ এমন অপরাধ করতে সাহস না পায়।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় উপ-অর্থ সম্পাদক হাজীগঞ্জের মাহবুব আলম ২ দিনের রিমান্ডে

শাহরাস্তির আলোচিত গৃহবধু ইতি হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন॥ আদালতে স্বামীর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

আপডেট: ০২:২৭:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারী ২০২০

বিশেষ প্রতিনিধি॥
শাহরাস্তির আলোচিত গৃহবধু মেহজাবিন সুলতানা ইতি হত্যা মামলার মূল রহস্য উদঘাটন হয়েছে। ওই ঘটনায় আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে নিহত ইতি’র স্বামী একরামুল হক রাজু। ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি) (কুমিল্লা-নোয়াখালী) বিভাগের বি-বাড়িয়া জেলার পুলিশ পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) মোঃ আবদুল মান্নান মাত্র ১ মাসেই আলোচিত এ মামলার রহস্য উদঘাটন করেন।
সরেজমিন প্রতিবেদনে জানা যায়, শাহরাস্তি পৌর শহরের ঘুঘুশাল গ্রামের আমির হোসেনের কণ্যা মেহজাবিন সুলতানা ইতির বিয়ে হয় পাশ্ববর্তি মেহের দক্ষিণ ইউনিয়নের মালরা গ্রামের আবদুল কুদ্দুছের মেঝ ছেলে একরামুল হক রাজুর (২৭) সাথে। গত ২৩ জুন ২০১৮ তারিখ সন্ধ্যায় ইতি’র বিয়ের মাত্র ২ মাস ১৮ দিন সময়ের মধ্যে রহস্যজনক মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় পরদিন ২৪ জুন ২০১৮ তারিখ একটি অপমৃত্যু মামলা হয়। পরবর্তীতে ২৮ জুন তারিখে নিহত ইতি’র ভাই নূরে আলম বাদী হয়ে ৪জনকে আসামী করে শাহরাস্তি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর পুলিশের তদন্ত রহস্যজনক মনে করে বাদী আপত্তি জানালে ৫ জুলাই ২০১৮ তারিখে চাঁদপুর জেলা গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) মামলাটি বদলি করা হয়। গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পুলিশ পরিদর্শক এম এ রউফ খান মামলাটি তদন্ত করে হত্যার বিষয়টি মিথ্যা বলে ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে আদালতে চুড়ান্ত প্রতিবেদন (ফাইনাল রিপোর্ট) দাখিল করেন। ওই চুড়ান্ত প্রতিবেদনের (ফাইনাল রিপোর্ট) বিষয়ে আদালতে অনাস্থা জানিয়ে ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৯ তারিখে মামলার বাদী আবেদন করেন। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত পুনরায় তদন্তের জন্য ২৭ মে ২০১৯ তারিখ ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি) চাঁদপুরকে নির্দেশ প্রদান করেন। ওই আদেশের প্রেক্ষিতে সিআইডির উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ আবদুল মান্নান সরকার পুনরায় মামলাটি তদন্ত শুরু করেন। মামলা তদন্তকালীন সময়ে ২৪ আগষ্ট ২০১৯ তারিখ শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার মালরা গ্রাম থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মামলার প্রধান আসামী ইতি’র স্বামী একরামুল হক রাজুকে শাহরাস্তি থানার সহযোগিতায় সিআইডি চাঁদপুর আটক করে আদালতে সোপর্দ করে। ওই তদন্তকালীন সময়ে পুনরায় সিআইডি’র উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবদুল মান্নান সরকার থেকে মামলাটি বদলি করে ৩১ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে একই দপ্তরের পুলিশ পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) সাইফুল ইসলামকে দেয়া হয়।
একের পর এক মামলাটি বিভিন্ন দপ্তরে বদলি হতে থাকায় বাদী পরিবার নিরাশ হয়ে পড়ে। ন্যায় বিচার হতে বঞ্চিত হয়ে নিহত গৃহবধু ইতি’র পরিবার দিশেহারা হয়ে সুষ্ঠু ও সঠিক বিচারের প্রত্যাশায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, মুক্তিযুদ্ধের ১নং সেক্টর কমান্ডার ও স্থানীয় সংসদ সদস্য মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তমের স্বরণাপন্ন হন। ইতি’র পরিবার ন্যায় বিচারের আশায় স্থানীয় সংসদ সদস্য বরাবর একটি আবেদন করেন। পরবর্তীতে স্থানীয় সংসদ সদস্য বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষে মামলাটির সার্বিক নজরদারিতা করেন।
মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য চাঁদপুর সিআইডি থেকে ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া সিআইডিতে ১৪ নভেম্বর ২০১৯ তারিখে বদলি করা হয়। অতিরিক্ত পুলিশ মহা-পরিদর্শক (সিআইডি) স্বাক্ষরিত পত্রে মামলাটি সিআইডি ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার পুলিশ পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) মোঃ আবদুল মান্নানকে তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়। ওই নির্দেশের আলোকে বিশেষ পুলিশ সুপার (কুমিল্লা-নোয়াখালী) মোঃ কুতুব উদ্দিনের সার্বিক দিকনির্দেশনায় তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলার দায়িত্ব বুঝে নিয়ে ২৪ নভেম্বর ২০১৯ তারিখে জেলখানায় আটক ইতি’র স্বামী একরামুল হক রাজু’র ৭দিনের পুলিশি রিমান্ড ও কবর হতে লাশ উত্তোলন পূর্বক পুনরায় ময়নাতদন্তের জন্য বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত জেলখানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ড ও লাশ উত্তোলনের নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি’র পুলিশ পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) মোঃ আবদুল মান্নান জেলখানায় আসামী একরামুল হক রাজুকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে সে ইতি হত্যার সম্পূর্ণ ঘটনা খুলে বলে। পরবর্তীতে চাঁদপুরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ শফিউল আযমের আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।
স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দিতে আসামী একরামুল হক রাজু জানায়, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় আমি বাড়িতে এসে ইতি’র সাথে কথা বলি। কথা বলার এক পর্যায়ে আমার সাথে তার বাকবিতন্ডা হয়। আমি রাগের বশবর্তি হয়ে তার গলায় চাপ দিলে তার শ্বাস বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে দিশেহারা হয়ে কোন উপায় না দেখে দ্রুত বাড়ি থেকে বের হয়ে তাদের (ইতির) বাড়িতে চলে যাই। সেখানে গিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের বলি ইতি অসুস্থ্য, আপনারা তাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। প্রকৃতপক্ষে আমি রাগের বশে তার গলা চেপে ধরি। আমি বুঝতে পারিনি সে মরে যাবে।
এ বিষয়ে ইতি’র পরিবার জানায়, বিয়ের পর হতেই ইতি ওই পরিবারের নানান যন্ত্রণার শিকার হয়েছে। তার মৃত্যুর পর মামলা নিয়ে ঘুরপাক করতে গিয়ে মনে হয়েছে আমরা ইতি হত্যার বিচার পাবো না। সবাই টাকার কাছে বিক্রি হয়ে যায়। আজকে প্রমাণিত হলো পৃথিবীতে ন্যায় বিচার আছে। আমরা স্থানীয় সংসদ সদস্য মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম স্যারের প্রতি কৃতজ্ঞ। যার দয়ার দৃষ্টিতে আজকে আমরা হত্যার রহস্য উদঘাটনের সুযোগ পেয়েছি। আমরা আরো কৃতজ্ঞ সিআইডি’র পুলিশ পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) আবদুল মান্নান স্যারের প্রতি। যিনি আমাদের সবসময় সাহস যুগিয়েছেন। আমরা তার মামলা তদন্তের সময় কিছুটা আশার আলো দেখতে পেয়েছি। আজকে আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া জানাই এবং প্রাণ খুলে দোয়া করি যাদের জন্য আমরা আমাদের মেয়ে ইতি’র হত্যার সঠিক রহস্য উদঘাটনে সহযোগিতা পেয়েছি। এছাড়া আমরা আদালতের মাধ্যমে দোষি ব্যক্তির উপযুক্ত শাস্তি দাবী করছি। যাতে আর কেউ এমন অপরাধ করতে সাহস না পায়।