অনলাইন ডেস্ক:
ধর্ষণেনর পর হত্যা করে মাটিতে পুঁতে রাখা হয় তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী সুমনার মৃতদেহ। নিখোঁজের ৫ দিন পর ঘাতক রিয়াজের ঘরের মেঝে খুঁড়ে লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত সুমনা ঠাকুরগাঁও সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী। গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে নিখোঁজ ছিল সুমনা। বৃহস্পতিবার রাত ১০টায় শহরের গোয়ালপাড়ায় রিয়াজের ঘরের মেঝে থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
প্রতিবেশীরা বলছেন, দেখতে সুন্দর সুমনাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। সুমনা প্রায়ই রিয়াজের খালার কাছে ওই বাড়িতে পড়তে যেত। ঘটনার দিন রিয়াজের মা-খালা কেউই বাসায় ছিল না। এ সুযোগে ধর্ষণের পর ঘটনা আড়াল করতে সুমনার লাশ মাটিচাপা দেয় রিয়াজ। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে রিয়াজ হত্যার কথা স্বীকার করলেও ধর্ষণের ব্যাপারে কোনো তথ্য দেয়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে।
এদিকে শিশু শিক্ষার্থী সুমনা হত্যার প্রতিবাদে শুক্রবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও শহরে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। তারা সুমনার ঘাতকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায়। ঘাতক রিয়াজ আহম্মেদ কনক হচ্ছেন ঠাকুরগাঁও শহরের গোয়ালপাড়া মহল্লার পান দোকানদার ইয়াসিন হাবিব কাননের ছেলে। কনক ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র।
স্থানীয়রা জানায়, গত ১৫ ডিসেম্বর দুপুরের পর সুমনা তার মাকে বলে, ইয়াসিন হাবিবের বাড়ি যায়। কিন্তু সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ার পর সুমনা বাড়ি না ফেরায় এলাকায় মাইকিং করা ছাড়াও সুমনার বাবা ঠাকুরগাঁও থানায় জিডি করে। কথা হয় প্রতিবেশী জুয়েল ও সালমার সঙ্গে। তারা জানান, সুমনা প্রায়ই রিয়াজের খালার কাছে তাদের বাড়িতে পড়তে যেত। ঘটনার দিন রিয়াজের মা ও খালা দিনাজপুরে এক আত্মীয়র বাড়িতে বেড়াতে যান।
রিয়াজের বাবা ইয়াসিন বাসস্ট্যান্ডে পান বিক্রি করতে ঘর থেকে বের হন। ঘরে একা ছিলেন রিয়াজ। এই সুযোগে সুমনাকে একা পেয়ে তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করে থাকতে পারে। পরে লাশ ঘরের মেঝেতে পুঁতে রাখা হয়। একই অভিমত ব্যক্ত করে ইয়াসিনের প্রতিবেশী জুলফিকার আলী জনি বলেন, রিয়াজ ও সুমনা দু’জনই ভালো ছাত্র।
থানায় জিডি করার পর রিয়াজকে পুলিশ সন্দেহের তালিকায় রাখে। তার গতিবিধির ওপরও নজর রাখছিল পুলিশ। শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার পুলিশের কথায় রিয়াজকে নিয়ে তার বাবা ইয়াসিন হাবিব সদর থানায় যান।
থানায় জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে রিয়াজ হত্যার কথা স্বীকার করে পুলিশের কাছে। লাশ ঘরের মেঝেতে পুঁতে রাখার কথাও জানানো হয়। পরে পুলিশ গিয়ে মেঝে খুঁড়ে লাশ উদ্ধার করে। জানতে চাইলে ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি আসিকুর রহমান জানান, রাজিব হত্যার কথা স্বীকার করেছেন রিয়াজ। তবে ধর্ষণের বিষয়টি এখনও পরিষ্কার নয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়া গেলে এটি পরিষ্কার হবে। ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্তের কাজ শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। শনিবার সকালে সুমনার লাশ দাফন করা হয়েছে।